ঢাকার প্রবেশপথে বিএনপির কর্মসূচির দিন গার্মেন্টে চাকরি খুঁজতে বের হন বাবুল হোসেন। গাজীপুর থেকে বাসে করে গাবতলী এসে পৌঁছান। তখন তিনি দেখেন সেখানে মারামারি হচ্ছে। বাস থেকে নামলে গত শনিবার তাকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায় পুলিশ। পরদিন গতকাল রোববার রাজধানীর দারুস সালাম থানায় পুলিশের করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে হাজির করা হয় তাকে। পরে আদালত এ মামলায় তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এর আগে ছেলেকে গ্রেপ্তারের খবর পেয়ে গতকাল রোববার সকালে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বাবুলের মা ও বাবা উপস্থিন হন। ছেলের দেখা না পেয়ে আদালতের বারান্দায় বসে বাবুলের মা আর্তনাদ করতে থাকেন।
এ সময় বৃদ্ধা কোহিনুর কালবেলাকে বলেন, ‘আমার ছেলে গাজীপুরের মাঝিঘাটে থাকে। সে গার্মেন্টে চাকরি করত। সেই চাকরি ছেড়ে দিয়ে গার্মেন্টে নতুন কাজ খুঁজতে এসেছিল। গাবতলী গিয়ে দেখে সেখানে মারামারি হচ্ছে। তখন বাস থেকে নামলে পুলিশ তাকে ধরে নিয়ে যায়। তাকে গ্রেপ্তারের খবর পেয়ে নারায়ণগঞ্জ থেকে আদালতে এসেছি। কিন্তু তার দেখা পাইনি।’
কোহিনুর আরও বলেন, ‘আমার ছেলের মোবাইল ফোনও নেই। সে কখনোই রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল না। এখন আমার ছেলেকে ফেরত চাই। আমার ছেলে অন্যায় করেনি।’
আদালতে উপস্থিত বাবুলের বাবা হাবিবুর রহমান কালবেলাকে বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জ থেকে যে আদালতে আসব, সেই টাকা নেই। অভাবের সংসারে ছেলেকে ধরেছে পুলিশ। আমার ছেলে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত গার্মেন্টে কাজ করে। সে কখন রাজনীতি করবে। আমার ছেলের মুক্তি চাই। সে আমাকে পোষে। ছেলে না থাকলে আমাকে দেখবে কে?’
বাবুলের বিষয়ে জানতে চাইলে তদন্ত কর্মকর্তা দারুস সালাম থানার উপপরিদর্শক সুলতান মাহমুদ সাকিল কালবেলাকে বলেন, ‘আমি তো আর গ্রেপ্তার করিনি। এ মামলার তদন্তের দায়িত্বে রয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে জানা যাবে বাবুল ঘটনার সঙ্গে জড়িত কি না।’
আদালত সূত্রে জানা গেছে, পুলিশের করা মামলায় বাবুলসহ ৫২ জনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সাকিল তাদের কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
মন্তব্য করুন