বন্যা দুর্গতদের ত্রাণসহায়তা দিল এরফান গ্রুপ
বন্যা দুর্গতদের জন্য ত্রাণসহায়তা দিয়েছে এরফান গ্রুপ। শনিবার (৩১ আগস্ট) প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের একটি প্রতিনিধি দল সেসব সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করেন। কর্মকর্তারা জানান, এরফান গ্রুপের পক্ষ থেকে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে বিতরণের জন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী দেওয়া হয়েছে।  প্রসঙ্গত, ভারী বর্ষণ এবং ভারত থেকে নেমে আসা উজানের ঢলে নোয়াখালী, ফেনী, কুমিল্লাসহ দেশের ১২ জেলায় ভয়াবহ বন্যা দেখা দেয়। এতে ঘরবাড়ি ও ফসলের ক্ষেত ডুবে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। ঘটে প্রাণহানির ঘটনা।   এসব এলাকার বন্যাদুর্গতদের পাশে ত্রাণ নিয়ে সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানও দাঁড়িয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় এরফান গ্রুপ বন্যাকবলিত মানুষের সাহায্যে এগিয়ে এসেছে।
০২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

সম্পাদকীয় / ত্রাণসহায়তা বাড়াতে হবে
দেশের উত্তর-পূর্ব ও উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলের কয়েকটি জেলায় বন্যা দেখা দিয়েছে। কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সোয়া লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। শত শত ঘরবাড়ি পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। এতে বন্যাদুর্গতরা উঁচু স্থানে ও ফ্লাড সেন্টারে অবস্থান নিয়েছে। বন্যা আক্রান্ত হওয়ায় প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়সহ মাদ্রাসার পাঠদান বন্ধ ঘোষণা করেছে প্রশাসন। উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও অতিবৃষ্টির কারণে কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র ও ধরলা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। তবে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হাতিয়া পয়েন্টে ৭৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও ধরলা নদীর পানি ৪ সেন্টিমিটার কমে ২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়া জেলার ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপৎসীমা চিলমারী নৌবন্দর পয়েন্টে ৭১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। হঠাৎ করে পানি বৃদ্ধির ফলে বিপাকে পড়েছে বানভাসি মানুষ। তারা ছুটছে আশ্রয়ের খোঁজে। বেশিরভাগ বানভাসি মানুষ নৌকার মধ্যে রাত্রিযাপন করছে। সরকারি প্রশাসন থেকে দুর্গতদের পাশে দাঁড়ালেও এখনো সবার কাছে পৌঁছেনি সরকারি সহায়তা। অন্যদিকে তিন দফা বন্যায় নিঃস্ব সিলেটের মানুষ। বন্যা শেষ হতে না হতেই ফের বন্যায় ভোগান্তির শেষ নেই মানুষের। বিভিন্ন উপজেলায় যাদের ঘরবাড়িতে পানি উঠেছে তাদের যেন সব শেষ। মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই, খাবার নেই। বিশুদ্ধ পানি, স্যানিটেশন ব্যবস্থার তীব্র সংকটের কারণে পানিবাহিত রোগবালাইয়ের শঙ্কা দেখা দিয়েছে। পৌর এলাকার নরসিংহপুরসহ কয়েকটি এলাকায় ডাইক ভেঙে এবং ডাইক উপচে নদীর পানি লোকালয়ে ঢুকে প্রায় ৮৫টি গ্রামের লাখো মানুষ দুর্ভোগে পড়েছে। তিনবার বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়ে উপজেলার নিম্নাঞ্চলের লোকজনের ভোগান্তি চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। বন্যাকবলিত এলাকার স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, মসজিদ গোরস্তানসহ গ্রামীণ রাস্তাঘাট এবং শেওলা-জকিগঞ্জ সড়কের একটি অংশ পানিতে তলিয়ে গেছে। চলমান পরিস্থিতিতে রান্না করা খাবার, বিশুদ্ধ পানি, স্যানিটেশন, পানিবাহিত রোগবালাই ও গবাদি পশুর খাবার