চবিতে পছন্দের বিষয়ে ভর্তির আশ্বাসে প্রতারণা
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) স্নাতক প্রথম বর্ষের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় পছন্দের বিষয়ে ভর্তি করিয়ে দেওয়ার আশ্বাসে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার খবর পাওয়া গেছে। প্রতারণার কিছু তথ্য-প্রমাণ কালবেলার হাতে এসেছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সম্প্রতি ‘Md Anwar Hussain’ নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সাবেক শিক্ষার্থীর নাম ও ছবি ব্যবহার করে ফেসবুকে ফেইক অ্যাকাউন্ট খুলে ওই প্রতারক। পরে ভর্তি পরীক্ষাসংক্রান্ত ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপে ভালো বিষয়ে ভর্তি করে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে পোস্ট করতেন। পরবর্তীতে এ রকম পোস্ট দেখে চবির ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে ভর্তির সুযোগ পাওয়া এক শিক্ষার্থী ভালো বিষয়ের আশায় ওই প্রতারকের সঙ্গে মেসেজে যোগাযোগ করেন। একপর্যায়ে ৪১০০ টাকার বিনিময়ে ওই শিক্ষার্থীকে ইংরেজি বিভাগে ভর্তি করে দেবে আশ্বস্ত করে প্রতারক। সে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেলে কর্মরত বলে দাবি করে। ওই প্রতারক সাবেক যে শিক্ষার্থীর নাম ও ছবি ব্যবহার করেছেন তিনি শুলকবহর থানায় জিডি করেছেন। মো. আনোয়ার হোসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৭-১৮ সেশনের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী। বর্তমানে তিনি ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজের অর্থনীতির লেকচারার হিসেবে শিক্ষকতা করছেন। মো. আনোয়ার হোসেন জিডিতে উল্লেখ করেন, গত ২৬ এপ্রিল আনুমানিক দুপুর ৩টায় ২নং গেট মেয়র গলি নামক স্থানে আমার বাসায় অবস্থানকালে মোবাইলে ফেসবুক আইডিতে প্রবেশ করে দেখতে পাই অপরিচিত একজন আমার নাম ব্যবহার করে ফেইক আইডি খুলে ব্যবহার করছেন। জিডিতে আরও উল্লেখ করা হয়, আমি বিভিন্নভাবে চেষ্টা করেও ওই অপপ্রচারকারীর পরিচয় শনাক্ত করতে ব্যর্থ হই। ভবিষ্যতে তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে প্রয়োজন সাপেক্ষে মামলা করার জন্য পুনরায় মামলা করার জন্য আবেদন করা হবে। প্রতারণার শিকার এক ভর্তিচ্ছু জানান, আমি এ বছর ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হই এবং আমার পজিশন ১০০০ এর ভেতরে। অনায়াসেই আমি যে কোনো সাবজেক্টে ভর্তি হতে পারতাম। আমার ইংরেজিতে পড়ার ইচ্ছে ছিল কিন্তু এজন্য ভর্তি পরীক্ষায় ইংরেজি বিষয়ে ১৯ নম্বর পেতে হয়, কিন্তু আমার ১৫ ছিল। ফেসবুকে একটি গ্রুপে পছন্দের সাবজেক্টে চান্স পাইয়ে দেবে বলে একজনের পোস্ট দেখে মেসেজ দেই। সে নিজেকে চবির আইটিতে কাজ করে বলে দাবি করে। পরে ইংরেজিতে পড়তে হলে দ্রুত সময়ের মধ্যে টাকা দিতে বলে। আমার কাছে ৪১০০ টাকা চাইলেও আমি প্রথমে ৫০০ টাকা দেই। সে আমাকে বলে প্রথম মেধা তালিকাতেই আমার ইংরেজি বিষয় চলে আসবে। এদিকে গত ২৮ এপ্রিল ‘বি’ ইউনিটের মেধা তালিকা প্রকাশ করলেও আমার নাম আসেনি। এরপর আমি তাকে এ নিয়ে জিজ্ঞেস করলে আর উত্তর পাইনি উল্টো সে আমাকে হোয়াটসঅ্যাপে ও ম্যাসেঞ্জারে ব্লক করে দেয়। এ বিষয়ে ওই প্রতারকের মোবাইল ফোনে কয়েকবার যোগাযোগ করেও সাড়া পাওয়া যায়নি।  এ বিষয়ে আইসিটি সেলের পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ খায়রুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, এ রকম মার্কস পরিবর্তন করে পছন্দের সাবজেক্ট এনে দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আইসিটি সেলের পরিচয় দিয়ে অনেকেই প্রতারণা করতে পারে। শিক্ষার্থীদের প্রতি অনুরোধ আপনারা এ রকম প্রতারণার ফাঁদে পা দেবেন না।  এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. অহিদুল আলম কালবেলাকে বলেন, এ রকম প্রতারণা অহরহই হচ্ছে। এত ভালো পজিশনের একজন শিক্ষার্থী এ রকম দুর্নীতির আশ্রয়ই বা কেন নেবে। যদি সে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হতো এবং অভিযোগ করত তাহলে আমরা ওই প্রতারকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতাম। তিনি (প্রক্টর) অনাগত শিক্ষার্থীদের এ রকম প্রতারণার ফাঁদে পা না দেওয়ার আহ্বান জানান।
১১ ঘণ্টা আগে

এক ঘণ্টার বৃষ্টিতে ডুবল চট্টগ্রাম নগরী
দীর্ঘ তাপপ্রবাহের পর বৃষ্টিতে স্বস্তি এলেও কালবৈশাখীর তাণ্ডবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে বন্দরনগরী চট্টগ্রামের জনজীবন। গতকাল সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টার পর প্রবল বেগে শুরু হয় বর্ষণ; সঙ্গে কালবৈশাখী। বজ্রপাত ও ঝোড়ো বাতাসে অন্ধকার নেমে আসে পুরো শহরে। মুষলধারে বৃষ্টির সঙ্গে ব্যাপক মাত্রায় বজ্রপাতে থমকে যায় মানুষের চলাচল। ঝড়ে অনেক জায়গায় ভেঙে পড়ে গাছপালা। এক ঘণ্টার বর্ষণে নগরের নিম্নাঞ্চলে সৃষ্টি হয়েছে জলজট। কর্মব্যস্ত দিন শেষে এমন বৃষ্টিতে নগরবাসী স্বস্তি পেলেও বিপাকে পড়েন পথচারী ও কর্মজীবী মানুষ। অনেকে রাস্তার ধারে অপেক্ষা করেন বৃষ্টি থামার। সরেজমিন দেখা যায়, নগরের ইপিজেড, সল্টগোলা, বন্দর, নিমতলা, বারিক বিল্ডিং, আগ্রাবাদ, চৌমুহনী, দেওয়ানহাট, আগ্রাবাদ, জিইসি, ২ নম্বর গেট, মুরাদপুর, বহদ্দারহাট, নতুন ব্রিজ, চকবাজার, কাপাসগোলা, পাঁচলাইশ এলাকার বিভিন্ন স্থানে ভারি বৃষ্টিপাতের ফলে সড়কে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। নগরের জাকির হোসেন রোডে ভেঙে পড়েছে বৈদ্যুতিক খুঁটি, ট্রান্সফরমার ও গাছপালা। এতে এম ই এস কলেজ মোড় থেকে জিইসি মোড়ে যানচলাচলে কিছুটা বিঘ্ন ঘটে। বৈদ্যুতিক খুঁটি ও গাছপালা সরাতে কাজে নামেন বিদ্যুৎ বিভাগ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। খুলশী বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের প্রধান কর্মকর্তা নুর উদ্দিন বলেন, ভারি বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়ার কারণে দুটি বৈদ্যুতিক খুঁটির সঙ্গে সংযুক্ত ট্রান্সফরমার রাস্তায় ভেঙে পড়েছে। সংযোগ বন্ধ থাকায় কোনো ধরনের দুর্ঘটনা ঘটেনি। এ ছাড়া নগরের সিআরবি এলাকায়ও ভেঙে পড়েছে কয়েকটি গাছ। স্থানীয়রা জানান, এসব গাছের বছর ৫০ বছরের ওপরে। গাছগুলো ভেঙে পড়ায় বন্ধ হয়ে যায় যান চলাচল। জিইসি এলাকায় দেখা যায়, হকার ও পথচারীরা রাস্তার পাশের বিভিন্ন দোকান ও শপিংমলের সামনে কোনোমতে মাথা গুঁজেছেন। চকবাজারের কাপাসগোলা এলাকায় বেসরকারি চাকরিজীবী মো. মহীউদ্দিন বলেন, ‘যে বৃষ্টি আর বাতাস। দোকানে আশ্রয় নিলেও শরীরের ৮০ শতাংশই ভিজে গেছে। সকালে রোদ থাকায় ছাতা নিয়ে বের হইনি।’ নগরের ২ নম্বর গেটের বাসিন্দা জামাল উদ্দিন বলেন, ‘জিইসি এসেছিলাম একটি কাজে। বাসার দিকে যাব ঠিক ওই মুহূর্তেই ঝুম বৃষ্টি। এখন দাঁড়িয়ে আছি, বাস পাচ্ছি না।’ বারিক বিল্ডিং এলাকায় কথা হয় পটিয়ার বাসিন্দা নুর মোহাম্মদের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘খুলশীতে যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হয়েছিলাম দুপুরে। হঠাৎ এমন বৃষ্টি আসবে ভাবিনি। রাস্তায় পানি উঠে গেছে। গাড়িও পাচ্ছি না।’
০৭ মে, ২০২৪

এক ঘণ্টার বৃষ্টিতে ডুবল চট্টগ্রাম নগরী
দীর্ঘ দাবদাহের পর চারদিকে ঘোর অন্ধকার হয়ে স্বস্তির বৃষ্টি এলেও হঠাৎ কালবৈশাখী ও বজ্রপাতের তাণ্ডবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে বন্দর নগরী চট্টগ্রামের জনজীবন। সোমবার (৬ মে) বিকেল সাড়ে ৩টার পর প্রবল বেগে শুরু হয় বর্ষণ। সঙ্গে কালবৈশাখী। বজ্রপাত ও ঝোড়ো বাতাসে অন্ধকার নেমে আসে পুরো শহরে।  মুষলধারে বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে মানুষের চলাচল। কোথাও কোথাও ভেঙে পড়ে গাছপালা। নগরের নিম্নাঞ্চলে সৃষ্টি হয়েছে জলজট। কর্মব্যস্ত দিন শেষে এমন বৃষ্টিতে নগরবাসী স্বস্তি পেলেও বিপাকে পড়েন পথচারী ও কর্মজীবী মানুষ। অনেকে বৃষ্টি থামার জন্য ঘণ্টাব্যাপী রাস্তার ধারে অপেক্ষা করেন।  সরেজমিনে দেখা যায়, নগরের ইপিজেড, সল্টগোলা, বন্দর, নিমতলা, বারিক বিল্ডিং, আগ্রাবাদ, চৌমুহনী, দেওয়ানহাট, আগ্রাবাদ, জিইসি, ২ নম্বর গেট, মুরাদপুর, বহদ্দারহাট, নতুন ব্রিজ, চকবাজার, কাপাসগোলা, পাঁচলাইশ এলাকার বিভিন্ন স্থানে ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে সড়কে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। অন্যদিকে হঠাৎ ভারী বৃষ্টিতে নগরের জাকির হোসেন রোডে ভেঙে পড়ে বৈদ্যুতিক খুঁটি, ট্রান্সফরমার ও গাছপালা। এতে এম ই এস কলেজ মোড় থেকে জিইসি মোড়ের যান চলাচলে কিছুটা বিঘ্ন ঘটছে। বৈদ্যুতিক খুঁটি ও গাছপালা সরাতে একযোগে কাজ করছে বিদ্যুৎ বিভাগ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। খুলশী বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের প্রধান কর্মকর্তা নুর উদ্দিন বলেন, ভারী বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়া কারণে দুটি বৈদ্যুতিক খুঁটির সঙ্গে সংযুক্ত ট্রান্সফরমার রাস্তায় ভেঙে পড়েছে। সংযোগ বন্ধ থাকায় কোনো ধরনের  দুর্ঘটনা ঘটেনি। ঘটনাস্থলে বিদ্যুৎ বিভাগের লোকজন কাজ করছে। এ ছাড়া নগরের সিআরবি এলাকায়ও ভেঙে পড়ে কয়েকটি গাছ। স্থানীয়রা জানান, এসব গাছের বছর ৫০ বছরের উপরে। গাছগুলো ভেঙে পড়ায় বন্ধ হয়ে যায় যান চলাচলও। জিইসি এলাকায় দেখা যায়, রাস্তার ধারের হকার ও পথচারীরা রাস্তার পাশের বিভিন্ন দোকান ও শপিংমলের সামনে কোনোমতে মাথা গুঁজেছেন।    চকবাজারের কাপাসগোলা এলাকায় কথা হয় বেসরকারি চাকরিজীবী মো. মহীউদ্দিনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘যে বৃষ্টি আর বাতাস। দোকানে এসে আশ্রয় নিলেও শরীরের ৮০ শতাংশই ভিজে গেছে। আধঘণ্টা ধরে দাঁড়িয়ে আছি। বাসায় যেতে পারছি না। সকালে রোদ থাকায় ছাতাও আনিনি।’ নগরের ২ নম্বর গেটের বাসিন্দা জামাল উদ্দিন কালবেলাকে বলেন, ‘জিইসি এসেছিলাম একটি কাজে। বাসার দিকে যাব ঠিক ওই মুহূর্তেই ঝুম বৃষ্টি। এখন দাঁড়িয়ে আছি বাস পাচ্ছি না।’  বারিক বিল্ডিং এলাকায় কথা হয় পটিয়ার বাসিন্দা নুর মোহাম্মদের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘খুলশীতে যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হয়েছিলাম দুপুরে। হঠাৎ এমন বৃষ্টি আসবে ভাবিনি। আর রাস্তায় পানি ওঠে গেছে। গাড়িও পাচ্ছি না।’ এদিকে, দুপুর ১টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরের জন্য দেওয়া আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে, চট্টগ্রামসহ দেশের সাত অঞ্চলে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৮০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে বয়ে যেতে পারে। আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুকের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকা, ফরিদপুর, বরিশাল, কুমিল্লা, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম এবং সিলেট অঞ্চলসমূহের ওপর দিয়ে পশ্চিম অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৮০ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরসমূহকে ২ নম্বর নৌ-হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।  এ ছাড়া দেশের অন্যত্র একই দিক থেকে অস্থায়ীভাবে ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরসমূহকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
০৬ মে, ২০২৪

চট্টগ্রাম বিভাগীয় কন্ট্রোলার অব অ্যাকাউন্টসের গণশুনানি
এখন মাসের শুরুতেই প্রথম কর্মদিবসের মধ্যে বেতন পাচ্ছেন সরকারি কর্মচারী এবং পেনশনাররা। এমন তথ্য জানিয়েছেন অতিরিক্ত হিসাব মহানিয়ন্ত্রক (প্রশাসন) এএইচএম শামসুর রহমান। রোববার (৫ মে) সকাল সাড়ে ১০টায় চট্টগ্রাম বিভাগের ডিভিশনাল কন্ট্রোলার অব অ্যাকাউন্টস কার্যালয়ে গণশুনানিকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন তিনি।  জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল কর্ম-পরিকল্পনা (২০২৩-২৪) এর আওতায় শুদ্ধাচার প্রতিষ্ঠা ও দুর্নীতি প্রতিরোধে সহায়ক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে এ আয়োজন করা হয়। গণশুনানিতে তিনি সেবাগ্রহীতাদের বিভিন্ন মতামত মনোযোগ সহকারে শুনেন এবং সেবাগ্রহীতাদের গঠনমূলক পরামর্শ বাস্তবায়নের আশ্বাস দেন। শামসুর রহমান বলেন, গণশুনানির মাধ্যমে সেবা প্রদানকারী ও সেবাগ্রহীতাদের মধ্যে সম্পর্ক সুদৃঢ় হয়। স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে হিসাব মহানিয়ন্ত্রক কার্যালয় অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। মাসের প্রথম কর্মদিবসে সরকারি কর্মচারীরা এখন ইএফটির মাধ্যমে বেতন পাচ্ছেন। পেনশনারদের কষ্ট লাঘবে ওয়ান স্টপ সার্ভিস প্রদান করা হচ্ছে। এতে সেবাগ্রহীতাদের সুযোগ অনেক বেড়েছে। বর্তমানে ৮ লাখ পেনশনাররা ইএফটির মাধ্যমে মাসের প্রথম কর্মদিবসে পেনশন পেয়ে থাকেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ ইকতিদার আলম। চট্টগ্রাম বিভাগের ডিভিশনাল কন্ট্রোলার অব অ্যাকাউন্টস এসএম মনজুর আহমেদ অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন। অফিসের সার্বিক কর্মকাণ্ডের ওপর প্রেজেন্টেশন করেন ডেপুটি ডিভিশনাল কন্ট্রোলার অব অ্যাকাউন্টস জিনিয়া আকতার সুপতা। গণশুনানিতে চট্টগ্রাম ৯ এপিবিএনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ইকবাল হোসেন, ফৌজদারহাটের বিআইডিআইডির পরিচালক ডা. মো. সাখাওয়াত উল্লাহ, বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী কমিশনার নীলুফা ইয়াসমিন চৌধুরী, রেলওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার উর্মি দেব, বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের সরবরাহ কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট এম নিজাম উদ্দিন, পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক নাজনীন সুলতানা নীপা, পরিবহন অডিট অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোহাম্মদ মোহসেনুল আলম, সমাজসেবা অফিসার অভিজিৎ সাহা, পেনশনারদের মধ্যে অধ্যক্ষ প্রফেসর মুহাম্মদ এনামুর রশীদ চৌধুরী, সাইফুদ্দিন খালেদ চৌধুরী, এসএম খালেদ, এবিএম ওয়াজি উল্লাহ চৌধুরী, সুনীল কান্তি ঘোষ এবং সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
০৬ মে, ২০২৪

ফিলিস্তিন ইস্যুতে চবির সাধারণ শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন
মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসনবিরোধী শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলন ‘ফ্রি প্যালেস্টাইন মুভমেন্টে’ সংহতি ও ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার দাবিতে মানববন্ধন করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ সময় ‘ফ্রি প্যালেস্টাইন’, ‘বয়কট ইসরায়েল’ বলে স্লোগান দিতে দিতে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের। সোমবার (৬ মে) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক বলেন, ফিলিস্তিনের চলমান স্বাধীনতা আন্দোলন শুধু মুসলিমদের ইস্যু নয়, এটা গোটা মানবজাতির মানবতার ইস্যু। আজকের এই মানববন্ধনে উপস্থিত হতে পারাটা আমার জীবনের সবচেয়ে বড় ঘটনা। সবচেয়ে বড় মূল্যবান বিষয় হলো ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়ানো, অন্যায়ের বিপক্ষে দাঁড়ানো। ফ্যাইন্যান্স বিভাগের শিক্ষার্থী মো. ইশতিয়াক হোসেন মজুমদার বলেন, সবচেয়ে ন্যাক্কারজনক বিষয় হলো ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বিশেষত স্বয়ং ইসলরায়েলের সবচেয়ে বড় দোসর আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার পক্ষে ও ইসলরায়েলের সঙ্গে যাবতীয় সম্পর্ক ছিন্ন করার জন্য আন্দোলন করছে। অথচ আরবরা জাতি ভাই হয়েও আজ নির্বিকার, আরব শাসকগোষ্ঠীসহ জনগণ পর্যন্ত ভোগ-বিলাসে মত্ত হয়ে আছে। তাদের এই ভণ্ডমী একদিন তাদের পতনের কারণ হবে, ইনশাআল্লাহ। যে জাতি স্পেন বিজয় করতে পারে, সে জাতি আজ নিজের বোনের আর্তনাদ শুনতে পায় না। আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী নিয়ামত উল্লাহ ফারাবী বলেন, আমেরিকা গণতন্ত্রের ফেরিওয়ালা সেজে আমাদের মানবাধিকার শেখাতে আসে, অথচ খোদ তাদের ঘরেই প্রতিনিয়ত মানবতা লঙ্ঘন হচ্ছে। ফিলিস্তিনিদের পক্ষে আন্দোলনকারীদের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে, অথচ মার্কিন প্রশাসন সেখানে মানবাধিকার লঙ্ঘন দেখতে পায় না। গত ৮ মাসের জুলুমের করাল গ্রাসে আমাদের ৩৬ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি ভাই শহীদ হয়েছেন, শহীদদের কাতার আরও লম্বা হচ্ছে। কিন্তু বিশ্ব বিবেক এখনও আইসিইউতে রয়ে গেছে। আমরা আজকের মানববন্ধন থেকে ইসরাইল ও তাদের দোসরদের সকল পণ্য বয়কট ঘোষণা করছি।
০৬ মে, ২০২৪

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনের তারিখ ঘোষণা
সব জল্লনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) পঞ্চম সমাবর্তনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। ঘোষণা অনুযায়ী চলতি বছরের ৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে এ সমাবর্তন।  বৃহস্পতিবার (৩০ এপ্রিল) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ বিশ্ববিদ্যালয়-২ অধিশাখার যুগ্ম সচিব মো. পারভেজ হাসান স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে সমাবর্তনের বিষয়টি জানানো হয়। বিবৃতিতে উল্লেখ করা করা হয়, রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য আগামী ৮ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে বিশ্ববিদ্যালয়ের পঞ্চম সমাবর্তন অনুষ্ঠান আয়োজনের অনুমতি ও সভাপতিত্ব করার সম্মতি প্রদান করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার কে এম নূর আহমদ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সমাবর্তন নিয়ে কয়েকদিন আগে একটি বৈঠক হয়। সেখানে ৮ম সমাবর্তনের অনুমতি দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি।   উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দীর্ঘ ৫৮ বছরে সমাবর্তন হয়েছে মাত্র চারবার। সর্বশেষ ২০১৬ সালে চতুর্থ বারের মতো উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরীর সময় সর্বশেষ সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে ১৯৯৪ সালে সর্বপ্রথম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়। এরপর ১৯৯৯ সালে দ্বিতীয় এবং ২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত হয় তৃতীয় সমাবর্তন।  ২০১৬ সালে সর্বশেষ সমাবর্তনের পর উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার অন্তত পাঁচবার ঘোষণা দিয়েও সমাবর্তন আয়োজন করতে পারেননি। এমন পরিস্থিতিতে এবার উপাচার্যের দায়িত্ব নেওয়ার দ্বিতীয় দিনেই (২১ মার্চ) সমাবর্তন আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেন চবির নতুন উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবু তাহের।
০৫ মে, ২০২৪

এনএসআই পরিচয়ে প্রেমের সম্পর্ক, লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থী ও এনএসআই তে চাকরিরত পরিচয়ে প্রেমের সম্পর্ক অতঃপর ১লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।  অভিযোগ করেছেন চবির পদার্থবিদ্যা বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের এক শিক্ষার্থী। এ নিয়ে হাটহাজারী মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী। বৃহস্পতিবার (২ মে) বাদী ওই শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জিরো পয়েন্টে দেখা করতে বাধ্য করা এবং হেনস্তা করলে ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযুক্তকে হেফাজতে নেয় পুলিশ। অভিযুক্ত চট্টগ্রাম নগরীর পাঁচলাইশ এলাকার আবুল বাহারের ছেলে নাজিম উদ্দীন (৩০)। মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, প্রায় সাত মাস পূর্বে ফেসবুকের মাধ্যমে বিবাদীর সঙ্গে আমার পরিচয় হয়। পরবর্তীতে আমাকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র এবং বর্তমানে এনএসআইতে চাকুরি করেন বলে পরিচয় দেন। এরপর থেকেই তার সঙ্গে আমার নিয়মিত কথা চলতে থাকে। কথা বলার এক পর্যায়ে আমাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। পরবর্তীতে বিবাদী বিভিন্ন সমস্যার কথা বলে বিভিন্ন সময় আমার থেকে এক লাখ টাকা নেয়। সম্পর্ক থাকাকালীন সে আমাকে প্রায় সময়ই দেখা করার জন্য বাধ্য করতো। আরও জানা যায়, বিবাদীর সঙ্গে আমার প্রেমের সম্পর্ক থাকার কারণে বিবাদী আমার ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপ তার নিয়ন্ত্রণে ব্যবহার করতো। বিবাদী বিভিন্ন সময় আমার শরীরের স্থিরচিত্র বা ভিডিও ধারণ করে তার কাছে পাঠানোর জন্য হুমকি দিতো। বিবাদীর এমন ব্যবহারে আমি অতিষ্ট হয়ে তার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেই।  