সৌদি আরবে যাওয়ার তিন দিনের মাথায় গৃহবধূ ছাবিনার রহস্যজনক মৃত্যুর খবর প্রকাশের পরই গা ঢাকা দিয়েছে পাচারকারী রফিকুল ওরফে রফি দালাল। শনিবার রাতে কালবেলাসহ বিভিন্ন পত্রিকার অনলাইনে সংবাদটি প্রকাশ হওয়ার পরপরই তার মোবাইল নম্বরটি বন্ধ হয়ে যায়। এদিকে রফি দালালের মাধ্যমে সৌদি আরবে যাওয়া অনেকে সেখানে নির্যাতিত হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গ্রামবাসীর অভিযোগ, দালাল রফিকুল এলাকার বিভিন্ন বয়সী নারীদের বিদেশে পাঠিয়েছেন, যারা পরে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে অর্থ আদায়ের অভিযোগও রয়েছে। ভুক্তভোগী হাসি বেগম গণমাধ্যমকর্মীদের জানান, দালাল রফিকুল তাকে ভালো কাজের প্রলোভন দেখিয়ে সৌদি আরব নিয়ে যায়। কিন্তু সেখানে গিয়ে মালিকের অনৈতিক প্রস্তাবসহ বিভিন্ন মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের শিকার হতে হয়। পরে এলাকায় জানাজানি হলে সাগান্না ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হকের মধ্যস্থতায় তাকে দেশে ফিরিয়ে আনে দালাল রফিকুল। তাকে দেশে আনতে আবারও ৫০ হাজার টাকা নেয় দালাল রফিকুল। হাসি বেগম আরও জানান, সৌদি আরবের ওই এলাকায় আরও পাঁচ-ছয়জন মেয়ে আছেন যারা দালাল রফিকুলের মাধ্যম গিয়ে এখনো নিয়মিত নির্যাতিত হচ্ছেন। একই অবস্থার শিকার হন গৃহবধূ ছাবিনা।
এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য ও বাথপুকুরিয়া গ্রামের আকবর হোসেন জানান, রফিকুলের বিদেশে নারী কর্মী পাঠানোর পর নির্যাতনের বিষয় নতুন নয়। এর আগেও বিভিন্ন মেয়েকে নির্যাতনের বিষয়ে সালিশ করেছি। কিন্তু দালাল রফিকুল তার অভ্যাস পরিবর্তন করেনি।
সাগান্না ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেন শেখ বলেন, রফিকুলের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে সৌদি আরবসহ বিভিন্ন দেশে ভালো কাজের প্রলোভন দেখিয়ে এলাকার অভাবী মেয়ে ও গৃহবধূদের বিদেশে পাচার করে আসছে বলে অভিযোগ আছে। এর আগে অভিযোগ পেয়ে হাসি নামে একজন মেয়েকে দেশে ফিরিয়ে আনি।
এদিকে ছাবিনার লাশ ফেরত আনার বিষয়টি অনেকটা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। তার পরিবার জানে না সৌদি আরবের কোথায় আছে ছাবিনার লাশ। এই পরিস্থিতিতে তার স্বামী রুবেল ও শ্বশুর সিদ্দিক মিয়া লাশ ফেরত আনার ব্যাপারে সরকারের সহযোগিতা চান।