আ.লীগ নেতার বিরুদ্ধে সরকারি ঘর ভাঙচুর ও মারধরের অভিযোগ
জমি নিয়ে বিরোধের জেরে শরীয়তপুরের ডামুড্যা উপজেলার পূর্বডামুড্যা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে সরকারি ঘর ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে। এ সময় তিনি লোকজন নিয়ে চাচা-চাচি, চাচাতো ভাই ও চাচাতো ভাইয়ের স্ত্রীকে মারধর করেন। আ.লীগ নেতা জাকির বেপারি ও তার ভাই সাবেক ইউপি সদস্য সোহেল বেপারির বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠেছে।  এ ছাড়াও জানা যায়, তারা দলবল নিয়ে ওই বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট চালান। হামলায় আহত হন নারীসহ অন্তত ১০ জনেরও বেশি। আহতদের সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।  ভুক্তভোগীরা থানায় গিয়ে মামলা করতে চাইলে প্রভাবশালী এ নেতার ভয়ে তা পারেননি। পরে তারা আদালতে গিয়ে ভুক্তভোগী মাহবুব বেপারি (৩০) এ অভিযোগ করেন। শনিবার (২৭ জানুয়ারি) দুপুরে ডামুড্যা উপজেলার চরভয়রা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।  জাহাঙ্গীর বেপারি ছেলে মাহবুব বেপারি অভিযোগ করে বলেন, প্রায় পঞ্চাশ বছর ধরে আমার বাবা এ বসতবাড়িতে বসবাস করছেন। এমনকি জমির বৈধ কাগজপত্র ও আমাদের নামে। হঠাৎ করে বিবাদী আ.লীগ নেতা জাকির বেপারি, লিটন বেপারি, সোহেল বেপারি, চুন্নু বেপারি গং আমাদের ঘর ভাঙচুর করেন। জবরদখল করে সেখানে তারা ঘর তৈরি করছেন। এমনকি আমার চাচাতো ভাই রবিন বেপারির সরকারি উপহারের ঘরটিও রামদা দিয়ে কুপিয়ে ভাঙচুর করেন। আমার মা তাদের বাধা দিতে গেলে তাকেও টানাহেঁচড়া করে চলা দিয়ে পিটিয়ে আহত করেন। আমার মা প্রাণ বাঁচাতে ঘরে গিয়ে আশ্রয় নিলে তারা ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে এসএস পাইপ দিয়ে বেধড়ক মারধর করেন।   তারা বলেন, এ বাড়ির সকল জমি আমাদের, তোদের কোনো জমি এখানে নেই। তাছাড়া তোদেরকে কীভাবে এখান থেকে তাড়াতে হয় সে আমাদের ভালোভাবে জানা আছে। আজকাল মার্ডার করে টাকা খরচ করলে আর কোনো সমস্যা হয় না। আ.লীগ নেতা জাকির বেপারি  ও সাবেক ইউপি সদস্য সোহেল বেপারির হামলায় আহতরা হলেন- মাহবুব বেপারি (৩০), জাহাঙ্গীর বেপারি (৫০), সাজেদা বেগম, রাকিব বেপারি, রুবেল বেপারি ও সোনিয়া বেগমসহ অন্তত ১০ জন। ভুক্তভোগী মাহবুবের মা সাজেদা বেগম বলেন, হেয়েগো লগে আমাগো জায়গা জমি নিয়া কাইজ্জা হেয়ের লেইগগা, জাকির, মিলু, সোহেল, চুন্নু, অনিক, শামিম, সিহাব আমার পোলা মাহবুবরে পিঠায়া কোবায়া জখম কইরা থুয়া গেছে। আমি আমার পোলারে বাঁচাইতো গেলে আমারে দৌড়ায়া ঘরে ঢুকায়। হেরপর আমার ঘরের দরজা লাথি দিয়া ভাইংগা গাছের মোটা লাঠি ও এসএস পাইপ দিয়া পিঠায়া বেহুশ কইরা হালায়। আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে এর বিচার চাই।  গুরুতর আহত রাকিব বেপারির মা লাইলী বেগম বলেন, আমার পোলার কোনো ঘর ছিল না। প্রধানমন্ত্রী আমার পোলারে একটা ঘর দিছে। আমার পোলার হেই ঘর জাকির, সোহেলসহ ১০-১২ জন মিলে আমার পোলার ঘর কোবায়া ভাইংগা থুইছে। আমি হেয়েগো বিচার চাই।  এ বিষয়ে আ.লীগ নেতা জাকির বেপারি কালবেলাকে বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করেছে এগুলো মিথ্যা। আমি বা আমরা কাউকে মারি নাই। এমনকি কারো কোনো ঘর ভাঙচুর করি নাই। বরং তারাই বিচারের মধ্যে আমাদের মারধর করতে এগিয়ে আসে।  সাবেক ইউপি সদস্য সোহেল বেপারিকে মোবাইল ফোনে কল দিলে এ বিষয়ে তিনি পরে কথা বলবেন বলে ফোন কেটে দেন। পরে কল দিলেও আর তা রিসিভ হয়নি।  ডামুড্যা থানার অফিসার ইনচার্জ এমারত হোসেন কালবেলাকে বলেন, এ বিষয়ে আদালতে একটি মামলা হয়। মামলার নথি হাতে পেয়েছি খুব দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
০৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪
X