ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ… / চিরচেনা ইউরোপীয় দাপট না ভিন্ন কিছু!
ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ বিশ্ব ফুটবলে নতুন এবং সাহসী যুগের সূচনা করতে চলেছে। নতুন ফরম্যাট, প্রথমবারের মতো এ আসরে হচ্ছে ৩২ ক্লাব নিয়ে। যা ইউরোপীয় জায়ান্ট এবং দক্ষিণ আমেরিকান পাওয়ার হাউসের প্রথাগত শোডাউনে সীমাবদ্ধ থাকছে না।
বাংলাদেশ সময় রোববার ভোরে শুরু আসর, চলবে চার সপ্তাহ। খেলা হবে ১১ শহরের ১২ ভেন্যুতে। ১৩ জুলাই মেটলাইফ স্টেডিয়ামে হবে ফাইনাল। ১ বিলিয়ন ডলার পুরস্কার, বৈশ্বিক পরাশক্তি এবং উদীয়মান চ্যালেঞ্জারদের জন্য আন্তর্জাতিক গৌরবের সত্যিকারের এক মঞ্চ প্রস্তুত। চারটি করে দল আট গ্রুপে ভাগ হয়ে প্রাথমিক পর্বে খেলবে। প্রতি গ্রুপের শীর্ষ দুটি দল নকআউট পর্বে যাবে। অংশগ্রহণকারী দলগুলোর মধ্যে ছয়টি ফিফা কনফেডারেশনের চ্যাম্পিয়ন এবং শীর্ষ র্যাঙ্কিংয়ের দল রয়েছে। রিয়াল মাদ্রিদ, ম্যানচেস্টার সিটি ও বায়ার্ন মিউনিখের মতো ইউরোপীয় এবং পালমেইরাস, রিভার প্লেট ও ফ্লামেঙ্গোর মতো দক্ষিণ আমেরিকান শক্তিশালী দল থাকছে এ আসরে। ইউরোপীয় আধিপত্য ক্লাব বিশ্বকাপের ইতিহাসের পরিচিত গল্প। ২০১২ সাল থেকে উয়েফা ক্লাবগুলোই এ শিরোপা উঁচিয়ে ধরছে।
বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ম্যানচেস্টার সিটি একাধিক গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় যুক্ত করে স্কোয়াড পুনরুজ্জীবিত করেছে, যার মধ্যে মিডফিল্ডার টিজ্জানি রেইন্ডার্স, রায়ান চেরকি এবং লেফটব্যাক রায়ান আইট-নৌরি রয়েছেন। ইংলিশ ক্লাবটি ‘জি’ গ্রুপে জুভেন্তাসের সঙ্গী হয়েছে। রিয়াল মাদ্রিদ নতুন ম্যানেজার জাবি আলোনসোর অধীনে নতুন যুগের সূচনার প্রতীক্ষায় আছে। স্প্যানিশ জায়ান্টরা জুনের বিশেষ ট্রান্সফার উইন্ডোতে ট্রেন্ট আলেকজান্ডার-আর্নল্ড এবং সেন্ট্রাল ডিফেন্ডার ডিন হুইসেনকে দলে নিয়েছে। আর্জেন্টাইন ফ্রাঙ্কো মাস্তানতুনোর সঙ্গে চুক্তি হলেও তরুণ এ ফুটবলার খেলবেন রিভার প্লেটের হয়ে। সম্প্রতি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ী পিএসজিও আসরের অন্যতম ফেভারিট। উসমান দেম্বেলে, খিভিচা কভারাতসখেলিয়া এবং ভিতিনহার উজ্জীবিত ক্লাবটি। চেলসি, অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদ, বায়ার্ন মিউনিখ এবং ইন্টার মিলানও শক্তিশালী দল নিয়ে হাজির হচ্ছে। ব্রাজিলিয়ান এবং কোপা লিবার্তাদোরেস চ্যাম্পিয়ন বোটাফোগো দুর্দান্ত ফর্মে আছে। সৌদি আরবের আল হিলালের আছে ঈর্ষণীয় স্কোয়াড। যেখানে জোয়াও ক্যানসেলো, রুবেন নেভেস এবং আলেকসান্ডার মিত্রোভিচকে দেখবেন। পালমেইরাসের এস্তেভাও আসর শেষে চেলসিতে যাচ্ছেন, যিনি নেইমারের পর ব্রাজিলের সবচেয়ে প্রতিভাবান হিসেবে বিবেচিত হচ্ছেন। ২১ বছর বয়সী চেরকি আকর্ষণীয় নতুন মুখগুলোর একটি। বয়সের তুলনায় পরিপক্বতার কারণে যাকে ক্ল্যাসিক নম্বর ১০ হিসেবে দেখা হচ্ছে। ইন্টার মায়ামির লিওনেল মেসি সেরা অবস্থায় নেই, তবে তার উপস্থিতি আসরকে আকর্ষণীয় করবে। পিএসজির আক্রমণ যে কোনো দলের রক্ষণভাগকে অস্থির করে তুলতে পারে।
আল হিলাল এশিয়ান দলগুলোর মধ্যে সবচেয়ে আকর্ষণীয়। ক্লাবটির কৌশল নির্ধারণের দায়িত্বে থাকবেন সিমন ইনজাগি। দক্ষিণ আমেরিকার ফ্লামেঙ্গো, পালমেইরাস ও ফ্লুমিনেন্স আলো ছড়াতে পারেন। কনকাকাফ অঞ্চলের পাচুকা এবং লস অ্যাঞ্জেলেস এফসি মানসম্পন্ন দল।
এশিয়া ও আফ্রিকার মধ্যে উলসান হুন্দাই, মামেলোদি সানডাউনস এবং এস্পেরান্স অন্যতম। অকল্যান্ড সিটি আধা পেশাদার দল হলেও হেলায় ফেলার মতো নয়।
মহাদেশীয় প্রতিযোগিতার কাঠামোর কারণে বার্সেলোনা, লিভারপুল এবং আর্সেনালের মতো দল ক্লাব বিশ্বকাপের ঐতিহাসিক সূচনার বাইরে থাকছে। ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগের মধ্যে শুধু জার্মান ও ফরাসি চ্যাম্পিয়ন পিএসজি থাকছে ক্লাব বিশ্বকাপে। স্পেনের চ্যাম্পিয়ন বার্সেলোনা, ইতালির নাপোলি ও ইংলিশ চ্যাম্পিয়ন লিভারপুল ক্লাব বিশ্বকাপের বাইরে থাকছে, যে কারণে দেখা যাবে না লামিন ইয়ামাল-মোহাম্মদ সালাহদের। আল-নাসর নেই, থাকছেন না ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোও।