ড. মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়া
প্রকাশ : ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:১৫ পিএম
আপডেট : ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:২৯ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
ড. মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়ার নিবন্ধ

‘যুদ্ধে নয় বরং পৃথিবী রক্ষায় অর্থ ব্যয় করা দরকার’

ড. মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়া। ছবি : সৌজন্যে
ড. মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়া। ছবি : সৌজন্যে

বর্তমানে পৃথিবীর আলোচিত এবং সংকটময় বিষয়গুলোর মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তন অন্যতম প্রধান একটি বিষয়। জলবায়ুর পরিবর্তনের কারণে সমুদ্রপৃষ্ঠের দীর্ঘমেয়াদি পরিবর্তন ঘটছে। জলবায়ুর নেতিবাচক পরিবর্তনের কারণে পৃথিবীর তাপমাত্রা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির ফলে সমগ্র বিশ্বের প্রাকৃতিক পরিবেশের উপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিচ্ছে। ফলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নানা প্রকারের প্রাকৃতিক দুর্যোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। যেমন বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, খরা, অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি, নদী-ভাঙন, ভূমিধ্বস, শিলাবৃষ্টি ইত্যাদি। বৃদ্ধি পাচ্ছে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ও ভূমিকম্প।

UNFCCC’র দেওয়া তথ্য বলছে, বিংশ শতাব্দীতে সমুদ্রপৃষ্ঠের গড় উচ্চতা ১০-২০ সেন্টিমিটার বেড়েছে এবং আগামীতে আরো ১৮-৫৯ সেন্টিমিটার পর্যন্ত বাড়তে পারে। আর এতে মালদ্বীপসহ তলিয়ে যাবে উপকূলবর্তী আমাদের বাংলাদেশ। মালদ্বীপ এবং বাংলাদেশের পাশাপাশি বর্তমান বিশ্বের প্রতিটি দেশই জলবায়ুর নেতিবাচক পরিবর্তনের ফলে কমবেশি ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।

জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রতিক্রিয়া বন্ধে জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ নিতে আমরা ব্যর্থ হলে আজকের পৃথিবী অচিরেই অস্তিত্ব সংকটে ভুগতে যাচ্ছে এতে কোনো সন্দেহ নেই। কেননা জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক ধারা চলতে থাকলে অদূর ভবিষ্যতে পৃথিবী মানুষসহ অন্যান্য প্রাণীদের বসবাস অনুপযোগী হয়ে পড়বে। আগামী প্রজন্মকে সমৃদ্ধ, নিরাপদ এবং বসবাসযোগ্য এক পৃথিবীর নিশ্চয়তা প্রদানের লক্ষ্যে জলবায়ুর নেতিবাচক প্রভাব মোকাবেলায় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা উন্নত বিশ্বের রাষ্ট্রগুলোকে যুদ্ধে অর্থ ব্যয়ের পরিবর্তে জলবায়ু প্রভাব মোকাবেলায় তা ব্যয়ের আহ্বান জানিয়েছেন। গত সোমবার ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘ন্যাশনাল অ্যাডাপশন প্ল্যান (ন্যাপ) এক্সপো-২০২৪’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যুদ্ধে অস্ত্র এবং অর্থ ব্যয় না করে সেই টাকাগুলো জলবায়ু পরিবর্তনে যদি ব্যয় করা হত তো বিশ^টা রক্ষা পেত।’

বর্তমান বিশ্বে জলবায়ু পরিবর্তন যেখানে একটা আতঙ্কের বিষয় সেখানে এই ব্যাপারে উন্নত বিশ্বের রাষ্ট্রগুলোর নিষ্ক্রিয় ভূমিকা হতাশ করার মতো। এই ব্যাপারে তাদের আগ্রহ বলতে শুধু জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ধরনের সম্মেলন করার মধ্যেই সীমাবদ্ধ। জলবায়ুর নেতিবাচক পরিবর্তনের বিষয়ে বিশ্বের প্রতিটি দেশ যেখানে চিন্তিত সেখানে উন্নত রাষ্ট্রগুলো বিভিন্ন দেশের অভ্যন্তরণীন যুদ্ধ-বিগ্রহ নিয়ে ব্যস্ত।

