কদিন আগেই বাংলাদেশ অলরাউন্ডার নাসির হোসেনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আনে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)। এতে বাংলাদেশের ঘরোয়া টুর্নামেন্টগুলোতে নাসিরের সুযোগ পাওয়াকে ঘিরে ছিল শঙ্কা। অবশেষে সেই শঙ্কাই সত্যি হয়েছে। আসন্ন বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) প্লেয়ার্স ড্রাফটে জায়গা হয়নি তার। জানুয়ারিতে হতে যাওয়া এ ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টের জন্য ২০৩ দেশীয় ক্রিকেটারের তালিকা চূড়ান্ড করেছে বিসিবি, যেখানে নেই শুধু নাসির।
আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর রোববার রাজধানীর একটি পাঁচতারকা হোটেলে হতে যাচ্ছে আসন্ন এ টুর্নামেন্টের প্লেয়ার্স ড্রাফট অনুষ্ঠান। নাসিরকে না রাখার বিষয়ে বিসিবির নির্বাচক প্যানেলের সূত্রে জানা গেছে, অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত না হলে ঘরোয়া কোনো টুর্নামেন্টে খেলার সুযোগ পাবেন না নাসির। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেছেন, ‘আমরা তাকে বিপিএলের প্লেয়ার্স ড্রাফটে রাখিনি। কারণ, তার বিরুদ্ধে আইসিসির দুর্নীতির অভিযোগ আছে। যতক্ষণ পর্যন্ত সে আইসিসি থেকে নির্দোষ প্রমাণিত না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত কোনো ঘরোয়া টুর্নামেন্টেও (বাংলাদেশে) খেলার সুযোগ পাবে না নাসির।’
২০২১ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাতে হওয়া টি-টেন লিগে দুর্নীতির চেষ্টা করেন নাসির হোসেনসহ ৮ জন—এমন অভিযোগ আইসিসির। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আইসিসি জানিয়েছিল, আমিরাত ক্রিকেট বোর্ডের (ইসিবি) অভিযোগের ভিত্তিতে এ অভিযোগ গঠন করেছে তারা। নাসিরের বিরুদ্ধে আমিরাত ক্রিকেট বোর্ডের দুর্নীতিবিরোধী কোডের তিনটি ধারা ভঙ্গের অভিযোগ আনা হয়েছে। ২০২১ সালের আবুধাবি টি-টেন ক্রিকেট লিগের ম্যাচগুলো পাতানোর চেষ্টা করেন অভিযুক্তরা। নাসির হোসেনকে দুর্নীতিবিরোধী কোডের ২.৪.৩, ২.৪.৪ এবং ২.৪.৬ ধারায় অভিযুক্ত করা হয়েছে।
২.৪.৩ ধারায় যে অভিযোগ, তাতে বলা হয়েছে, নাসির ৭৫০ ডলার মূল্যের উপহার নিয়েছিলেন, যা দুর্নীতি দমন কর্মকর্তাকে জানাননি কিংবা উপহারের রসিদ দেখাতে পারেননি। এ ছাড়া বাকি দুই ধারায় নাসিরের বিরুদ্ধে ম্যাচ পাতানোর প্রস্তাব পাওয়ার বিষয় না জানানো এবং তদন্তে সাহায্য না করার অভিযোগ আনা হয়েছে। নাসির ছাড়াও আবুধাবি টি-টেন লিগের এই দুর্নীতি মামলায় দুটি দলের মালিক, দুজন খেলোয়াড়, একজন টিম ম্যানেজার এবং দুই সহকারী কোচকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তাদের হাতে ১৪ দিন সময় আছে জবাব দেওয়ার জন্য। অভিযোগ প্রমাণিত হলে বড় ধরনের নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি হতে হবে নাসিরকে।
এবারের বিপিএলে খেলোয়াড়দের সাত ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়েছে। সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক ৮০ লাখের ক্যাটাগরিতে আছেন শুধুমাত্র মুশফিকুর রহিম। সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবালরা ড্রাফটের আগেই নিজেদের বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজির সঙ্গে সরাসরি চুক্তি করায় ‘এ’ ক্যাটাগরিতে নেই আর কেউ। বিশ্বকাপের জন্য সম্ভাব্য তালিকায় থাকা সৌম্য সরকারকে রাখা হয়েছে ‘ডি’ ক্যাটাগরিতে। ক্যাটাগরি ‘বি’-তে রাখা হয়েছে চার ক্রিকেটারকে; তাদের পারিশ্রমিক ধরা হয়েছে ৫০ লাখ টাকা। ক্যাটাগরি ‘সি’-তে আছেন ১৮ জন, তাদের পারিশ্রমিক ধরা হয়েছে ৩০ লাখ। ‘ডি’ ক্যাটাগরিতে থাকা ৩১ ক্রিকেটারের পারিশ্রমিক ধরা হয় ২০ লাখ। ‘ই’ ক্যাটাগরিতে আছেন ৭৫ জন, তাদের পারিশ্রমিক ধরা হয় ১৫ লাখ টাকা। এ ছাড়াও বাকি ‘এফ’ ও ‘জি’ ক্যাটাগরিতে থাকা ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিক ধরা হয়েছে ১০ লাখ ও ৫ লাখ টাকা।
মন্তব্য করুন