রোহিঙ্গাদের নিয়ে আশঙ্কার কথা জানালেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত রোহিঙ্গাদের নিয়ে আশঙ্কার কথা জানালেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। শুক্রবার (৩১ মে) কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনকালে তিনি এ কথা বলেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গাদের নিয়ে আগে থেকে করা আশঙ্কার কিছু কিছু আলামত এখন দেখা যাচ্ছে। তারা খুবই হিংস্র। রোহিঙ্গাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। আমরা আগে থেকে বলে আসছিলাম, এদের দ্রুত স্বদেশ বা মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো না গেলে অস্থিরতা তৈরি হতে পারে। এখানে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসীদের হাব তৈরি হতে পারে। অস্ত্রের ঝনঝনানি হতে পারে। অনেক কিছুই হতে পারে। এই হতে পারার মধ্যে কিছু কিছু আলামত এখন দেখতে পাচ্ছি। এদিন বেলা ১১টার দিকে উখিয়ার ১৯ নম্বর ঘোনার পাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এপিবিএন কার্যালয়ে যান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। দুপুর সোয়া ১২টা পর্যন্ত সভা করেন এপিবিএন কর্মকর্তাদের সঙ্গে। এরপর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে যারা যুদ্ধ করছেন তাদের কয়েকজনের আনাগোনা এখানে (রোহিঙ্গা ক্যাম্পে) দেখা যাচ্ছে। সবচেয়ে বড় ভয়ের বিষয় হচ্ছে, আমাদের দেশ কোনো মাদক উৎপাদন করে না। কিন্তু মিয়ানমার থেকে মাদক আসছে অনেক আগে থেকে। এখন ক্যাম্পের কিছু লোক মাদক কারবারের সঙ্গে জড়িয়ে গেছেন। আমরা তাদের চিহ্নিত করার চেষ্টা করছি। একই সঙ্গে অস্ত্র ও হত্যায় জড়িতদেরও চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে। এদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা আমাদের মূল কাজ। তিনি বলেন, আজ রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এসে নিরাপত্তায় নিয়োজিত এপিবিএন-এর সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে তাদের চ্যালেঞ্জ, সুবিধা-অসুবিধা জেনেছি। তাদের বলেছি, বাংলাদেশ একটি ইতিহাস সৃষ্টি করেছে জঙ্গি-সন্ত্রাস দমনের মধ্য দিয়ে। এপিবিএন দায়িত্ব পালন করছে বলেই রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণ এবং নিয়ন্ত্রিত। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মিয়ানমারের কথা ও কাজে মিল নেই বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক সংস্থাসহ বাংলাদেশ রোহিঙ্গা ফেরত পাঠানো নিয়ে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। মিয়ানমার একটি অস্থিতিশীল দেশ। বিভিন্ন সময় মিয়ানমারের সঙ্গে রোহিঙ্গা ফেরত নিয়ে নানা চুক্তি বা সমঝোতায় স্বাক্ষর হলেও তা ওই দেশটির কারণে অগ্রগতি হয়নি। আশা করি, মিয়ানমার দ্রুত সময়ের মধ্যে রোহিঙ্গাদের ফেরত নেবে। এরপর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রোহিঙ্গা ক্যাম্পটির এ-৭ ব্লকের পাহাড়ি এলাকা পরিদর্শন করেন। সেখান থেকে তিনি যান টেকনাফে গিয়ে বিজিবি সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন। পরিদর্শনকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে পুলিশের মহাপরিদর্শক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. মিজানুর রহমান, এপিবিএন প্রধান সেলিম মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর, অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক আনোয়ার হোসেন, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি নুরে আলম মিনা, ৮ এপিবিএনের অধিনায়ক মো. আমির জাফর, ১৪ এপিবিএনের অধিনায়ক মো. ইকবাল, ১৬ এপিবিএনের অধিনায়ক হাসান বারী এবং সংশ্লিষ্ট আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
২২ ঘণ্টা আগে

আনারের খুনিদের প্রায় চিহ্নিত করে ফেলেছি : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
ভারতের কলকাতায় ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আনোয়ারুল আজিম আনারের খুনিদের প্রায় চিহ্নিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান।  বৃহস্পতিবার (২৩ মে) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।  স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ঝিনাইদহের সংসদ সদস্য আনারকে যারা হত্যা করেছে, তাদের প্রায় চিহ্নিত করে ফেলেছি। আমাদের শুধু ঘোষণা বাকি। দুই দেশের গোয়েন্দা সংস্থা একমত হতে পারলে ঘোষণা দেব। তিনি বলেন, আমরা মৃতদেহটা এখন উদ্ধার করতে পারিনি। আপনারা যা শুনেছেন, আমরা সেগুলোই শুনেছি। যে পর্যন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করতে না পারব, সে পর্যন্ত অফিসিয়ালি আপনাদের কিছু বলতে পারছি না। এ বিষয়ে দুই দেশের গোয়েন্দা সংস্থা কাজ করছে। আনোয়ারুল আজিম আমাদের ঝিনাইদহ-৪ আসনের তিনবারের এমপি, ওই বর্ডার এলাকাটা সন্ত্রাসকবলিত। সে এলাকারই তিনি এমপি। কী কারণে হত্যাকাণ্ড হয়েছে সে বিষয়ে আমরা সুনিশ্চিত না হয়ে কিছুই বলা ঠিক হবে না। আমরা আগে সুনিশ্চিত হই, তারপর আপনাদের বিস্তারিত জানাব। আসাদুজ্জামান খান বলেন, এখন পর্যন্ত নতুন কিছু আমাদের কাছে আসেনি। আমাদের পুলিশ, আমাদের গোয়েন্দা সংস্থা, ভারতের পুলিশ এবং ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা মিলে কাজ করছি; যাতে আরও কিছু তথ্য বেরিয়ে আসে। আমরা সুনিশ্চিত হয়েছি তাকে হত্যা করা হয়েছে। যারা হত্যা করেছে, তাদের মুখ থেকে আমরা এগুলো শুনেছি। তবে, মৃতদেহ এখনো উদ্ধার করতে পারেনি। আমরা মৃতদেহ উদ্ধারের চেষ্টা করে যাচ্ছি। তিনি বলেন, তদন্তের খাতিরে আমরা আপনাদের বলেছিলাম, তদন্তটা মোটামুটি গুছিয়ে এনে আপনাদের জানাব। আমরা এখন নতুন কিছু আপডেট এই মুহূর্তে দিতে পারছি। এই মুহূর্তে আর কোনো সংবাদ আমরা পাইনি। এটুকু বলতে পারি, প্রায় আমরা চিহ্নিত করেছি।  