২০২৬ বিশ্বকাপের স্বপ্নে বিভোর নেইমার
একটা মৌসুম, যা শেষ পর্যন্ত রেলিগেশনের ভয় কাটিয়ে বাঁচিয়েছে সান্তোসকে। আর সেই লড়াইয়ের কেন্দ্রে ছিলেন একজনই—নেইমার। ক্যারিয়ারের বহু উত্থান-পতনের পর আবারও নিজের ক্লাবকে টেনে তুলেছেন তিনি। কিন্তু লড়াই এখানেই শেষ নয়। ৩৩ বছর বয়সী ব্রাজিলিয়ান তারকার চোখ এখন আরও দূরে—২০২৬ বিশ্বকাপ।
সান্তোসের জার্সিতে মৌসুমের শেষ ভাগে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করে দলকে অবনমন থেকে বাঁচাতে বড় ভূমিকা রাখেন নেইমার। সংকটের মুহূর্তে নেতৃত্ব দিয়েছেন, মাঠে পার্থক্য গড়ে দিয়েছেন—যেমনটা তার কাছ থেকে প্রত্যাশিত। বার্সেলোনা, পিএসজি ও আল-হিলাল অধ্যায়ের পর আবার শৈশবের ক্লাবে ফিরে তিনি যেন প্রমাণ করলেন, এখনও ফুরিয়ে যাননি।
তবে ক্লাবের লক্ষ্য পূরণ হলেও নেইমারের ব্যক্তিগত লক্ষ্য আরও বড়। তার প্রধান স্বপ্ন—ব্রাজিল জাতীয় দলের হয়ে ২০২৬ বিশ্বকাপে খেলা। সেটা বাস্তবায়ন করতে হলে প্রয়োজন ধারাবাহিক ম্যাচ খেলা, উচ্চমানের প্রতিযোগিতা এবং সর্বোচ্চ চাপের পরিবেশ—যা সান্তোস আপাতত পুরোপুরি দিতে পারছে না বলেই মনে করছেন ফুটবল মহল।
এখনও পর্যন্ত ব্রাজিলের বর্তমান কোচ কার্লো আনচেলত্তির ডাক পাননি নেইমার। বিষয়টি নিয়ে সমর্থক ও স্থানীয় গণমাধ্যমে আলোচনা চলছে। তবে অনুপস্থিতি তাকে দমাতে পারেনি। সাও পাওলোতে এক অনুষ্ঠানে গায়ক থিয়াগুইনহোর সঙ্গে উপস্থিত হয়ে নেইমার শোনান আত্মবিশ্বাসী বার্তা।
“এই বিশ্বকাপ ব্রাজিলে ফেরাতে আমরা সবকিছু করব—প্রয়োজনে অসম্ভবও। ফাইনালে উঠলে আমি গোল করব, এটা আমার প্রতিশ্রুতি,” বলেন নেইমার। একই সঙ্গে ইতালিয়ান কোচের উদ্দেশে সরাসরি বার্তা, “আমাদের সাহায্য করুন, আনচেলত্তি!”
এই অবস্থায় প্রশ্ন উঠছে—সান্তোস কি নেইমারের জন্য এক ধাপ পেছনে যাওয়া? ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স ভালো হলেও দলটির প্রতিযোগিতামূলক মান ও আন্তর্জাতিক চাপ সীমিত। ফলে বিশ্বকাপের প্রস্তুতির জন্য নতুন ক্লাব খোঁজার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
এই প্রেক্ষাপটেই ঘুরে বেড়াচ্ছে ফ্ল্যামেঙ্গোর নাম। কোপা লিবার্তাদোরেস ও ব্রাজিলেইরাও জেতা ক্লাবটিতে যোগ দিলে নেইমার পেতে পারেন দক্ষিণ আমেরিকার সর্বোচ্চ পর্যায়ের লড়াই, সঙ্গে আন্তর্জাতিক আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকার সুযোগ।
ব্রাজিল জাতীয় দলের হয়ে নেইমারের শেষ ম্যাচটি ছিল ২০২৩ সালের ১৭ অক্টোবর। উরুগুয়ের বিপক্ষে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের সেই ম্যাচে মারাত্মক হাঁটুর চোট—এএলসিএল ও মেনিসকাস ছিঁড়ে—দীর্ঘ সময়ের জন্য মাঠের বাইরে ছিটকে দেয় তাকে।
এখন তিনি সুস্থ, নিয়মিত খেলছেন এবং আবার স্বপ্ন দেখছেন। সামনে কোন ক্লাব, কোন পরিবেশ—এই সিদ্ধান্তই ঠিক করে দেবে, ইতিহাসের সঙ্গে নেইমারের আরেকটি শেষ বড় সাক্ষাৎ আদৌ সম্ভব হবে কি না।