নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ‘ডেড’ নয়, এখন ‘লাইভ’ তথা জীবন্ত ইস্যু বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার ডেড ইস্যু’ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় গতকাল শনিবার দুপুরে এক আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশকে এই সরকার চরম ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিয়েছে। এই সরকারের এখন থাকার আর কারণ নেই। তার পরও তার নেতা-মন্ত্রীরা বলছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার নাকি এখন ডেড ইস্যু। ডেড ইস্যু হবে কেন? এটাই তো এখন সবচেয়ে লাইভ ইস্যু। কারণ আমরা মনে করি, এই সরকারের এ মুহূর্তে পদত্যাগ করা উচিত। এত চুরি ও দুর্নীতি করেছে এবং একটা সমস্যারও সমাধান করতে পারেনি, সেই সরকারের ক্ষমতায় থাকার কারণ নেই। সেই কারণে আমরা বলেছি, একটা তত্ত্বাবধায়ক সরকার অথবা একটা নিরপেক্ষ সরকার এবং নির্দলীয় সরকারকে দায়িত্ব দিতে হবে। রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নসরুল হামিদ মিলনায়তনে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান কল্যাণ ফ্রন্টের উদ্যোগে সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক গৌতম চক্রবর্তীর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এই আলোচনা সভা হয়। সংগঠনের চেয়ারম্যান বিজন কান্তি সরকারের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব তরুণ কুমার দের পরিচালনায় সভায় গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত চৌধুরী, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান কল্যাণ ফ্রন্টের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সুকোমল বড়ুয়া, তপন চন্দ্র মজুমদার, সুশীল বড়ুয়া, ভাইস চেয়ারম্যান অপর্না রায়, নিতাই চন্দ্র ঘোষ, রমেশ দত্ত, প্রয়াত নেতার ছেলে গৌরব চক্রবর্তী প্রমুখ বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠান গৌতম চক্রবর্তীর সহধর্মিণী ও ফ্রন্টের উপদেষ্টা দিপালী সাহা চক্রবর্তী উপস্থিত ছিলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থাকে তারা পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করে দিয়েছে। কারণ তারা এত চুরি-চামারি করেছে, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হলে কোনোদিনই তারা ক্ষমতায় ফিরে আসা দূরে থাকুক, পার্লামেন্টে ১০ ভাগেরও বেশি ভোট পাবে না। সেই সরকার আজকে ক্ষমতায় বসে আছে। আমরা খুব পরিষ্কার করে বলতে চাই, বাংলাদেশের মানুষ দুটি ইলেকশন দেখেছে ২০১৪ সালে ও ২০১৮ সালে। আবার ওই জায়গায় ফেরত যাওয়ার প্রশ্নই উঠতে পারে না। ২০১৮ সালে আমরা শেখ হাসিনার সংলাপে গিয়েছিলাম এজন্য যে, আলোচনার মাধ্যমে যদি একটা অবস্থা তৈরি হয় সেই অবস্থায় যদি একটা নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে পারি তাহলে হয়তোবা জনগণের ইচ্ছা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে পারব।
সম্প্রতি সংসদে দেওয়া আইনমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় তিনি আরও বলেন, আমরা তো দুবার প্রতারণার শিকার হয়েছি। থার্ড টাইম এদেশের মানুষ আর প্রতারণার শিকার হবে না। আমরা পরিষ্কার করে বলতে চাই, আপনাদের এসব কথায় কেউ ভুলবে না। কারণ কখনই আপনারা প্রমিজ রক্ষা করেননি। আমরা কোনো কথা শুনতে চাই না। আগে পদত্যাগ করুন, তারপর সংসদ বিলুপ্ত করে নির্বাচনকালীন একটা নির্দলীয় সরকার গঠন করার জন্য সেই ব্যবস্থা নিন। নতুন নির্বাচন কমিশন নতুন পার্লামেন্ট নির্বাচন করবে।
মন্তব্য করুন