এজহারে এতে উল্লেখ করেন, তারই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার রাত আনুমানিক দশটার সময় বিবাদী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এসে আমাকে দেখা করার জন্য জোরাজুরি করলে আমি হল থেকে নেমে ঘটনাস্থলে আসি। ঘটনাস্থলে আসার পরে বিবাদী আমাকে টানা হেঁছড়া করে আমার বাম হাতে বাহুতে ও ঘাড়ের নিচে নখের আঁচড় দিয়ে সাধারণ জখম করে। তখন আমি বাঁচার জন্য আত্মচিৎকার করলে আমার আত্মচিৎকার শুনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য ছাত্ররা এগিয়ে এসে বিবাদীকে আটক করে। আটক করে তার পরিচয় সঠিকভাবে বলার জন্য বললে সে জানান, সে আমার কাছে মিথ্যা সরকারী কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে প্রতারণামূলকভাবে অর্থ গ্রহণ করে এবং প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। মূলত সে একটি প্রাইভেট কোম্পানীতে সেলসম্যান হিসেবে চাকরী করে। ওই বিষয়ে আমি আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরকে অবগত করি।  ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী জানান, প্রায় ছয় মাস আগে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী হিসেবে পরিচয় দিয়ে প্রেমে জড়ায় প্রতারক মো. নাজিম উদ্দিন। পরবর্তীতে এনএসআই'র সদস্য হিসেবেও পরিচয় দেয় এ যুবক। সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে মেয়েকে দিত বিভিন্ন রকম শর্ত। চুল কেটে ফেলা, রুমমেটদের সঙ্গে সম্পর্কছেদ করা, হাতসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ কাটার-ও শর্ত দিত মেয়েটিকে। ভুক্তভোগী ছাত্রীর কথা অনুযায়ী লাখের বেশি টাকা নিয়েছে ছেলেটি। এটিই প্রথম নয় এর আগেও এরকম প্রতারণা করেছে ছেলেটি। যার প্রমাণ আমি পরবর্তীতে পেয়েছি। হাটহাজারী থানায় এ নিয়ে আমি মামলা করেছি। ভুক্তভোগী ছাত্রীর বন্ধুরা প্রতারকের সর্বোচ্চো শাস্তি চেয়ে আবেদন জানান। বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অধ্যাপক ড. অহিদুল আলম কালবেলাকে বলেন, গত বৃহস্পতিবার এরকম একটি ঘটনা ঘটেছিলো। অভিযুক্তকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয় এবং এ ঘটনা ভুক্তভোগী হাটহাজারী থানায় মামলা করেছেন। এ বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ কর্তৃপক্ষ নেবে। মামলার বিষয়ে হাটহাজারী থানার অসি মনিরুজ্জামান কালবেলাকে বলেন, এরকম একটি ঘটনায় মামলা হয়েছে। তদন্ত কমিটি তাদের কাজ করছেন। অভিযুক্ত দোষী সাব্যস্ত হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
০৫ মে, ২০২৪

সিডিএ-চসিকের সমন্বয়হীনতা দূর হওয়ার আভাস
স্বাধীনতা সংগ্রামে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে একসঙ্গে অস্ত্র ধরেন রেজাউল করিম চৌধুরী ও মোহাম্মদ ইউনুছ। এরপর স্বাধীন হয় দেশ, মুক্ত হয় চট্টগ্রাম। সেই যুদ্ধ থেকে বর্তমান রাজনীতির মাঠ, এক সঙ্গেই দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন এই দুজন। একজন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র, অন্যজন চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) নবনিযুক্ত চেয়ারম্যান। চট্টগ্রাম নিয়ে ভাবনা তাদের দীর্ঘদিনের। লড়েছেন মাঠে, করেছেন সংগ্রাম। উন্নয়নের স্বপ্ন নিয়ে জাগিয়েছেনও আশা। তাই তাদের মূল্যায়নও করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু ‘রক্তের দোষ দুই সংস্থায়’ প্রথম থেকেই সমন্বয়হীন তাদের কার্যক্রম। যার রেশ টানতে হয় নগরবাসীকে। বর্ষার দিনে কোমর পর্যন্ত ওঠে পানি, স্তূপ আকারে মশার কামড়ে বছরের পর বছর অতিষ্ঠ নগরবাসী। ফিরছেই না স্বস্তি। শুধু কী মশা আর পানি- নগরজুড়ে মানুষের হাহাকার, দুর্ভোগ নানা বিষয়ে। সবকিছুই মূলেই সবাই দুষছেন চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সমন্বয়হীনতাকে। কিন্তু এবার দুই সংস্থার প্রধান দীর্ঘদিনের এক ঘরনার মানুষ হওয়ার চট্টগ্রামের উন্নয়নে ইতিবাচক প্রভাব পড়ার আভাস দেখছেন নগরবাসী। জানা যায়, বৃষ্টি হলেই ডুববে চট্টগ্রাম- এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এটি যেন নিত্য ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্ষাকালে ‘চাটগাঁবাসী’র অবর্ণনীয় দুর্ভোগ কোনোভাবেই শেষ হচ্ছে না। চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনে ৪টি বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সরকার। ২০১৪ সাল থেকে বিভিন্ন সময়ে শুরু হওয়া এসব প্রকল্পে সরকারের ব্যয় হচ্ছে ১০ হাজার ৮০৩ কোটি টাকা। বড় বড় প্রকল্প নেওয়া হলেও বন্দরনগরীর বাসিন্দাদের জল-ভোগান্তি দূর করতে পারছে না কর্তৃপক্ষ। উল্টো দিন দিন বেড়েই চলেছে ভোগান্তি। এর কারণ হিসেবে সমন্বয়হীনতাকে দায়ী করছেন সংশ্লিষ্টরা। জলাবদ্ধতা নিরসনে বিভিন্ন প্রকল্পের অগ্রগতি ও কোনো প্রকার ত্রুটি আছে কি না তা খতিয়ে দেখতে ২০২১ সালের জুনে চট্টগ্রামে এসেছিলেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। ঘুরে দেখেন বাস্তবায়নাধীন বিভিন্ন প্রকল্প। ওই সময় তিনি নগরের সরকারি কর্মকর্তা ও বিভিন্ন সেবা সংস্থার প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠক করেন। এরপর তিনি বিভাগীয় কমিশনারকে প্রধান এবং সিটি মেয়র ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানকে উপদেষ্টা করে একটি তদারকি কমিটি গঠন করে দেন। কমিটি প্রতি মাসে প্রকল্পের কার্যক্রম ও অগ্রগতি পর্যালোচনা করে প্রতিবেদন দেওয়ার কথা। কিন্তু বর্তমানে ওই কমিটির তেমন কার্যক্রম নেই বললেই চলে। শুরু থেকে কমিটি কোনো প্রতিবেদন দিয়েছিল কি না, সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য জানাতে পারেনি জেলা প্রশাসন। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (চউক), চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) ও পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) আলাদা আলাদা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। উদ্দেশ্য একই হলেও প্রকল্প বাস্তবায়নকারী এ তিন সংস্থার মধ্যে কোনো সমন্বয় নেই। প্রকাশ্যে একটি সংস্থা অন্যটিকে দোষারোপ করছে আর যে যার মতো করে কাজ করছে। এদিকে নগরের নালাগুলো নিয়মিত পরিষ্কার না করায় পানিপ্রবাহ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। বহু নালায় জমেছে ময়লা ও পলিথিনের স্তূপ। নালা পরিষ্কারের দায়িত্ব কার, সেটা নিয়েও দ্বন্দ্ব রয়েছে চসিক-সিডিএর মধ্যে। এদিকে সম্প্রতি জাপানে অনুষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশের বিভিন্ন শিল্পের ব্যবস্থাপনা শীর্ষক এক সেমিনার। সেখানে যোগ দেন চট্টগ্রাম সিটি মেয়র (প্রতিমন্ত্রী) বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী। গেল ১ মে বিকেলে চট্টগ্রামে পৌঁছান তিনি। চট্টগ্রামে পৌঁছা মাত্রই তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) নবনিযুক্ত চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ ইউনুছ।  এ সময় চট্টগ্রাম সিটি মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, চট্টগ্রামের উন্নয়নের স্বার্থে চসিক এবং সিডিএকে যৌথভাবে কাজ করতে হবে। বিশেষ করে নগরীকে জলাবদ্ধতামুক্ত করতে হলে প্রতিষ্ঠান দুটির সমন্বয়ের বিকল্প নেই। এ ছাড়া সিডিএ যে খাল খনন প্রকল্প করছে তা যথাযথ ব্যবস্থাপনার আওতায় আসলে নগরীর মশাও কমবে। এসময় সিডিএর নবনিযুক্ত চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ ইউনুছ বলেন, আমি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখব। চসিক ও সিডিএর মধ্যে কোনো দূরত্ব থাকবে না, সমন্বয়হীনতা থাকবে না। আমরা দীর্ঘসময় ধরে রাজপথে একত্রে লড়েছি। দুজনের অভিজ্ঞতা ও আন্তরিকতায় চট্টগ্রাম এগিয়ে যাবে।  বর্তমানে চলমান প্রকল্পগুলো দ্রুত শেষ করতে চান মোহাম্মদ ইউনুছ। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রামের দায়িত্বভার নিজ কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন। আর প্রধানমন্ত্রীর অভিপ্রায় ও স্বপ্নগুলো বাস্তবায়নের জন্য যেসব প্রকল্প চট্টগ্রামে বরাদ্দ দিয়েছেন সেসব চলমান প্রকল্প যাতে দ্রুত শেষ করাই আমার প্রথম লক্ষ্য। আর যদি কোনো কাজ শেষ না হয়ে থাকে কেন শেষ হয়নি এর সমাধানের পথ বের করা। পূর্ববর্তী বিজ্ঞ চেয়ারম্যানরা কী করেছেন আর কী করেননি তা বিচার বিশ্লেষণ করতে যাব না। তবে চলমান প্রকল্পগুলো শেষ করার পর আমি নতুন কিছু প্রকল্পের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানাব।  প্রকল্প নেওয়ার ক্ষেত্রে সিডিএনর বিরুদ্ধে রয়েছে নানা অভিযোগ। বলা হয়ে থাকে, সংস্থাটি মানুষের গুরুত্বকে প্রাধান্য না দিয়েই নিয়েছিল নতুন নতুন প্রকল্প। পরে যা তদারকি করেই পারছিল না সংস্থাটি। এবার ঠিক কোনো পথে হাঁটবে তারা? নবনিযুক্ত চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ ইউনুছ বলেন, এই নগরে যারা বিশেষজ্ঞরা রয়েছেন, তাদের সঙ্গে আলোচনা করে সময়পোযোগী যেসব প্রকল্পের প্রয়োজন হবে সেসব প্রকল্প গ্রহণ করা হবে। পরিকল্পিত আবাসন নিশ্চিতের এবং পরিবেশ সহায়ক একটি শহর গড়ে তুলতে কাজ করব।
০৪ মে, ২০২৪

চবিতে ‘ম্যাটেরিয়ালস, এনার্জি এন্ড এনভায়রনমেন্ট’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সিম্পোজিয়াম অনুষ্ঠিত
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ‘ম্যাটেরিয়ালস, এনার্জি এন্ড এনভায়রনমেন্ট’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সিম্পোজিয়াম অনুষ্ঠিত হয়েছে। চবির রসায়ন বিভাগের ন্যানোটেকনোলজি রিনিউয়েবল এনার্জি এন্ড ক্যাটালাইসিস রিসার্চ ল্যাবরেটরির (এনআরসিআরএল) এর উদ্যোগে প্রথমবারের মতো আয়োজিত হয় এ অনুষ্ঠান।  