মন্ত্রী আরও বলেন, একজন সংসদ সদস্যকে হত্যা করা হয়েছে, এ বিষয়টি আমরা খুব গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। প্রধানমন্ত্রীসহ সবাই গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন বিষয়টি। আশা করছি খুব অল্প সময়ে আমরা আপনাদের কিছু জানাতে পারব। এদিকে, এই হত্যার ঘটনায় তদন্ত করছে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগও। ইতোমধ্যেই তারা মূল হোতাসহ কয়েকজনকে আটকও করেছে। ডিবির তদন্ত থেকে জানা যায়, পরিকল্পনা অনুযায়ী কলকাতার নিউ টাউনের সঞ্জীবনী গার্ডেনে ট্রিপ্লেক্স ফ্ল্যাট ভাড়া করেন মূল পরিকল্পনাকারী এমপির বন্ধু ও ব্যবসায়িক পার্টনার আক্তারুজ্জামান শাহীন। আগে থেকেই ভারতে অবস্থান করা কয়েক সন্ত্রাসীর সঙ্গে চুক্তি করেন তিনি। এরপর ৫ কোটি টাকার চুক্তিতে বাংলাদেশ থেকে ওই ফ্ল্যাটে নিয়ে যান মূল কিলার চরমপন্থি নেতা আমানুল্লাহকে। ঢাকার তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, শাহীন কিলার আমানুল্লাহকে নিয়ে কলকাতায় যান গত ৩০ এপ্রিল। সংসদ সদস্য আনার হত্যার ছক কষেন ওই ফ্ল্যাটে বসেই। এরপর সেখান থেকে ১০ মে দেশে ফেরেন শাহীন। তখন ওই ফ্ল্যাটে অবস্থান করেন শাহীনের বান্ধবী শিলাস্তি রহমান, মূল কিলার আমানুল্লাহ, জিহাদ, সিয়াম, মোস্তাফিজ ও ফয়সাল। ১৩ মে রাতে হত্যা মিশন বাস্তবায়ন করে আমানুল্লাহ, শিলাস্তি ও ফয়সাল দেশে ফেরেন। তাদের আটকের পর হত্যারহস্য উদ্ঘাটন হয়। তাদের কাছে পাওয়া যায় এমপি আনার হত্যার লোমহর্ষক কাহিনি। তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ওই ফ্ল্যাটে যাওয়ার পর আনারকে শাহীনের টাকার জন্য চাপ দেন আমানুল্লাহ ও তার সহযোগীরা। একপর্যায়ে আনারের গলায় চাপাতি ধরেন আমানুল্লাহ। এ নিয়ে ধস্তাধস্তি হয়। পরে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধে তাকে হত্যা করা হয়। ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) এক কর্মকর্তা কালবেলাকে জানিয়েছেন, কলকাতার ওই ফ্ল্যাট থেকে সব তথ্য দেশে অবস্থানকারী মূলহোতা শাহীনকে জানানো হয়। হত্যার পর আমানুল্লাহ ঘটনা জানান শাহীনকে। তখন শাহীন লাশ গুম করার নির্দেশ দেন। আমানুল্লাহকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে ডিবির ওই কর্মকর্তা বলেন, শাহীন আমানকে নির্দেশ দেন লাশ গুম করতে। সেই নির্দেশ পেয়ে আমান এমপি আনারের লাশটি কেটে টুকরো টুকরো করেন। এরপর বাইরে থেকে কিনে আনা হয় সাদা পলিথিন, ব্লিচিং পাউডার ও দুটি বড় সাইজের ট্রলি ব্যাগ। লাশ টুকরো করার পর তা ঢোকানো হয় পৃথক দুটি ট্রলিতে। লাশের টুকরোগুলো ব্যাগে ঢোকানোর পর বাইরে থেকে আনা ব্লিচিং পাউডার দিয়ে ওই ফ্ল্যাটের মেঝে পরিষ্কার করে ফেলা হয়। আনোয়ারুল আজিম হত্যার তদন্তের বিষয়ে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, ঘটনাটি মর্মান্তিক। তিনি (আনার) ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ এলাকার জনপ্রিয় জনপ্রতিনিধি। তার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এলাকার মানুষ স্তম্ভিত। আমরা গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছি। এটি নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ড, এটা মনে করেই তদন্ত কর্মকর্তারা কাজ করছেন। নিবিড়ভাবে ভারতীয় পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। কয়েকজন আমাদের কাছে আছে, তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাচ্ছি। তদন্তের স্বার্থে আমরা সবকিছু বলতে পারছি না।  
২৩ মে, ২০২৪

এমপি হত্যায় ভারতীয়রা নয়, বাংলাদেশিরা জড়িত : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
ঝিনাইদহের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যায় ভারতীরা নয়, বাংলাদেশিরা জড়িত বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। হত্যার সঙ্গে জড়িত তিনজনকে বাংলাদেশ পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। বুধবার (২২ মে) দুপুরে নিজ বাসভবনে মন্ত্রী এ বিষয়ে কথা বলেন। ভারতে গিয়ে বাংলাদেশের এমপি খুনের শিকার হওয়াতে দুদেশের সম্পর্কের কোনো ছেদ ঘটবে কি না জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ভারতের সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্ব রয়েছে। তারা আমাদের সব ধরনের কোঅপারেশন করছে। ভারত সরকারের যতটুকু দায়িত্ব তা তারা করছে। সম্পর্কের ফাটল ধরবে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। কারণ এই ঘটনায় ভারতের কেউ জড়িত নয়। এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে