রাজধানীর কলাবাগান এলাকায় মো. শিপন নামে এক কিশোর হত্যার এক বছর পার হলেও এখনো তদন্ত প্রতিবেদন দেয়নি পুলিশ। এ মামলার তদন্ত করতে গিয়ে কলাবাগান থানা পুলিশের দুই কর্মকর্তা পরিবর্তন হয়েছেন। বর্তমানে তৃতীয় তদন্তকারী কর্মকর্তা এটি তদন্ত করছে। মামলায় গ্রেপ্তার চারজনের মধ্যে দুজন জামিনে কারামুক্ত হয়েছেন। শিপনকে কেন হত্যা করা হয়েছিল, তা আজও জানে না তার পরিবার।
এ বিষয়ে মামলার বাদী ও শিপনের বাবা মজিবুর বেপারী কালবেলাকে বলেন, আমার ছেলেকে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয়েছে। কেন হত্যা করা হয়েছে তা এখনো জানি না। যারা হত্যা করেছে, তাদের সঙ্গে আমার ছেলের কোনো দ্বন্দ্ব ছিল না। পুলিশ তদন্ত করলেও এখনো কেন প্রতিবেদন দেওয়া হচ্ছে না বুঝতে পারছি না।
তিনি আরও বলেন, দুই আসামি জামিন পেয়েছেন। তারা আপসের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। কিন্তু আপস করলে তো সন্তান ফিরে পাব না। তাই মামলার তদন্ত দ্রুত শেষ করে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা হোক। আমি হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই।
মামলার আসামিরা হলেনÑশাহাদাত হোসেন স্বাধীন, রাব্বী আহম্মেদ ওরফে রাজ ওরফে প্রিন্স রাজ, ইসরাত জাহান সাথী ও তানিয়া আক্তার কান্তা। এদের মধ্যে স্বাধীন ও রাব্বি কারাগারে রয়েছেন।
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর বিকেল ৫টায় বাসা থেকে শিপনকে ডেকে নিয়ে যান দুই ভাই শাহাদাত ও রাব্বী। এক পর্যায়ে তারা জোর করে শিপনকে ঘুমের ওষুধ সেবন করান। রাত ১০টার দিকে আসামি সাথী ও তানিয়ার সহযোগিতায় তাকে মারধর করতে থাকেন আসামি শাহাদাত ও রাব্বী। পরে তারা চাকু দিয়ে শিপনকে হত্যা করেন। এ ঘটনায় গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর কলাবাগান থানার মামলা হয়। এরপর পুলিশ চারজনকে গ্রেপ্তার করে। ঢাকার সিএমএম আদালত তাদের একদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ড শেষে ওই বছরের ২ অক্টোবর আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। পরবর্তী সময়ে আসামি সাথী ও কান্তা জামিনে কারামুক্ত হন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও কলাবাগান থানার উপপরিদর্শক সেলিম কালবেলাকে বলেন, তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব তদন্ত শেষ করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হবে। আসামিপক্ষের আইনজীবী আজিজুল হক কালবেলাকে বলেন, ঘটনাস্থলে আসামি সাথী ও কান্তা উপস্থিত ছিলেন। মামলাটি সুষ্ঠুভাবে তদন্ত হলে তারা দুজন মামলার দায় থেকে অব্যাহতি পাবেন বলে প্রত্যাশা করছি।
আদালতের কলাবাগান থানার সাধারণ নিবন্ধন শাখার কর্মকর্তা উপপরিদর্শক শরীফ সাফায়েত কালবেলাকে বলেন, এ মামলায় কোনো পুলিশ প্রতিবেদন দাখিল হয়নি। ৩ অক্টোবর এ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য রয়েছে।