সংকটে চরম দুর্ভোগে বানভাসিরা। রাঙামাটিতে বন্যার পানিতে পড়ে দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। একজনের লাশ বাঘাইছড়ি পৌর এলাকার বাঘাইছড়ি গ্রামসংলগ্ন নারিকেলবাগান এলাকা থেকে বৃহস্পতিবার ভোরে উদ্ধার করা হয়। আরেকজনের লাশ বুধবার বিকেলে বাঘাইছড়ি উপজেলার বঙ্গলতলী ইউনিয়নের বালুখালী গ্রাম থেকে উদ্ধার হয়। মৃতরা হলো পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মিল্টন চাকমার ছেলে স্কুলছাত্র কৃতিত্ব চাকমা (১৩) এবং বালুখালী গ্রামের মহিমী কুমারের মেয়ে সোহামনি চাকমা (১১)। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমাদের দেশে দুর্যোগের মাত্রা নিরূপণ করা হয় প্রাণহানির সংখ্যার নিরিখে। মানুষের মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত আমাদের সরকারি কর্তৃপক্ষ কোনো দুর্যোগকে যথেষ্ট গুরুত্বের সঙ্গে আমলে নিতে চায় না। এতদিন বন্যাদুর্গত এলাকাগুলো থেকে কোনো মানুষের মৃত্যুর খবর আসেনি বলে আমরা এ দুর্যোগের মাত্রা উপলব্ধি করতে পারিনি। আমরা মনে করি, এ দুর্যোগের শিকার কয়েক লাখ পরিবারের মানুষের জন্য যে ত্রাণসহায়তার ব্যবস্থা করা হয়েছে, তা প্রয়োজনের তুলনায় অতি সামান্য। উপরন্তু এ ত্রাণ বিতরণেও অনেক সীমাবদ্ধতা আছে। এরই মধ্যে খবর এসেছে, প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোর বন্যাদুর্গত মানুষরা ত্রাণ পাচ্ছে না। এ অবস্থায় ত্রাণসহায়তা আরও অনেক বাড়াতে হবে। আমাদের প্রত্যাশা, বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা অসহায় বন্যার্তদের পাশে দাঁড়াবেন।
০৬ জুলাই, ২০২৪

গাজায় নৌ ও স্থলপথে ত্রাণসহায়তা দেওয়ার আহ্বান মার্কিন সিনেটরের
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় সমুদ্র ও স্থলপথে মানবিক ত্রাণসহায়তা দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন সেনেটর জেফ মার্কলে। শনিবার (২ মার্চ) যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক গাজায় বিমানে করে খাবার দেওয়ার পর তিনি প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসনের প্রতি এই আহ্বান জানান। খবর আলজাজিরার। ওরেগন রাজ্যের ডেমোক্র্যাটিক সিনেটর জেফ মার্কলে এক এক্সবার্তায় লিখেন, গাজায় নিদারুণভাবে প্রয়োজনীয় মানবিক ত্রাণসহায়তা বিমান থেকে ফেলা শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এটি একটি মহান পদক্ষেপ। সংকটের এই সময়ে তুলনামূলক হারে ত্রাণসহায়তা দিতে সমুদ্র ও স্থলপথের বিষয়টি যোগ করুন। তিনি আরও বলেন, আমি যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানানোর পাশাপাশি গাজায় প্রয়োজনীয় ত্রাণসহায়তা—খাদ্য, ওষুধ ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র—ব্যাপকহারে প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার আহ্বান অব্যাহত রেখেছি। আমরা দুটি বিষয়কে সহজ করতে পারে এবং আমাদের দুটাই করতে হবে। শনিবার (২ মার্চ) তিনটি সামরিক বিমানে করে গাজার উপকূলীয় এলাকায় প্রথমবারের মতো খাবার দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এক বিবৃতিতে মার্কিন সামরিক বাহিনীর সেন্ট্রাল কমান্ড জানিয়েছে, শনিবার তিনটি সি-১৩০ বিমান থেকে ৩৮ হাজারের বেশি খাবার গাজার উপকূলীয় এলাকায় ফেলা হয়েছে। স্থল করিডোর ও রুটের মাধ্যমে গাজায় ত্রাণের প্রবাহ বাড়াতে টেকসই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে বিমানে করে এসব খাবার দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার (১ মার্চ) বিমানে করে গাজায় যুক্তরাষ্ট্রের খাবার সরবরাহের পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ত্রাণসহায়তা নিতে গিয়ে ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হওয়ার পরই তিনি এমন ঘোষণা