যে ইনফরমেশন তাতে আমাদের দেশের মানুষই এ হত্যার সঙ্গে জড়িত। এর আগে এমপি মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ঝিনাইদহের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম চিকিৎসার জন্য ১২ মে ভারত গিয়েছিলেন। ভারতে যাওয়ার দুদিন পর তার আর কোন খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। এতে উদ্বিগ্ন হয়ে তার মেয়ে আমাদের জানালে আমাদের পুলিশ ইন্ডিয়ান পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করে। আমরা আজকে সকালবেলা সুনিশ্চিত হয়েছি, ভারতীয় পুলিশ জানিয়েছে যে তিনি খুন হয়েছেন। ভারতের পুলিশের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী খুনের সঙ্গে জড়িত তিনজনকে ধরা হয়েছে। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। আমাদের তদন্ত চলছে। তিনি বলেন, আপনারা জানেন ঝিনাইদহ সন্ত্রাসপ্রবণ এলাকা, সীমান্ত এলাকা। আনোয়ার সাহেব ওই এলাকা থেকে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন। চিকিৎসার জন্য যাওয়ার পরে এই ঘটনাটি ঘটে। আমাদের পুলিশ এটা নিয়ে তদন্ত করছে। এই খুনের মোটিভ কী ছিল তা আমরা অচিরেই জানাতে পারব। ভারতের পুলিশ আমাদের সব ধরনের সহযোগিতা করছে। আমাদের কাছে যে তথ্য আছে সে তথ্য অনুযায়ী এখন জানাচ্ছি, তিনি কলকাতার একটি বাসায় পরিকল্পিতভাবে খুনের শিকার হয়েছে। খুনের মোটটিভ নিয়ে আমাদের পুলিশ ও ভারতীয় পুলিশ কাজ করছে। ইন্টারন্যাশনাল ওয়েতে আমাদের যতটুকু করা দরকার তার সবই আমরা করছি। মরদেহ উদ্ধারের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের কাছে যে সমস্ত তথ্য আছে তা এখনই আমরা প্রকাশ করছি না। তদন্তের স্বার্থে আমরা এখনই অনেক কিছু বলব না। তদন্ত শেষে আমরা জানাব কেন খুন হয়েছে, কোথায় খুন হয়েছে, কী ধরনের অস্ত্র দিয়ে ঘুন হয়েছে সবাই আপনাদের জানাব। মরদেহ এখনো আমাদের হাতে আসেনি। বাংলাদেশে তিনজন গ্রেপ্তারের বিষয়ে তিনি বলেন, এই তিনজন আমাদের পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। খুবই পজেটিভ ওয়েতে আমাদের তদন্ত চলছে। যারা হত্যার সঙ্গে জড়িত তাদের উদ্দেশ্য কী ছিল এ ব্যাপারে সুনিশ্চিত ভাবে আমরা খুঁজে বের করব। গ্রেপ্তার তিনজন ভারতে গিয়েছিল কি না জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, এর মধ্যে অনেক কিছু হয়েছে। এরাও অনেকে ভারতে গিয়েছিলেন। ভারতে গিয়েছিলেন বলেই, ভারতীয় কিছু তথ্য আমাদের কাছে এসেছে। আমাদের কাছে তিন জন ধৃত আছে আরও কয়েকজনকে ধরতে আমাদের প্রচেষ্টা চলছে। মরদেহ কবে ফিরবে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, মরদেহ কোথায় আছে, তা এখনো আমরা উদ্ধার করতে পারিনি। আমাদের কাছে যে ধরনের সংবাদ আছে সেগুলো ভিত্তিতে আমরা কাজ করছি। জানা গেছে ভারতে চিকিৎসা করাতে গিয়ে নিখোঁজ আনোয়ারুল আজিমের মরদেহ কলকাতার নিউটাউন এলাকার সঞ্জিভা গার্ডেন থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। বুধবার (২২ মে) কলকাতার বাংলাদেশ উপদূতাবাস সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম টিভি নাইন বাংলার প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ১২ মে কলকাতায় যান আজিম। একজন অফিসারের ফ্ল্যাটে উঠেছিলেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন আরও তিনজন। বরানগর এলাকার সিঁথিতে যে বন্ধুর বাড়িতে উঠেছিলেন আজিম তার নাম গোপাল বিশ্বাস। গত ১৩ মে দুপুর ১টা ৪১ মিনিটে তার বাড়ি থেকে বেরিয়ে ভাড়া করা গাড়িতে ওঠেন আজিম। তারপর থেকে তার আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।
২২ মে, ২০২৪

এমপি আনারকে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারের মৃত্যু ঘিরে চলছে নানা আলোচনা। বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, এমপি আনারকে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে। বুধবার (২২ মে) ধানমন্ডির বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান। আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, এমপি আনার খুনের ঘটনায় তিনজনকে আটক করা হয়েছে।  এর আগে এমপি আনারের মরদেহ উদ্ধার নিয়ে কথা বলেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন ও ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান। কোনো নিশ্চিত তথ্য না থাকায় তারা তখন বিষয়টি নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।  