যুদ্ধের পিছনে প্রতিবছর ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন ডলার অর্থ তারা খরচ করলেও জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব মোকাবেলায় অর্থ ব্যয়ে তাদের কোন ধরনের আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না। সাম্প্রতিক তথ্য বলছে, চলমান যুদ্ধ ও নতুন করে সংঘাতের ভয় থেকে বিশ্বে সামরিক ব্যয়ে নতুন রেকর্ড তৈরি হয়েছে। গত বছর তথা ২০২৩ সালে বৈশ্বিক সামরিক ব্যয় ছিল ২ দশমিক ৪ ট্রিলিয়ন তথা ২ লাখ ৪০ হাজার কোটি ডলার। যা এ যাবৎকালের মধ্যে সর্বোচ্চ। সুইডেনের প্রতিষ্ঠান স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (এসআইপিআরআই) প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। গত সোমবার (২২ এপ্রিল, ২০২৪) এসআইপিআরআই বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এবারের প্রতিবেদন বলছে, বিশ্বজুড়ে গত বছর সামরিক ব্যয় আগের বছরের চেয়ে ৬ দশমিক ৮ শতাংশ বেড়েছে।

শুধু তাই নয়, ২০০৯ সালের পর প্রথমবারের মতো বিশ্বের সব ভৌগোলিক অঞ্চলে সামরিক ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাবের ফলে বিশ্ব যেখানে হুমকির মুখে সেখানে যুদ্ধ-বিগ্রহের পিছনে বিশ্বের উন্নত রাষ্ট্রগুলোর ক্রমবর্ধমান সামরিক ব্যয়ের চিত্র সত্যিই আমাদের অনেক হতাশ করে। যুদ্ধ-বিগ্রহ পিছনের প্রতিবছর যে পরিমাণ অর্থ ব্যয় করা হচ্ছে তা যদি জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় ব্যয় করা হতো তাহলে বিশ্ব তার অস্তিত্ব সংকট থেকে রক্ষা পেতো।

যুক্তরাষ্ট্রসহ উন্নত দেশগুলোর কার্বন নিঃসরণের মাত্রা নিয়ে অবিরাম কথামালা চলতে থাকলেও তা প্রতিনিয়ত বেড়েই চলছে। তাদের পরিবেশ বিধ্বংসী কর্মকাণ্ডের খেসারত টানতে হচ্ছে বাংলাদেশের মতো দেশগুলোকে। বাংলাদেশসহ বিশ্ব অর্থনীতিতে জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব নিয়ে উদ্বিগ্ন বিশ্ব নেতৃত্ব আমাদের গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনানুযায়ী বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবেলায় বিভিন্ন বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে ২০১০ সালে জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট গঠন করা হয়েছে।

এর ট্রাস্টের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে- সরকারের উন্নয়ন বা অনুন্নয়ন বাজেটের বাইরে বিশেষ ক্ষেত্র হিসেবে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি মোকাবেলায় এই ট্রাস্টের তহবিল ব্যবহার করা; জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কিত বিশেষ কর্মসূচি বাস্তবায়ন ও টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে উপযুক্ত কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা; জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় তৃণমূল পর্যায়ে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর প্রাতিষ্ঠানিক, সামাজিক সক্ষমতা বৃদ্ধি ও মানবসম্পদ উন্নয়নসংক্রান্ত প্রকল্প বা কর্মসূচি গ্রহণ করা; জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় অভিযোজন, প্রশমন, প্রযুক্তি হস্তান্তর এবং অর্থ ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ব্যবহারিক গবেষণা করা এবং গবেষণালব্ধ ফলাফলের আলোকে উপযুক্ত বিস্তারসহ বা পাইলট কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা; জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে খাপখাওয়ানো এবং ক্ষতিগ্রস্ততা মোকাবেলার জন্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন মেয়াদি পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং এর ভিত্তিতে কর্মসূচি বা প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা; পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ে স্থাপিত জলবায়ু পরিবর্তন ইউনিটসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে এবং পরিবেশ অধিদপ্তরে গঠিত জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত জলবায়ু পরিবর্তন সেল বা ফোকাল পয়েন্টকে কার্যকর ভূমিকা রাখতে সহায়তা করা; জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট সম্ভাব্য পরিবেশ বিপর্যয় সম্পর্কে জনসচেতনতা সৃষ্টি ও বিপর্যয় মোকাবেলার জন্য প্রাতিষ্ঠানিক, সামাজিক বা স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্যে উপযুক্ত কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়নে সহায়তা করা; এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ-পরবর্তী জরুরি কার্যক্রমে সহায়তা করা ইত্যাদি।

জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবিলায় বিভিন্ন ধরনের কৌশল গ্রহণের পাশাপাশি বাংলাদেশ সবসময়ই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সাথে কাজ করে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নয়ন সহযোগীদের সাথে নিয়ে ‘বাংলাদেশ ক্লাইমেট ডেভেলপমেন্ট পার্টনারশীপ-বিসিডিপি’ গঠন করা হয়েছে। এতে সকল পক্ষ ঐকমত্য হয়েছে। আমরা আশা করি, মুজিব ক্লাইমেট প্রসপারিটি প্ল্যান, ন্যাশনাল অ্যাডাপটেশন প্ল্যান, ন্যাশনাল ডিটারমাইন্ড কন্ট্রিবিউশন ও বাংলাদেশের রুপকল্প-২০৪১ বাস্তবায়নে বিসিডিপি তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রাখবে।

