বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি এবং শিক্ষার পরিবেশ দুটিই থাকা উচিত : পররাষ্ট্রমন্ত্রী
বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি এবং শিক্ষার পরিবেশ দুটিই থাকা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।  মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি প্রাঙ্গণে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে ঈদ উপহার বিতরণে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন তিনি। ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামে, স্বাধীনতাযুদ্ধে, স্বাধীনতার-পরবর্তী সময়ে দেশ গঠনে এবং এরশাদ ও জিয়া যখন আমাদের গণতন্ত্রকে শিকল পরিয়েছিল, গণতন্ত্রকে বন্দি করেছিল সেই গণতন্ত্রকে মুক্ত করার লক্ষ্যে ছাত্রলীগ ভূমিকা রেখেছে। বুয়েটে ছাত্ররাজনীতিই অবদান রেখেছে, সেই ছাত্ররাজনীতি থেকে অনেক দেশবরেণ্য রাজনীতিবিদের জন্ম হয়েছে- যারা দেশকে নেতৃত্ব দিয়েছে, দিচ্ছে। কিন্তু আমি অবাক সেখানে একটি দুঃখজনক ঘটনাকে কেন্দ্র করে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করা হয় এবং ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করার জন্য আবার সেখানে আন্দোলনও হয়। এটা কোনোভাবেই গণতান্ত্রিক নয় এবং হঠকারী সিদ্ধান্ত বলেই আদালত বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই আদেশ বাতিল করেছে এবং সেখানে ছাত্ররাজনীতি দুয়ার খুলেছে।  ছাত্রলীগের উদ্দেশে তিনি বলেন, ছাত্রলীগকে বলব সেখানে যেন নিয়মতান্ত্রিক ছাত্ররাজনীতি হয়, হিংসা-বিদ্বেষের রাজনীতি যেন না ঢোকে। সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়মতান্ত্রিক ছাত্ররাজনীতি থাকা প্রয়োজন, এর মাধ্যমে ভবিষ্যতের নেতা তৈরি হয়।  হাছান মাহমুদ বলেন, আমি ১৫ বছর বয়সে ক্লাস টেনে পড়ার সময় থেকে ছাত্রলীগের কর্মী, ১৬ বছর বয়সে ছাত্রলীগের কলেজ শাখার সাধারণ সম্পাদক হয়েছি। রাজনীতি দেশ ও মানুষের সেবা এবং সমাজ পরিবর্তনের একটি ব্রত, সেটি অনেক রাজনীতিবিদরা ভুলে গেছে। প্রকৃতপক্ষে রাজনীতি কারও পেশা হওয়া উচিত নয়।  তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা বস্তুগত উন্নয়নের সঙ্গে একটি মানবিক ও সামাজিক কল্যাণ রাষ্ট্র গঠন করতে চাই। সেই লক্ষ্যেই বঙ্গবন্ধুকন্যা বহু কল্যাণ ভাতা চালু করেছেন। সেই ব্রত ধারণ করেই আজকে ছাত্রলীগ দুস্থ অসহায় মানুষের মধ্যে ঈদসামগ্রী বিতরণ করার উদ্যোগ নিয়েছে। এ জন্য তাদের অভিনন্দন। সভা শেষে সামগ্রী নিতে আসা সমবেত মানুষের মাঝে উপহার বিতরণ করেন মন্ত্রী।
০৯ এপ্রিল, ২০২৪

বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি নিয়ে নিজেদের অবস্থান জানাল শিক্ষক সমিতি 
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করে দেওয়া বিজ্ঞপ্তির কার্যকারিতা স্থগিতে হাইকোর্টের রায়ের বিপরীতে আপিল করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে বুয়েট শিক্ষক সমিতি (প্রবিশিস)। এ ব্যাপারে  সব ধরনের সহযোগিতা করতেও প্রস্তুত রয়েছে সংগঠনটি। সোমবার (৮ এপ্রিল) বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. মিজানুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. এ কে এম মনজুর মোরশেদ স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়। এই বিজ্ঞপ্তিতে গত ২৮ মার্চ থেকে উদ্ভূত ঘটনাবলিতে, বিশেষ করে রাত্রি দ্বিপ্রহরে একটি ছাত্রসংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতাদের বুয়েট ক্যাম্পাসে অনাহৃত