

ছুটির সকালে পরিবারের সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে নাশতা করার মজাই আলাদা। প্রতিদিনের পাউরুটি-ডিম বা বিস্কুটের রুটিন একদিনের জন্য সরিয়ে রেখে গরম গরম লুচি আর আলুর তরকারির স্বাদ—বাঙালির ঘরে এর জুড়ি নেই।
রান্নাঘর থেকে তেলে লুচি ফুলে ওঠার গন্ধ এলেই যেন মনটা অন্যরকম হয়ে যায়। তখন ডায়েটের কথা ভুলেই যেতে ইচ্ছে করে! তবে লুচির গল্প এখানেই শেষ নয়। এর সঙ্গে যুক্ত আছে কচুরি আর পুরিও—ভারতীয় উপমহাদেশের তিনটি জনপ্রিয় খাবার। বাইরে থেকে দেখলে তিনটিকেই একই রকম লাগে, কিন্তু ভেতরের ব্যাপারটা কিন্তু আলাদা।
লুচি
লুচি সাধারণত ময়দা, সামান্য নুন, চিনি ও তেল (ময়ান) মিশিয়ে খামির বানিয়ে তৈরি করা হয়। গোল করে বেলে গরম তেলে ভাজা—এটাই লুচির পরিচিত রূপ। বাঙালির বাড়িতে বিশেষ করে অতিথি এলে বা ছুটির সকাল হলে লুচি প্রায় অপরিহার্য আইটেম।
বাংলাদেশে লুচি খুবই জনপ্রিয়, বিশেষ করে সাদা আলুর দম, নরম বেগুন ভর্তা, ডাল বা গরুর মাংসের সঙ্গে লুচির আলাদা আনন্দ আছে।
পুরি
পুরি লুচির মতোই দেখতে, তবে সাধারণত আটার সঙ্গে তৈরি করা হয়। কিছু অঞ্চলে অবশ্য ময়দাও ব্যবহার করা হয়। পুরির বিশেষত্ব হলো—এতে হালকা পুর থাকে, যেমন ডালবাটা বা আলুর ভর্তা। তাই ‘পুরি’ নামেই বোঝা যায় ভেতরে কিছু ভরা থাকে।
উত্তর ভারতের প্রভাব থাকা এলাকায় পুরি বেশি জনপ্রিয়। বাংলাদেশে অনেক দোকান এখন লুচিকে পুরি বলে বিক্রি করে, যা হিন্দি ভাষার প্রভাবে নামের বদল ঘটেছে বলা যায়।
কচুরি
কচুরি আর পুরির মধ্যে মূল পার্থক্য হলো পুরের পরিমাণ। কচুরিতে পুর ভরাট হয় ভালোভাবে—ঠিকঠাক ঠাসা থাকে। বাংলায় কচুরির জনপ্রিয়তা অনেক পুরোনো।
কড়াইশুটির কচুরি, হিংয়ের কচুরি, ডাল কচুরি, মাংসের কচুরি এসব বাংলাদেশেও বিদ্যমান, বিশেষ করে শীতকালে মটরশুঁটির কচুরি বেশ জনপ্রিয়।
রান্নার পরিবর্তন ও আধুনিক ধারা
আগে পুরি আর কচুরির জন্য আলাদা করে পুর বানিয়ে ভরতে হতো, যা সময়সাপেক্ষ। এখন অনেকেই ময়দা বা আটার সঙ্গে পুর মেশানো অবস্থায় খামির বানিয়ে নেন, এতে দ্রুত কাজ করা যায়। স্বাদও ভালোই হয়।
লুচি: বাড়ির নাশতা, অতিথি আপ্যায়ন
কচুরি: উৎসব-অনুষ্ঠান, শীতকাল, বিশেষ দিনের নাশতা
পুরি: রাস্তায়, খাবারের দোকানে, ভ্রমণের সময়
বাংলাদেশে লুচি সবচেয়ে জনপ্রিয় হলেও কচুরি ধীরে ধীরে নানা স্বাদের কারণে আবার জনপ্রিয়তা ফিরে পাচ্ছে।
মন্তব্য করুন