ভাড়া বাসা থেকে এনজিও কর্মীর লাশ উদ্ধার
কক্সবাজারের উখিয়ায় আবদুল্লাহ আল মাসুদ নামে এক এনজিও কর্মীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার (১৫ মে) রাত সাড়ে ১০টায় উপজেলার রত্নাপালং ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিমরত্না ঝাউতলা এলাকার একটি বাসা মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। আবদুল্লাহ আল মাসুদ কক্সবাজার জেলার বড় মহেশখালীর ফকিরাঘোনা এলাকার বাসিন্দা। তিনি রোহিঙ্গা শিবিরে কাজ করা ‘এনআরসি’ এনজিওর শিক্ষা প্রকল্পে শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। স্থানীয়রা জানান, প্রতিদিন অফিস শেষে সন্ধ্যা হলে তার বাসার সামনের লাইট জ্বালিয়ে দিত এবং বাসার পাশের একটি নলকূপ থেকে পানি নিতে আসত। কিন্তু বুধবার সন্ধ্যায় তার বাসার সামনে অন্ধকার দেখতে পায় বাড়ির মালিক। পরে মাসুদকে ডাকলে কোনো সাড়াশব্দ পায়নি। মালিক জানালা দিয়ে উঁকি দিয়ে দেখতে পান ঝুলন্ত রশির নিচে চেয়ারের উপর মাসুদকে ওপর হয়ে পড়ে আছে। পরে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেন। উখিয়া থানার ওসি মো. শামীম হোসেন কালবেলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, খবর পেয়ে আমরা লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসি। পরে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। তিনি বলেন, সুরতহাল রিপোর্ট দেখে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে এটি আত্মহত্যা। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন এলে মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে জানা যাবে।
১৬ মে, ২০২৪

ইট ভাঙা ট্রলি কেড়ে নিল এনজিও কর্মীর প্রাণ
নওগাঁর আত্রাইয়ে ইটভাঙ্গা ট্রলির চাপায় সিএনজিচালিত অটোরিকশার যাত্রী সঞ্জয় কুমার (২৬) নামে এক এনজিও কর্মী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও কয়েকজন। শনিবার (৪ মে) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার আত্রাই রাণীনগর সড়কের সাহাগোলা-শিমুলিয়া নামক স্থানের রেলক্রসিংয়ে এই দুর্ঘটনাটি ঘটে। খবর পেয়ে আত্রাই ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আহত অবস্থায় একজনকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করিয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন স্টেশন অফিসার মইনুর রহমান। এ ছাড়া আরও কয়েকজনকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। নিহত সঞ্জয় আইডিএফ নামক একটি এনজিওতে আত্রাইয়ে ফিল্ড অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তার বাড়ি রাজশাহী বাঘা এলাকায় বলে জানা গেছে। নিহত সঞ্জয় কুমারের সহকর্মী শামীম জানান, সঞ্জয় আইডিএফ এনজিওর আত্রাই শাখায় ফিল্ড অফিসার হিসেবে কাজ করতেন। এদিন সকালে বাড়ি থেকে অটোরিকশায় করে আত্রাই অফিসে যাচ্ছিলেন। আর একই দিক থেকে যাচ্ছিল ইট ভাঙার একটি ট্রলি। সিএনজি ওভারটেক করার সময় হঠাৎ করে ইট ভাঙ্গার ট্রলি বাঁক নেয়। ফলে সিএনজিটি সরাসরি গিয়ে ধাক্কা লাগে ওই ট্রলির সঙ্গে। এতে ট্রলির চাপায় ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। আহত হয় আরও কয়েকজন। আত্রাই থানার ওসি জহুরুল ইসলাম মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। নিহতের পরিবারকে জানানোর চেষ্টা চলছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে।
০৪ মে, ২০২৪

