মেঘের চাদরে মোড়ানো পাহাড়, সাদা কুয়াশা ঢেকে আছে ধবধবে সবুজ বৃক্ষ। আকাশের মেঘপুঞ্জিগুলো ঘুরে বেড়াচ্ছে এদিক-সেদিক। কখনো কখনো সবুজ পাহাড় ঘিরে ধরছে সাদা তুলার মতো মেঘপুঞ্জি। কখনো বৃষ্টি আবার কখনো মেঘ ভেদ করে রোদের দেখা মেলে। এ ধরনের মেঘ আর বৃষ্টির খেলা পাহাড়ের পথে পথে। এমন মিতালি দেখতে কে না চায়! এ ধরনের প্রাকৃতিক দৃশ্যে ভরপুর পার্বত্য জেলা বান্দরবান। এ মিতালি দেখতে প্রতিবছর ঈদ, পূজার ছুটি এবং শীত মৌসুমে হাজারো মানুষের পদচারণা হয় নয়নাভিরাম পার্বত্য এ জেলায়। আর পর্যটকের আগমনে চাঙ্গা থাকে পাহাড়ের অর্থনীতি, হাসি থাকে পর্যটন-সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের। কিন্তু সেই হাসিমাখা মুখে নেমে এসেছে কালো মেঘের ছায়া। তবে কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফের) এবং জঙ্গিগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সন্ত্রাসবিরোধী কার্যক্রম শুরু করে।
হোটেল হিল ভিউয়ের ম্যানেজার পারভেজ জানান, গত সাত-আট মাস পর্যন্ত তেমন ব্যবসা হয়নি। পাহাড়ের পরিবেশ ছিল একেবারেই অশান্ত। কেএনএফ এবং নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে গোলাগুলি হয়েছে অনেকবার। এসেছে পর্যটক ভ্রমণে বারবার নিষেধাজ্ঞা। এর ফলে পর্যটকদের মনে ঢুকে গেছে আতঙ্ক। সেই আতঙ্ক থেকে আর পর্যটকদের তেমন আগমন ঘটেনি বান্দরবান জেলায়। করোনা মহামারির চেয়েও কেএনএফের কারণে বেশি ক্ষতি হয়েছে পর্যটন ব্যবসায়। আর্থিক ক্ষতি সামলাতে না পেরে হোটেল প্লাজা, হোটেল অরণ্য, হোটেল হিলটনের মতো বেশ পরিচিত আরও কয়েকটি হোটেল বিক্রির ঘোষণা দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন বান্দরবানে হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম। পাহাড়ের পর্যটন ব্যবসায় ধস এবং কেএনএফের সঙ্গে শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির আলাপ কতটুকু এগোল—এমন প্রশ্নে শান্তি কমিটির মুখপাত্র কাঞ্চনজয় তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, পাহাড়ে অস্থিরতার কারণে শুধু পর্যটন ব্যবসায় নয়, সব ব্যবসায় ধস দেখা দিয়েছে। পাহাড়ে শান্তি ফেরাতে কেএনএফের সঙ্গে জুম মিটিংয়ের মাধ্যমে কয়েকবার শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির বৈঠক হয়েছে। একেবারে সরাসরি বৈঠকেরও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।