

মুখে দুর্গন্ধ এমন একটি সমস্যা, যা অনেক সময় মুখে বলা যায় না; কিন্তু মনে মনে সবাই ভোগে। কারও সঙ্গে কথা বলতে গেলে অস্বস্তি লাগে, আত্মবিশ্বাস কমে যায়। বন্ধু, সহকর্মী বা পরিবারের সদস্যদের সামনে মন খুলে কথা বলতেও দ্বিধা কাজ করে। অনেক সময় নিজের অজান্তেই অন্যরা একটু দূরে সরে যায়—এটাও খুব বিব্রতকর।
চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় মুখের দুর্গন্ধকে বলা হয় হ্যালিটোসিস। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এটি কোনো বড় রোগ নয়। সাধারণ কিছু অভ্যাস আর নিয়মিত যত্ন নিলেই এই সমস্যা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনা যায়। চলুন জেনে নেওয়া যাক মুখে দুর্গন্ধ হওয়ার কারণ এবং ঘরোয়া উপায়ে কীভাবে এটি দূর করা যায়।
মুখ পরিষ্কার না রাখা: দাঁত, জিহ্বা ও মাড়ি ঠিকমতো পরিষ্কার না হলে মুখে দুর্গন্ধ হওয়াটাই স্বাভাবিক।
ব্যাকটেরিয়া জমে যাওয়া: জিহ্বার ওপর, দাঁতের ফাঁকে ও মাড়ির আশপাশে জমে থাকা খাবারের কণা থেকে ব্যাকটেরিয়া জন্মায়। এই ব্যাকটেরিয়াগুলো থেকেই দুর্গন্ধযুক্ত গ্যাস তৈরি হয়।
মুখ শুষ্ক হয়ে যাওয়া: লালা মুখ পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। মুখ শুকনো থাকলে ব্যাকটেরিয়া দ্রুত বাড়ে এবং দুর্গন্ধ হয়।
খাবারের প্রভাব: পেঁয়াজ, রসুন বা তীব্র গন্ধযুক্ত খাবার খাওয়ার পর অনেক সময় মুখে দুর্গন্ধ দেখা দেয়।
শারীরিক সমস্যা: কখনো কখনো সাইনাস, টনসিল স্টোন বা হজমের সমস্যার কারণেও মুখে দুর্গন্ধ হতে পারে।
জিহ্বা পরিষ্কার রাখুন
জিহ্বা ব্যাকটেরিয়ার সবচেয়ে বড় আশ্রয়স্থল। প্রতিদিন দাঁত ব্রাশ করার পর টাং স্ক্র্যাবার দিয়ে জিহ্বা ভালোভাবে পরিষ্কার করুন। এতে জিহ্বার ওপর জমে থাকা সাদা বা হলুদ স্তর দূর হবে।
সঠিকভাবে দাঁত ব্রাশ ও ফ্লস করুন
দিনে অন্তত দুবার, সকালে ও রাতে ২ মিনিট করে দাঁত ব্রাশ করুন।
দিনে একবার ডেন্টাল ফ্লস ব্যবহার করুন, যাতে দাঁতের ফাঁকে জমে থাকা খাবার বের হয়ে যায়।
প্রাকৃতিক মাউথওয়াশ ব্যবহার করুন
পর্যাপ্ত পানি পান করুন, যাতে মুখ শুষ্ক না থাকে।
হালকা গরম পানিতে এক চা চামচ লবণ মিশিয়ে কুলকুচি করলে মুখের জীবাণু কমে।
এক গ্লাস পানিতে এক চা চামচ বেকিং সোডা মিশিয়ে কুলকুচি করলে মুখের দুর্গন্ধ অনেকটাই কমে।
ভেষজ উপাদান চিবান
পুদিনা বা পার্সলে চিবালে তাৎক্ষণিকভাবে মুখের গন্ধ কমে।
দারচিনি বা লবঙ্গ চিবালে এর অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল গুণ দুর্গন্ধ দূর করতে সাহায্য করে।
নিয়মিত দাঁত ও মুখের যত্ন নেওয়ার পরও যদি দুর্গন্ধ না কমে, তাহলে শরীরের ভেতরের কোনো সমস্যার ইঙ্গিত থাকতে পারে। সেক্ষেত্রে দেরি না করে ডেন্টিস্ট বা গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজিস্টের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
সঠিক পরিচর্যা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও ঘরোয়া উপায় মেনে চললে মুখের দুর্গন্ধ দূর করা সম্ভব। নিজের আত্মবিশ্বাস ফেরাতে আজ থেকেই একটু যত্ন নিন।
সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা
মন্তব্য করুন