জানা গেছে ভারতে চিকিৎসা করাতে গিয়ে নিখোঁজ আনোয়ারুল আজিমের মরদেহ কলকাতার নিউটাউন এলাকার সঞ্জিভা গার্ডেন থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। বুধবার (২২ মে) কলকাতার বাংলাদেশ উপদূতাবাস সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম টিভি নাইন বাংলার প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ১২ মে কলকাতায় যান আজিম। একজন অফিসারের ফ্ল্যাটে উঠেছিলেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন আরও তিনজন। বরানগর এলাকার সিঁথিতে যে বন্ধুর বাড়িতে উঠেছিলেন আজিম তার নাম গোপাল বিশ্বাস। গত ১৩ মে দুপুর ১টা ৪১ মিনিটে তার বাড়ি থেকে বেরিয়ে ভাড়া করা গাড়িতে ওঠেন আজিম। তারপর থেকে তার আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান সংসদ সদস্য আজিমকে খুন করা হয়েছে। তবে পুলিশ এ বিষয়ে স্পষ্টভাবে মুখ খুলছে না। সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে, কারা আজিমের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন। তার এ তদন্তে কাজ করছে বিধাননগর পুলিশ কমিশনার, আইবি ও এসটিএফ। পশ্চিম বঙ্গের সংবাদ প্রতিদিনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতে চিকিৎসা করাতে এসে খুন হয়েছেন বাংলাদেশের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম। গত ৮ দিন ধরে নিখোঁজ থাকার পর নিউটাউন থেকে মরদেহ উদ্ধার হয়। আওয়ামী লীগের ৩ বারের এমপি ছিলেন আজিম। প্রতিবেদনে বলা হয়, এই ঘটনায় রীতিমতো শোরগোল শুরু হয়েছে দুই দেশের কূটনৈতিক মহলে। কে বা কারা তাকে খুন করেছে তার তদন্তে নেমেছে দেশটির পুলিশ প্রসাশন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল গতকাল মঙ্গলবার সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘ঝিনাইদহের এমপি যথাযথভাবে ইমিগ্রেশন পার হয়ে ভারতে গিয়েছিলেন। যাওয়ার পর তার কোনো খোঁজখবর পাচ্ছি না। সরকারের সব এজেন্সি এটা নিয়ে কাজ করছে। এনএসআই, এসবি, পুলিশ কাজ করছে। ভারতীয় পুলিশের সঙ্গে, ভারতের গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে এটা নিয়ে কাজ চলছে। আমার কাছে এখন পর্যন্ত কোনো আপডেট নেই। যতটুকু শুনেছি, তার মোবাইল ফোনটা বন্ধ আছে।’ চিকিৎসা ও বন্ধুর মেয়ের বিয়ে উপলক্ষে গত ১২ মে ভারতে যান এমপি আনার। পরদিন ব্যক্তিগত সহকারী আব্দুর রউফের সঙ্গে তার কথা হয়। গত ১৬ মে সকাল ৭টা ৪৬ মিনিটে এমপির ফোন থেকে পিএসের নম্বরে সর্বশেষ কল আসে। কলটি ধরতে পারেননি পিএস। এক মিনিট পর পিএস তাকে কল করলে ওপাশ থেকে রিসিভ হয়নি। এরপর থেকে আনারের সঙ্গে আর যোগাযোগ নেই পরিবারের সদস্যদের। জানা গেছে, এক সময় আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলের ওয়ারেন্টভুক্ত ছিলেন আনার। আগ্নেয়াস্ত্র ও বিস্ফোরক দ্রব্য ব্যবহার সংক্রান্ত অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে ২০০৬ সালে ইন্টারপোলের তালিকায় তার নাম ওঠে। ২০০৯ সালে ইন্টারপোলের ওয়ান্টেড তালিকা থেকে নাম প্রত্যাহার হওয়ার পর এলাকায় ফিরে আগের মতোই কর্মকাণ্ড শুরু করেন তিনি। যেভাবে রাজনীতিতে উত্থান আনারের আনোয়ারুল আজিম আনারের পৈতৃক বাড়ি ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের মধুগঞ্জ বাজার এলাকায়। তিনি কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য। ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে টানা তিনবার আওয়ামী লীগ থেকে তিনি এমপি নির্বাচিত হন। স্থানীয় সূত্রগুলো বলছে, এক সময়ের দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চলের চরমপন্থিদের নিয়ন্ত্রণ করতেন আনার। অস্ত্র ও বিস্ফোরকদ্রব্য পাচারের হোতা হিসেবেও পুলিশের খাতায় নাম ছিল তার। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে দীর্ঘদিন ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী ও চরমপন্থিদের গডফাদার হিসেবে পরিচিতি পান। আনারের বিরুদ্ধে অস্ত্র, বিস্ফোরক, মাদকদ্রব্য ও স্বর্ণ চোরাচালান, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, দখলবাজি এবং চরমপন্থিদের আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগে ৯টির বেশি মামলা ছিল। ইন্টারপোলের ওয়ান্টেড আসামি হিসেবে পুলিশ একবার তাকে আটক করলেও তার ক্যাডাররা পুলিশের ওপর আক্রমণ করে তাকে ছিনিয়ে নিয়েছিল। ওই ঘটনায় তার বিরুদ্ধে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করে। চারদলীয় জোট সরকারের আমলে যৌথ বাহিনীর অপারেশনের সময় আত্মগোপনে ছিলেন আনার। ঝিনাইদহের রাজনৈতিক কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১৯৮৬ সালের দিকে জাতীয় পার্টি ক্ষমতায় থাকাকালে আনার মাদক কারবারে জড়িয়ে পড়েন। ভারতের বাগদা সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশের বাঘাভাঙ্গা সীমান্ত পথে চোরাচালান করতেন তিনি। ওই সময় কালীগঞ্জ থানাসহ মহেশপুর, কোটচাঁদপুর ও চুয়াডাঙ্গার জীবননগর থানা পুলিশের সঙ্গে মাসিক চুক্তিতে ‘টোকেন’ তৈরি করে তার বাহিনী। ওই টোকেন দেখালেই প্রশাসনের লোকজন মাদকদ্রব্য বহনকারী গাড়ি ছেড়ে দিত। এই টোকেন বাণিজ্য থেকে আনার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ‘মাদক সম্রাট’ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। এই মাদক কারবারের মাধ্যমে বিপুল অর্থবিত্তের মালিকও বনে যান। ১৯৯১ সালে আনার ঝিনাইদহের আরেক চোরাকারবারি পরিতোষ ঠাকুরের সঙ্গে মিলে স্বর্ণ চোরাচালানের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। স্বর্ণের বড় বড় চালান রাজধানী থেকে বাঘাডাঙ্গা সীমান্ত দিয়ে প্রতিবেশী দেশে পাচার করতেন তারা। ১৯৯৬ সালে আনার বিএনপি থেকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগে যোগ দেন। মাদক ও স্বর্ণ চোরাচালানের কারবারের সঙ্গে কালীগঞ্জ পৌরসভার এক কমিশনারের হাত ধরে অস্ত্র চোরাকারবারে জড়ান তিনি। তার অবৈধ অস্ত্রের চালান চরমপন্থি ক্যাডার সামসেল ওরফে রবিনের কাছে বিক্রি হতো। কথিত আছে, সরকারের পুরস্কার