আগমন, সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ, ছাত্রকল্যাণ পরিচালকের পদত্যাগ দাবি, সংশ্লিষ্ট কয়েকজন বুয়েট ছাত্রের বহিষ্কার দাবি, উপাচার্য মহোদয়সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষকদের সঙ্গে যথাযথ আচরণ না করা, টার্ম-ফাইনাল পরীক্ষা বর্জন, ১ এপ্রিল মহামান্য হাইকোর্ট কর্তৃক বুয়েটে রাজনীতি নিষিদ্ধে জারিকৃত আদেশ স্থগিতকরণ, শিক্ষার্থীদের অব্যাহত আন্দোলন এবং একাডেমিক কার্যক্রমে স্থবিরতার বিষয়ে বুয়েট শিক্ষক সমিতি উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। সেইসঙ্গে কিছু পর্যবেক্ষণও সন্নিবেশ করেছে সংগঠনটি। সেগুলো হলো-  প্রথমত, প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসসহ শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিরাপত্তার দায়িত্ব রেজিস্ট্রার মহোদয়ের। সবার নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার জন্য রেজিস্ট্রারের মাধ্যমে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানানো যাচ্ছে। নিষিদ্ধ-ঘোষিত সংগঠনের ইমেইল প্রেরণ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়িয়েছে। এ ব্যাপারে জাতীয় আইন-প্রয়োগকারী সংস্থাসমূহের দৃষ্টি আকর্ষণের আহবান জানাচ্ছে। দ্বিতীয়ত, সাংগঠনিক রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করে দেওয়া জরুরি বিজ্ঞপ্তির কার্যকারিতা স্থগিত করার যে রায় গত ১ এপ্রিল ২০২৪ তারিখে মহামান্য হাইকোর্টে দিয়েছেন তার বিপরীতে আপিল করার বিষয়টিতে প্রশাসন জরুরি ভিত্তিতে উদ্যোগী হবেন এবং এ ব্যাপারে শিক্ষক সমিতি সব ধরনের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত রয়েছে। তৃতীয়ত, ২০১৯-পরবর্তী বিগত বছরগুলিতে বুয়েটে শিক্ষা-কার্যক্রম অবাধে চলেছে এবং সুষ্ঠু একাডেমিক পরিবেশ বজায় ছিল। একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ বজায় রাখা, নিরাপদ রাখা, বিদ্যাচর্চা অক্ষুণ্ণ রাখা ইত্যাদি আমাদের সবার দায়িত্ব। শিক্ষক সমিতি এমন পরিবেশই প্রত্যাশা করে। এমতাবস্থায় বর্তমান অচলাবস্থা নিরসন এবং স্বাভাবিক একাডেমিক কার্যক্রম চালুর দাবি জানাচ্ছে শিক্ষক সমিতি। বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, একটি শান্তিপূর্ণ, স্থিতিশীল এবং নিষ্কলুষ ক্যাম্পাস আমাদের সবার কাম্য। সব অংশীজনের সহযোগিতা ও দায়িত্বশীল আচরণের মাধ্যমে অচিরেই সে অবস্থা ফিরে আসবে বলে শিক্ষক সমিতি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে।
০৮ এপ্রিল, ২০২৪

বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি চালু কার ইঙ্গিতে : চরমোনাই পীর
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম (চরমোনাই পীর) বলেছেন, ক্ষমতাসীন দল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে চাঁদাবাজি ও মাস্তানির কারখানা বানিয়েছে। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) রাজনীতি নিষিদ্ধ। হঠাৎ করে তা আদালতের মাধ্যমে চালু করে উত্তপ্ত করে তুলছে কার ইঙ্গিতে? মেধাবী ছাত্ররা দেশের অন্যতম সেরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে রাজনীতি মুক্ত রাখতে চায়। তারা জ্ঞানের চর্চায় বিশ্বাসী, তারা ভবিষ্যতের জন্য সুনাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে চায়। ছাত্ররা রাজনীতি না চাইলে তাদেরকে জোর করে রাজনীতিতে নিয়ে এসে শিক্ষাঙ্গনকে উত্তপ্ত করার মানে হয় না। মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনস্থ দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মজলিসে