পাশাপাশি বাংলাদেশ ইতোমধ্যে জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা (এনএপি) ২০২২-২০৫০ প্রণয়ন করেছে। ২০২২ সালের অক্টোবরে এটি এইএনএফসিসিসি-তে দাখিল করা হয়েছে। এই পরিকল্পনায় বাংলাদেশ ১১টি জলবায়ু ঝুঁকিযুক্ত এলাকাতে ৮টি খাতে ১১৩টি অগ্রাধিকারমূলক কার্যক্রম চিহ্নিত করেছে। এছাড়াও বাংলাদেশ আগামী ২৭ বছরে ন্যাপ-এ গৃহীত কর্মপরিকল্পনাসমূহ বাস্তবায়নের জন্য প্রায় ২৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের প্রয়োজন। এজন্য সুনির্দিষ্ট তহবিল ও অতিরিক্ত আর্থিক সংস্থানের ব্যবস্থা গ্রহণের ব্যাপারেও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ধনী দেশ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

বিশ্বে জলবায়ুর এই নেতিবাচক প্রভাব মোকাবেলায় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার রয়েছে জোড়ালো অবদান। তিনি জলবায়ু বিষয়ক সর্বোচ্চ বিশ্ব ফোরাম, জাতিসংঘের ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন ক্লাইমেট চেঞ্জ (ইউএনএফসিসিসি)- এর কনফারেন্স অব দ্য পার্টিজ (সিওপি)- এ ২০১৫ সালে জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত ও চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় দূরদৃষ্টিসম্পন্ন নেতৃত্বের স্বীকৃতি হিসেবে পরিবেশ বিষয়ক সর্বোচ্চ সম্মান ‘চ্যাম্পিয়নস অব দ্য আর্থ’ সম্মাননায় ভূষিত হয়েছিলেন। রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার এই সম্মাননা ছিল, জলবায়ু পরিবর্তনের সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর বিশ্ব ফোরামে স্বল্পোন্নত দেশসমূহের মুখপাত্র হিসেবে নেতৃত্ব দেওয়ার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি।

এছাড়াও জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবেলায় অবদান রাখার পাশাপাশি বিশ্বজনীন আলোচনায় স্বীয় স্বার্থ সংরক্ষণে সদা সচেষ্ট রয়েছে শেখ হাসিনার বাংলাদেশ। ২০১৯ সালের জুলাই মাসে জলবায়ু বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলন ‘গ্লোবাল কমিশন অন অ্যাডাপটেশন’র (জিসিএ) ঢাকা বৈঠকে প্রধান অতিথির ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় অভিযোজন ও সামলে নেওয়ার বিষয়ে বাংলাদেশের কিছু ধারণা ও অভিজ্ঞতা আছে বিনিময় করার মতো। আমি শুধু নিজের দেশ নিয়ে ভাবি না। গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের কারণে অনেক ছোট ছোট দ্বীপপুঞ্জ হারিয়ে যাবে। তখন সেখানকার মানুষেরা কোথায় যাবে, সে কথাও আমাদের ভাবতে হবে।’

জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট প্রতিকূলতা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় অনন্য দক্ষতা ও সাফল্য প্রদর্শনের সুবাদে সমগ্র বিশ্বের কাছে আজ একটি রোল মডেল হিসেবে পরিগণিত হচ্ছে বাংলাদেশ এবং গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। এই ব্যাপারে জাতিসংঘের মহাসচিব জলবায়ু পরিবর্তনের অভিযোজনের জন্য বাংলাদেশকে একটি মডেল হিসেবে বর্ণনা করে জানিয়েছেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের অভিযোজনে বাংলাদেশ সেরা শিক্ষক।’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করে তিনি জানিয়েছেন, ‘শেখ হাসিনা বিশ্ব নেতাদের মধ্যে অন্যতম যিনি জলবায়ু পরিবর্তনের সমস্যাটি নিয়ে সামনে থেকেই নেতৃত্ব দিচ্ছেন।’