দিয়েছিলেন। গত বৃহস্পতিবার ভোরে গাজা সিটির কাছে ফিলিস্তিনিরা একটি ত্রাণবাহী গাড়ির কাছে যাওয়ার চেষ্টা করলে গুলি চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। এতে শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়। ত্রাণের জন্য অপেক্ষারত মানুষকে গুলি করে হত্যা করে বিশ্বজুড়ে সমালোচনার মুখে পড়ে ইসরায়েল। এই ঘটনার পরপর গাজায় ত্রাণসহায়তার পরিমাণ বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দেন বাইডেন। এর আগে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, মিসর, জর্ডানসহ অন্যান্য দেশ গাজায় বিমান থেকে ত্রাণসহায়তা ফেলেছে। তবে এবারই প্রথমবারের মতো এই পথে হাঁটল ইসরায়েলের প্রধান মিত্র যুক্তরাষ্ট্র। বাইডেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলেছন, গত বৃহস্পতিবারের বেদনাদায়ক ঘটনা গাজায় ভয়াবহ মানবিক পরিস্থিতি মোকাবিলায় ত্রাণসহায়তা সম্প্রসারণ ও টেকসই করার গুরুত্ব সামনে নিয়ে এসেছে। তবে দাতব্য সংস্থাগুলো বলছে, বিমানে করে ত্রাণসহায়তা ফলপ্রসূ কোনো উপায় নয়। বাস্তুচ্যুত গাজার বাসিন্দা মেধাত তাহের বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, এই ধরনের পদ্ধতি খুবই নগণ্য। এটি কি একটি স্কুলের জন্য যথেষ্ট হবে? এটি কি ১০ হাজার মানুসের জন্য যথেষ্ট? এর চেয়ে স্থল সীমান্ত ক্রসিংয়ের মাধ্যমে সাহায্য পাঠানো ভালো।
০৩ মার্চ, ২০২৪

গাজায় পাঠানো ত্রাণসহায়তা ‘মহাসমুদ্রে এক ফোঁটা পানির মতো’
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের অবরোধের কারণে চরম মানবিক সংকট তৈরি হয়েছে। তাদের অবরোধের কারণে সেখানে বাইরে থেকে কোনো সহায়তা প্রবেশ করতে না পারায় এই অঞ্চলে খাদ্য, ওষুধ ও পানীয় জলের সংকট দেখা দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে যুদ্ধের ১৫তম দিনে গতকাল শনিবার রাফাহ ক্রসিং দিয়ে গাজায় মাত্র ২০ ট্রাক ত্রাণসহায়তা প্রবেশ করেছে। ২৩ লাখের মানুষের জন্য এত স্বল্প পরিমাণ সহায়তা নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন গাজাবাসী। তারা বলছেন, এত স্বল্প পরিমাণ ত্রাণসহায়তা এসেছে যে তা ‘মহাসমুদ্রে এক ফোঁটা পানি মতো’। গত ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পরপর গাজায় পূর্ণ অবরোধ আরোপ করে ইসরায়েল। এর অংশ হিসেবে সেখানে খাবার, পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেয় দেশটি। এ ছাড়া যুদ্ধ শুরুর পরপর গাজায় ত্রাণসহায়তা প্রবেশের ৩টি পথ ইসরায়েল ও মিসর বন্ধ করে দিলে গাজায় মানবিক সংকট দেখা দেয়। এরপর কয়েক দিনের আলোচনার পর শনিবার মিসর রাফাহ সীমান্ত ক্রসিং খুলে দিলে গাজায় ওষুধ, খাবার ও পানি নিয়ে মাত্র ২০টি ট্রাক প্রবেশ করে। যদিও আলোচনা শুরুর পর দিকে প্রথম চালানে সেখানে ১০০ ট্রাক প্রবেশের কথা ছিল। এ ছাড়া এবারের চালানে কোনো জ্বালানিও দেওয়া হয়নি। জ্বালানি না দেওয়ায় হতাশা প্রকাশ করে ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা বলেছেন, যুদ্ধ শুরুর আগের তুলনায় গতকাল মাত্র তিন শতাংশ সহায়তা এসেছে। যুদ্ধ শুরুর আগে প্রতিদিন গড়ে গাজায় ত্রাণসহায়তা নিয়ে সাড়ে চারশ ট্রাক প্রবেশ করত। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, ত্রাণসহায়তায় জ্বালানি না দেওয়ায় রোগী ও আহতদের জীবন ঝুঁকির মধ্যে থাকবে। কেননা জ্বালানির অভাবে নিয়মিত কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারছে না গাজার হাসপাতালগুলো। অন্যদিকে কেউ কেউ বলছেন, যে পরিমাণ সহায়তা এসেছে তা দিয়ে গাজার বর্তমান সংকটজনক পরিস্থিতিতে কোনো পরিবর্তন আসবে না। নাবিলা আল-দাবাহ নামে এক ফিলিস্তিনি বলেছেন, ‘এটি মহাসমুদ্রে এক ফোঁটা পানি মতো। এটি লোক দেখানো। এটা মানুষের চোখে ধুলো দেওয়া।’
২২ অক্টোবর, ২০২৩
X