আমেলার সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। চরমোনাই পীর বলেন, দেশ ক্রমেই ভয়াবহতার দিকে এগুচ্ছে। আধিপত্যবাদী শক্তি দেশকে গিলে খাওয়ার চক্রান্ত করছে। শিক্ষার সঙ্গে ধর্মীয় দিক্ষা না থাকলে মানুষ দুর্নীতি মুক্ত হতে পারে না। সরকারে শিক্ষিত মানুষের অভাব নাই, কিন্তু ইসলামে দিক্ষিত মানুষের বড়ই অভাব। তাই দেশ আজ দুর্নীতির স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। এজন্য শিক্ষার সকল স্তরে ইসলামী শিক্ষা বাধ্যতামূলক থাকলে দেশের এমন পরিস্থিতি হতো না। ইসলামী আন্দোলনের আমীর বলেন, আমাদের পেছনে পড়ার মূল কারণ হচ্ছে, যারা দেশ পরিচালনা করে, তাদের দূরদর্শিতা, দেশপ্রেম ও জ্ঞানের অভাব। তাই দেশের বৃহত্তর স্বার্থে শিক্ষাব্যবস্থাকে যুগোপযোগী করতে হবে। শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে হবে। আর যেন আবরারদের হত্যাকাণ্ডের শিকার হতে না হয় সে ব্যবস্থা করতে হবে। পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতিতে জড়িত করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করে  দেওয়া হয়েছে। চাঁদাবাজি ও মস্তানির কারখানায় পরিণত করে শিক্ষার মাজা ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে। এর জন্য দায়ী ক্ষমতাকেন্দ্রিক রাজনৈতিক দলগুলো। দলের মহাসচিব মাওলানা ইউনুছ আহমাদের পরিচালনায় সভায় উপস্থিত ছিলেন দলের নায়েবে আমীর আব্দুল হক আজাদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য আশরাফ আলী আকন, যুগ্ম মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান, ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, মুহাম্মদ আমিনুল ইসলাম, সহকারি মহাসচিব হাফেজ শেখ ফজলে বারী মাসউদ, মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলম, আহমদ আবদুল কাইয়ূম, মাওলানা লোকমান হোসাইন জাফরী, হারুন অর রশিদ, মাওলানা নেছার উদ্দিন, শওকত আলী হাওলাদার, আব্দুর রহমান, মাওলানা ফজলুল করীম মারূফ, মুফতী কেফায়েতুল্লাহ কাশফী, মুফতী এছহাক মুহাম্মদ আবুল খায়ের, আবুল কাশেম, শরিফুল ইসলাম তালুকদার, অধ্যাপক সৈয়দ বেলায়েত হোসেন, মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাকী, মাওলানা সিরাজুল ইসলাম, এম হাছিবুল ইসলাম, জিএম রুহুল আমীন, মাওলানা খলিলুর রহমান, নূরুল ইসলাম আলআমিন, আবুল কালাম আজাদ, বরকত উল্লাহ লতিফ, মাওলানা আরিফুল ইসলাম, অধ্যাপক নাসির উদ্দিন খান, ডা. দেলোয়ার হোসেন, আব্দুল আউয়াল মজুমদার।
০২ এপ্রিল, ২০২৪

বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি নিয়ে যা বলছেন আবরার ফাহাদের ভাই
২০১৯ সালের অক্টোবরে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) হলে এক ছাত্রলীগ নেতার কক্ষে নির্মমভাবে হত্যা করা হয় আবরার ফাহাদকে। তারপরেই আন্দোলনের মুখে রাজনীতি নিষিদ্ধ হয় বুয়েটে। নতুন করে আবারও আলোচনা শুরু হয়েছে বুয়েটের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালানোর জন্য।  এবার বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন নিহত আবরার ফাহাদের ছোট ভাই ও বুয়েটের বর্তমান শিক্ষার্থী আবরার ফাইয়াজ।  তিনি বলেছেন, একজন বুয়েট শিক্ষার্থী হিসেবে নয়, আবরার ফাহাদের ভাই হিসেবে বলতে চাই, বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি ফিরে আসলে তা বুয়েট ক্যাম্পাসকে দেশের সবচেয়ে অনিরাপদ ক্যাম্পাসে পরিণত করবে। মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) সকালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ফাইয়াজ তার 'Abrar Faiyaj নামক অ্যাকাউন্টে এক পোস্টের মাধ্যমে এই মন্তব্য করেন। কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে পোস্টটি ছড়িয়ে পড়ে ফেসবুকে।  