দুটি পাতা একটি কুঁড়ির দেশখ্যাত মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল অন্যতম পর্যটন নগরী। পাহাড়, অরণ্য, পাখির অভয়ারণ্য, হাওর, চাবাগান আর উঁচু-নিচু টিলাবেষ্টিত সবুজ চাদরে ঢাকা শ্রীমঙ্গলের নৈসর্গিক সৌন্দর্যে প্রতিনিয়তই মুগ্ধ হচ্ছেন পর্যটকরা। পর্যটনে নতুন মাত্রা যোগ করেছে দার্জিলিং টিলা। বিকেলের ফুরফুরে বাতাসের সঙ্গে এমন সবুজে ঘেরা স্থানে কাটানো মুহূর্ত অনেকটা আলাদা করে স্মরণ হবে পরবর্তী সময়গুলোতে। সবুজের সমারোহে মুগ্ধতা ছড়ানো দৃষ্টিনন্দন এ টিলা পর্যটকদের হাতছানি দেয় প্রতিনিয়ত। এমন সৌন্দর্যে একাকার হয়ে আছে শ্রীমঙ্গলের এম আর খান চাবাগান। যেখানে রয়েছে ছবির মতো চাবাগান।
নীল আকাশের নিচে যেন সবুজ গালিচা পেতে আছে সজীব প্রকৃতি। উঁচু-নিচু টিলা ও টিলাঘেরা সমতলে সবুজের চাষাবাদ। শুধু সবুজ আর সবুজ। মাঝেমধ্যে টিলাবেষ্টিত ছোট ছোট জনপদ। নীলাভ সবুজ চায়ের সমারোহে যে কোনো মানুষ গেলেই সবুজের মাঝে নিজেকে হারিয়ে যেতে চাইবে। প্রকৃতির প্রায় সব রূপ-রং যেন এখানে এসে মিলে মিশে একাকার হয়ে গেছে। শুধু স্থানীয়দের ভিড়ই নয়, জায়গাটি অন্য অঞ্চলের পর্যটকদেরও আকর্ষণ করেছে।
গত শুক্রবার সরেজমিন দেখা যায়, শ্রীমঙ্গল শহর থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরে রাধানগর এলাকায় অবস্থিত এমআর খান চা বাগানের ৭ নম্বর সেকশনে দার্জিলিং টিলার অবস্থান। এম আর খান চাবাগানে যেতে হলে শ্রীমঙ্গল-ভানুগাছ রোড পেট্রোলপাম্প চত্বর থেকে
রাধানগর হয়ে মহাজেরাবাদের সিএনজিচালিত অটোরিকশায় উঠে এম আর খানের রাস্তায় নেমে এক থেকে দেড় কিলোমিটার হেঁটে যেতে হবে। আর রিজার্ভ নিলে এম আর খানের দার্জিলিং টিলায় সরাসরি গাড়ি এবং মোটরসাইকেল নিয়ে যাওয়া যাবে।
টিলা দেখতে আসা শিক্ষার্থী তন্তু দেবনাথ জানান, চা-বাগান আর টিলার অপরূপ সৌন্দর্যে ভীষণ মুগ্ধ। চারদিকে সবুজ গাছপালা। দেখতে অনেকটা ভারতের দার্জিলিংয়ের চা-বাগানের মতো। সবুজের সমারোহ, চা-বাগানের আঁকাবাঁকা পথ, ঢেউ খেলানো সমান্তরাল রাস্তা নিমেষেই যে কারও বিষণ্ন মনে প্রশান্তি এনে দেবে। সবুজ গালিচা মোড়ানো প্রকৃতির এমন সান্নিধ্য পেতে প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে সেখানে ছুটে যাচ্ছেন পর্যটকরা।
সিলেটের মইয়ারচর দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক শাকির আহমদ মাসুম বলেন, অনিন্দ্যসুন্দর এ টিলার সারি সারি চা-বাগান আর সবুজাভ সবকিছুই অসাধারণ সৌন্দর্য আরও মনোমুগ্ধকর। টিলা ঘুরে ঘুরে দেখছেন আর ছবি তুলতে ব্যস্ত দর্শনার্থীরা।
কথা হলো আল-আমিন, জয়নাল, সুমন, জাহিদ, বাড়ন্তি, লাবণী নামের দর্শনার্থীর সঙ্গে। তারা বলেন, প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যের অন্যতম স্পট দার্জিলিং টিলা। এ জায়গায় কেউ না এলে প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য বোঝানো যাবে না।
এম আর খান চা-বাগানের স্বত্বাধিকারী সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, বাগানের প্রাকৃতিক পরিবেশ চমৎকার। বিশেষ করে বাগানের ৭ নম্বর সেকশনটি খুবই দৃষ্টিনন্দন। এটি দেখতে বিভিন্ন সময় মানুষ ঘুরতে আসেন। পর্যটকদের বিশ্রাম নেওয়ার ব্যবস্থাও রয়েছে এখানে।
ট্যুরিস্ট পুলিশ শ্রীমঙ্গলের ওসি প্রদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন, শ্রীমঙ্গলে পর্যটকদের নির্বিঘ্নে ভ্রমণে তাদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে ট্যুরিস্ট পুলিশ তৎপর রয়েছে।
মন্তব্য করুন