আফ্রিকার দেশ নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলে জঙ্গি ও সশস্ত্র ডাকাতদের লক্ষ্য করে ছোড়া সেনাবাহিনীর একটি ড্রোন ‘ভুল করে’ ধর্মীয় উৎসবে গিয়ে পড়লে দেশটির অন্তত ৮৫ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। গতকাল (৪ ডিসেম্বর) সোমবার স্থানীয় কর্তৃপক্ষ, সামরিক বাহিনী ও বাসিন্দারা এসব তথ্য জানিয়েছেন। খবর আফ্রিকা নিউজের।
গত রোববার গভীর রাতে কাদুনা রাজ্যের তুদুন বিরি গ্রামে এই ড্রোন হামলা হয়েছে। এ ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দিয়ে কাদুনা রাজ্যের গভর্নর উবা সানি বলেছেন, ঈদে-মিলাদুন নবী (সা.) উপলক্ষে রোববার এক উৎসবের আয়োজন করেন তুদুন বিরি গ্রামের মুসল্লিরা। জঙ্গি ও সশস্ত্র ডাকাতদের লক্ষ্য করে ছোড়া সেনাবাহিনীর একটি ড্রোন ওই অনুষ্ঠানে এসে পড়লে অনেক মুসল্লি হতাহত হয়েছেন।
ইদ্রিস দাহিরু নামে ওই এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, ড্রোন হামলায় নিহত ৮৫ জনকে আমরা কবর দিয়েছি। ৬০ জনের বেশি আহত মানুষকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। আজ মঙ্গলবার নাইজেরিয়ার ন্যাশনাল ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট এজেন্সিও ৮৫ জনকে দাফনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
ইদ্রিস বলেন, প্রথম বোমা ফেলার সময় আমি ঘরের ভেতরে ছিলাম...। বোমার শব্দে আমরা ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। এরপর সেখানে দ্বিতীয় বোমাটি ফেলা হয়। আমার খালা, আমার ভাইয়ের স্ত্রী, তার ছয় সন্তান, আমার চার ভাইয়ের স্ত্রী নিহত হয়েছেন। আমার বড় ভাইয়ের পরিবারের সবাই মারা গেছেন।
তবে নিজদের কর্মী ও স্বেচ্ছাসেবকদের বরাত দিয়ে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল নাইজেরিয়ার পরিচালক ইসা সানুসি বলেছেন, রোববারের হামলায় ১২০ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে অনেক শিশু ছিল। আরও মরদেহ উদ্ধার করা হচ্ছে।
নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলে সশস্ত্র বিদ্রোহীরা বেশ তৎপর। তাদের দমনে দেশটির সেনাবাহিনী প্রায়ই বিমান হামলা করে থাকে। কখনো কখনো এলাকাবাসী এসব হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়ে যান। ২০১৪ সাল থেকে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আবাসিক এলাকায় ১৪ বার এ ধরনের হামলার ঘটনা ঘটেছে।
মন্তব্য করুন