ফেসবুকে আবরার ফাইয়াজ লিখেন, ২০০২ সালে সনি আপুকে হত্যার পরে খুব বেশিদিন ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ ছিল না। যার ফল দেখি আমরা আরিফ রায়হান দীপের হত্যাকাণ্ডে। তারপরে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়নি। যার সর্বশেষ শিকার আবরার ফাহাদ। আবরার ফাহাদ হত্যায় যারা আসামি হয় তারা সবাই একটি হলের। কিন্তু, প্রতিটি হলেই এ রকম ২০-২৫ জন করে ছিল যারা নিজেদের হলেও একইরকম হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করতে পারত। কিন্তু, ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ হওয়ায় এরা কেউ কিন্তু পরবর্তীতে আর কিছু করেনি। গত সাড়ে ৪ বছরে বুয়েটের কোনো জুনিয়রের গায়ে কোনো সিনিয়র হাত তোলেনি, কেউ কাউকে কোনো নিয়ম বেঁধে দেয়নি যা দেশের অন্য প্রায় সব বিশ্ববিদ্যালয়ে আছে। ধরলাম, ২০০ জনই চাইল যে ছাত্ররাজনীতি ফিরে আসুক। তাও বর্তমান ৬০০০ শিক্ষার্থী থাকছে যারা ছাত্ররাজনীতি চায় না। কিন্তু, সবার ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে যদি ছাত্ররাজনীতি চালু করা হয় তাহলে যা হবে- শত শত আবরার ফাহাদ কিংবা সনিকে হত্যা করা হলেও কেউ প্রতিবাদ করবে না। কেননা, যারা প্রতিবাদ করবে তাদের পেটানোর মানুষদের অভাব থাকবে না। তারা দাবি জানাতে পারবে না যে, ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ চাই। কেননা, যদি প্রশাসন করেও নিষিদ্ধ তা আদালতের বিরুদ্ধে যাবে। তাই, এরা একপ্রকার ইনডেমনিটি পেয়ে যাবে যে, এদের বিরুদ্ধে কেউ কিছু করতে পারবে না। যেখানে ৬০০০ শিক্ষার্থীর মতামতকে মূল্য দেওয়া হচ্ছে না সেখানে এই ১০০-২০০ জন কী পরিমাণ বর্বরতা চালাবে কল্পনা করুন। ২০২৭ সালেই আরেক আবরার পাওয়া যাবে হয়তো। অথবা এবার আর লাশই পাওয়া যাবে না। কারণ, এক ভুল দুইবার কেউ করে না। শিক্ষকরাও কিছু করতে পারবেন না। কেননা, তারাও নিরাপদ নন। ফলাফল ছাত্ররাজনীতি চালুর ২-৩ মাসের মধ্যে দেশের সবচেয়ে অনিরাপদ ক্যাম্পাসে পরিণত হবে বুয়েট। এখানে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আর কোনো আশা আকাঙ্ক্ষা থাকবে না। কেননা তাদের মতামতের মূল্যই তো নেই কারও কাছে। ঐ অবস্থায় দেশের কোনো অভিভাবক আর নিজের সন্তানকে এখানে পাঠাবে না। তাই বঙ্গবন্ধু যেই বুয়েটকে নষ্ট করতে নিষেধ করে গেছেন তাকে দয়া করে এ রকম ধ্বংস করে দিবেন না।  প্রসঙ্গত, গত ২৭ মার্চ রাতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও দপ্তর সম্পাদকসহ অনেকেই বিশাল বহর নিয়ে বুয়েট ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন। তাদের ক্যাম্পাসে প্রবেশ করাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন বুয়েট শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ রাব্বি। ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ হওয়ার পরও বুয়েটে এ ধরনের কর্মকাণ্ডকে নতুন করে রাজনীতি শুরুর পাঁয়তারা হিসেবে দেখছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। যার প্রেক্ষিতে, ক্যাম্পাসে পুনরায় রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড শুরু হওয়া ও নিরাপত্তাহীনতার আশঙ্কায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে প্রশ্নবিদ্ধ করে আন্দোলন শুরু করেন তারা।  