কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৪ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:০০ পিএম
আপডেট : ০৪ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:৩৬ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

সিআরবির গাছগুলোকে ঐতিহ্যবাহী বৃক্ষ ঘোষণার দাবি বেলার

টাইগারপাস থেকে সিআরবিমুখী রাস্তার পাশের গাছ। ছবি : সংগৃহীত
টাইগারপাস থেকে সিআরবিমুখী রাস্তার পাশের গাছ। ছবি : সংগৃহীত

চট্টগ্রাম নগরের টাইগারপাস থেকে সিআরবিমুখী মোহাম্মদ ইউসুফ চৌধুরী সড়কের প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী গাছ কেটে র‍্যাম্প নির্মাণের সব উদ্যোগ বাতিলের দাবি জানিয়ে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সিমিতি (বেলা)।

একইসঙ্গে চিহ্নিত এবং একই সড়কের অন্যান্য পুরোনো ও শতবর্ষী গাছগুলোকে ঐতিহ্যবাহী ঘোষণার দাবি জানানো হয়েছে নোটিশে।

নোটিশটির অনুলিপি পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বরাবর পাঠানো হয়েছে।

এর আগে ১ এপ্রিল (সিডিএ) শীর্ষক একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী, র‌্যাম্প নির্মাণ করতে চট্টগ্রামের আইকনিক দ্বিতল সড়ক হিসেবে পরিচিত টাইগারপাস থেকে সিআরবিমুখী পাহাড়ি রাস্তাটির মাঝের ঢালে আনুমানিক প্রায় ১০ প্রজাতির শতবর্ষী ও ঐতিহ্যবাহী ৪৪টি গাছকাটার জন্য গাছের গায়ে নম্বর বসিয়েছে সিডিএ।

নগরীর লালখানবাজার থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত প্রায় ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এলিভেটর এক্সপ্রেসওয়েটি নির্মাণ করা হবে। চট্টগ্রামের দ্বিতল এই সড়কের মাঝে পাহাড়ের ঢালে রয়েছে ঐতিহ্যবাহী ও শতবর্ষী রেইনট্রি, কড়ই, কৃঁষ্ণচূড়া, মেহগনি, শিরিষ গাছ।

এ শতবর্ষী বৃক্ষগুলোর মধ্য থেকে ৪৪টি গাছ কেটে সড়কটির সৌন্দর্য ও সংলগ্ন এলাকার প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট করে এলিভেটর এক্সপ্রেসওয়ের র‌্যাম্প নির্মাণের এ উদ্যোগে চট্টগ্রামবাসী ক্ষুদ্ধ ও বিস্মিত। এরইমধ্যে গাছকাটার অনুমতি চেয়ে প্রধান বন সংরক্ষক এবং জমি ব্যবহারের জন্য বাংলাদেশ রেলওয়ে, চট্টগ্রামের মহাব্যবস্থাপক (পূর্ব)এর নিকট সিডিএ এর চেয়ারম্যান আবেদন করেছে মর্মে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচার হয়েছে।

প্রাণ, প্রকৃতি ও পরিবেশের নিরাপত্তার বিধানে সংবিধানের ১৮ (ক) অনুচ্ছেদে অঙ্গীকার করেছে রাষ্ট্র। ফলে যে কোনো উন্নয়ন কার্যক্রমই পরিবেশ রক্ষা করে করতে হবে। কিন্তু তা না করে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজে গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে তা জনস্বার্থের অনুকূলে নয়।

র‌্যাম্প নির্মাণের নামে এ গাছগুলো কাটা হলে তা হবে বৃক্ষ ও প্রাকৃতিক ঐতিহ্য হত্যার সামিল। এ গাছগুলো বিভিন্ন সংখ্যক পাখির আবাস্থল যা পথচারীকে প্রকৃতির সান্নিধ্য পেতে সাহায্য করে। উপরন্তু নগর পরিকল্পনাবিদ ও বিশেষজ্ঞগণ র‌্যাম্প নির্মাণের জন্য উপযুক্ত বিকল্প জায়গার প্রস্তাবনা করেছেন।