ঘোষিত শীর্ষ সন্ত্রাসী প্রকাশ ভারতে আত্মগোপন করার পর তার মাধ্যমে অস্ত্র চোরাকারবার চালিয়ে যান আনার। বাগদা এলাকার মাদক সম্রাট জয়ন্ত কুমার, কার্তিক, গৌতম সাহা ও বনগাঁর দেবদাসের সঙ্গে আনারের মাদকের কারবার ছিল। সূত্র জানায়, ২০০৭ সালে চুয়াডাঙ্গার লোকনাথপুর এলাকা থেকে ১২ কেজি ৯৫০ গ্রাম স্বর্ণ আটক করে তৎকালীন সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিডিআর। চোরাকারবারিরা নিশ্চিত হয় যে, দর্শনা শ্যামপুরের সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম স্বর্ণগুলো ধরিয়ে দিয়েছে। ওই ঘটনায় টার্গেট কিলিংয়ের শিকার হন সাইফুল। তিনি নিজেও স্বর্ণ চোরাকারবারিদের সিন্ডিকেটে যুক্ত ছিলেন। ওই হত্যা মামলায় আনারসহ আসামি করা হয় ২৫ জনকে। কুষ্টিয়ার চরমপন্থি নেতা মুকুল, শাহীন রুমী, ঝিনাইদহের চোরাকারবারি পরিতোষ ঠাকুর, আনারসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে পরের বছর আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। ২০১২ সালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুপারিশে রাজনৈতিক বিবেচনায় পরিতোষ, আনারসহ বেশ কয়েকজন মামলা থেকে অব্যাহতি পান। এ মামলায় আনারকে গ্রেপ্তারে ২০০৯ সালে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছিলেন চুয়াডাঙ্গার বিশেষ আদালত। এর দশ দিন পর ওই বছরের ২১ জানুয়ারি তাকে গ্রেপ্তারের জন্য নিশ্চিন্তপুর গ্রামে তার বাড়িতে অভিযান চালায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তবে তাকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। উপজেলা আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা জানান, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে ধীরে ধীরে আনারের বিরুদ্ধে থাকা মামলাগুলো কমে যেতে শুরু করে। ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে এমপি নির্বাচিত হলে ক্ষমতার দাপটে বেশিরভাগ মামলা থেকে নিজেকে মুক্ত করেন আনার।
২২ মে, ২০২৪

এমপি আনারের মৃত্যু নিয়ে কোনো নিশ্চিত তথ্য নেই : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে বিষয়টি নিয়ে এখনো কোনো নিশ্চিত তথ্য নেই বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। বুধবার (২২ মে) সকালে সংবাদ মাধ্যমকে তিনি বিষয়টি জানান। এর আগে এমপি আনারের মরদেহ উদ্ধার নিয়ে কথা বলেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। তিনিও বিষয়টি নিশ্চিত নয় বলে জানিয়েছিলেন।  জানা গেছে ভারতে চিকিৎসা করাতে গিয়ে নিখোঁজ আনোয়ারুল আজিমের মরদেহ কলকাতার নিউটাউন এলাকার সঞ্জিভা গার্ডেন থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। বুধবার (২২ মে) কলকাতার বাংলাদেশ উপদূতাবাস সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম টিভি নাইন বাংলার প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ১২ মে কলকাতায় যান আজিম। একজন অফিসারের ফ্ল্যাটে উঠেছিলেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন আরও তিনজন। বরানগর এলাকার সিঁথিতে যে বন্ধুর বাড়িতে উঠেছিলেন আজিম তার নাম গোপাল বিশ্বাস। গত ১৩ মে দুপুর ১টা ৪১ মিনিটে তার বাড়ি থেকে বেরিয়ে ভাড়া করা গাড়িতে ওঠেন আজিম। তারপর থেকে তার আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান সংসদ সদস্য আজিমকে খুন করা হয়েছে। তবে পুলিশ এ বিষয়ে স্পষ্টভাবে মুখ খুলছে না। সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে, কারা আজিমের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন। তার এ তদন্তে কাজ করছে বিধাননগর পুলিশ কমিশনার, আইবি ও এসটিএফ। পশ্চিম বঙ্গের সংবাদ প্রতিদিনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতে চিকিৎসা করাতে এসে খুন হয়েছেন বাংলাদেশের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম। গত ৮ দিন ধরে নিখোঁজ থাকার পর নিউটাউন থেকে মরদেহ উদ্ধার হয়। আওয়ামী লীগের ৩ বারের এমপি ছিলেন আজিম। প্রতিবেদনে বলা হয়, এই ঘটনায় রীতিমতো শোরগোল শুরু হয়েছে দুই দেশের কূটনৈতিক মহলে। কে বা কারা তাকে খুন করেছে তার তদন্তে নেমেছে দেশটির পুলিশ প্রসাশন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল গতকাল মঙ্গলবার সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘ঝিনাইদহের এমপি যথাযথভাবে ইমিগ্রেশন পার হয়ে ভারতে গিয়েছিলেন। যাওয়ার পর তার কোনো খোঁজখবর পাচ্ছি না। সরকারের সব এজেন্সি এটা নিয়ে কাজ করছে। এনএসআই, এসবি, পুলিশ কাজ করছে। ভারতীয় পুলিশের সঙ্গে, ভারতের গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে এটা নিয়ে কাজ চলছে। আমার কাছে এখন পর্যন্ত কোনো আপডেট নেই। যতটুকু শুনেছি, তার মোবাইল ফোনটা বন্ধ আছে।’ চিকিৎসা ও বন্ধুর মেয়ের বিয়ে উপলক্ষে গত ১২ মে ভারতে যান এমপি আনার। পরদিন ব্যক্তিগত সহকারী আব্দুর রউফের সঙ্গে তার কথা হয়। গত ১৬ মে সকাল ৭টা ৪৬ মিনিটে এমপির ফোন থেকে পিএসের নম্বরে সর্বশেষ কল আসে। কলটি ধরতে পারেননি পিএস। এক মিনিট পর পিএস তাকে কল করলে ওপাশ থেকে রিসিভ হয়নি। এরপর থেকে আনারের সঙ্গে আর যোগাযোগ নেই পরিবারের সদস্যদের। জানা গেছে, এক সময় আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলের ওয়ারেন্টভুক্ত ছিলেন আনার। আগ্নেয়াস্ত্র ও বিস্ফোরক দ্রব্য ব্যবহারসংক্রান্ত অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে ২০০৬ সালে ইন্টারপোলের তালিকায় তার নাম ওঠে। ২০০৯ সালে ইন্টারপোলের ওয়ান্টেড তালিকা থেকে নাম প্রত্যাহার হওয়ার পর এলাকায় ফিরে আগের মতোই কর্মকাণ্ড শুরু করেন তিনি। যেভাবে রাজনীতিতে উত্থান আনারের আনোয়ারুল আজিম আনারের পৈতৃক বাড়ি ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের মধুগঞ্জ বাজার এলাকায়। তিনি কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য। ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে টানা তিনবার আওয়ামী লীগ থেকে তিনি এমপি নির্বাচিত হন। স্থানীয় সূত্রগুলো বলছে, এক সময়ের দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চলের চরমপন্থিদের নিয়ন্ত্রণ করতেন আনার। অস্ত্র ও বিস্ফোরকদ্রব্য পাচারের হোতা হিসেবেও পুলিশের খাতায় নাম ছিল তার। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে দীর্ঘদিন ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী ও চরমপন্থিদের গডফাদার হিসেবে পরিচিতি পান। আনারের বিরুদ্ধে অস্ত্র, বিস্ফোরক, মাদকদ্রব্য ও স্বর্ণ চোরাচালান, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, দখলবাজি এবং চরমপন্থিদের আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগে ৯টির বেশি মামলা ছিল। ইন্টারপোলের ওয়ান্টেড আসামি হিসেবে পুলিশ একবার তাকে আটক করলেও তার ক্যাডাররা পুলিশের ওপর আক্রমণ করে তাকে ছিনিয়ে নিয়েছিল। ওই ঘটনায় তার বিরুদ্ধে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করে। চারদলীয় জোট সরকারের আমলে যৌথ বাহিনীর অপারেশনের সময় আত্মগোপনে ছিলেন আনার। ঝিনাইদহের রাজনৈতিক কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১৯৮৬ সালের দিকে জাতীয় পার্টি ক্ষমতায় থাকাকালে আনার মাদক কারবারে জড়িয়ে পড়েন। ভারতের বাগদা সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশের বাঘাভাঙ্গা সীমান্ত পথে চোরাচালান করতেন তিনি। ওই সময় কালীগঞ্জ থানাসহ মহেশপুর, কোটচাঁদপুর ও চুয়াডাঙ্গার জীবননগর থানা পুলিশের সঙ্গে মাসিক চুক্তিতে ‘টোকেন’ তৈরি করে তার বাহিনী। ওই টোকেন দেখালেই প্রশাসনের লোকজন মাদকদ্রব্য বহনকারী গাড়ি ছেড়ে দিত। এই টোকেন বাণিজ্য থেকে আনার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ‘মাদক সম্রাট’ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। এই মাদক কারবারের মাধ্যমে বিপুল অর্থবিত্তের মালিকও বনে যান। ১৯৯১ সালে আনার ঝিনাইদহের আরেক চোরাকারবারি পরিতোষ ঠাকুরের সঙ্গে মিলে স্বর্ণ চোরাচালানের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। স্বর্ণের বড় বড় চালান রাজধানী থেকে বাঘাডাঙ্গা সীমান্ত দিয়ে প্রতিবেশী দেশে পাচার করতেন তারা। ১৯৯৬ সালে আনার বিএনপি থেকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগে যোগ দেন। মাদক ও স্বর্ণ চোরাচালানের কারবারের সঙ্গে কালীগঞ্জ পৌরসভার এক কমিশনারের হাত ধরে অস্ত্র চোরাকারবারে জড়ান তিনি। তার অবৈধ অস্ত্রের চালান চরমপন্থি ক্যাডার সামসেল ওরফে রবিনের কাছে বিক্রি হতো। কথিত আছে, সরকারের পুরস্কার ঘোষিত শীর্ষ সন্ত্রাসী প্রকাশ ভারতে আত্মগোপন করার পর তার মাধ্যমে অস্ত্র চোরাকারবার চালিয়ে যান আনার। বাগদা এলাকার মাদক সম্রাট জয়ন্ত কুমার, কার্তিক, গৌতম সাহা ও বনগাঁর দেবদাসের সঙ্গে আনারের মাদকের কারবার ছিল। সূত্র জানায়, ২০০৭ সালে চুয়াডাঙ্গার লোকনাথপুর এলাকা থেকে ১২ কেজি ৯৫০ গ্রাম স্বর্ণ আটক করে তৎকালীন সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিডিআর। চোরাকারবারিরা নিশ্চিত হয় যে, দর্শনা শ্যামপুরের সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম স্বর্ণগুলো ধরিয়ে দিয়েছে। ওই ঘটনায় টার্গেট কিলিংয়ের শিকার হন সাইফুল। তিনি নিজেও স্বর্ণ চোরাকারবারিদের সিন্ডিকেটে যুক্ত ছিলেন। ওই হত্যা মামলায় আনারসহ আসামি করা হয় ২৫ জনকে। কুষ্টিয়ার চরমপন্থি নেতা মুকুল, শাহীন রুমী, ঝিনাইদহের চোরাকারবারি পরিতোষ ঠাকুর, আনারসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে পরের বছর আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। ২০১২ সালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুপারিশে রাজনৈতিক বিবেচনায় পরিতোষ, আনারসহ বেশ কয়েকজন মামলা থেকে অব্যাহতি পান। এ মামলায় আনারকে গ্রেপ্তারে ২০০৯ সালে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছিলেন চুয়াডাঙ্গার বিশেষ আদালত। এর দশ দিন পর ওই বছরের ২১ জানুয়ারি তাকে গ্রেপ্তারের জন্য নিশ্চিন্তপুর গ্রামে তার বাড়িতে অভিযান চালায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তবে তাকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। উপজেলা আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা জানান, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে ধীরে ধীরে আনারের বিরুদ্ধে থাকা মামলাগুলো কমে যেতে শুরু করে। ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে এমপি নির্বাচিত হলে ক্ষমতার দাপটে বেশিরভাগ মামলা থেকে নিজেকে মুক্ত করেন আনার।
