পাবিপ্রবিতে নেই মনোরোগ বিশেষজ্ঞ, হয় না সঠিক কাউন্সিলিং
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পাবিপ্রবি) প্রতিষ্ঠার এক যুগ পার করলেও এখন পর্যন্ত কোনো মনোরোগ বিশেষজ্ঞ নিয়োগ দেওয়া হয়নি। এতে মানসিক স্বাস্থ্যের উপযুক্ত চিকিৎসা না পেয়ে প্রায়ই জটিল সমস্যায় ভোগেন শিক্ষার্থীরা। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে অধ্যয়নরত প্রায় পাঁচ হাজার শিক্ষার্থীর শারীরিক স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার জন্যে ক্যাম্পাসে একটি মেডিকেল সেন্টার থাকলেও মানসিক স্বাস্থ্যসেবার জন্য নেই কোনো কাউন্সিলিং সেন্টার। এতে করে যে সকল শিক্ষার্থী বিভিন্ন ধরনের মানসিক রোগে ভুগছেন, তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে থেকে কোনো চিকিৎসা নিতে পারছেন না। সেশন জটের কারণে ২০২৩ সালের আগস্ট মাসে ইতিহাস বিভাগের দুই শিক্ষার্থী ফেসবুকে আত্মহত্যার হুমকি দেন। এর আগে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে পারিবারিক সমস্যার কারণে পাবনা শহরের একটি মেসে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী তাহমিদুর রহমান জামিল আত্মহত্যা করেন। গত ২৫ মার্চ স্বামীর সঙ্গে ঝগড়ার জের ধরে শারভিন সুলতানা নামের ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের এক শিক্ষার্থী পাবনা শহরের মনসুরাবাদ এলাকায় আত্মহত্যা করেন। সর্বশেষ গত শনিবার ৪ মে আইসিই ডিপার্টমেন্টের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের রিফাত সরকার নামে এক শিক্ষার্থী ড্রপ আউটের সংশয় থেকে আত্মহত্যার করতে যায় কিন্তু ভাগ্যক্রমে সে বেঁচে যান। এরপর থেকে শিক্ষার্থীদের মাঝে দীর্ঘদিন ধরে চলমান মনোরোগ বিশেষজ্ঞ নিয়োগ ও সঠিক কাউন্সিলিংয়ের দাবি আবারও প্রকাশ্যে এসেছে। শিক্ষার্থীরা জানান, ব্যক্তিগত ও পরিবার জীবন, পড়াশোনা ও পরীক্ষার মানসিক চাপ, র‍্যাগিংয়ের শিকার হওয়া, জুনিয়র কর্তৃক সিনিয়র লাঞ্ছিত হওয়াসহ পারিপার্শ্বিক অবস্থার কারণে বিভিন্ন সময়ে জীবনে হতাশা চলে আসে। দীর্ঘদিন ধরে এই হতাশা চলতে থাকলে এটি মানসিক রোগের আকার ধারণ করে। তখন রোগ নিরাময়ের জন্য মনোরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে যাওয়া জরুরি হয়ে পড়ে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো মনোরোগ বিশেষজ্ঞ না থাকার কারণে দিনের পর দিন তাদেরকে অসুস্থ জীবনযাপন করতে হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দাবি, মনোরোগ বিশেষজ্ঞ নিয়োগের দিতে না পারলেও শিক্ষার্থীদের মানসিক সমস্যাসহ যেকোন সমস্যা সমাধানের জন্য ছাত্র উপদেষ্টা দপ্তরের পরিচালকের সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১ টি বিভাগ থেকে ২১ জন শিক্ষককে সহকারী ছাত্র উপদেষ্টা নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। যারা শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যের সুরক্ষার জন্য কাজ করছেন। তবে শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ২১ জন সহকারী ছাত্র উপদেষ্টা নিয়োগ দেওয়া হলেও সেটি কাজে আসছে না। অনেক শিক্ষার্থী আছেন যার জানেনই না ছাত্র উপদেষ্টা দপ্তরের কাজ কি বা শিক্ষার্থীদের কল্যাণের তাদের ভূমিকা কি হতে পারে। তারা আরও বলেন, একজন ডাক্তারের কাজ একজন শিক্ষক দিয়ে সম্ভব না। সেজন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে কাউন্সিলিং সেন্টার খোলা কিংবা মেডিকেল সেন্টারে একজন কাউন্সিলর নিয়োগ দেওয়া জরুরি। এ বিষয়ে বিভিন্ন বিভাগের কয়েকজন সহকারী ছাত্র উপদেষ্টার সঙ্গে এই প্রতিবেদকের কথা হয়। তারা বলছেন, একজন ডাক্তারের কাজ একজন শিক্ষককে দিয়ে হয় না। আমরা হয়তো কিছু সময়ের জন্য একজন শিক্ষার্থীকে ভালো রাখতে পারি, কিন্তু মূল সমস্যার সমাধান দিতে পারি না। শিক্ষার্থীরাও বুঝে আমাদের কাছে আসলে আমরা তাদের মানসিক সমস্যার সমাধান দিতে পারবো না। এই কারণেই হয়তো তারা আমাদের কাছে আসেন না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইংরেজি বিভাগের এক ছাত্রী বলেন, করোনা পরবর্তী সময়ে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অসংখ্য শিক্ষার্থী মানসিক রোগে ভুগছেন। আমারও মাঝে মাঝে অকারণে মন খারাপ হয়, পড়াশোনায় মন বসে না, কারও সঙ্গে কথা বলতে ইচ্ছা করে না। ক্যাম্পাসে যদি কোনো মনোরোগ বিশেষজ্ঞ থাকতো তাহলে হয়তো তাকে সমস্যাগুলো বললে তিনি এর একটা সমাধান দিতেন। ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের শিক্ষার্থী হাসিবুল হক সীমান্ত বলেন, আমরা চাইলেই নিজের ব্যক্তিগত সকল সমস্যার কথা একজন শিক্ষককে বলতে পারি না। বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দিষ্ট কোনো মনোরোগ বিশেষজ্ঞ থাকলে তার কাছে মনের কথা খুলে বলতে পারি। তা ছাড়া একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ আমার মূল সমস্যা আইডেন্টিফাই করতে পারবেন যা একজন শিক্ষক কখনই পারবেন না। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্র উপদেষ্টা দপ্তরের পরিচালক ড. নাজমুল হোসেন কালবেলাকে বলেন, ‘ছাত্র উপদেষ্টা দপ্তরে মানসিক সমস্যা নিয়ে কোনো শিক্ষার্থী আসেন না। আর্থিক সমস্যা নিয়েই বেশি শিক্ষার্থী আসেন। শিক্ষার্থীদের মানসিকভাবে সুস্থ রাখতে আমিও মনে করি এখানে মনোরোগ বিশেষজ্ঞ থাকা প্রয়োজন। এই বিষয়টি আমি প্রশাসনকে জানিয়েছি, আশা করি প্রশাসন দ্রুত একটা সমাধান দিবে।’ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হাফিজা খাতুন বলেন,‘কাউন্সিলিং সেন্টার খোলা বা কাউন্সিলর নিয়োগ করা সময় সাপেক্ষ বিষয়। তবে আমরা শিক্ষার্থীদের জন্য পাক্ষিক বা মাসিক কাউন্সিলিংয়ের ব্যবস্থা করবো। এ নিয়ে আমাদের কথাবার্তা হয়েছে। আশা করি খুব দ্রুতই সবাই এর বাস্তবায়ন দেখবে।’
১২ মে, ২০২৪

গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা / ‘সি’ ইউনিটে পাবিপ্রবিতে উপস্থিতি ৮৩.১৮ শতাংশ
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পাবিপ্রবি) কেন্দ্রে ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের গুচ্ছের ‘সি’ ইউনিটের (ব্যবসায় শিক্ষা) ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। ভর্তি পরীক্ষায় উপস্থিতির হার ৮৩ দশমিক ১৮ শতাংশ। শুক্রবার (১০ মে) সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বিভিন্ন ভবনে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য ১ হাজার ৩৩৮ জন আবেদন করেন। এর মধ্যে ১ হাজার ১১৩ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। সে হিসেবে পরীক্ষায় উপস্থিতির হার ৮৩ দশমিক ১৮ শতাংশ। উপাচার্য অধ্যাপক ড. হাফিজা খাতুন, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কে এম সালাহ্ উদ্দীন ও প্রক্টর ড. মো. কামাল হোসেন পরীক্ষা কেন্দ্র পরিদর্শন করে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভবে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেন। পরীক্ষা শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হাফিজা খাতুন সাংবাদিকদের জানান, পরীক্ষা খুবই সুন্দর, সুশৃঙ্খল ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এ সময় তিনি শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী, প্রক্টরিয়াল বডি ও পুলিশ প্রশাসন, বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনসহ পাবনাবাসীকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর  ড. মো. কামাল হোসেন বলেন, কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই অত্যন্ত সুশৃঙ্খলভাবে 'সি' ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। নিরাপত্তার স্বার্থে আমরা প্রক্টরিয়াল বডি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যৌথভাবে সার্বক্ষণিক কাজ করে যাচ্ছি।
১০ মে, ২০২৪

এক দিনে পাবিপ্রবিতে দুই আগুন
এক দিনে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) ভিন্ন ভিন্ন দুটি স্থানে আগুন লেগেছে। রোববার (৫ মে) ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান ভবনের দ্বিতীয় তলায় ফার্মেসি বিভাগে এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে এ আগুনের ঘটনা ঘটে। জানা যায়, বেলা ১১টার দিকে একাডেমিক ভবনের দ্বিতীয় তলায় ফার্মেসি বিভাগের চেয়ারম্যানের কক্ষের এসি থেকে এবং আবাসিক হলে ছাত্রদের ফেলা সিগারেটের আগুন থেকে পানির পাইপে পৃথক এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটান ঘটে। ফার্মেসি বিভাগের ঘটনায় ফায়ার সার্ভিসের ১টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। বিষয়টি ফার্মেসি বিভাগের চেয়ারম্যান ড. শরিফুল হক নিশ্চিত করেছেন। অন্য ঘটনায় হলের শিক্ষার্থীরা নিজেরাই আগুন নিভিয়ে ফেলে। এ বিষয়ে ফার্মেসি বিভাগের চেয়ারম্যান ড. শরিফুল হক জানান, সকাল ১১টার দিকে ফার্মেসি বিভাগের চেয়ারম্যানের কক্ষের এসিতে আগুন লাগে। তবে ঘটনার সময় আমি পরীক্ষা সংক্রান্ত মিটিংয়ে থাকায় বিভাগে ছিলাম না। ফায়ার সার্ভিসের একটি টিম আগুন নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে।  পরে এসে অফিস স্টাফদের কাছে ঘটনা শুনতে পাই। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল দপ্তরের উপ-বিশ্ববিদ্যালয় প্রকৌশলী (ইইই) মো. রিপন আলী জানান, আগুন লাগার ঘটনা শুনে আমাদের টিম ঘটনাস্থলে গিয়েছিল। বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিটের লুজ কানেকশন থেকে আগুন লেগেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
০৫ মে, ২০২৪

পাবিপ্রবির আবাসিক হলে সুপেয় পানির সংকট
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) ছেলেদের একমাত্র আবাসিক হল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে প্রায় ৬০০ ছাত্র রয়েছে। তবে এত শিক্ষার্থীর বিপরীতে খাবার পানির জন্য আছে মাত্র দুটি টিউবওয়েল। যার একটি টিউবওয়েল গত দুই সপ্তাহ যাবৎ নষ্ট এবং তীব্র গরমের কারণে অন্যটির পানির স্তর নিচে নেমে গেছে। এ অবস্থায় খাবার পানি নিয়ে বিপাকে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা। এ সমস্যা সমাধানের জন্য হলে দুটি ব্লকে প্রতি তলায় সুপেয় পানির ফিল্টার লাগানোর দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা জানান, হলে দীর্ঘদিন ধরে খাবার পানির জন্য মাত্র একটি টিউবওয়েল ছিল। নতুন হল প্রভোস্ট আসার পর খাবার পানির সংকটের কথা জানালে রমজানের আগে ওই টিউবওয়েলের পাশে নতুন আরেকটি টিউবওয়েল স্থাপন করেন। কিন্তু নতুন ওই টিউবওয়েলে পানি লবণাক্ত ও পানির সঙ্গে ময়লা ওঠাতে শিক্ষার্থীরা খাবার কাজে সেটি ব্যবহার করেননি। তখন টিউবওয়েলের সমস্যার কথা ইঞ্জিনিয়ারিং দপ্তরে জানানো হলে তারা জানিয়েছিলেন কিছুদিন পানি তুললে এই সমস্যা হবে। কিন্তু ঈদের দীর্ঘ ছুটির পর শিক্ষার্থীরা ওই টিউবওয়েলটি ব্যবহার করতে গেলে দেখে পানি উঠছে না। অন্যদিকে গরমের কারণে হলের পুরাতন টিউবওয়েলটির পানির স্তর নেমে গেছে। ফলে শিক্ষার্থীদের এখন দ্বিগুণ কষ্ট করে ওই টিউবওয়েল থেকে পানি তুলতে হয়। শিক্ষার্থীরা আরও জানান, পুরাতন টিউবওয়েলটি ছাড়া হলের অন্য কোথাও বিশুদ্ধ খাবার পানির ব্যবস্থা নাই। ডাইনিংয়ে যে পানি খাওয়ানো হয় সেটি আসে হলের ট্যাংকি থেকে। ট্যাংকির পানি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় সাবমারসিবল লাইন থেকে আসলেও দীর্ঘদিন ধরে পানির লাইন ও ট্যাংকিগুলো পরিষ্কার করা হয় না। এতে করে এই পানি পান করলে স্বাস্থ্যঝুঁকি থাকে। ডাইনিংয়ের পানি পান করে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সময় পেটের অসুখের খবর শোনা গেছে। তাদের দাবি, খাবার পানির ভোগান্তি কমানোর জন্য ডাইনিংসহ হলের দুই ব্লকের প্রতি তলায় তলায় বিশুদ্ধ পানির ফিল্টার বসানো হলে ভোগান্তি কমবে। এতে করে শিক্ষার্থীরা যেমন নিরাপদ পানি পাবে তেমনি তাদের শ্রম ও সময় বাঁচবে। নগর ও উন্নয়ন পরিকল্পনা বিভাগের শিক্ষার্থী প্রান্ত হাসান মিলন বলেন, ‘প্রতিদিন খাবার পানি আনতে অনেক কষ্ট করতে হয়। বেশির ভাগ সময়েই পানির জন্য লাইন ধরতে হয়। পাঁচ তলা থেকে পানি নেওয়ার জন্য ওঠানামা কষ্টের কাজ। আবার টিউবওয়েল মাঝে মাঝে নষ্ট হয়ে যায়। যদি প্রতি তলায় তলায় ফিল্টার বসানো হয় তাহলে আমাদের কষ্ট কমে যাবে।’ বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী জহির রায়হান বলেন, ‘হলে পুরাতন টিউবওয়েলটিই বিশুদ্ধ পানির উৎস। এটির পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়াতে এখন আমরা ভোগান্তিতে আছি। নতুন টিউবওয়েলটি বসানোর পর সেটিও নষ্ট হয়ে যায়। এ অবস্থায় আমাদের জন্য নিরাপদ খাবার পানি ব্যবহার করা জরুরি হয়ে পড়েছে।’ এ বিষয়ে জানতে চাইলে হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আমিরুল ইসলাম মিরু কালবেলাকে বলেন, ‘আমি আসার পরপরই নতুন একটি টিউবওয়েল বসিয়েছি। কোনো কারণে সেটি নষ্ট হয়ে গেছে। আমি ইঞ্জিনিয়ারিং দপ্তরকে অতি দ্রুত পানির সমস্যা সমাধান করতে বলেছি, সমস্যার সমাধান না হলে আমরা বিকল্প কিছু চিন্তা করব।’ ইঞ্জিনিয়ারিং দপ্তরের বিশ্ববিদ্যালয় প্রকৌশলী (চলতি দায়িত্ব) ফরিদ আহমেদ বলেন, টিউবওয়েলের সমস্যার কথা আমি আজকে জেনেছি। আমরা এটি মেরামত করার ব্যবস্থা করব। আর নিরাপদ পানির জন্য হলে আমরা পানির ফিল্টার বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আশা করি, দ্রুতই নিরাপদ পানির সমস্যার সমাধান হবে।’
০৪ মে, ২০২৪

গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা: ‘বি’ ইউনিটে পাবিপ্রবিতে উপস্থিতি ৮৪.২১ শতাংশ
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পাবিপ্রবি) কেন্দ্রে ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের (মানবিক শাখা) ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। ভর্তি পরীক্ষায় উপস্থিতির হার ৮৪ দশমিক ২১ শতাংশ।   শুক্রবার (৩ মে) বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বিভিন্ন ভবনে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।  যেখানে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য ৫ হাজার ৮৪০ জন আবেদন করেন। এর মধ্যে ৪ হাজার ৯১৮ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। সে হিসেবে পরীক্ষায় উপস্থিতির হার ৮৪.২১ শতাংশ। উপাচার্য অধ্যাপক ড. হাফিজা খাতুন, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম মোস্তফা কামাল খান ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কে এম সালাহ্ উদ্দীন পরীক্ষা কেন্দ্র পরিদর্শন করে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভবে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেন। পরীক্ষা শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হাফিজা খাতুন সাংবাদিকদের বলেন, পরীক্ষা খুবই সুন্দর, সুশৃঙ্খল ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এ সময় তিনি শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী, প্রক্টরিয়াল বডি ও পুলিশ প্রশাসন, বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনসহ পাবনাবাসীকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। এ সময় উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম মোস্তফা কামাল খান, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কে এম সালাহ উদ্দীন ও প্রক্টর ড. মো. কামাল হোসেন, বিভিন্ন অনুষদের ডিন,শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক'সহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর  ড. মো. কামাল হোসেন বলেন, কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই অত্যন্ত সুশৃঙ্খলভাবে ’বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। নিরাপত্তার স্বার্থে আমরা প্রক্টরিয়াল বডি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যৌথভাবে সার্বক্ষণিক কাজ করে যাচ্ছি।   প্রসঙ্গত, আগামী  শুক্রবার (১০ মে) ‘সি’ ইউনিটের (বাণিজ্য) ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে এবং এরই মধ্যে দিয়ে এ বছরের গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় সমূহের ভর্তি পরিক্ষা শেষ হবে।
০৩ মে, ২০২৪

পাবনা কারাগারে কয়েদির মৃত্যু
পাবনা কারাগারে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাবিবুর রহমান নামে এক কয়েদির মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) রাতে তার মৃত্যু হয়। মৃত হাবিবুর রহমান পাবনার আটঘরিয়া উপজেলার পাটেশ্বর গ্রামের মৃত ইন্তাজ আলীর ছেলে। পাবনা কারাগারের জেলার আনোয়ার হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ব্যাংকের চেক ডিজঅনার মামলায় গত ৫ মার্চ আটঘরিয়া থানা পুলিশ হাবিবুর রহমানকে (৬০) গ্রেপ্তার করে পাবনা জেলা কারাগারে পাঠায়। এরপর থেকে তিনি কারাগারে কয়েদি হিসেবে ছিলেন। বৃহস্পতিবার রাতে তিনি বুকে ব্যথা অনুভব করলে তাকে দ্রুত জেলা কারাগার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে তাকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতেই তার মৃত্যু হয়। শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) সকালে পাবনা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে নিহতের ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান জেলার আনোয়ার হোসেন। তার মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে জেলার আনোয়ার হোসেন চিকিৎসকের বরাত দিয়ে জানান, হাবিবুর রহমানের শ্বাসকষ্ট ছিল। মূলত হার্ট অ্যাটাকে তার মৃত্যু হয়েছে।
১৯ এপ্রিল, ২০২৪

ইউজিসির তদন্ত উপেক্ষা, পাবিপ্রবির সেই শিক্ষককে দেওয়া হচ্ছে পদোন্নতি!
অবৈধভাবে নিয়োগ ও একাধিকবার পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে পাওয়া পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মুশফিকুর রহমানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) তদন্ত কমিটি। দীর্ঘ ৪ বছরেও তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নিয়েই উল্টো তাকে গ্রেড টু অধ্যাপক পদে পদোন্নতি দিচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বুধবার (২৭ মার্চ) দিনের অফিসিয়াল যে কোনো সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক হাফিজা খাতুনের সভাপতিত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের আপগ্রেডেশন বোর্ডের সভা হওয়ার কথা রয়েছে। এই সভায় অধ্যাপক ড. মো. মুশফিকুর রহমানকে পদোন্নতি দেওয়া হবে বলে জানা গেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক ও কর্মকর্তারা বলেন, ২০১৮ সালে ইউজিসির তৎকালীন সদস্য প্রফেসর ড. এম শাহ নাওয়াজ আলির নেতৃত্ব গঠিত তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি পাবিপ্রবি শিক্ষক ড. মুশফিকুর রহমানের নিয়োগ থেকে শুরু করে পদোন্নতি ও পদ-পদবি গ্রহণ সবকিছুতেই অনিয়মের প্রমাণ পায় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী পাবিপ্রবি কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করে। কিন্তু সেই সুপারিশ দীর্ঘ ৪ বছরেও বাস্তবায়ন হয়নি। ইউজিসির তদন্ত প্রতিবেদনের সে সুপারিশ অমান্য করে ক্ষমতার অপব্যবহার দ্বারা উপাচার্য হাফিজা খাতুন অদৃশ্য কারণে মুশফিকুর রহমানকে গ্রেড টু অধ্যাপক পদে পদোন্নতি দিচ্ছেন। অধ্যাপক মুশফিকুর রহমানের বিরুদ্ধে ওঠা অনিয়মের অভিযোগ, তার লিখিত বক্তব্য, পাবিপ্রবি কর্তৃপক্ষের বক্তব্য এবং ইউজিসির তদন্ত প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে স্নাতক (সম্মান), স্নাতকোত্তরসহ সকল পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণি চাওয়া হলেও এই শিক্ষক রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত একটি কলেজ থেকে স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর উভয় পরীক্ষায় দ্বিতীয় শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয়েও তদবিরের জোরে কয়েকজন প্রথম শ্রেণি পাওয়া প্রার্থীকে পেছনে ফেলে সহকারী অধ্যাপক পদে চাকরি বাগিয়ে নেন। তদন্ত কমিটির পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, ‘মুশফিকুর রহমানের আবেদনপত্রটিই বাতিল হওয়ার কথা ছিল। ১ম শ্রেণি প্রাপ্তযোগ্য প্রার্থী থাকা সত্ত্বেও অযোগ্য প্রার্থীকে নির্বাচনী বোর্ডে ইন্টারভিউয়ের জন্য ডাকা এবং নিয়োগ প্রদান সম্পূর্ণ অবৈধ।’ এরপর মুশফিকুর রহমান অদৃশ্য কারণে সহকারী অধ্যাপক থেকে সহযোগী অধ্যাপক এবং সহযোগী অধ্যাপক থেকে অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পেয়েছেন পাবিপ্রবি পদোন্নতির নীীতমালার শর্ত পূরণ না করেই। পাবিপ্রবি নীতিমালায় সহকারী অধ্যাপক পদে সক্রিয় চাকরি ছয় বছর থাকলে তবেই সহযোগী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পাওয়ার বিধান রয়েছে। কিন্তু তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ‘তার (মুশফিকুর রহমানের) এ বিশ্ববিদ্যালয়ে সক্রিয় চাকরিকাল ছিল ১ বছর ৭ মাস ২৪ দিন। তাই তার সহযোগী অধ্যাপক পদে আপগ্রেডেশন সম্পূর্ণ নিয়ম বহির্ভূত।’ অধ্যাপক পদে আপগ্রেডেশনের ক্ষেত্রেও তিনি নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়েছেন বলে তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। এখানেই শেষ নয়, তারই বিভাগের শিক্ষক হাসিবুর রহমানের গবেষণাপত্র নিজ নামে প্রকাশ করার অভিযোগও ওঠে মুশফিকুর রহমানের বিরুদ্ধে। এ ছাড়া আরও একাধিক গবেষণাপত্রে চৌর্যবৃত্তির অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে বলে তার বিভাগের একাধিক শিক্ষক জানান। পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে সহযোগী অধ্যাপকের নিচে ডিন হওয়ার নিয়ম না থাকলেও সহকারী অধ্যাপক হয়েও তিনি ডিন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয় ‘ডিন পদে তার নিয়োগ বিশ্ববিদ্যালয় আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।’ এসব কারণে তদন্ত কমিটি মুশফিকুর রহমান সম্পর্কে উত্থাপিত বিভিন্ন অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তার বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করে। কিন্তু সে সুপারিশ অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ না করে অতীতের উপাচার্যগণের অনিয়মের ধারাবাহিকতায় বর্তমান উপাচার্য হাফিজা খাতুনও ক্ষমতার অপব্যবহার করে মো. মুশফিকুর রহমানকে গ্রেড টু অধ্যাপক পদে পদোন্নতির সকল আয়োজন সম্পন্ন করেছে। এ বিষয়ে অধ্যাপক ড. মুশফিকুর রহমান বলেন, ‘এটা কোনো পদন্নোতি নয় অর্থনৈতিক লাভজনক একটা বিষয় অন্য কোনো বিষয় নয়। ২০১৮ সালে ইউজিসির দেওয়া আমার বিরুদ্ধে সেই সব অভিযোগ নিষ্পত্তি হয়েছে বলেই আমি অধ্যাপক পদে পদোন্নত পেয়েছি। কেউ হয়তো ব্যক্তিগতভাবে অভিযোগ দিয়েছিলেন আমরা বিরুদ্ধে সেই সব অভিযোগের নিষ্পত্তি হয়েছে।’ তদন্ত কমিটি তো আপনার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছিল, কোনো ব্যবস্থা নিয়েছিল কিনা- এমন প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে পারেননি তিনি। এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক হাফিজা খাতুন বলেন, ‘আপনার কাছে এই নিউজটা কে দিয়েছে। ইউজিসির তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন তো শুধু আমার কাছে থাকবে। কিন্তু আমাদের ফাইলে তো নাই সেটা (তদন্ত প্রতিবেদন), থাকলেও হয়তো ওটা ওনার ওভারকাম হয়েছে। কেউ হয়তো আপনাকে রিকোয়েস্ট করেছে তাই আপনারা শুধু তার ব্যাপারই (নিউজ) দেখছেন। শুধু একজনের বিরুদ্ধে নিউজ করা কি আপনাদের সাংবাদিকতার মধ্যে পড়ে ভাই, সেটা আগে জানতে চাই। কিন্তু এখন আমার মিটিং চলছে এখন কথা বলতে পারব না। পাবিপ্রবি অফিসার সমিতির সভাপতি হারুনার রশিদ ডন বলেন, ‘উপাচার্য হাফিজা খাতুনের হাতে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় জিম্মি হয়ে পড়েছে। তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার করে যা খুশি তাই করছেন। কোনো নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা করছে না। তার পছন্দের কিছু চাটুকার শিক্ষক-কর্মকর্তাকে যখন যেভাবে ইচ্ছা পদোন্নতি দিচ্ছেন।
২৭ মার্চ, ২০২৪

এবার ওড়না কেটে নামানো হলো পাবিপ্রবি ছাত্রীর মরদেহ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যায়ের (জবি) শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) এক শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার অভিযোগ উঠেছে। সারভিন সুলতানা (২৬) বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের স্নাতকোত্তর ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ওই শিক্ষার্থী। সোমবার (২৫ মার্চ) মনসুরাবাদ আবাসিক এলাকার ৫ নাম্বার রোডের গ ব্লকের একটি ফ্ল্যাট বাসা থেকে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত ওই ছাত্রী মেহেরপুরের জেলার গাংনী থানার সালদা গ্রামের আজিজুল ইসলামের কন্যা। বাড়ির মালিকের স্ত্রী মেরিনা ইসলাম কালবেলাকে জানান, ২ মাস আগে ওই ছাত্রীর স্বামী এই বাসাটি ভাড়া নেন। তবে তারা সেখানে নিয়মিত থাকতেন না। গতকাল রাতে নিহতের স্বামী বাসায় ছিলেন না, তিনি ঢাকায় ছিলেন। সকাল সাড়ে ৯টায় তার স্বামী ঢাকা থেকে আসলে এক সঙ্গে ওই ফ্ল্যাটে যান। ফ্ল্যাটে গিয়ে দেখেন দরজা বন্ধ। দরজা ধাক্কাধাক্কির পরেও না খুললে সবার সন্দেহ হয়। পরে পুলিশকে ফোন দিলে তারা ফায়ার সার্ভিসকে নিয়ে এসে দরজা ভাঙলে নিহতকে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। নিহতের স্বামীর নাম আসিফ মোর্শেদ (২৬) তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও উন্নয়ন পরিকল্পনা বিভাগের একই শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এবং নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার পূর্ব এখলাসপুরের আবদুল মালেকের ছেলে। তিনি কালবেলাকে জানান, গতকাল বিকেল ৪টার সময় সারভিনের সঙ্গে আমার শেষ কথা হয়। এরপর থেকে তার ফোন বন্ধ দেখাচ্ছিল। সেহরির সময় ফোন দিলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি। এমন পরিস্থিতিতে আমি ঢাকা থেকে রওনা হই। বাসায় এসে বাড়ীওয়ালাকে সাথে নিয়ে ফ্ল্যাটে গেলে ফ্ল্যাটের দরজা বন্ধ দেখি। এরপর পুলিশ এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে খবর দিলে তারা এসে দরজা খুললে তাকে গলায় ওড়না প্যাঁচানো অবস্থায় সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলতে দেখি। নিহতের সহপাঠীরা জানান, নিহত ওই শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ হাসিনা হলের ৪০৯ নাম্বার রুমের আবাসিক শিক্ষার্থী। বিয়ের পর থেকে সে কখনো হলে থাকতেন কখনো স্বামীর সঙ্গে মনসুরাবাদে থাকতেন। বিয়ের পর কারও সঙ্গে তেমন কিছু শেয়ার করতেন না। হঠাৎ এ ঘটনায় তারা বিস্মিত হয়েছেন। এই ঘটনাটি আত্মহত্যা নাকি অন্য কিছু প্রশাসনকে সেটি তদন্ত করে বের করার অনুরোধ জানান  তারা। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. কামাল হোসেন বলেন, আমরা বেলা ১১টায় খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে যাই। তখন দেখি পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস চলে এসেছে। এরপর দরজা ভাঙলে তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রওশন আলী বলেন, আমরা খবর পেয়ে পুলিশ পাঠাই। সেখানে পুলিশ গিয়ে ফ্ল্যাটে ঝুলন্ত অবস্থা পাওয়া যায়। মরদেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট আসলে বিস্তারিত বলা যাবে।
২৫ মার্চ, ২০২৪

টাকা ছাড়া ফাইল জমা হয় না পাবনা বিআরটিএ অফিসে
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) পাবনা অফিস যেন দালাল চক্রের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। ড্রাইভিং লাইসেন্স, নবায়ন, যানবাহনের রেজিস্ট্রেশন, রুট পারমিটসহ সংশ্লিষ্ট কাজ করিয়ে দেওয়ার নামে কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে যোগসাজশ করে সেবা গ্রহীতাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন এই দালালরা। এখানে দালাল ধরলে ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য পরীক্ষাও দিতে হয় না। ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া গাড়ির রেজিস্ট্রেশন না দেওয়ার বিধান থাকলেও উৎকোচের বিনিময়ে লার্নার (শিক্ষানবিশ) কার্ডধারীদের নিয়মিতই রেজিস্ট্রেশন দিয়ে যাচ্ছেন দালাল চক্রের সদস্যরা। ফটোকপির দোকানে ২০০ টাকার বিনিময়ে ডাক্তারি পরীক্ষার সার্টিফিকেটও পাওয়া যাচ্ছে। আবার কিছু নির্দিষ্ট ক্লিনিক বা ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সঙ্গে যোগসাজশ করে সেখানে সেবা গ্রহীতাদের পাঠানো হয়। বেশি টাকা দিলে দ্রুত ডাক্তারি পরীক্ষার সার্টিফিকেটও মিলছে। গত সোম, মঙ্গল ও বুধবার বিআরটিএর অফিস ঘুরে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। তবে বিআরটিএ কর্মকর্তাদের দাবি, এই অফিসে কোনো দালাল নেই। এখানে নিয়মমাফিক কাজ হয়। পাবনা বিআরটিএ অফিস সূত্রে জানা গেছে, প্রতি মাসে অফিসে তিনটি করে বোর্ড বসে। একেকটি বোর্ডের জন্য সর্বোচ্চ ২২০ জন ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে পারেন। এক একটি বোর্ডের আবেদনকৃত ২২০ জনের মধ্যে ১৫০ থেকে ১৫৫ জন করে মোট ৬০০ জন আবেদন করলে ৫০০ জনের মতো ড্রাইভিং লাইসেন্সের পরীক্ষা দিতে আসেন। পরীক্ষায় পাস করলে অনলাইনে টাকা জমা নেওয়ার অপশন শুরু হয়। তবে জেলায় কতটি বৈধ যানবাহন আর কতটি অবৈধ যানবাহন রয়েছে সেই তথ্য জানা যায়নি। সদর উপজেলার গয়েশপুর এলাকার টিপু সুলতান বলেন, তিন বছর ধরে লাইসেন্সের জন্য ঘুরছি। আজ নয় কাল, কাল নয় পরশু হবে। দালাল ধরে ড্রাইভিং লাইসেন্স করলে ১০ থেকে ১৩ হাজার টাকা খরচ হয়। পরীক্ষায়ও অটোপাস করা যায়। তবে নিজে নিজে অনলাইনে আবেদন করা বেটার। পরিচয় গোপন করে লিটন হোসেন নামে এক দালালের সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তিনি বলেন, ১৩ হাজার টাকা দিলে ৩ থেকে ৪ মাসের মধ্যেই আপনি লাইসেন্স পেয়ে যাবেন। শুধু ফিঙ্গার দিতে হবে পরীক্ষাও দিতে হবে না। পেশাদার এবং অপেশাদার দুটি করতে একই খরচ। আমাদের কাছে দিলে দ্রুত পাবেন। ৬ হাজার টাকার রশিদ পাবেন। বাকি টাকা অফিসের বিভিন্ন জনকে দিতে হবে। জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি ফিরোজ আলী খান বলেন, আগে তো হয়রানির শেষ ছিল না। এখন একটু ভালো হচ্ছে। ওখানে কিছু দালাল আছে ডাবল টাকা নেয় আর মানুষকে হয়রানি করে। বিআরটিএর পাবনা অফিসের মোটরযান পরিদর্শক হাফিজুর রহমান বলেন, মানুষজন এখন ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে শুধু একবারই পাবনা বিআরটিএ কার্যালয়ে আসে। বাড়িতে বসে বা দোকান থেকে অনলাইনে ড্রাইভিং লাইসেন্সের আবেদন করে। অটোভাবে কোন দিন পরীক্ষা দিতে হবে তার মোবাইলের মেসেজ চলে যায়। তবে পাবনা অফিসে কোনো দালাল নেই বলে জানান তিনি। বিআরটিএর পাবনা অফিসের সহকারী পরিচালক আব্দুল হালিম বলেন, পাবনা অফিসে কোনো দালাল নেই। এখানে কোনো অনিয়ম হয় না। তবে পাবনায় কতটি বৈধ ও অবৈধ যানবাহন রয়েছে সেই তথ্য চাইলে তিনি তা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। পুলিশ সুপার আকবর আলী মুন্সি বলেন, আসলে আমরা যখন কোনো গাড়ি ধরি তখন তার থেকে গাড়ির কাগজ ও