এ প্রেক্ষিতে গত শুক্রবার রাতে উপাচার্যের নির্দেশক্রমে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. ফোরকান উদ্দিন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে ছাত্রলীগকে সহযোগিতায় অভিযুক্ত শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ হোসেন রাহিম রাব্বির হলের সিট বাতিল, তদন্ত কমিটি গঠন ও তদন্ত অনুযায়ী সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং পরীক্ষাসহ সব অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম চলমান থাকার কথা জানানো হয়। এর প্রতিক্রিয়ায় ও ক্যাম্পাসের ছাত্ররাজনীতি পুনরায় চালু করার দাবিতে গত রবিবার ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এক প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে এবং এরপর কয়েকশ নেতাকর্মী নিয়ে বুয়েট ক্যাম্পাসে প্রকাশ্যে প্রবেশ করে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করে।  সবশেষ, গতকাল সোমবার বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের বিজ্ঞপ্তিটি স্থগিত ঘোষণা করেন উচ্চ আদালত। দেশের শীর্ষ এ প্রকৌশল উচ্চশিক্ষালয়ে ছাত্ররাজনীতি চলতে বাধা নেই বিচারপতি মো. খসরুজ্জামানের বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
০২ এপ্রিল, ২০২৪

বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি চলবে, সিদ্ধান্ত হাইকোর্টের
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করে দেওয়া প্রজ্ঞাপন স্থগিত করেছে হাইকোর্ট। সেই হিসেবে এখন থেকে বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি চলবে।  সোমবার (১ এপ্রিল) বিচারপতি মো. খসরুজ্জামানের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্টের অবকাশকালীন বেঞ্চ এ নির্দেশনা দেন। এর আগে বুয়েট ছাত্র রাজনীতি করার অনুমতি চেয়ে হাইকোর্টে একটি রিট করা হয়। হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট আবেদনটি করেন বুয়েটের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতা ইমতিয়াজ রাব্বি।  বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সুপ্রিম কোর্ট বারের নবনির্বাচিত সম্পাদক শাহ মঞ্জুরুল হক। তিনি বলেন, রাজনীতি বন্ধ করতে যে নোটিশ দিয়েছিল সেটি স্থগিত চাওয়া হয়েছে। ২০১৯ সালে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের হাতে আবরার ফাহাদ নিহত হওয়ার পর ছাত্র আন্দোলনের মুখে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ হয় প্রতিষ্ঠানটিতে। কিন্তু ওই ঘটনার চার বছর না পেরোতেই বুয়েটে আবারও ছাত্র রাজনীতি চালুর জন্য তৎপরতা শুরু করেছে ছাত্রলীগ। এতে সায় আছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগেরও। বুয়েটের উপাচার্যও বলেছেন, শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা চাইলে আবারও ছাত্র রাজনীতি চালু করা যেতে পারে। গত ২৭ মার্চ রাতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও দপ্তর সম্পাদকসহ অনেকেই বিশাল বহর নিয়ে বুয়েট ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন। তাদের ক্যাম্পাসে প্রবেশ করাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন বুয়েট শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ রাব্বি। ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ হওয়ার পরও বুয়েটে এ ধরনের কর্মকাণ্ডকে নতুন করে রাজনীতি শুরুর পাঁয়তারা হিসেবে দেখছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। যার প্রেক্ষিতে, ক্যাম্পাসে পুনরায় রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড শুরু হওয়া ও নিরাপত্তাহীনতার আশঙ্কায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে প্রশ্নবিদ্ধ করে আন্দোলন শুরু করেন তারা। এ প্রেক্ষিতে গত শুক্রবার (২৮ মার্চ) রাতে উপাচার্যের নির্দেশক্রমে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. ফোরকান উদ্দিন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে ছাত্রলীগকে সহযোগিতায় অভিযুক্ত শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ হোসেন রাহিম রাব্বির হলের সিট বাতিল, তদন্ত কমিটি গঠন ও তদন্ত অনুযায়ী সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং পরীক্ষাসহ সব একাডেমিক কার্যক্রম চলমান থাকার কথা জানানো হয়। এদিকে ছাত্ররাজনীতি ঠেকাতে বুয়েট শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে পাল্টা কর্মসূচি পালন করেছে ছাত্রলীগ। দেশসেরা এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্ররাজনীতি ফিরিয়ে আনতে গতকাল রোববার দুপুর ১২টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমাবেশ করে তারা। বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করার বিষয়টিকে কালো আইন হিসেবে দেখছে ছাত্রলীগ।
০১ এপ্রিল, ২০২৪

বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি করার অনুমতি চেয়ে হাইকোর্টে রিট
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) নিয়মতান্ত্রিক ছাত্র রাজনীতি করার অনুমতি চেয়ে হাইকোর্টে একটি রিট করা হয়েছে। সোমবার (১ এপ্রিল) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি দায়ের করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক বলেন, রাজনীতি বন্ধ করে যে নোটিশ দিয়েছিল সেটিই স্থগিত চাওয়া হয়েছে। বিচারপতি মো. খসরুজ্জামানের বেঞ্চে এ বিষয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। এদিকে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) চলমান নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবি ও ছাত্র রাজনীতির বিরুদ্ধে আন্দোলনরত সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন গুজব ও অপপ্রচার চালানো হচ্ছে বলে দাবি করেছেন তারা। এই কর্মকাণ্ডের জন্য শিক্ষার্থীরা ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের দায়ী করছেন। রোববার (৩১ মার্চ) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা এক বিবৃতির মাধ্যমে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়ে তাদের অবস্থান পরিষ্কার করেন। বিবৃতিতে শিক্ষার্থীরা বলেন, আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ সংশ্লিষ্টরা অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমরা পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিতে চাই যে, আমাদের অবস্থান কেবল বাংলাদেশ ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে নয়। ছাত্রদল যখন ২০২১ সালে আহ্বায়ক কমিটি দেয় তখনও আমরা তীব্র আন্দোলন করেছি। বুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ হওয়ায় এখানে শিক্ষার্থীরা যে কোনো রাজনৈতিক সংগঠনের কর্মকাণ্ডের বিরোধী। আর বুয়েটের শিক্ষার্থীরা সেই জায়গা থেকে তাদের ক্যাম্পাসের ভেতরে রাজনৈতিক চর্চায় জড়িতদের বিরোধিতা করে আসছে। বুয়েটের বাইরে বুয়েটের কোনো শিক্ষার্থীর ব্যক্তিগত রাজনৈতিক কার্যকলাপের জন্য তাদের শাস্তি চাওয়া হচ্ছে না বরং তাদের শাস্তি চাওয়া হচ্ছে ওই দিন রাতে ক্যাম্পাসে ঢোকার সময় নিয়ম অমান্য করে বুয়েটের ভিতরে রাজনৈতিক