২২ মে, ২০২৪

এমপি আনারের বিষয়ে যা বললেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
ভারতে চিকিৎসা করাতে গিয়ে নিখোঁজ ঝিনাইদহ-৪ আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারের এখন পর্যন্ত কোনো হালনাগাদ তথ্য নেই জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, আমার কাছে এখনো পর্যন্ত কোনো আপডেট নেই। যত্টুকু শুনছি, আনারের মোবাইলটাও বন্ধ আছে। তিনি বলেন, আমাদের ও ভারতের ইমিগ্রেশন পার হয়ে যথাযথভাবেই তিনি ভারতে যান। তার পরিবার থেকে আমাদের জানানো হয়েছিল, তার কোনো খোঁজখবর পাওয়া যাচ্ছে না। সরকারি সব সংস্থা এটা নিয়ে কাজ করছে। আমাদের এনএসআই, এসবি ও পুলিশ কাজ করছে। ভারতীয় পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে কাজ করা হচ্ছে। আশা করছি, ভারতীয় সরকারের মাধ্যমে শিগগিরই তার বিষয়ে জানতে পারব। মঙ্গলবার (২১ মে) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা জানান। এর আগে, গত ১৯ মে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, এমপি মো. আনোয়ারুল আজিম আনারের বিষয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। তিনি কলকাতায় গেছেন, এসে পড়বেন। সেদিন তিনি আরও বলেছিলেন, তিনি পুরোনো মানুষ, একজন সংসদ সদস্য, বুঝেশুনেই তো চলেন। পাশের দেশ ভারতে গেছেন। এমন তো না মিয়ানমার গেছেন, যে মারামারি লেগেছে। আমার মনে হয় তিনি এসে পড়বেন। প্রসঙ্গত, গত ১১ মে চিকিৎসার জন্য ভারতের কলকাতায় যান সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার। এরপর থেকে পরিবারের সদস্যরা তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না। আনোয়ারুল আজিম আনার ঝিনাইদহ-৪ আসনের সরকারদলীয় সংসদ সদস্য। তিনি ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে টানা ৩ বার আওয়ামী লীগ থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
২১ মে, ২০২৪

৬৯ হাজার রোহিঙ্গার পাসপোর্ট নবায়ন করা হবে : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
বাংলাদেশি পাসপোর্ট নিয়ে ১৯৭৪ সালের দিকে সৌদি আরবে যাওয়া ৬৯ হাজার রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর পাসপোর্ট নবায়ন করা হবে বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। রোববার (১২ মে) রাজধানীতে সৌদি আরবের উপস্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তিনি।  আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, সৌদি সরকারের অনুরোধে ধাপে ধাপে এই পাসপোর্ট নবায়ন করা হবে।  সংক্ষিপ্ত সফরে ঢাকায় আসা সৌদি উপ-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বন্দি বিনিময় চুক্তি ছাড়াও বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে তিনি জানান।  স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বৈঠকে সৌদি সরকারের পক্ষ থেকে ওই দেশে থাকা ত্রিশ লাখ বাংলাদেশির সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো এবং হজের নিরাপত্তা ও সহযোগিতা আরও জোরদার করার বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।
১২ মে, ২০২৪

সুন্দরবনের আগুন নিয়ন্ত্রণে, তবে পর্যবেক্ষণে রাখা হবে : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
সুন্দরবনে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তবে শতভাগ নিভে গেছে, এ রকম নয়। কয়েক দিন পর্যবেক্ষণে রাখা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। সোমবার (৬ মে) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে এসব কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। পরে সচিবালয়ে এ তথ্য জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন। তিনি বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, বনের আগুন স্বাভাবিক আগুন নয়। আপাতদৃষ্টে মনে হয়, নিভে গেছে। কিন্তু কোনো কিছুর মধ্য দিয়ে অনেক দূর পর্যন্ত চলে যেতে পারে। পরে হয়তো আবার জ্বলে উঠতে পারে। তাই বনের আগুন নেভানোর ক্ষেত্রে সঙ্গে সঙ্গে নিভে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়া যায় না। এজন্য এখন নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। কয়েক দিন পর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হবে। শনিবার (৪ মে) সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের জিউধারা স্টেশনের আমুরবুনিয়া টহল ফাঁড়ির লতিফের ছিলা এলাকায় আগুন নজরে আসে সবার। এরপর আগুন নেভানোর কাজ শুরু করেন বন বিভাগের কর্মী, স্বেচ্ছাসেবক ও স্থানীয় বাসিন্দারা। গতকাল রোববার ভোর থেকে সমন্বিতভাবে আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজ শুরু হয়। সোমবার সকাল ১০টা ৩৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। কিন্তু নিয়ন্ত্রণে এলেও পুরোপুরি নির্বাপণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। আজ ভোর থেকে পূর্ব বন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের জিউধারা স্টেশনের আমুরবুনিয়া টহল ফাঁড়ি এলাকায় ফায়ার সার্ভিস ও বন বিভাগ পানি দেওয়া শুরু করে।
০৬ মে, ২০২৪