শুক্রবার (৩ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের গ্যালারিতে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এ সিম্পোজিয়াম শুরু হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধিকার বেনু কুমার দে ও বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ নাসিম হাসান। রসায়ন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. দেবাশিস পালিতের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী সেশনে স্বাগত বক্তব্য রাখেন কনফারেন্স চেয়ার রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. ফয়সল ইসলাম চৌধুরী। এ ছাড়াও অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সম্মেলনের প্রধান উপদেষ্টা রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মনির উদ্দিন ও ‘বিএনও’ এর ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মোহাম্মদ ইউসুফ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন চবি রসায়ন বিভাগের প্রভাষক অভিজিৎ চক্রবর্তী। উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের বলেন, সমসাময়িক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিম্পোজিয়াম, সেমিনার, ট্রেনিং-ওয়ার্কশপ ইত্যাদির আয়োজন একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত একাডেমিক কার্যক্রম। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের যুগে ন্যানোটেকনোলজি ও আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্সকে কাজে লাগিয়ে আমাদেরকে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। তিনি আরও বলেন, এ ধরনের আন্তর্জাতিক সিম্পোজিয়ামে গবেষকদের গবেষণা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার ফলে উদ্ভাবিত তথ্য উপাত্তের উপর আলোচনা-পর্যালোচনার মাধ্যমে প্রাপ্ত জ্ঞান আমাদের শিক্ষক-গবেষক ও শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ দিক নির্দেশনা। সম্মেলনে গবেষকদের উদ্ভাবিত ফলাফলগুলো থেকে তরুণ গবেষকরা জান ভাণ্ডারকে সমৃদ্ধ করে বাস্তব জীবনে প্রতিফলন ঘটিয়ে নীতি নির্ধারনের মাধ্যমে দেশ-জাতির কল্যাণে কাজে লাগানোর জন্য উপাচার্য আহ্বান জানান। উদ্বোধনী সেশনের পর অনুষ্ঠিত হয় প্লেনারি টক। রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মনির উদ্দিনের সভাপতিত্বে প্লেনারি টক সেশনে প্লেনারি বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন মালয়েশিয়া সানওয়ে ইউনিভার্সিটির প্রফেসর ড. মাঈন উদ্দিন খন্দকার ও জাপান ফুকুশিমা ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ড. ইসমাইল মো. মফিজুর রহমান। প্লেনারি বক্তা হিসেবে ভার্চুয়ালি বক্তব্য রাখেন যুক্তরাষ্ট্রের কফিন স্টেট ইউনিভার্সিটির অধিকার ড. জামাল উদ্দিন।  দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক সিম্পোজিয়ামে উপস্থিত ছিলেন সম্মেলনের সাধারণ সম্পাদক ড. মো. কামরুল হোসাইনসহ বিজ্ঞান অনুষদের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকরা, রসায়ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ আমন্ত্রিত অতিথি ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। আন্তর্জাতিক এ সম্মেলনে দেড় শতাধিক গবেষক ওরাল প্রেজেন্টেশন, পোস্টার প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে তাদের গবেষণাকর্ম উপস্থাপন করেন। এ ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, ফ্রান্স, লিখুনিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, যুক্তরাজ্য, জাপান, মালেশিয়া, চীন ও বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের প্রতিষ্ঠান থেকে গবেষকরা এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন। এ ছাড়া এমআইটি, নর্থ ওয়েস্টার্ন, মালয় বিশ্ববিদ্যালয়, ভারতের আইআইটিসহ বিভিন্ন দেশ থেকে বিশ্বমানের গবেষকরা এই সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন। উল্লেখ্য, এই সম্মেলনে উপস্থাপিত প্রবন্ধগুলোর মধ্য থেকে পিয়ার রিভিউয়ের মাধ্যমে নির্বাচিত প্রবন্ধগুলো স্কোপাস ইনডেক্স আন্তর্জাতিক প্রকাশক এলসিভিয়ারের আওতাধীন কেমিক্যাল ফিজিক্স জার্নালের বিশেষ সংখ্যায় গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশ করার সুযোগ পাবে।
০৩ মে, ২০২৪

প্রধানমন্ত্রীর আস্থা ধরে রাখতে চান সিডিএর নতুন চেয়ারম্যান ইউনুছ
চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) চেয়ারম্যানের চেয়ারে বসেছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ ইউনুছ। নতুন দায়িত্ব নিয়েই কালবেলার মুখোমুখি হয়েছেন সিডিএ’র নতুন এই চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, চট্টগ্রাম নগর উন্নয়নে সব ধরনের চেষ্টাই করা হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে আস্থা আমার ওপর রেখেছেন, সেটা ধরে রাখার জন্য সর্বোচ্চ মূল্যায়ন বা চেষ্টা করবেন বলে জানালেন এ বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি বর্তমান চেয়ারম্যান এম জহিরুল আলম দোভাষের স্থলাভিষিক্ত হলেন। জানা যায়, বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে গত বছরে অন্তত ১২ বারের চেয়ে বেশি ডুবেছে চট্টগ্রাম নগর। আগে জলাবদ্ধতা নিরসনের কাজটি করত চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন। সাত বছর আগে জলাবদ্ধতা নিরসনের মতো কঠিন ও জটিল কাজটি নিজেদের কাঁধে নেয় সিডিএ। পরে এ নিয়ে দুই সংস্থার মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়, যা এখনো দূর হয়নি।  