হারুন আর রশিদ, জলঢাকা (নীলফামারী)
০১ আগস্ট ২০২৩, ০২:৩৭ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
নীলফামারীর জলঢাকা

বীর নিবাস নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ

অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে আবাসন নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে নীলফামারীর জলঢাকায় নির্মাণ করা হয়েছে বীর নিবাস। এ উপজেলায় এরই মধ্যে প্রথম ধাপে তালিকাভুক্ত ১২টি বীর নিবাস নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়েছে। এসব বীর নিবাসে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ও উপকরণ ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। সঠিক তদারকির অভাব ও প্রাক্কলন অনুযায়ী কাজ সম্পন্ন এবং সময়মতো কাজ না হওয়ায় এ নিয়ে স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রতিটি বীর নিবাস নির্মাণের ব্যয় ধরা হয়েছে ১৩ লাখ ৪৩ হাজার ৬১৮ টাকা। প্রাক্কলন অনুযায়ী প্রতিটি বীর নিবাস হবে দৃষ্টিনন্দন ও ঢালাইয়ের পাকা ছাদ। এতে থাকবে তিনটি বেডরুম, একটি গেস্টরুম, দুটি বাথরুম ও একটি কিচেন রুম। এ ছাড়া থাকবে বিদ্যুৎ ও পানীয় জলের সুব্যবস্থা।

সরেজমিন দেখা গেছে, এ উপজেলায় বীর নিবাস নির্মাণকাজে ব্যবহার করা হয়েছে নিম্নমানের ইট, বালু, সিমেন্ট ও অন্যান্য উপকরণ। প্রাক্কলন অনুযায়ী টয়লেট ও রান্নাঘর নির্মাণ করা হয়নি। নিম্নমানের পানির ট্যাঙ্কি ও পাইপ লাগানো হয়েছে। বৈদ্যুতিক সামগ্রীও নিম্নমানের।

বীর নিবাস বরাদ্দ পাওয়া একাধিক মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের দাবি, শুরু থেকেই প্রাক্কলন অনুযায়ী কাজ করার তাগিদ দিলেও, সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার তাদের কথা আমলে নেননি। এ কাজের তদারকির দায়িত্বে থাকা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে এসব অনিয়মের বিষয়ে জানানোর পরও কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।

উপজেলার কৈমারী ইউনিয়নের আলসিয়া পাড়া গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহিম কালবেলাকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুজিববর্ষের উপহার হিসেবে বীর নিবাস দিয়েছেন। ঘরগুলো নির্মাণের শুরু থেকেই ঠিকাদার নিম্নমানের ইট, সিমেন্ট, রড ব্যবহার করেছেন। ছাদের রড ভালো দেননি। বিদ্যুৎ সংযোগ ও সুইচ বোর্ড ব্যবহারের অনুপযোগী। বৈদ্যুতিক মিটার দেননি। আমার পুরোনো মিটার লাগিয়ে দিয়েছেন। এসব বিষয় বারবার ঠিকাদারকে জানানো হলেও তিনি কোনো ব্যবস্থা নেননি।

একই ইউনিয়নের মুক্তিযোদ্ধা বিশ্বনাথ রায় বলেন, প্রধানমন্ত্রী ঘর দিয়েছেন, কিন্তু এ ঘরে শান্তিতে ঘুমাতে পারব কি না জানি না। ঠিকাদার সব মালপত্র খুব নিম্নমানের দিয়েছেন।

বীর নিবাস নির্মাণের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স স্বচ্ছ এন্টারপ্রাইজের নামে থাকলেও দায়িত্বে রয়েছেন হেদায়েতুল্লাহ হেদ্দা নামে এক ব্যক্তি। তার সঙ্গে এ প্রতিবেদকের যোগাযোগ হলে তিনি বলেন, আমি এখনো ঘর বুঝিয়ে দিইনি। তাদের (মুক্তিযোদ্ধাদের) ঘরে কে উঠতে বলেছে? কিন্তু মন্ত্রণালয়ের নথিতে বীর মুক্তিযোদ্ধারা ভালোভাবে দেখেশুনে এবং বুঝে ঘর নেওয়ার কথা উল্লেখ রয়েছে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ময়নুল হক কালবেলাকে বলেন, প্রথম ধাপের ১২টি বীর নিবাস নির্মাণের শেষ পর্যায়ে রয়েছে। অনিয়মের বিষয়ে সরেজমিন দেখব। যদি সমস্যা থাকে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তা ঠিক করে দেবে। যেসব ঘরের কাজে সমস্যা রয়েছে তা সমাধান করতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বলা হবে।

এ ছাড়া বীর নিবাস নির্মাণে অনিয়ম হয়ে থাকলে সরেজমিন তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন জলঢাকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ময়নুল ইসলাম।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

নাশকতা ঠেকাতে কুলাউড়া রেলস্টেশনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বাড়তি সতর্কতা

ময়মনসিংহে ২৪ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল

চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৫ প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল

শোকজ করায় আনন্দিত শামীম ওসমান

ট্রেনে কাটা পড়ে দুই বৃদ্ধ নিহত

শরিকদের সঙ্গে আজ বসবেন শেখ হাসিনা

হাঁসে ধান খাওয়ায় পিটিয়ে হত্যা, গ্রেপ্তার ২

মানিকগঞ্জ-২ আসনে ৪ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল

এমপি হতে চেয়ারম্যানের পদত্যাগ, বাছাইয়ে বাতিল হলো মনোনয়ন

স্বাধীনতা কাপের সেমিতে আবাহনী-রহমতগঞ্জ

১০

টটেনহামের কাছেও পয়েন্ট খোয়ালো ম্যানসিটি

১১

ভোলায় বিএনপির মশাল মিছিল

১২

লালমনিরহাট-২ আসনে বাদ পড়লেন ৪ প্রার্থী

১৩

টাঙ্গাইলে বিএনপির মশাল মিছিল

১৪

"টেকসই করপোরেট ও জবাবদিহিতা অনুশীলন" বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত

১৫

সিরাজগঞ্জ -৩ আসনে ৭ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল

১৬

মৌলভীবাজারে ছাত্রদলের বিক্ষোভ মিছিল

১৭

ঝালকাঠিতে শাহজাহান ওমরের প্রতিকৃতি পোড়াল বিক্ষুব্ধরা

১৮

অবরোধ সমর্থনে জামালপুরে যুবদলের মিছিল

১৯

যবিপ্রবির ইইই বিভাগের এনার্জি রিসার্চ ল্যাব উদ্বোধন

২০
X