সিডিএ এর আইনি দায়িত্ব হচ্ছে চট্টগ্রামের উন্নয়ন অর্থাৎ পরিবেশেরও উন্নয়ন করা। সিডিএ যদি পরিবেশের উন্নয়ন বাদ দিয়ে অবকাঠামোর উন্নয়নকেই তার একমাত্র আইনি দায়িত্ব মনে করে, তবে তা হবে টেকসই উন্নয়নের অন্তরায়। যে তথাকথিত উন্নয়নের জন্য এ গাছগুলো কাটা হচ্ছে সে উন্নয়ন অন্যত্র হলে চট্টগ্রামবাসীর কোনো ক্ষতি হবে না কিন্তু এ গাছগুলো কাটা হয়ে গেলে চট্টগ্রামবাসীর যে ঐতিহ্য বিলুপ্ত হবে যা অপূরণীয় ক্ষতি।

পুরোনো ও ঐতিহাসিক বৃক্ষ রক্ষায় সরকার বন্য প্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন-২০১২ এর ২৩ ধারায় সরকারি জমিতে থাকা সাংস্কৃতিক গুরুত্ব ধারণ করে, যা জাতীয় স্মারক হিসেবে চিহ্নিত এবং বিভিন্ন পাখির আবাসস্থল- এমন বৃক্ষকে জাতীয় ঐাতিহ্য বা স্মারক বৃক্ষ হিসেবে ঘোষণা করতে পারে।

এরূপ ঐতিহ্য বা স্মারক বৃক্ষের সংরক্ষণের প্রয়োজনে এর ১৪,১৫ ও ১৬ ধারায় বিভিন্ন বিধি নিষেধ আরোপিত আছে। সিডিএ প্রযোজ্য এই আইনের অধীনে মোহাম্মদ ইউসুফ চৌধুরী সড়কের প্রাচীন ঐতিহ্য ও স্মৃতিবাহী বৃক্ষগুলোকে বিশেষ মর্যাদা দেওয়ার আবেদন না জানিয়ে কেটে ফেলার অনুমোদন চেয়েছে, যা জনস্বার্থের পরিপন্থি।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

নতুন প্রজন্ম শান্তিপূর্ণ রাজনীতি প্রত্যাশা করে : ইশরাক

ঢাবির ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষা আজ

‘খালেদা জিয়া বাংলাদেশের মানুষের আপনজন’

২০ বছরের ব্যবসা বাঁচাতে ছাড়লেন চেয়ারম্যান পদ

তাসনিম অনন্যার অনুসন্ধানে মহাবিশ্বের চাঞ্চল্যকর রহস্য উন্মোচন

২০২৬ বিশ্বকাপে কবে মুখোমুখি হতে পারে আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল?

বিশ্বকাপের গ্রুপ অব ডেথে ফ্রান্স

নুরুদ্দিন অপুর হাত ধরে আ.লীগ নেতার বিএনপিতে যোগদান

২০২৬ বিশ্বকাপের ড্র অনুষ্ঠিত: দেখে নিন কোন গ্রুপে কোন দল

২০২৬ বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলের প্রতিপক্ষ যারা

১০

রাতে আবার হাসপাতালে গেলেন জুবাইদা রহমান

১১

যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার পরিধি বাড়ছে, তালিকায় ৩০টির বেশি দেশ

১২

খালেদা জিয়ার এন্ডোসকপি সম্পন্ন, বন্ধ হয়েছে রক্তক্ষরণ

১৩

‘বাঁধের মাটি বড় বড় খণ্ড হয়ে ঝুপঝাপ শব্দে ভেঙে পড়ে’

১৪

রাজমিস্ত্রির বাড়ি থেকে অস্ত্র-গুলি উদ্ধার

১৫

দেড় হাজার দৌড়বিদের অংশগ্রহণে হাফ ম্যারাথন

১৬

খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় ফ্রি যাত্রীসেবা

১৭

বিদেশি কোম্পানিকে ইজারা, প্রতিবাদে বিক্ষোভ 

১৮

যুবদল নেতা সুমনের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার

১৯

দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, একজন গুলিবিদ্ধসহ আহত ১০

২০
X