ইসলামী ছাত্র আন্দোলন কবি নজরুল কলেজের ক্যাম্পাস সম্মেলন অনুষ্ঠিত
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই বলেছেন, শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড, শিক্ষাই মূল, শিক্ষার মাধ্যমেই পরিবর্তন করা সম্ভব। শিক্ষার মাধ্যমেই নৈতিকতা ও সংস্কৃতির পরিচয় বহন করে। শিক্ষা ও সংস্কৃতির মাধ্যমেই একটি জাতির পরিচয় পাওয়া যায়। এ জন্য কোনো জাতিকে ধ্বংস করতে চাইলে তার শিক্ষাব্যবস্থা ও সংস্কৃতিকে ধ্বংস করতে হয়। এ জন্য বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থার ওপর শকুনের দৃষ্টি পড়েছে। আমাদের দেশের শিক্ষাব্যবস্থার দিকে তাকালে বুঝাই যাবে না এটা ৯২ ভাগ মুসলমানের শিক্ষা কারিকুলাম। শিক্ষাকে ভিনদেশি ধাঁচে সাজানো হয়েছে, ইসলামশূন্য করার টার্গেট নিয়ে। এর মাধ্যমে মেধাসম্পন্ন জাতি এবং বিজ্ঞানী গড়ে ওঠার কোনো সুযোগ নেই। নেই আদর্শ জাতি গঠনের কারিকুলাম। বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) সকালে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ কবি নজরুল সরকারি কলেজ অডিটরিয়ামে ক্যাম্পাস সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। সংগঠনের কবি নজরুল সরকারি কলেজ শাখা সভাপতি উবায়দুল্লাহ মাহমুদের সভাপতিত্বে ক্যাম্পাস সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় মুক্তিযোদ্ধাবিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম। প্রধান বক্তা ছিলেন, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মুহাম্মদ ইমরান হোসেন নূর।   মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই বলেন, ইসলামী শিক্ষার মূল ভিত্তি হলো ওহি। শিক্ষা ছাড়া কোনো জাতি উন্নতি অগ্রগতি করতে পারে না। শিক্ষা ছাড়া নিজ পরিচয় তুলে ধরা যায় না। কিন্তু এখন শিক্ষার নামে কী হচ্ছে? মুসলমানরা ভারত উপমহাদেশ সাড়ে সাতশত থেকে আটশত বছর শাসন করেছে। কিন্তু কোনো অন্যায়ভাবে আক্রমণ করেনি। ইসলাম গ্রহণেও বাধ্য করেনি। কিন্তু মুসলমান শাসকগণ যদি চাইতেন তাহলে ভারতবর্ষে কোন মন্দির কিংবা হিন্দু থাকত না।  মুফতি ফয়জুল করীম বলেন, ৯২ ভাগ মুসলমানের দেশে শিক্ষা ও সাংস্কৃতি হবে ইসলামের আলোকে। অথচ আমরা কী দেখছি! মাদ্রাসার বইয়ে হারমোনিয়াম-তবলা এবং হাফপ্যান্ট পড়া মেয়েদের ছবি। বই থেকে ইসলামের ইতিহাস তুলে দেওয়া হয়েছে। ড. শহিদুল্লাহ, চার খলিফা ও সাহাবাদের জীবনী তুলে দেওয়া হয়েছে। এভাবেই ভিনদেশি শিক্ষা ও সংস্কৃতি চাপিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র চলছে। তিনি আরও বলেন, পাশ্চাত্যরা জানে জন্ম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়, মূল হচ্ছে শিক্ষা ও সংস্কৃতি। শিক্ষা সংস্কৃতি পরিবর্তন করা গেলে সবকিছু পরিবর্তন করা সম্ভব হবে। এজন্য মুসলমানদের বিরোধীরা শিক্ষা নিয়ে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, ইসলামের সূচনায় পড়ার কথা বলা হয়েছে। শিক্ষা সংস্কৃতিতে ইসলাম থাকলে চুরি, ডাকাতি, রাহাজানি, দুর্নীতি, ব্যাংক ডাকাতি ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ বিদেশে পাচার হতো না। বাংলাদেশে যদি ইসলামকে প্রতিষ্ঠা করা যায় তবে এদেশে ৭০ গুণ উন্নয়ন হবে। বাংলাদেশে মানুষের খনি হলেও মানবসম্পদকে যথাযথভাবে প্রস্তুত না করার কারণে মানুষ সম্পদের পরিবর্তে আজ বোঝায় পরিণত হয়েছে। এদিকে, একতরফা ডামি নির্বাচনের সংসদ এবং ট্রান্সজেন্ডার ও সমকামিতাকে বৈধতাদানকারী বিতর্কিত শিক্ষা কারিকুলাম বাতিলের দাবিতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা জেলা দক্ষিণের উদ্যোগে আগামীকাল (২ ফেব্রুয়ারি) বাদ জুমা কেরানীগঞ্জের কালিগঞ্জ জোড়া ব্রিজ সংলগ্ন থেকে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন দলের কেন্দ্রীয় প্রচার ও  দাওয়াহবিষয়ক সম্পাদক মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম। সভাপতিত্ব করবেন সংগঠনের ঢাকা জেলা দক্ষিণ সভাপতি হাফেজ মুহাম্মদ জয়নুল আবেদীন। এ ছাড়া জেলা ও থানা নেতারা বক্তব্য রাখবেন।
০১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪
X