শুধু একটি প্রকল্প নয়, ১৬ বছরে ১৮ হাজার কোটি টাকার অন্তত ২৫টি প্রকল্প হাতে নিয়েছে সিডিএ। তবে বাস্তবায়িত হয়নি কোনো আবাসন প্রকল্প। এর খেসারত দিতে হচ্ছে নগরবাসীকে। চট্টগ্রামের এসব সংকট কাটাতে কীভাবে উদ্যোগী হবেন নতুন চেয়ারম্যান, সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজেছে দৈনিক কালবেলা।   নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত সিডিএ’র চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইউনুছ কালবেলাকে বলেন, সবেমাত্র সোমবার (২৯ এপ্রিল) সকালে সিডিএ ভবনের আসলাম। বিভিন্ন কক্ষ পরিদর্শন করেছি। চউক সভাকক্ষে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে পরিচিত হয়েছি। কথা বলেছি, জানার চেষ্টা করেছি তাদের অভিজ্ঞতা। নগরের উন্নয়নে কাজ করার পাশাপাশি সবাইকে যথাসময়ে অফিসে আসার তাগিদ দিয়েছি। আপাতত চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয় এমন কর্মকাণ্ড করতে সব কর্মকর্তার সহযোগিতা কামনা করেছি। এখন পর্যন্ত বোঝার চেষ্টা করছি। আশা করি, পরবর্তী ব্যবস্থা ও উন্নয়নের বিষয়ে সব ধরনের চেষ্টাই করা হবে।   সিডিএর নতুন চেয়ারম্যান বলেন, ১৯৫৯ সালে প্রতিষ্ঠিত সিডিএর নিয়ন্ত্রিত এলাকা ১ হাজার ১৫২ বর্গকিলোমিটার। সংস্থাটিতে বর্তমানে ৫১৯ পদের বিপরীতে ৩২০ জন কর্মরত। এ কারণে চাইলেও অনেক কিছু সম্ভব হয়নি প্রতিষ্ঠানটির। তবে আমরা এবার ভিন্নভাবে চেষ্টা করব। কাজ করব মানুষের উন্নয়নে। আশা করি পরিবর্তন আসবেই।    সিডিএর নতুন চেয়ারম্যান আরও বলেন, প্রথম দিনই চউকের সিবিএ কর্মকর্তাদের মতামত জেনেছি। এ ছাড়া চউকের বোর্ড মেম্বারদের সঙ্গে আলাদাভাবে সভা করেছি। সেই সভায় জসিম উদ্দিন শাহ, প্রকৌশলী মুনির উদ্দিন আহমদ, মুহাম্মদ আলী শাহ, মোহাম্মদ ফারুক, স্থপতি আশিক ইমরান, জিনাত সোহানা চৌধুরী, এম. আশরাফুল আলম, জিয়াউল হক সুমন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। জানা যায়, চট্টগ্রামকে একটি পরিকল্পিত ও আধুনিক নগর এবং বাসযোগ্য শহর হিসেবে গড়ে তোলার মূল দায়িত্ব সিডিএ’র। নগরবাসীর জন্য আবাসন নিশ্চিত করার কাজও এ সংস্থার। সিডিএর আরেকটি বড় দায়িত্ব ভূমির ওপর যে কোনো ধরনের অপরিকল্পিত উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ এবং আধুনিক ও আকর্ষণীয় পর্যটন অঞ্চল ও নগর পরিকল্পনাসংক্রান্ত উন্নয়নমূলক কাজ করা।  সিডিএ’র গত ১৫ বছরের কার্যক্রম বিশ্লেষণ করে নগরপরিকল্পনাবিদ ও প্রকৌশলীরা বলছেন, পরিকল্পিত চট্টগ্রাম গড়ার চেয়ে অবকাঠামোগত উন্নয়নে বেশি নজর দিয়েছে সিডিএ। বিশেষ করে উড়াল সড়ক ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ এবং জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের কাজ।  সিডিএ সূত্রে জানা যায়, ২০০৯ সালে শেখ হাসিনা সরকার ক্ষমতায় আসার পর নগর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ আবদুচ ছালামকে সিডিএর চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেওয়া হয়। এরপর সিডিএ মূল দায়িত্ব পালনের চেয়ে অবকাঠামোগত উন্নয়নের দিকে নজর দেয়। নিতে থাকে একের পর এক প্রকল্প। ২০০৯ থেকে ২০২৩—এই ১৫ বছরে ১৮ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে অন্তত ২৫টি প্রকল্প হাতে নিয়েছে সিডিএ। এসব উন্নয়ন প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে জলাবদ্ধতা, নতুন সড়ক, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, উড়ালসড়ক ও সড়ক স¤প্রসারণ ইত্যাদি। ইতিমধ্যে ১৮টি প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে। কাজ চলছে সাতটির। এ ২৫টি প্রকল্পের কোনোটিই নির্ধারিত সময়ে শেষ হয়নি। ফলে প্রকল্পগুলোর ব্যয় বেড়েছে। ২০১১ সালের জানুয়ারিতে ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ চট্টগ্রাম সিটি আউটার রিং রোড প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। চারবার প্রকল্প সংশোধন করতে হয়েছে। ৮৫৬ কোটি টাকার এই প্রকল্পের নির্মাণ ব্যয় দাঁড়ায় ৩ হাজার ৩২৪ কোটি টাকা।  পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ এই প্রকল্পের ‘নিবিড় পরিবীক্ষণ প্রতিবেদন’-এ বেশকিছু সমস্যা চিহ্নিত করেছে। এতে বলা হয়, ফিডার রোড-২, সংযোগ সড়ক ও সার্ভিস রোড নির্মাণ করা না হলে এলাকাবাসীর যাতায়াতে অসুবিধা হবে। পাশাপাশি প্রকল্পের পূর্ণাঙ্গ সুফল মিলবে না। প্রতিবেদনে সড়কগুলো নির্মাণের সুপারিশও করা হয়।  এ ছাড়া বায়েজিদ বোস্তামী সড়কের বাংলাবাজার থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফৌজদারহাট পর্যন্ত ছয় কিলোমিটার সংযোগ সড়কে ২০১৩ সালে অনুমোদনের সময় প্রকল্প ব্যয় ছিল ১৭২ কোটি টাকা। ২০১৫ সালে কাজ শেষ করার কথা। কিন্তু এরপর দুই দফা ব্যয় বেড়ে প্রকল্প ব্যয় দাঁড়ায় ৩৫৩ কোটি টাকা। তবে শেষ দফায় বর্ধিত ৩৩ কোটি টাকা দিতে রাজি হয়নি সরকার। এ টাকা জনগণের কাছ থেকে টোল হিসেবে আদায় করা হবে। এই সড়ক নির্মাণ করতে গিয়ে ১৬টি পাহাড় কেটেছে সংস্থাটি। এর ফলে স্থানীয় জীববৈচিত্র্য ও আশপাশের বিদ্যমান পাহাড় ঝুঁকিতে রয়েছে।  
২৯ এপ্রিল, ২০২৪
X