কারও মুখ তো আঠা দিয়ে বন্ধ করে দিতে পারি না
ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাসকে প্রকাশ্যে হত্যার হুমকির বিষয়ে বক্তব্য জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা বলেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, সরকার বিদেশি কূটনীতিকদের নিরাপত্তা দিতে বদ্ধপরিকর। তবে কারও মুখ আঠা দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া যায় না। আজ রোববার (১৯ নভেম্বর) মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসকে প্রকাশ্যে হত্যার হুমকির বিষয়ে বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি এ কথা বলেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সেটা আমার বলা উচিত না, আপনি যদি রাজনীতিবিদ হন, তাহলে এক দল না এক দল আপনার সম্পর্কে বক্তব্য দেবে। আমরা যারা পাবলিক লাইফে, আমাদের সম্পর্কে পাবলিক বক্তব্য দেবে। আর যদি আপনি রাজনীতি থেকে সরে থাকেন, তাহলে কেউ আপনাকে এসব নিয়ে তিরস্কার করবে না। আর কে কী কোথায় বলল, এভিডেন্স তো আমাদের দেন নাই। আমাদের আগে এভিডেন্স প্রয়োজন। আব্দুল মোমেন বলেন, আমাদের দেশে আমরা মুক্ত চিন্তায় বিশ্বাস করি, ফ্রিডম অব স্পিচ, ফ্রিডম অব মিডিয়ায় বিশ্বাস করি, কারও মুখ তো আঠা দিয়ে বন্ধ করে দিতে পারি না। তবে হ্যাঁ, কেউ যদি গর্হিত কাজ করে, তার বিরুদ্ধে অ্যাকশন নেব, অ্যাকশন নিচ্ছিও। বাংলাদেশ সব কূটনীতিককে নিরাপত্তা দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে উল্লেখ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমরা অক্ষরে অক্ষরে ভিয়েনা সনদ মেনে চলি, আপনারাও এটা মেনে চলেন। আপনারা এসব লঙ্ঘন করে আবার বড় বড় কথা বলেন। সম্প্রতি কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ফরিদুল আলম এক কর্মী সমাবেশে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাসকে হত্যার হুমকি দেন। আওয়ামী লীগ নেতার এমন বক্তব্যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস। আর যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর বলেছে, মার্কিন কূটনীতিকদের বিরুদ্ধে সহিংসতা বা সহিংসতার হুমকি অগ্রহণযোগ্য। মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসকে লক্ষ্য করে আক্রমণাত্মক বক্তব্যের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের কাছে বারবার উদ্বেগ জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ভিয়েনা সনদ অনুসারে মার্কিন কূটনৈতিক মিশন ও কূটনীতিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র আশা করে, বাংলাদেশ সরকার এই বাধ্যবাধকতা অনুসারে কাজ করবে।
১৯ নভেম্বর, ২০২৩

কিছু গোষ্ঠী যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তিক্ততা সৃষ্টির চেষ্টা করছে : পররাষ্ট্রমন্ত্রী
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক অত্যন্ত মধুর বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। তিনি বলেন, কিছু গোষ্ঠী তিক্ততা সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে এ সম্পর্কে। বাংলাদেশ নিয়ে মিথ্যাচার করছে।  গতকাল মঙ্গলবার নিউইয়র্কের বাঙালি অধ্যুষিত জ্যাকসন হাইটসে বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন, যুক্তরাষ্ট্র শাখা আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা যে নীতি ও মূল্যবোধে বিশ্বাস করি, যুক্তরাষ্ট্র সেই নীতি ও মূল্যবোধে বিশ্বাস করে। বাংলাদেশ হচ্ছে সেই দেশ যেখানে গণতন্ত্রের জন্য আমরা লড়াই সংগ্রাম করেছি। আমরা জনগণের ভোটে জয়লাভ করলেও ১৯৭১ সালে আমাদের সরকার গঠন করতে দেয় নাই, বরং আমাদের ওপর গণহত্যা চালানো হয়েছিল। ড. মোমেন বলেন, আমরা স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলাম গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য। এজন্য স্বাধীনতা যুদ্ধে আমাদের ত্রিশ লাখ মানুষের প্রাণ দিতে হয়েছে। পৃথিবীর কোথাও গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের জন্য এত অল্প সময়ে এত মানুষ আত্মত্যাগ করেনি।  যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের মতের, চিন্তার মিল আছে। নীতিগতভাবে আমাদের দুই দেশের মধ্যে মিল রয়েছে। তবে তাদের কোনো কোনো ব্যক্তিবিশেষ হয়ত আমাদের উন্নয়ন পছন্দ করছেন না, তাদের ব্যাপারে সজাগ থাকতে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতি আহ্বান জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।  ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট সংশোধনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বন্ধুরাষ্ট্র হিসেবে যেসব ভালো পরামর্শ দেয় আমরা সেটা গ্রহণ করি। যুক্তরাষ্ট্র অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন প্রত্যাশা করে আর আমরাও অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।  বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন যুক্তরাষ্ট্র শাখার সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের মিয়ার সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সভাপতি ড. মসিউর মালেক। অন্যদের মধ্যে কবি ও সাহিত্যিক ফকির ইলিয়াস, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি আব্দুল খালেক মিয়া, বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকার নিউইয়র্ক প্রতিনিধি লাভলু আনসার, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন যুক্তরাষ্ট্র শাখার নেতা এবং নিউইয়র্কে বাংলাদেশি কমিউনিটির সদস্যরা। 
২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
X