নেতাদের নিয়ে অনুপ্রবেশ করার জন্য। ক্যাম্পাসে, হলে কিংবা ক্লাসে কারও ওপর কোনো রকম নির্যাতনের ঘটনা ঘটেনি, এসব অভিযোগ সম্পূর্ণরূপে মিথ্যাচার। তারা বলেন, বুয়েটের ইমতিয়াজ রাব্বি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগে পদপ্রাপ্ত এবং ইতোপূর্বে সে তার পদ সরিয়ে নেওয়ার কথা দিলেও সেটি বাস্তবায়ন করেনি। তার সোশ্যাল মিডিয়ায় সে এই পরিচয় ব্যবহার করে। সে এবং তদসংশ্লিষ্ট আরও ছাত্ররা যদি রাজনৈতিক নেতাদের নিয়ে ক্ষমতা প্রদর্শন করে ক্যাম্পাসে অবৈধ অনুপ্রবেশ করতে পারে তাহলে অতিদ্রুত বুয়েটে  রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড শুরু করা কেবল সময়ের ব্যাপার- এ আশঙ্কা থেকেই এ আন্দোলন। শিক্ষার্থীরা বলেন, বর্তমানে হিজবুত তাহরীর নিয়ে কথা উঠেছে। এটি কোনো রাজনৈতিক দল নয় বরং নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ অনুযায়ী বহিরাগতদের লাগানো বিভিন্ন পোস্টার, মেইল বা প্রচারপত্র ইত্যাদির ভিত্তিতে এদের কর্মকাণ্ড ক্যাম্পাসে দেখা গেছে। তাদের পরিচয় সম্পর্কে স্পষ্ট নই। আমাদের ইনস্টিটিউশনাল মেইলে হিজবুত তাহরীর সংক্রান্ত মেইল দেখার পর অনতিবিলম্বে সর্বপ্রথম ডিএসডব্লিউ স্যারকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকেই প্রথমে জানানো হয়। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, যেসব শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে শিবিরের কার্যক্রমে যুক্ত থাকার অভিযোগ আসছে তাদের ঘটনাটি বুয়েটের বাইরে হয়েছে এবং এখন পর্যন্ত এই ঘটনার বিষয়ে আমাদের কাছে সুস্পষ্ট কোনো প্রমাণ নেই। তবে অভিযোগ আসার সঙ্গে সঙ্গে আমরা তাদের সম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়ার লিখিতভাবে আহ্বান জানাই এবং এটি আমাদের পূর্বের একটি আন্দোলনের অন্যতম দাবি হিসেবে ছিল। বিচার প্রক্রিয়ার রায় সাপেক্ষে যদি কোনো শিক্ষার্থীর শিবির সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলে আমরা অবশ্যই তাৎক্ষণিকভাবে তাদের বহিষ্কারের দাবি জানাব। প্রসঙ্গত, গত ২৭ মার্চ রাতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও দপ্তর সম্পাদকসহ অনেকেই বিশাল বহর নিয়ে বুয়েট ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন। তাদের ক্যাম্পাসে প্রবেশ করাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন বুয়েট শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ রাব্বি। ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ হওয়ার পরও বুয়েটে এ ধরনের কর্মকাণ্ডকে নতুন করে রাজনীতি শুরুর পাঁয়তারা হিসেবে দেখছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। যার প্রেক্ষিতে, ক্যাম্পাসে পুনরায় রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড শুরু হওয়া ও নিরাপত্তাহীনতার আশঙ্কায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে প্রশ্নবিদ্ধ করে আন্দোলন শুরু করেন তারা। এ প্রেক্ষিতে গত শুক্রবার (২৮ মার্চ) রাতে উপাচার্যের নির্দেশক্রমে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. ফোরকান উদ্দিন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে ছাত্রলীগকে সহযোগিতায় অভিযুক্ত শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ হোসেন রাহিম রাব্বির হলের সিট বাতিল, তদন্ত কমিটি গঠন ও তদন্ত অনুযায়ী সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং পরীক্ষাসহ সব একাডেমিক কার্যক্রম চলমান থাকার কথা জানানো হয়।
০১ এপ্রিল, ২০২৪
X