বাংলাদেশেও উন্মুক্ত কারাগার হচ্ছে : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
উন্নত দেশেরমতো বাংলাদেশে উন্মুক্ত কারাগার নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, কক্সবাজারের উখিয়ায় উন্মুক্ত কারাগার নির্মাণের কার্যক্রম শিগগিরই শুরু করা হবে।  বৃহস্পতিবার (২ মে) জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তরে নোয়াখালী-৩ আসনের সংসদ সদস্য মামুনুর রশীদ কিরনের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উত্থাপন করা হয়। আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, মালয়েশিয়ার কমিউনিটি রিহ্যাবিলিটেশন প্রোগ্রামের (সিআরপি) আদলে উন্মুক্ত কারাগার নির্মাণের জন্য কক্সবাজার জেলার উখিয়া উপজেলায় ১৬০ একর জমি বন্দোবস্ত পাওয়া গেছে। উন্মুক্ত কারাগার নির্মাণের কার্যক্রম শিগগিরই শুরু করা হবে। এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীকে আধুনিকায়নের লক্ষ্যে বাংলাদেশ পুলিশে বর্তমান সরকারের বিগত তিন মেয়াদে ৮৩ হাজার ৫৭৭টি পদ বাড়ানো হয়েছে। স্বচ্ছ ও দুর্নীতিমুক্ত নিয়োগ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এসব পদে জনবল নিয়োগের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড প্রতিরোধে ও অভিযান পরিচালনার জন্য এবং বাংলাদেশ পুলিশকে ত্রিমাত্রিক বাহিনীতে রূপান্তরের জন্য দুটি অত্যাধুনিক হ্যালিকপ্টার সংযোজনের কার্যক্রম চলমান আছে।  তিনি জানান, পুলিশকে স্মার্ট বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে বিভিন্ন ধরনের যুগোপযোগী আগ্নেয়াস্ত্র দেওয়া হচ্ছে। পূর্বে ব্যবহৃত পয়েন্ট ৩০৩ রাইফেলের পরিবর্তে বর্তমানে ৭ পয়েন্ট ৬২ মিলিমিটার রাইফেল ব্যবহৃত হচ্ছে। এ ছাড়া পুলিশ সদস্যদের ৭ পয়েন্ট ৬২/৯ এমএম পিস্তল, ৯ এমএম এসএমজি, পয়েন্ট ৪৫ ইঞ্চি এসএমজি, ১২ বোর শটগান, ৩৮ মিলিমিটার টিয়ারগ্যাস, গ্যাসগান বা লঞ্চারসহ প্রয়োজনীয় গোলাবারুদ সরবরাহ করা হচ্ছে। আরেক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সীমান্তে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সরকার নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণের পাশাপাশি এরইমধ্যে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশকে (বিজিবি) অত্যাধুনিক অস্ত্র, যানবাহন, আকাশযান ও জলযান দিয়ে সুসজ্জিত করা হয়েছে। এদিকে, সরকারদলীয় সংসদ সদস্য মোস্তাক আহমেদ রুহীর প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, ২০২৩ সালে ৯৭ হাজার ২৪১টি মামলা দায়েরপূর্বক ১ লাখ ২০ হাজার ২৮৭ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। এ সময়ে ৩১ হাজায়ে ৩১ হাজার ৬২২ বোতল ফেনসিডিল, ৭২.৮২৮ কেজি হেরোইন, ১৮৬.৬৩২ কেজি আইস এবং ২ লাখ ৭৫ হাজার ৫৭১ পিস টাপেন্টাডল ট্যাবেলট জব্দ করা হয়েছে।
০২ মে, ২০২৪

শাহবাজ নয়, দেশ চালাচ্ছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছেন, পাকিস্তান এখন ১৯৭০-এর মতো সংকটের মুখে রয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের হাতে এখন কোনো কর্তৃত্ব নেই। প্রকৃতপক্ষে তার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহসিন নাকভি দেশ পরিচালনা করছেন। শনিবার আল-কাদির ট্রাস্ট মামলার শুনানি শেষে আদিয়ালা কারাগারে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন। খবর দ্য ডনের। ইমরান খান বলেন, ‘রাজা (শাহবাজ) পেছনে বসে আছেন আর (স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী) মহসিন নাকভি তার বড়লাট হিসেবে (দেশ শাসনের) কাজ চালাচ্ছেন।’ পাকিস্তানে গত বছর ৯ মে সহিংসতার পর সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল তেহরিক-ই-ইনসাফের নেতাকর্মীদের গণগ্রেপ্তার শুরু হয়। সে সময় অনেকেই গ্রেপ্তার এড়াতে দল ছেড়ে যেতে বাধ্য হন। ইমরান সাংবাদিকদের বলেন, পিটিআইর কয়েকজন নেতা নিজেদের স্বার্থে এখনো প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করছেন। খুব সম্ভবত তাদের উদ্দেশ্য দরকষাকষি করা। তবে তিনি এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি। তিনি দাবি করেন, পিটিআইকে ‘ভেঙে’ ফেলার উদ্যোগ অব্যাহত রয়েছে। কিন্তু পাকিস্তানের স্বার্থে তিনি সবার সঙ্গেই আলোচনা করতে রাজি। যদি তিনি সাবেক সেনাপ্রধান কামার জাভেদ বাজওয়ার সঙ্গে বৈঠক করতে পারেন, তাহলে দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে যে কারও সঙ্গেই বৈঠক করতে রাজি বলে জানান। ২০২২-এর এপ্রিলে পিটিআই সরকারের পতনের নেপথ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন বাজওয়া—এমন অভিযোগ করেন ইমরান খান। তিনি আবারও দাবি করেন, পিটিআই দলের ইশতেহার চুরি করা হয়েছে এবং দলটিকে দখল করে নেওয়ার উদ্যোগ চলছে। তার স্ত্রী বুশরা বিবির মাধ্যমে তার ওপর চাপ প্রয়োগের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এবং যারা তার স্ত্রীর দিকে অভিযোগের আঙুল তুলছেন, তাদের উদ্দেশ্য পিটিআইকে অসংগঠিত করে তোলা বলেও অভিযোগ করেন পাকিস্তানের সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী। শনিবার উল্লিখিত মামলায় সরকারি পক্ষের পাঁচ সাক্ষীর শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
০৮ এপ্রিল, ২০২৪
X