ড্রাইভিং লাইসেন্স দেখতে চাওয়া হয়। যখন কারও দেখি সে পাঁচ বছর আগে লার্নার করছে এরপর কোনো অগ্রগতি নেই তাকে আমরা সেভাবে মামলা বা জরিমানা করি। যদি কারও দেখি অল্প দিন আগে লার্নার করা তার কাগজপত্রের অগ্রগতি আছে তাকে আমরা সেভাবে কনসিডার করি। বিআরটিএ অফিসে দালালদের দৌরাত্ম্যের বিষয়ে তিনি বলেন, ওই অফিস যদি সুনির্দিষ্ট তথ্য দেয় তাহলে পুলিশের পক্ষ থেকে দালালদের আটক করতে কোনো কার্পণ্য করা হবে না। জেলা প্রশাসক মুহা. আসাদুজ্জামান বলেন, এ বিষয়ে খোঁজখবর নেব। দালাল চক্রের সিন্ডিকেট গড়ে ওঠার সুযোগ নেই। যদি অফিসের কর্মকর্তারা দালালদের সঙ্গে যোগসাজশ করে গ্রাহকদের হয়রানি করে থাকেন তাহলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
০৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

বঙ্গভবনের উদ্দেশে পাবনা ছেড়েছেন রাষ্ট্রপতি
চার দিনের রাষ্ট্রীয় সফর শেষ করে নিজ জেলা পাবনা ছেড়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সার্কিট হাউসে গার্ড অব অনার গ্রহণ শেষে পাবনার অ্যাডভোকেট আমিন স্টেডিয়াম থেকে হেলিকপ্টারে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন তিনি। পাবনার জেলা প্রশাসক মুহা. আসাদুজ্জামান এবং পাবনা পুলিশ সুপার আকবর আলী মুন্সিসহ সব কর্মকর্তা তাকে বিদায় জানান। পাবনার জেলা প্রশাসক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে গত ১৬ জানুয়ারি বৈরী আবহাওয়ার কারণে দুপুর ২টা ১০ মিনিটে ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারযোগে পাবনার ঈশ্বরদী বিমানবন্দর এসে পৌঁছান রাষ্ট্রপতি। সেখান থেকে সড়কপথে পাবনা সার্কিট হাউসে বিকেল ৩টায় রাষ্ট্রপতি গার্ড অব অনার গ্রহণ করেন।  সফরসূচি থেকে জানা গেছে, প্রথমদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে পাবনা সার্কিট হাউস থেকে রাষ্ট্রপতি তার অন্যতম আড্ডাস্থল পাবনা ডায়াবেটিকস সমিতিতে প্রবেশ করেন। সেখানে কয়েক মিনিট অতিবাহিত করার পর হেঁটে আসেন আরেক আড্ডাস্থল লক্ষ্মী মিষ্টান্ন ভান্ডারে। সেখান থেকে প্যারাডাইস সুইটস ঘুরে রাত সাড়ে ৮টার দিকে প্রবেশ করেন স্মৃতিবিজড়িত প্রিয় সংগঠন পাবনা প্রেসক্লাবে। সেখানে বেশ কয়েক মিনিট সময় অতিবাহিত করে রাষ্ট্রপতি ফেরেন সার্কিট হাউসে। এ সময় স্থানীয় বন্ধুবান্ধব ও নেতাকর্মীরা তার সঙ্গে ছিলেন। গত ১৭ জানুয়ারি সকাল ১১টার দিকে পাবনা সদর কবরস্থানে বাবা-মায়ের কবর জিয়ারত করেন। পরে সন্ধার দিকে রাষ্ট্রপতির দিলালপুরের শশুর বাড়িতে আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। রাতে‌ পাবনা শহরের মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভা করেন। এ সময় তিনি পাবনায় শেখ কামাল হাইটেক পার্ক নির্মাণের ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, অচিরেই সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে ইছামতি নদীর খননকাজ শুরু হবে। পাবনা থেকে মানুষ ট্রেনে সরাসরি ঢাকা যাবে। পাবনা মেডিকেল কলেজের কাজ শুরু হয়ে যাবে। গতকাল দুপুরে পাবনার রূপকথা ইকো রিসোর্টে মতবিনিময় সভা করেন। এরপর বিকেলে পাবনা সার্কিট হাউসে অবস্থান করেন। পাবনার জেলা প্রশাসক মুহা. আসাদুজ্জামান বলেন, চার দিনের সফর শেষ করে রাষ্ট্রপতি ঢাকায় চলে গেছেন। তার পাবনা সফর ফলপ্রসূ হয়েছে। শান্তিপূর্ণভাবে সকল প্রোগ্রাম সম্পন্ন হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিরাপত্তার সার্বিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। উল্লেখ্য, এর আগে দ্বিতীয়বারের মতো গত বছরের ২৭ সেপ্টেম্বর তিন দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে তার নিজ জেলা পাবনায় আসেন রাষ্ট্রপতি। সফরের দ্বিতীয় দিন ২৮ সেপ্টেম্বর পাবনার সাঁথিয়ায় নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতার ফাইনাল অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগদান করেন তিনি। পরে ৫০০ শয্যার পাবনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন, পাবনা ডায়াবেটিস সমিতির অনুষ্ঠানে যোগদানসহ স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন রাষ্ট্রপতি। এর আগে গত ১৫ মে চার দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে তার নিজ জেলা পাবনায় এসেছিলেন রাষ্ট্রপতি। সফরের দ্বিতীয় দিন ১৬ মে পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ মাঠে তাকে বিশাল নাগরিক সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
১৯ জানুয়ারি, ২০২৪
X