কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০৩:৪৪ পিএম
আপডেট : ০৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০৪:১৬ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

পরকীয়ার বলি শিশু আমেনা হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার ২

গ্রেপ্তার ফাতেমা বেগম (২৫) ও মো. জাফর (৩৬)। ছবি : কালবেলা
গ্রেপ্তার ফাতেমা বেগম (২৫) ও মো. জাফর (৩৬)। ছবি : কালবেলা

রাজধানীর পল্লবীতে মায়ের পরকীয়ার বলি ছয় মাসের শিশু আমেনা হত্যার ক্লুলেস চাঞ্চল্যকর ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটনসহ হত্যার ঘটনায় জড়িত দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে ডিএমপির পল্লবী থানা পুলিশ।

গ্রেপ্তাররা হলন- শিশুটির মা মোসা. ফাতেমা বেগম (২৫) ও ফাতেমা বেগমের পরকীয়া প্রেমিক মো. জাফর (৩৬)।

শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) গভীর রাতে পল্লবী থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

পল্লবী থানা সূত্রে জানা যায়, গত ৬ ডিসেম্বর বিকেল আনুমানিক ৩টা ১০ মিনিটে দিয়াবাড়ির মেট্রোরেলের ১২৪নং পিলার সংলগ্ন লেকপাড় থেকে একটি ব্যাগের মধ্যে কাপড়ে মোড়ানো অবস্থায় একটি শিশুর মৃতদেহ পাওয়া যায়। শিশুটির সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির সময় পুলিশ দেখতে পায় তার গলায় সন্দেহজনক আঘাতের দাগ রয়েছে।

এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে পল্লবী থানায় অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে নিয়মিত হত্যা মামলা করে।

মামলাটি তদন্তের একপর্যায়ে মৃত শিশুটির পরিচয় শনাক্ত করা হয়। পুলিশ নিশ্চিত হয় শিশুটির নাম আমেনা ও তার বয়স ৬ মাস। পরিচয় শনাক্তের পর গোপন তথ্যের ভিত্তিতে শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) গভীর রাতে পল্লবী এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে মৃত শিশুটির মা মোসা. ফাতেমা বেগমকে (২৫) সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেপ্তার করা হয়।

পরবর্তী সময়ে ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের ঘটনাস্থল সরেজমিনে পরিদর্শন, নিবিড় তদন্ত ও ফাতেমা বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ নিশ্চিত হয় মো. জাফর (৩৬) নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে শিশুটির মা ফাতেমা বেগমের পরকীয়ার কারণে শিশু হত্যার ঘটনাটি ঘটে। ওই রাতেই জাফরকে গ্রেপ্তার করে পল্লবী থানা পুলিশ।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে থানা পুলিশ সূত্রে আরও জানা যায়, গ্রেপ্তার দুজনই বিবাহিত এবং পল্লবী এলাকায় বসবাস করত। জাফর একটি গার্মেন্টসে কাজ করে। শিশুটির মা ফাতেমা পূর্বে ওই গার্মেন্টসে কাজ করার সুবাদে জাফরের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

ফাতেমার স্বামী গ্রিলের মেকানিক হিসেবে কাজ করায় কর্মসূত্রে বাসার বাইরে থাকার সুযোগে তারা দীর্ঘদিন ধরে পরকীয়ায় লিপ্ত ছিল। তাদের মাঝে নিয়মিত শারীরিক সম্পর্ক হতো। গত বছরের ৫ ডিসেম্বর রাত আনুমানিক ৮টায় জাফর ফাতেমার বাসায় শারীরিক সম্পর্কের জন্য আসে।

শিশুটির কান্নাকাটির কারণে তাদের শারীরিক সম্পর্কে ব্যাঘাত ঘটায় শিশুটিকে প্রথমে স্যুপের মধ্যে ঘুমের ঔষধ মিশিয়ে খাইয়ে অচেতন করা হয় এবং পরবর্তী সময়ে বালিশ চাপা দিয়ে ও গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।

পরবর্তীতে বিছানার চাদর দিয়ে শিশুটির লাশ মুড়িয়ে কাপড়ের একটি শপিং ব্যাগে ঢুকানো হয়। অতপর জাফর শপিং ব্যাগে করে লাশটি নিয়ে মেট্রোরেলের একটি পিলারের কাছে ফেলে আসে। এ হত্যাকাণ্ড সংক্রান্তে গ্রেপ্তার ফাতেমা বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে।

ক্লুলেস চাঞ্চল্যকর এই শিশু হত্যা মামলার রহস্য উদ্ঘাটন সম্পর্কে থানা সূত্রে আরও জানা যায়, মৃত শিশুটির পরিচয় উদঘাটনের জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়াতে প্রচারণা চালানো হয়, যার ফলে শিশুটির পরিচয় উদ্ঘাটিত হয়। পরবর্তী সময়ে নিবিড় তদন্তের ফলে এই চাঞ্চল্যকর মামলার প্রকৃত তথ্য উদ্ঘাটিত হয়।

গ্রেপ্তার জাফর ছয় দিনের পুলিশ রিমান্ডে পল্লবী থানা পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। পুলিশ রিমান্ডে জাফরের নিবিড় জিজ্ঞাসাবাদ ও মামলার সুষ্ঠু তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

১৫ জুলাই : আজকের নামাজের সময়সূচি

ঘরে ঘরে জ্বর ডেঙ্গু-করোনা নিয়ে আতঙ্ক

প্রিপেইড মিটারে রিচার্জ বন্ধ, ভোগান্তিতে ৪২ হাজার গ্রাহক

শিক্ষানীতি মানছেন না সিদ্ধিরগঞ্জের ৪ শিক্ষক

অপসারণের দাবিতে সড়ক অবরোধ, ভয়ে পালালেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা

সিভাসুতে তিন কর্মকর্তার পদাবনতি

দেশের শত্রুরাই পিআর নির্বাচনের বিরোধিতা করতে পারে : চরমোনাই পীর

ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী ঘোষণা, দুটিতে লড়বেন ফয়জুল করীম

দুই সন্তানসহ গৃহবধূকে গলা কেটে হত্যা, দেবর নিখোঁজ

ওয়ার্ডপ্রেস কন্ট্রিবিউশনের গর্বিত মুখ বাংলাদেশের নাসিম

১০

বরিশালে এনসিপির পদযাত্র‍ায় ২০ সহস্রাধিক জনতার জমায়াতের প্রস্তুতি

১১

১৪৮ বছরের টেস্ট ইতিহাসে নতুন করে লেখালেন স্টার্ক

১২

মালয়েশিয়ায় প্রবেশের সময় ৯৬ বাংলাদেশি আটক

১৩

চেয়ারে শহীদদের স্বজনেরা, মেঝেতে বসেন ৫ উপদেষ্টা

১৪

শ্যামলীতে ছিনতাইকারীদের একজন গ্রেপ্তার, মোটরসাইকেল জব্দ

১৫

নারীদের বীরত্বপূর্ণ অবদানে জুলাই উইমেন্স ডে উদযাপন

১৬

এসএসসি-এইচএসসিতে ভালো ফল করা শিক্ষার্থীদের জন্য সুখবর

১৭

মাকে জীবনের জন্য হুমকি দাবি, বাড়িতে ঢুকতে দেয়নি ছেলে 

১৮

চরমোনাইর দরবারে এনসিপির কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদল

১৯

মিটফোর্ডে ব্যবসায়ী হত্যার প্রতিবাদে এনসিপির বিক্ষোভ মিছিল 

২০
X