সাইফার মামলায় পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কোরেশিকে প্রধান অভিযুক্ত করা হয়েছে। গত শনিবার তাদের প্রধান অভিযুক্ত হিসেবে উল্লেখ করে চার্জশিট জমা দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে এ মামলায় ইমরান খান ও কোরেশির মৃত্যুদণ্ডও হতে পারে। খবর দ্য ডনের।
পাকিস্তানের অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের অধীনে সাইফার মামলার বিচারের লক্ষ্যে একটি বিশেষ আদালত গঠিত হয়েছে। কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা এফআইএর কর্মকর্তারা এ আদালতেই শনিবার সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কোরেশিকে প্রধান অভিযুক্ত হিসেবে উল্লেখ করে চার্জশিট জমা দেন। তারা ছাড়াও এ মামলায় সাবেক মুখ্য সচিব আজম খান, সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও ইমরানের দল তেহরিক-ই-ইনসাফের সাবেক মহাসচিব আসাদ উমরকেও অভিযুক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিষয়টির সঙ্গে জড়িত একটি সূত্র। চার্জশিটে কয়েকজনকে পলাতক হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এফআইএর কর্মকর্তারা চার্জশিটে অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের ৫ ও ৯ ধারায় অভিযোগ এনেছে। এ অভিযোগ প্রমাণিত হলে আসামিদের মৃত্যুদণ্ড কিংবা ১৪ বছরে কারাদণ্ড হতে পারে। তবে ইমরান খানের দল তেহরিক-ই-ইনসাফ এ চার্জশিটকে প্রত্যাখ্যান করে বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করেছে।
এদিকে তদন্ত সংস্থা এ মামলায় সব মিলিয়ে ২৭ জনকে সাক্ষী করেছে। তাদের মধ্যে প্রায় সবাইকে এ মামলায় আদালতে এসে সাক্ষ্য দেওয়ানো হবে। এরই মধ্যে মামলার প্রধান সাক্ষী আজম খান ইমরান খানের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছেন। তিনি দাবি করেছেন, ইমরান খান সে সময়ে পার্লামেন্টে তার বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাব থেকে জনসাধারণের মনোযোগ সরানোর জন্য ওই গোপন নথির বিষয়টিকে সামনে এনেছিলেন। আজম খান বিবৃতিতে অভিযোগ করেন, ইমরান খান আজম খানকে বলেছিলেন যে, তিনি জনসাধারণের সামনে ওই গোপন নথিটি প্রকাশ করবেন। তিনি আরও দাবি করেছেন, তিনি ইমরান খানকে সেই নথি দিয়েছিলেন এবং পরে বারবার ফেরত চাইলেও ইমরান খান সেটি ফেরত দেননি।
সাইফার মামলা কী : গত বছর প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে তাকে পদচ্যুত করার পেছনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ষড়যন্ত্র রয়েছে বলে অভিযোগে সরব হয়েছিলেন ইমরান খান। তারপর সে ব্যাপারেই একটি নথি তিনি গত বছরের এপ্রিলে প্রকাশ্য জনসভায় দেখিয়ে বলেন, ‘এটি বিদেশি ষড়যন্ত্রের প্রমাণ।’ এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতেই ইমরানের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। এটিই সাইফার মামলা নামে পরিচিত। ক্ষমতার অপব্যবহার করে ইমরান গোপন কূটনৈতিক নথি প্রকাশ্যে এনেছেন বলে অভিযোগ ওঠে। যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন পিটিআই চেয়ারম্যান।