ডিম খেলে অনেকেরই অ্যালার্জি দেখা দিতে পারে। ছোট-বড় যে কারোর মধ্যেই এ সমস্যা দেখা দিতে পারে। তবে অনেক সময় আমরা বুঝতে পারি না যে, ডিম থেকেই অ্যালার্জিটা হচ্ছে। এ কারণেও দেখা যায়, অ্যালার্জির মাত্রা বেড়ে গেছে। এ ক্ষেত্রে কাঁচা ডিম স্পর্শ করলেও অনেকের অ্যালার্জি দেখা দেয়।
ডিমের অ্যালার্জির লক্ষণ
n মুখ ফুলে যেতে পারে ও লাল হতে পারে।
n এক্সিমার ভাব দেখা দিতে পারে, যাতে করে কাশি, হাঁচিও দেখা দিতে পারে।
n পেটে ফোলাভাব বা ব্যথা হবে।
n গা গোলানো, বমি, শ্বাস-প্রশ্বাসের সময় ঘড়ঘড় শব্দ হওয়া, বিশেষ ক্ষেত্রে শ্বাসকষ্ট, নাক দিয়ে পানি পড়া, হৃৎস্পন্দন বেড়ে যাওয়া এবং কান বা গলা চুলকাতে পারে।
কেন হয়
আমাদের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা মাঝেমধ্যে ভুল করে। যখন ডিমের কিছু প্রোটিনকে ভুল করে ক্ষতিকর ভেবে বসে তখন ইমিউন সিস্টেম তাতে সাড়া দেয়। আর তাতেই দেখা যায় অ্যালার্জি। তবে এর মধ্যে ডিমের সাদা অংশের প্রতিই বেশি অ্যালার্জি দেখা দেয়।
চিকিৎসা ও করণীয়
n প্রথমত শিশুর কীসে কীসে অ্যালার্জি আছে তা বের করে সেসব খাবার সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে। অ্যালার্জিক রিঅ্যাকশন দেখা দিলে চিকিৎসাকেন্দ্রে গিয়ে
এপিনেফ্রিন ইনজেকশন বা
অন্য জরুরি চিকিৎসাসেবা দিতে হবে।
n এ ধরনের অ্যালার্জিক খাবারের বেলায় অভিভাবকদের সতর্ক থাকতে হবে। প্যাকেট করা খাবারের উপাদানগুলো ভালো করে পড়ে নিতে হবে।
n বাইরে কোনো রেস্তোরাঁয় খাওয়ার ক্ষেত্রেও বলে দিতে হবে অ্যালার্জির কথা। যেমন ফ্রায়েড রাইস খেতে হলে তাতে ডিম দেওয়া চলবে না।
n বুকের দুধপান করা শিশুর যদি ডিমে অ্যালার্জি থাকে, তবে মাও ডিম খেতে পারবে না।
পরীক্ষা
ডিমে অ্যালার্জি আছে কি না, এর জন্য স্কিন প্রিক টেস্ট, রক্ত পরীক্ষা, ফুড চ্যালেঞ্জ ইত্যাদি পরীক্ষা করানো যেতে পারে। তবে এসবের মধ্যে স্কিন প্রিক টেস্টই বেশি জনপ্রিয়। এতে ত্বকে যৎসামান্য অ্যালার্জিক উপাদান লাগিয়ে দেখা হয় ত্বক ফুলে উঠছে কি না। ফুলে উঠলেই বুঝতে হবে ওই উপাদানে অ্যালার্জি রয়েছে।
ডিমের বিকল্প
সয়াবিন : সয়াবিন প্রোটিনের ভালো উৎস। ডিমে অ্যালার্জি থাকলে এটি খেতে পারেন। এতে মিনারেল, ভিটামিন বি কমপ্লেক্স ও ভিটামিন এ আছে।
ব্রকোলি : ব্রকোলির প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, শর্করা, আয়রন, ভিটামিন এ ও ভিটামিন সি-সহ নানান পুষ্টিকর উপাদান ডিমের ঘাটতি পূরণ করতে পারে।
কুমড়ার বীজ : একে বলা হয় সুপারফুড। আছে ভিটামিন বি, লোহা, ম্যাগনেশিয়াম, জিঙ্ক ও প্রোটিন।
বাদাম ও বীজ : কাঠবাদাম ডিমের ভালো বিকল্প। এতে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ক্যান্সারও ঠেকায়। চীনাবাদামে থাকে আয়রন, নিয়াসিন, ফোলেট, ক্যালসিয়াম ও জিঙ্ক। শিশুকে বিভিন্ন খাদ্যের সঙ্গে মিশিয়ে দিতে পারেন শণ বীজের গুঁড়া ও চিয়া সিড। এগুলোতে ডিমের মতো প্রচুর প্রোটিন, ওমেগা থ্রি আছে। বাড়তি আছে ফাইবার এবং আরও কিছু উপকারী যৌগ।
অন্যান্য : টফু, দই, বাটারমিল্ক, এরারুট পাউডার, নাট বাটার, জেলাটিন এসবও হতে পারে ডিমের বিকল্প। তবে এ ক্ষেত্রে একটি-দুটি খাবারের ওপর ভরসা না করে অল্প পরিমাণে সবই খাওয়ানো যেতে পারে।
লেখক : এইচএম, ডিএমসিসি
মন্তব্য করুন