নিজেদের জমি নেই। বাবা বর্গাচাষি। এমনকি নিজস্ব জমিতে ঘরও নেই। তাই অর্থাভাবে শেষ করতে পারেননি পড়ালেখাও। স্কুলগামী সমবয়সীরা যখন হেসে-খেলে বেড়ায়, সে বয়সে সনজিত চাকরি নেন নেত্রকোনা শহরের একটি চশমার দোকানে। অল্প বেতন, তবু স্বপ্ন ছিল বড়। এক টুকরো জমি কিনে ঘর তোলার স্বপ্ন। বাবা-মা আর একমাত্র ভাইকে নিয়ে আশ্রিত জীবন থেকে বের হয়ে সুখী হওয়ার;
কিন্তু ভাগ্য পক্ষে ছিল না সনজিত সরকারের। বছর দেড়েক আগে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ডাক্তার জানান, তার দুটো কিডনিই পুরোপুরি নষ্ট হওয়ার পথে। আকাশ ভেঙে পড়ে বাবা সন্তোষ সরকারের মাথায়। ছেলেকে নিয়ে ময়মনসিংহ থেকে ঢাকার সরকারি হাসপাতালগুলোয় দৌড়াদৌড়ি শুরু করেন। একসময় চশমার দোকানের চাকরি ছাড়তেও বাধ্য হন সনজিত।
প্রায় এক বছর বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা এবং ডায়ালাইসিস বাবদ খরচ করেছেন কমপক্ষে ৭ থেকে ৮ লাখ টাকা। নিজেদের জমানো টাকার পাশাপাশি সহায়তার হাত বাড়িয়েছিলেন আত্মীয়-স্বজনরাও। এত চিকিৎসার পরও সুস্থ হননি সনজিত। ডাক্তার জানান, কিডনি শতভাগ নষ্ট হওয়ার পথে। বেঁচে থাকার একমাত্র উপায় ট্রান্সপ্লান্ট।
গরিব বাবা-মায়ের পক্ষে ব্যয়বহুল কিডনি কেনা সম্ভব না। তার পরও চেষ্টা করেছেন নানাভাবে। শেষ পর্যন্ত জোগাড় করতে পারেননি। তবে সন্তানকে বাঁচাতে কিডনি দিতে রাজি মা মালতি রানী সরকার। তার পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে ডাক্তার জানিয়েছেন, সবকিছু মিলেছে, মায়ের পক্ষে কিডনি দেওয়া সম্ভব।
সন্তোষ সরকার কালবেলাকে বলেন, ডাক্তারের সঙ্গে কথা চূড়ান্ত করার পরও কেটে গেছে প্রায় দুই মাস। কিন্তু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে কিডনি ট্রান্সপ্লান্টে খরচ পড়বে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ টাকা। আনুষঙ্গিক দরকার আরও ২ থেকে আড়াই লাখ। এত টাকা কীভাবে জোগাড় করব! অনেকদিন হয়ে গেছে, টাকা ম্যানেজ করতে পারিনি। ছেলেটা দিন দিন আগের চেয়ে দুর্বল হয়ে যাচ্ছে। সহৃদয়বান মানুষ যদি একটু এগিয়ে আসতেন, তাহলে হয়তো ছেলেটা বেঁচে যেত।
সনজিত সরকারের ভাই রাজীব সরকার কালবেলাকে বলেন, ভাইয়ের চিকিৎসা খরচ জোগাতে গার্মেন্ট চাকরি নিয়েছি; কিন্তু এত টাকা জোগাড় সময়সাপেক্ষ। মা কিডনি দেওয়ার জন্য প্রস্তুত। সনজিত সরকারের ভাই রাজীব সরকারের সঙ্গে যোগাযোগের মোবাইল নম্বর- ০১৭৯৫২৭৭৬০৭। এই নম্বরে বিকাশ এবং নগদ অ্যাপস সংযুক্ত রয়েছে বলেও জানান রাজীব। এ ছাড়া সনজিতের মোবাইল নম্বর-০১৩১১৯৩৫২৬৫ (বিকাশ)।
মন্তব্য করুন