অবৈধ প্রক্রিয়ায় বৈদেশিক মুদ্রা কেনাবেচার অভিযোগে দুই মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠানের চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডি। তাদের কাছ থেকে ২১ লাখ বাংলাদেশি টাকাসহ ৭৪ লাখ বাংলাদেশি টাকার মূল্য মানের বৈদেশিক মুদ্রা জব্দ করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠান দুটি হলো চকবাজার মানি এক্সচেঞ্জ লিমিটেড ও বকাউল মানি এক্সচেঞ্জ।
গ্রেপ্তার চারজন হলেন মকবুল হোসেন, মাসুদ আলম, এম এম জাকারিয়া ও জামাল উদ্দিন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর পল্টনে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিটের একটি টিম।
গতকাল শুক্রবার সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছেন সিআইডির মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজাদ রহমান। তিনি জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পল্টনে চকবাজার মানি এক্সচেঞ্জ লিমিটেড ও বকাউল মানি এক্সচেঞ্জের অফিস কক্ষে অভিযান পরিচালনা করে সিআইডি। চকবাজার মানি এক্সচেঞ্জ লিমিটেডের অফিস কক্ষের ভেতরে মকবুল হোসেন বৈদেশিক মুদ্রা বিক্রির জন্য শপিং ব্যাগ থেকে টাকা বের করার সময় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তার দেখানো মতে দোকানের ভেতর ১ নম্বর কাউন্টারের সামনে থেকে ২ লাখ ২৩ হাজার ৫০০ বাংলাদেশি টাকা, ৫৫ হাজার রিয়াল, ৩ হাজার ৭০ ইউরো এবং ১ হাজার ৫৫০ মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত জব্দ করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে মকবুল জানান, চকবাজার মানি এক্সচেঞ্জের মালিক আহমেদ নোমানের কাছে বিক্রির জন্য এবং বাংলাদেশি টাকা দিয়ে একই দোকান থেকে ইউএস ডলার কেনার জন্য তিনি এসেছেন। এরপর চকবাজার মানি এক্সচেঞ্জ লিমিটেডের অফিস কক্ষে তল্লাশি করে ১ নম্বর কাউন্টার থেকে ২০ হাজার ৭৫৫ ইউএস ডলার, ৪৮ হাজার ৯৩৭ সৌদি রিয়াল, ২ হাজার ১০০ ইউরো, ১ লাখ ১৭ হাজার ভারতীয় রুপি, ২ হাজার ৯০ মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত এবং ৫ নম্বর কাউন্টার থেকে ১৩ লাখ বাংলাদেশি টাকা জব্দ করা হয়। এ সময় মাসুদ আলমকে আটক করা হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তিনি ৫ নম্বর কাউন্টারের মালিক শামীমা আক্তারের ম্যানেজার। একই দোকানের ৮ নম্বর কাউন্টারের ফাইল ক্যাবিনেট থেকে ২ হাজার ২০ সৌদি রিয়াল এবং ৬ লাখ বাংলাদেশি টাকা জব্দ করা হয়। একই দোকানের ভেতরে শপিং ব্যাগে রাখা অবস্থায় প্রচুর পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা উদ্ধার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে মাসুদ জানান, ৮ নম্বর কাউন্টারের মালিক শিহাবউদ্দিন মৃধা।
আটককৃত ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে সিআইডি জানিয়েছে, চকবাজার মানি এক্সচেঞ্জের মালিক আহমেদ নোমান হলেও তিনি সবসময় দোকানে থাকেন না। আহমেদ নোমানের হয়ে তার বড় ভাই এম এম জাকারিয়া প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করেন। এম এম জাকারিয়া প্রতিষ্ঠানটির মোট ৯টি কাউন্টারের মধ্যে ৯ নম্বর কাউন্টারের মালিক। পরবর্তী সময়ে ৯ নম্বর কাউন্টার থেকে তাকে আটক করা হয়।
পরবর্তী সময়ে একই বিল্ডিংয়ের নিচতলার ১১০ নম্বর রুম ‘বকাউল মানি একচেঞ্জ’-এর ভেতরে অভিযান চালিয়ে ৫ হাজার ৮৭৮ মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত, ১ হাজার ৩৫ দুবাই-দিরহাম, ৫ হাজার ৫০০ ভারতীয় রুপি জব্দ করা হয় এবং মো. জামাল উদ্দিনকে আটক করা হয়।
সিআইডি জানিয়েছে, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের সহায়তায় মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠান পরিচালনার কোনো ধরনের নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে দৈনিক বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা কেনাবেচা করছে। তাদের বিরুদ্ধে পল্টন থানায় বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়েছে।
মন্তব্য করুন