তবে আমাদের নিজেদের অস্তিত্ব পৃথিবীতে টিকিয়ে রাখার লক্ষ্যে বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট সমস্যার সমাধানে বিশ্বের সকল নেতৃত্বকে সমানভাবে এবং সমানতালে এগিয়ে আসা দরকার। কারণ বিশ্বের উন্নত রাষ্ট্র এবং তাদের নেতৃবৃন্দের সহযোগিতা ছাড়া গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে একা এই গুরুত্বপূর্ণ বৈশ্বিক সমস্যার সমাধান করা সম্ভব হবেনা। এমতাবস্থায় বিশ্বের সকল দেশ ও নেতৃবৃন্দের উচিত যুদ্ধ-বিগ্রহের পিছনে না ছুটে জলবায়ু পরিবর্তনের এই নেতিবাচক প্রভাব মোকাবেলায় এগিয়ে আসা। যুদ্ধ-বিগ্রহের পিছনে অর্থ ব্যয় না করে জলবায়ু পরিবর্তনের এই নেতিবাচক প্রভাব মোকাবেলায় ঐসব অর্থ ব্যয় করা।

তাহলে জলবায়ুর পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব থেকে মুক্তির পাশাপাশি যুদ্ধ-বিগ্রহের ফলে সৃষ্ট সমস্যা থেকে বেঁচে যাবে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বসবাসরত মানুষগুলো। আর পৃথিবী বেঁচে যাবে অস্তিত্ব সংকটের হাত থেকে। বর্তমান বিশ্বে এই মুহূর্তে জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব মোকাবেলার চেয়ে আর গুরুত্বপূর্ণ কোন সমস্যা থাকতে পারেনা। সুতরাং, আমাদের আগত প্রজন্মকে একটি সুন্দর, সমৃদ্ধ এবং নিরাপদ পৃথিবী উপহার দিতে হলে বিশ্বের উন্নত ও সমৃদ্ধ রাষ্ট্রগুলোকে যুদ্ধে নয় বরং পৃথিবী রক্ষায় জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় অর্থ ব্যয় করা দরকার।

ড. মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়া: উপাচার্য, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান

[ নিবন্ধ, সাক্ষাৎকার, প্রতিক্রিয়া প্রভৃতিতে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। দৈনিক কালবেলার সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে নিবন্ধ ও সাক্ষাৎকারে প্রকাশিত মত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে। প্রকাশিত লেখাটির ব্যাখ্যা বা বিশ্লেষণ, তথ্য-উপাত্ত, রাজনৈতিক, আইনগতসহ যাবতীয় বিষয়ের দায়ভার লেখকের, দৈনিক কালবেলা কর্তৃপক্ষের নয়। ]
কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

কুড়িগ্রামে মুক্তিযোদ্ধাকে প্রাণনাশের হুমকি

৫ মে : নামাজের সময়সূচি

মুঠোফোন হারানোকে কেন্দ্র করে তুলকালামকাণ্ড

রোববার রাজধানীর যেসব এলাকায় যাবেন না

নীলক্ষেতের হোটেলে আগুন

ভুল চিকিৎসায় মা ও নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ, হাসপাতালে ভাঙচুর

পানিতে ডুবে প্রাণ গেল শিশুর

অনলাইন ডেলিভারী ম্যান সেজে পাচার করত গাঁজা

উপজেলা নির্বাচন / শোকজের জবাব না দেওয়ায় দুই নেতাকে বহিষ্কার করলো বিএনপি

দুর্ঘটনার সাড়ে ৩১ ঘণ্টা পর ঢাকা-রাজশাহী রুটে ট্রেন চলাচল শুরু

১০

ঈদের আগে পেঁয়াজের মূল্য ৫০ টাকায় নামবে : ভোক্তার  ডিজি

১১

এনএসআই পরিচয়ে প্রেমের সম্পর্ক, লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ

১২

কর অব্যাহতির মেয়াদ বৃদ্ধির আহ্বান তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী

১৩

যমুনা ইলেকট্রনিকসের ১৩ শোরুম উদ্বোধন করলেন বুবলী  

১৪

বাকৃবিতে আপত্তিকর অবস্থায় ধরা পড়েছে ছাত্রী-শিক্ষক

১৫

পর্যটক এক্সপ্রেস / দেরিতে ট্রেন ছাড়ায় ভোগান্তিতে যাত্রীরা

১৬

অ্যাফিলিয়েট সদস্যদের জন্য কাজ করতে চাই তাদের একজন হয়ে : লুৎফি হায়দার চৌধুরী

১৭

গাজীপুরে ছুরিকাঘাতে প্রাণ গেল কলেজ ছাত্রের

১৮

সকাল ৯টার মধ্যে ৮০ কিমি বেগে ঝড়ের আভাস

১৯

‘চ্যালেঞ্জের মধ্যেই বাংলাদেশে বাস্তব অগ্রগতি দেখতে পাচ্ছি’

২০
*/ ?>
X