পিরোজপুরের নেছারাবাদে চুরির দায়ে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করেন মুক্তাহার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক জিকো মজুমদার। তিনি নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে পাঁচ মিনিট একত্রিশ সেকেন্ডের এ নির্যাতনের ভিডিও লাইভ ধারণ করেন।
ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ভাইরাল হয়ে যায়। এতে উপজেলাব্যাপী মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
ভিডিওতে দেখা যায়, শুভ বেপারী (১৪) নামে অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রকে গাছের সঙ্গে বেঁধে রেখেছেন ওই শিক্ষক। ছাত্রটি তার হাত ছেড়ে দেওয়ার জন্য বারবার অনুরোধ করছেন। তিনটি নারকেল চুরি করেছে বলে স্বীকার করেছে ওই স্কুলছাত্র। শিক্ষককে তখন বলতে শোনা যায়, ‘ও গাঁজা (পিনিক) খায়, সব সময় পিনিকে থাকে! তোকে পিটিয়ে মেরে ফেলব।’
স্কুলছাত্র শুভ বেপারী সাগরকান্দা গ্রামের মিলন ব্যাপারীর ছেলে।
সরেজমিনে জানা যায়, মুক্তাহার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক জিকো মজুমদার তার নিজ বাড়িতে অবস্থানকালে তার বাগান থেকে তিনটি নারিকেল নিয়ে যাওয়ার সময় ওই স্কুলছাত্রকে হাতেনাতে ধরে ফেলে। এ সময় তার বড় বোন স্কুলশিক্ষিকার (একই স্কুলের শিক্ষক) সহায়তায় তাকে একটি গাছের সঙ্গে বেঁধে ফেলে। এ সময় স্কুলশিক্ষক জিকো মজুমদারের ব্যবহৃত মোবাইল থেকে লাইভ চলছিল। এ বিষয়ে স্কুলপড়ুয়া ছাত্র শুভ বেপারী জানায়, আমার বাবার কাছে একজন লোক দেড় হাজার টাকা পাবে। আজকে দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ওই টাকা পরিশোধ করার জন্য আমি তার বাগান থেকে তিনটি নারিকেল না বলে নিয়ে আসছিলাম। তার কাছে আমি স্বীকার করেছি। তারপরও আমাকে গাছের সঙ্গে বেঁধে রেখে বিভিন্ন ধরনের বকাঝকা দিয়েছে।
এ বিষয়ে স্কুলশিক্ষক জিকো মজুমদার বলেন, শুভ নামে ওই ছেলেটি প্রায়ই আমাদের বাগান থেকে নারকেল-সুপারি না বলে নিয়ে যায়। আজ আমি তাকে হাতেনাতে ধরে ফেলেছি। তাই রাগের মাথায় তাকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নিজেকে কন্ট্রোল করতে না পেরে বকাঝকা ও গালগাল করেছি। তবে ফেসবুকে লাইভ দেওয়াটা ঠিক হয়নি।
স্কুলছাত্রের বাবা মিলন বেপারী বলেন, আমার ছেলে ছোট থেকেই একটু বেশি দুষ্টুমি করে। সে যদি না বলে কোনো কিছু নিয়ে আসে তাহলে অন্যায় করেছে। তাই বলে তাকে নির্মমভাবে গাছের সঙ্গে বেঁধে রেখে গালমন্দ না করে আমাকে খবর দিলে আমি তার শাসন করতাম। এখন আমি সমাজ ও ওদের স্কুলের সবার সামনে মুখ দেখাতে পারব না। আমি ওই স্কুলশিক্ষকের বিচার চাই।
মন্তব্য করুন