আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এক এগারোর মতো অস্বাভাবিক সরকার গঠনের সুগভীর ষড়যন্ত্র করছে বিএনপি। তাদের একমাত্র টার্গেট হচ্ছে শেখ হাসিনাকে হটানো। গতকাল রোববার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে এক যৌথ সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
আওয়ামী লীগ সম্পাদকমণ্ডলীর সঙ্গে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ, সহযোগী সংগঠন, ঢাকার পার্শ্ববর্তী জেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে এই যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে দলের আহ্বানে নেতাকর্মীদের ঝাঁপিয়ে পড়ার নির্দেশ দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে সরকারকে কোণঠাসা করার চেষ্টা করছে বিএনপি। তাদের সহিংসতার বিরুদ্ধে আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে। রাজনীতিবিদদের বক্তৃতা বিবৃতিতে বেফাঁস কথা না বলার পরামর্শও দেন তিনি। এ ছাড়া দলের নেতাকর্মীদের বিলবোর্ড কিংবা পোস্টার-ফেস্টুন করে প্রচারণা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান।
এ সময় তিনি বলেন, খালেদা জিয়াকে বিদেশে যেতে হলে দেশের প্রচলিত আইন মেনে আদালতের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী যেতে হবে। এ বিষয়ে সব সিদ্ধান্ত আইনসম্মতভাবেই হবে। একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে যেসব সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়েছে, তা মানবিকতার দৃষ্টান্তে পৃথিবীতে বিরল। যারা জাতির পিতার হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত, ২১ আগস্ট শেখ হাসিনার হত্যার পরিকল্পনাকারী—তাদের প্রতি আওয়ামী লীগের উচিত ছিল তেমন ব্যবহার করা। রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপির কথার সীমারেখা মানা উচিত। বর্তমান সরকার অবৈধ দল হলে তাহলে কেন খালেদা জিয়ার মুক্তির কিংবা বিদেশে পাঠানোর জন্য অনুমতি চাওয়া হয়?
আ স ম আবদুর রবও একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামি ছিলেন। খালেদা জিয়ার প্রসঙ্গে আ স ম আবদুর রব উদাহরণ হতে পারে না। হাজী সেলিমও কিন্তু আইনের বাইরে যাওয়ার সুযোগ পাননি।
যৌথ সভা থেকে অক্টোবরজুড়ে নানা কর্মসূচির ঘোষণা দেন ওবায়দুল কাদের। তিনি জানান, ৩ অক্টোবর সাভারের আমিন বাজারে মহাসমাবেশ, ৭ অক্টোবর বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল উদ্বোধন, ১০ অক্টোবর পদ্মা সেতুর রেলসেতুর উদ্বোধন, ২৩ অক্টোবর মেট্রোরেলের মতিঝিল অংশ উদ্বোধন এবং ২৮ অক্টোবর বঙ্গবন্ধু টানেলের উদ্বোধন উপলক্ষে আওয়ামী লীগ সুধী সমাবেশ করবে।
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার এবারের জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে অর্জন নিয়ে ক্ষমতাসীন দল গণসংবর্ধনার সিদ্ধান্ত নিলেও তা প্রধানমন্ত্রী নাকচ করে দিয়েছেন। এ বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, রাস্তা বন্ধ করে কিংবা জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করে আওয়ামী লীগের কোনো কর্মসূচি প্রধানমন্ত্রী পছন্দ করেন না।
এর আগে সকালে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইয়োমা কিমিনোরি সঙ্গে সৌজন্যে সাক্ষাতে তিনি বলেন, সংবিধান অনুযায়ী সরকার দেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার প্রণয়ন কমিটির প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সময় তারা বাংলাদেশে জাপানের সহায়তায় চলমান প্রকল্পের অগ্রগতিসহ দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরও জোরদার করার বিষয়ে আলোচনা করেন।