রীতা ভৌমিক
০১ আগস্ট ২০২৩, ০২:৪৭ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

এখনো সব প্রতিষ্ঠানে নেই ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডেন্টাল বিভাগের চিকিৎসক ডা. সৈয়দা শাফনাজ ইসলাম। তার ছেলের বয়স আট মাস। গত ১ জুলাই মাতৃত্বকালীন ছুটি কাটিয়ে হাসপাতালে যোগদান করেছেন। কিন্তু তার কর্মস্থলে শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র বা মাতৃদুগ্ধ দান (ব্রেস্ট ফিডিং) কর্নার কোনোটাই নেই। বাধ্য হয়ে সন্তানকে বাড়িতেই রেখে আসতে হচ্ছে। এতে নবজাতক ও প্রসূতি মা উভয়েই বিভিন্ন শারীরিক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন।

ডা. সৈয়দা শাফনাজ ইসলাম কালবেলাকে বলেন, দুই ঘণ্টা পরপর বুকের দুধ পান করানোর কথা থাকলেও আমার বিভাগে সে রকম পরিবেশ না থাকায় তাকে বাড়িতেই রাখতে হচ্ছে। এমনকি রেফ্রিজারেটরের ব্যবস্থা না থাকায় দুধ সংরক্ষণও করতে পারছি না। সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ডিউটি হওয়ায় প্রায় ১০ ঘণ্টা বাড়ির বাইরে থাকতে হচ্ছে তাকে। এ দীর্ঘ সময় ছোট্ট শিশুটি মায়ের দুধ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, শঙ্কা থাকছে অপুষ্টিসহ নানা রোগবালাইয়ের। অন্যদিকে দুধ বুকে জমে ব্যথা এবং চাকা হচ্ছে মায়ের।

আজ মঙ্গলবার থেকে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠানের জাতীয় পুষ্টি সেবার মাধ্যমে মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহ শুরু হলো। এ বছর ১ থেকে ৭ আগস্ট পর্যন্ত সপ্তাহব্যাপী এটি পালিত হবে। এ বছরের প্রতিপাদ্য ‘কর্মজীবী মা-বাবার সহায়ক পরিবেশ গড়ি, মাতৃদুগ্ধ দান নিশ্চিত করি’।

মায়ের দুধের প্রয়োজনীয়তা ও শিশুর স্বাস্থ্যবিষয়ক সচেতনতা বৃদ্ধিতে জোর দিতে শুধু দেশে নয় বিশ্বব্যাপীই মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহ পালিত হচ্ছে। যদিও সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের অব্যবস্থাপনার কারণে অধিকাংশ কর্মজীবী মা তার সন্তানকে নিয়মমাফিক বুকের দুধ পান করাতে পারেন না।

বাংলাদেশ ব্রেস্ট ফিডিং ফাউন্ডেশনের পরিচালক খুরশীদ জাহান বলেন, সব ধরনের কর্মস্থলে শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র এবং মাতৃদুগ্ধ দানের স্থান থাকা দরকার। মাতৃত্বকালীন ছুটি কাটিয়ে কর্মস্থলে যোগদান করার পর মা যাতে সন্তানকে সেখানে নিরাপদে রাখতে পারেন। দুই ঘণ্টা পরপর দুধ খাওয়াতে পারেন। অন্যদিকে যার বাসা কর্মস্থলের কাছে, তিনি যাতে দুধ সংরক্ষণ করতে পারেন, সেজন্য রেফ্রিজারেটরের ব্যবস্থা রাখা।

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ডা. আওরঙ্গজেব আল হোসাইন বলেন, প্রতিটি সরকারি ও বেসরকারি অফিসে শিশুদের জন্য শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র এবং ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার স্থাপন করলে সক্ষমতা বাড়বে। প্রাথমিকভাবে যে কোনো একটি দাপ্তরিক কক্ষে এগুলো চালু করা যেতে পারে।

আওরঙ্গজেব আল হোসাইন আরও বলেন, কর্মক্ষেত্রে মাতৃদুগ্ধ দান নিশ্চিত করতে নারী ও পুরুষ সবাইকে ভূমিকা রাখতে হবে। শিশুর মাতৃদুগ্ধ পানের অধিকার একাধিক আইনেও স্বীকৃত। প্রাতিষ্ঠানিক প্রধানদের সদিচ্ছা ও দাপ্তরিক ক্ষমতাবলে কর্মজীবী মায়ের মাতৃদুগ্ধ দানের উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করতে হবে। এ ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর পরিপত্র জারির মাধ্যমে রাষ্ট্রায়ত্ত সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে নির্দেশনা পাঠাতে পারেন।

বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট বলেন, মায়ের দুধ শিশুর রোগ প্রতিরোধ, সুস্থ মস্তিষ্কের বিকাশ এবং মায়ের সঙ্গে মানসিক বন্ধনকে উদ্দীপিত করে। কর্মজীবী মায়েরা যাতে শিশুকে বুকের দুধ পান করাতে পারেন, সেজন্য বাংলাদেশের অনেক নিয়োগকর্তা এরই মধ্যে নীতিমালা তৈরি করেছেন। তবে আরও কাজ করতে হবে। ইউনিসেফ এ বিষয়ক নীতিগুলোকে বাস্তবায়ন করতে সবসময়ই সরকার ও অংশীদারদের পাশে থাকবে বলেও জানান তিনি।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ঢাকায় বিএনপির মানববন্ধন শুরু

রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় জামায়াতের মানববন্ধন

দখল-দূষণে বিলীনের পথে চরঠিকা-চরপাগলা খাল

দুমড়েমুচড়ে গেল প্রাইভেটকার, সব যাত্রী নিহত

তেঁতুলিয়ায় মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা

পাটুরিয়া ও আরিচায় ফেরি চলাচল শুরু

টিভিতে আজকের খেলা (১০ ডিসেম্বর)

গাজায় যুদ্ধ গিয়ে পঙ্গু ২ হাজার ইসরায়েলি সেনা

ভিলার কাছে এবার ধরাশায়ী আর্সেনাল

কারাগারে বসেই আবারও অনশনে যাচ্ছেন নোবেলজয়ী নার্গিস মোহাম্মদি

১০

বায়ুদূষণের শীর্ষে ঢাকা

১১

গাজায় ছেলের পর ইসরায়েলি মন্ত্রীর ভাগনে নিহত

১২

ভারত থেকে এলো ৭৪৩ টন পেঁয়াজ

১৩

ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সে নিয়োগ

১৪

পাটুরিয়া ও আরিচায় ফেরি চলাচল বন্ধ

১৫

আজ বিশ্ব মানবাধিকার দিবস

১৬

১৬ লাখ টাকা বেতনে চাকরি, পাবেন চিকিৎসা ভাতাও

১৭

অনিদ্রা শনাক্ত করবে ই-ক্যাপসুল

১৮

ইন্টার্ন করার সুযোগ দিচ্ছে ওয়ালটন

১৯

এসএসসি পাসেই বঙ্গবন্ধু হাসপাতালে চাকরি

২০
X