বর্তমান সরকারের সময়ে দেশের নৌ-বাণিজ্যের পাশাপাশি এ খাতে অর্জিত প্রযুক্তিগত সক্ষমতা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তুলে ধরার আহ্বান জানিয়েছেন বিশিষ্টজন। এতে দেশের বন্দর ব্যবস্থাপনা, জাহাজ নির্মাণ, শিপইয়ার্ড, শিপ এজেন্ট, শিপ রিসাইক্লিং, বন্দর অপারেটর, সিঅ্যান্ডএফসহ অন্যান্য খাতে আরও বিদেশি বিনিয়োগ আসবে বলে আশা করছেন তারা।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের আয়োজনে গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) তিন দিনব্যপী পঞ্চম ‘আন্তর্জাতিক মেরিনটেক বাংলাদেশ এক্সপো অ্যান্ড ডায়ালগের’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বক্তারা এ মন্তব্য করেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে সাবেক মন্ত্রী আমির হোসেন আমুর উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও অসুস্থতার কারণে তিনি আসতে পারেননি। পরে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়াল অ্যাডমিরাল গোলাম সাদেক। প্রদর্শনীটি আগামীকাল শনিবার পর্যন্ত সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। এক্সপোনেট এক্সিবিশনের উদ্যোগ ও নৌ দপ্তরের সহযোগিতায় মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। মেলায় ২০৩০ সালের মধ্যে আন্তর্জাতিক নৌ-বাণিজ্যের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় পাঁচটি নেটওয়ার্কিং কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হবে।
প্রদর্শনীতে জাহাজ নির্মাতা-ডকইয়ার্ড ও শিপইয়ার্ড, জাহাজ মালিক ও শিপ এজেন্ট, শিপ রিসাইক্লিং, নকশা প্রণয়নকারী, বন্দর অপারেটর, সিঅ্যান্ডএফ, মেরিটাইম একাডেমি, নাবিক নিয়োগকারী সংস্থা, লঞ্চ ও কোস্টালশিপ, নেভিগেশন ও মেরিন ইকুইপমেন্ট, আমদানি-রপ্তানিকারকসহ প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম ও পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ, সাইফ পাওয়ারটেক গ্রুপ, খুলনা শিপইয়ার্ড, ডকইয়ার্ড অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস, চিটাগাং ড্রাই ডক, বাংলাদেশ মেরিন একাডেমি, চট্টগ্রাম ও রংপুর, আনন্দ শিপইয়ার্ড অ্যান্ড শিপওয়েজ, বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ, চার্টার্ড ইনস্টিটিউট অব লজিস্টিকস অ্যান্ড ট্রান্সপোর্ট (সিআইএলটি), বাংলাদেশ ফ্রেট ফরওয়ার্ডার্স অ্যাসোসিয়েশন, গ্রুপ নটকা, ঢাকা ওয়াসাসহ ছয় দেশের প্রায় ৭৫টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন চিটাগাং ড্রাই ডকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মিসবাহ উদ্দিন আহমদ, নৌ অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক কমডোর (অব) সৈয়দ আরিফুল ইসলাম, মহাপরিচালক কমডোর মাকসুদ আলম, বাংলাদেশ ফ্রেট ফরওয়ার্ডার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কবির আহমেদ, সাইফ পাওয়ারটেকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তরফদার রুহুল আমিন।
বক্তারা বলেন, ভবিষ্যৎ স্মার্ট বাংলাদেশ হবে সাশ্রয়ী, টেকসই, জ্ঞানভিত্তিক, বুদ্ধিদীপ্ত এবং উদ্ভাবনী। দেশে টেকসই উন্নয়নের গতি বজায় রাখতে পণ্যের সরবরাহ দ্রুত ও কার্যকর হওয়া আবশ্যক। এই সক্ষমতা অর্জনে মাল্টিমোডাল হাব (বহুমুখী সংযোগ) স্থাপনের পাশাপাশি সমুদ্র, নৌ ও স্থলবন্দরের আধুনিকায়ন, নৌপথের নাব্য সংরক্ষণ, নৌ-খাতে দক্ষ জনবল সৃষ্টি, সাশ্রয়ী ও নিরাপদ যাত্রী ও পণ্য পরিবহন এবং বৈদেশিক বাণিজ্য সম্প্রসারণে নানা পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এসব কর্মকাণ্ড নিজেদের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখলে হবে না। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তুলে ধরতে হবে। এতে তারা আমাদের সক্ষমতা সম্পর্কে জানতে পারবে। আশা করছি, সবার ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার মাধ্যমে নৌ-বাণিজ্যে আরও বেশি বিদেশি বিনিয়োগ আসবে।
মন্তব্য করুন