বাংলা ভাষা শত শত কাল থেকে নির্যাতিত
বাংলা ভাষা শত শত কাল থেকে নির‌্যাতনের শিকার হয়েছে। তাই ভাষার লড়াই খুব প্রাচীন। যুগে যুগে যারাই এসেছে, তারাই আমাদের ভাষা দখল করতে চেয়েছে। তারা কর্তৃত্ব করলেও ভাষার বিলুপ্ত ঘটাতে পারেননি। সম্প্রীতি বাংলাদেশ আয়োজিত ‘আমার ভাষা আমার শক্তি’ শিরোনামে এক গোলটেবিল বৈঠকে এসব কথা বলেন বক্তারা। গতকাল শনিবার সকাল ১১টায় রাজধানীর ঢাকার সিরডাপ মিলনায়তনে (এটিএম শামসুল হক হল) বৈঠকটি হয়। প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা ও সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা এবং বিশিষ্ট কবি ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী। ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী বলেন, ‘শুধু পাকিস্তান শাসনামলে নয়, বাংলা ভাষা শত শত বছর ধরেই নির‌্যাতনের শিকার। আবার এটি হিন্দু না মুসলমানদের ভাষা, তা নিয়েও ছিল বিতর্ক। মূলত বাংলা ভাষা ছিল সাধারণ মানুষের ভাষা। তিনি আরও বলেন, ‘ভাষা যোগাযোগের মাধ্যম এবং সংস্কৃতির বাহক। দেশে এখনো বিভিন্ন সাইনবোর্ডে ইংরেজির আধিক্য। সেখানে বাংলা শব্দগুলো খুব ছোট করে লেখা থাকে, যা দুঃখজনক। কলকাতায় অবস্থা আরও ভয়াবহ। এই সংকট থেকে মুক্তি পেতে দ্রুত সব ধরনের বই বাংলায় অনুবাদের পদক্ষেপ নিতে হবে। সেইসঙ্গে বাংলার ব্যবহার বাড়াতে নীতিমালা তৈরি করতে হবে। বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ড. রতন সিদ্দিকি বলেন, যুগে যুগে শাসকগোষ্ঠী মানুষ মেরেছে; কিন্তু ভাষাকে মারতে পারেনি। ভাষার শক্তির কাছে কিছুই টিকে থাকেনি। শিক্ষাবিদ ও গবেষক ড. বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, ‘অর্থনীতি শক্তিশালী না হলে কখনোই ভাষা প্রতিষ্ঠিত করা যাবে না। নিজ ভাষায় লেখা পণ্য বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে না পারলে, সেটিকে সমৃদ্ধ করা যাবে না। সরকার চাইলে কোথাও অন্য ভাষার সাইনবোর্ড থাকবে না। পিএসসিতে চাকরি প্রার্থীকে ২০ মিনিট ইংরেজিতে মৌখিক পরীক্ষা দিতে হয়। আলোচনা সভার সভাপতি সম্প্রতি বাংলাদেশের আহ্বায়ক পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বর্তমান পুঁজিবাদ বিশ্বে ভাষাকে টিকিয়ে রাখতে অর্থনৈতিকভাবে আমাদের আরও সমৃদ্ধ হতে হবে। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সদস্য সচিব ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল। এ সময় আরও বক্তব্য দেন মহিলা পরিষদের নেত্রী ফরিদা ইয়াসমিন ও সাবেক সচিব নব বিক্রম কিশোর ত্রিপুরা।
২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

পল্লীবন্ধু সর্বস্তরে বাংলা ভাষা প্রচলনে আইন করেন : জিএম কাদের
বিরোধীদলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেছেন, বায়ান্নর রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে বাংলা অন্যতম রাষ্ট্রভাষার স্বীকৃতি পেলেও সর্বস্তরে বাংলা ভাষা প্রচলন করতে দীর্ঘসময় লেগেছে। বায়ান্নর রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের ৩৫ বছর পরে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ১৯৮৭ সালের ৮ মার্চ আইন করে সর্বস্তরে বাংলা ভাষা প্রচলনের উদ্যোগ নেন। আজ বাংলাদেশের সর্বত্র বাংলা ভাষায় সকল কার্যক্রম চলছে। মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) এক বিজ্ঞপ্তিতে তিনি এসব কথা বলেন।    তিনি বলেন, তাৎপর্যময় এই দিনে রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে বীর শহীদদের অম্লান স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করছি। বিনম্র শ্রদ্ধায় রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে বীর শহীদদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। মহান এই দিনে দেশের প্রতিটি নাগরিক এবং বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে অবস্থানরত বাংলাভাষীদের প্রতি জানাচ্ছি শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।  তিনি বলেন, একুশের অবিনাশী চেতনা আমাদের স্বাধিকার ও স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় অসীম অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে। মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে সাহস ও শক্তির অনন্য উৎস ছিল আমাদের গৌরবোজ্জ্বল রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন। বায়ান্নর রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন সারা বিশ্বে ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষায় বিজয়ের প্রতীক হয়ে থাকবে।  তিনি আরও বলেন, অহংকারের একুশে মানেই, মাথানত না করা। মহান রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন আমাদের মাথা উঁচু করে অধিকার আদায়ের সংগ্রামে অনুপ্রেরণা জোগায়। একুশের চেতনা লড়াই সংগ্রামে অনুপ্রেরণা জোগায় অসীম সাহসে।
২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪
X