পশ্চিম আফ্রিকার দেশ নাইজারে অভ্যুত্থান ঘোষণা করেছে দেশটির একদল সেনাসদস্য। বন্দি করা হয়েছে প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বাজোমকে। বুধবার প্রেসিডেন্ট গার্ডের সদস্যরা প্রেসিডেন্ট বাজোমকে রাজধানী নিয়ামির প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে বন্দি করে ফেলে। ভোর থেকে নানা সূত্রের বরাত দিয়ে সে খবর প্রকাশ পাওয়া শুরু হলে সকালে রাজধানী নিয়ামিতে সড়কে লোকজনকে প্রেসিডেন্টের সমর্থনে মিছিল করতে দেখা যায়। এর আগে গত মার্চ মাসেও তাকে আরেকবার উৎখাতের চেষ্টা হয়। তবে সে চেষ্টা নস্যাৎ করে দেন তিনি। খবর বিবিসির।
বুধবার বিবিসির এক প্রতিনিধি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন ভবন ঘিরে প্রেসিডেন্টের অনুগত সেনাদের ভারী অস্ত্র সজ্জিত হয়ে অবস্থান নিতে দেখেছেন। নগরী মোটামুটি শান্তই ছিল। যদিও প্রেসিডেন্টের পক্ষে সড়কে নানা ভিড় ছত্রভঙ্গ করে দিতে অভ্যুত্থানের পক্ষের সেনাদের গুলি চালাতে দেখা গেছে। পরে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে এসে কর্নেল মেজর আমাদু আবদ্রামানে অভ্যুত্থানের ঘোষণা দিয়ে বলেন, তারা নাইজারের সংবিধান বিলুপ্ত ঘোষণা করছেন। সব প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বাতিল এবং দেশের সব সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণাও দেন। টেলিভিশনে কর্নেল মেজর আবদ্রামানে যখন অভ্যুত্থানের ঘোষণা দিচ্ছিলেন, তখন সামরিক বাহিনীর পোশাক পরা আরও ৯ সেনা কর্মকর্তা তাকে ঘিরে দাঁড়িয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘আমরা, প্রতিরক্ষা এবং নিরাপত্তা বাহিনী… দেশের বর্তমান সরকার ব্যবস্থার অবসান ঘটানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। দেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতির ক্রমাবনতি, দুর্বল অর্থনৈতিক ও সামাজিক সুশাসনের অভাবে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আন্তর্জাতিক বিশ্বকে নাইজারের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার আহ্বানও জানিয়েছেন। পরবর্তী নোটিশ না দেওয়া পর্যন্ত স্থানীয় সময় রাত ১০টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত দেশজুড়ে রাত্রিকালীন কারফিউও ঘোষণা করেন তিনি। টেলিভিশনে অভ্যুত্থানের ঘোষণা দেওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন প্রেসিডেন্ট বাজোমকে দ্রুত মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানান। ব্লিঙ্কেন টেলিফোনে প্রেসিডেন্ট বাজোমের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং ওয়াশিংটনের তার প্রতি ‘অটল সমর্থন’ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বলেও জানা গেছে। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসও এ অভ্যুত্থানের নিন্দা জানিয়েছেন।
মন্তব্য করুন