এনজিও থেকে কেএনএফ এখন পাহাড়ের বিভীষিকা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক শেষ করে পার্বত্য জেলা বান্দরবানের রুমা উপজেলার এডেনপাড়ার নিজ এলাকায় ফিরে গিয়েছিলেন নাথান বম। এরপর পাহাড়ি জনজীবন উন্নয়নে কাজ করা আন্তর্জাতিক একটি সংস্থায় চাকরির চেষ্টা করেন। মাঝে একটি রিসোর্টও চালু করেছিলেন তিনি। এরপর ‘কুকি-চিন ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন-কেএনডিও’ নামে একটি বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) গড়ে তোলেন। এর মাধ্যমে পিছিয়ে পড়া বম জনগোষ্ঠীকে ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টা করেন নাথান বম। সেই কেএনডিও একপর্যায়ে রূপান্তরিত হয় সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টে (কেএনএফ)। পার্বত্য অঞ্চলের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। রুমার এডেনপাড়ার স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, কেএনডিও সৃষ্টি করে এর প্রধান হন নাথান বম। তাকে কেন্দ্র করেই একসময় সেটি সশস্ত্র গ্রুপে রূপ নেয়। শুরুতে এই সংগঠন নিজ সম্প্রদায়ের লোকজনের খোঁজখবর নেওয়ায় তারাও ছিলেন আনন্দিত। ২০১৯ সালের দিকে ওই সংগঠনের আড়ালে নাথান বমের ভয়ংকর রূপ সামনে আসে রুমা এলাকার বাসিন্দাদের কাছে। কেএনএফের অপতৎপরতা শুরু হলে বিব্রত হন তারা। সংগঠনটির সাম্প্রতিক বিভীষিকা আর সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে পাহাড়ের বাসিন্দারা যেমন আতঙ্কিত, তেমনি আতঙ্কে বম সম্প্রদায়ের সাধারণ লোকজনও। বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য জুয়েল বম কালবেলাকে বলেন, ‘নাথান বমকে নিয়ে তারা সবাই বিব্রত।’ পলাতক নাথানের শুরুর দিকের অবস্থা জানিয়ে তিনি বলেন, যখন তার (নাথানের) অপকর্ম সামনে আসতে থাকল, তখন থেকেই তারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। এরপর ২০১৯ সাল থেকে তাকে খুব বেশি প্রকাশ্যে দেখা যায়নি। গত কয়েক বছর ধরে একেবারেই নিরুদ্দেশ নাথান। তিনি বলেন, বমদের মধ্যে যারা বিপথে গেছে, তাদের কিন্তু স্বাভাবিক জীবনে ফেরার একটা পথ তৈরি হয়েছিল। একটা শান্তি আলোচনা চলছিল জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে। কিন্তু এর মাঝে যেসব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঘটল, তা শান্তি প্রক্রিয়াকে বড় রকমের ধাক্কা দিয়েছে। শুরুর দিকে বম সম্প্রদায়ের যুবকদের ঐক্যবদ্ধ করা, পরে পাহাড়ে তৎপর রাজনৈতিক সংগঠন জেএসএস এবং চাকমাদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়ানো কাজ হয়ে ওঠে নাথানের কেএনএফের। ধীরে ধীরে বেরিয়ে আসে ভয়ংকর রূপ। পাহাড়ের অধিবাসীদের ধরে এনে নির্যাতন, হত্যাসহ নানা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে আলোচনায় থাকে সংগঠনটি। ২০২২ সালের দিকে ফেসবুকে একটি আলাদা রাজ্য গঠনের ঘোষণা দিয়ে বেশ আলোচনায় আসে সংগঠনটি। ওই বছরের অক্টোবরে জঙ্গি সংগঠন জামা’আতুল আনসার আল হিন্দাল শারক্বীয়ার সদস্যদের পাহাড়ে প্রশিক্ষণ ও অস্ত্র চুক্তির বিষয়টি সামনে আসে র্যাবের অভিযানে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে বান্দরবানে ব্যাংক লুট, অপহরণ আর থানা আক্রমণ চেষ্টায় কেএনএফ বড় আতঙ্ক ছড়ায়। গত মঙ্গল ও বুধবার বান্দরবানের রুমা এবং থানচি উপজেলার কৃষি ও সোনালী ব্যাংকের তিনটি শাখায় হামলা চালায় সশস্ত্র কেএনএফ সদস্যরা। তারা ব্যাংক থেকে টাকা লুট করে, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মারধর করে এবং সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজারকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। লুট করে বেশ কিছু অস্ত্র ও গুলি। এরপর বৃহস্পতিবার রাতে বান্দরবানের থানচি বাজার এলাকায় পুলিশের সঙ্গে কেএনএফ সদস্যদের প্রায় এক ঘণ্টা গোলাগুলি হয়। আলোচনায় আসতে পরিকল্পিত সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড কেএনএফের: কয়েক বছর ধরে কেএনএফ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালালেও মূলত ২০২২ সালের শুরুর দিকে সংগঠনটি মাথাব্যথার কারণ হয়ে ওঠে। ওই বছর ফেসবুকে পেজ খুলে এই শসস্ত্র গোষ্ঠী তাদের অস্তিত্বের জানান দেয়। কেএনএফ ফেসবুক পেজে দাবি করে, রাঙামাটি ও বান্দরবান অঞ্চলের বম, পাংখোয়া, লুসাই, খিয়াং, ম্রো ও খুমি—এই ৬ জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব করছে তারা। রাঙামাটির বাঘাইছড়ি, বরকল, জুরাছড়ি ও বিলাইছড়ি এবং বান্দরবানের রোয়াংছড়ি, রুমা, থানচি, লামা ও আলীকদম—এই উপজেলাগুলো নিয়ে আলাদা রাজ্যের দাবি করে কল্পিত রাজ্যের মানচিত্রও প্রকাশ করা হয় ফেসবুকে। এরপর তারা নানা সময়ে ফেসবুকে উসকানিমূলক পোস্ট করে আসছে। র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘গত কয়েক দিনে ব্যাংক ডাকাতি ও অস্ত্র লুটের ঘটনার দুটি উদ্দেশ্য থাকতে পারে। প্রথমত, টাকা লুটপাট ও অস্ত্র ছিনিয়ে নেওয়া। দ্বিতীয়ত, সক্ষমতা প্রদর্শন করা। হয়তো কেএনএফ তাদের সমর্থক ও প্রতিদ্বন্দ্বী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে দেখাতে চাইছে, তারা যথেষ্ট শক্তিশালী একটি সশস্ত্র গোষ্ঠী।’ র্যাব মুখপাত্র বলেন, ‘কেএনএফ সন্ত্রাসীদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। এই লক্ষ্যে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে একটি শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটি কাজ করছিল। এর মধ্যেই তারা এ ধরনের কার্যকলাপ করছে। কেএনএফ সন্ত্রাসীরা বেপরোয়া হয়ে ব্যাংক ডাকাতি, অপহরণ, অস্ত্র লুট, পুলিশ ক্যাম্পে গুলিবর্ষণসহ বিভিন্ন অপরাধ কার্যক্রম চালিয়েছে। কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না, যৌথ বাহিনীর সাঁড়াশি অভিযান চলছে।’ নাথান বম কোথায়?: এত সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে যে সংগঠনের প্রধানের নাম, সেই নাথান বম এখনো অধরা। তার দলে অস্ত্র আর অর্থের জোগান আসে কোথা থেকে—তাও পরিষ্কার নয়। তিনি কোথায় আছেন, জানে না কেউ। অবশ্য স্থানীয় মানুষ আর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ধারণা, মোস্ট ওয়ান্টেন্ড নাথান বম প্রতিবেশী দেশের রাজ্য মিজোরামে অবস্থান করে থাকতে পারেন। স্থানীয়রা বলছেন, এই নাথান বম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ থেকে স্নাতক শেষ করেন। পরে নিজ এলাকায় গিয়ে আন্তর্জাতিক একটি সংস্থায় চাকরির চেষ্টা করেন। তখন তার চাকরি না হলেও চাকমা জনগোষ্ঠীর কয়েকজনের চাকরি হয়। এতে তার ভেতর ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। পরে তিনি এলাকায় একটি রিসোর্ট তৈরি করে পর্যটন ব্যবসায় নাম লেখালেও তাতে লোকসান হলে তা বন্ধ করে দেন। তবে তার এনজিও কেএনডিও চলছিল। পাহাড়ে তার পরিচিতজনরা বলছেন, নাথান মূলত নিজের গড়া এনজিও কুকি-চিন ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশনের (কেএনডিও) আড়ালে সশস্ত্র সংগঠনের জন্য কর্মী সংগ্রহ করেছিলেন। জনশ্রুতি রয়েছে, ২০১৮ সালের শেষদিকে নাথানসহ বেশ কয়েকজন মিয়ানমারের চিন রাজ্যে গিয়ে অস্ত্রের প্রশিক্ষণ নেন। পরে তারা এলাকায় ফিরে আসেন। ওই বছর জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিতে মনোনয়নপত্রও তোলেন। তবে বাছাইয়ে তার মনোনয়নপত্র বাতিল হয়ে যায়। ২০১৯ সালের দিকে তার কর্মকাণ্ড অনেকের চোখেই সন্দেহের সৃষ্টি করে। স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা তার কর্মকাণ্ড নিয়ে প্রশ্নও তুলেছিলেন। এরপর মাঝেমধ্যে দেখা গেলেও ২০২২ সালের শুরুর দিকে একেবারে হাওয়া হয়ে যান তিনি। গতকাল শনিবার বান্দরবান পরিদর্শনে গিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘একটি সশস্ত্র সংগঠন তাদের অবস্থান জানান দেওয়ার জন্য এ ধরনের একটি ঘটনা ঘটিয়েছে। আমরা মনে করি যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে, তারা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে গিয়ে অপরাধ করেছে। কাজেই রাষ্ট্র চুপ থাকতে পারে না। আমরা এ জন্য যা যা করণীয় তা করব। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য আমরা পুলিশ, র্যাব, আনসার সদস্যের সংখ্যা বৃদ্ধি করব। আমরা সীমান্তে বিজিবি বৃদ্ধি করব।’ তিনি বলেন, ‘যারা এই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত তারা যদি বিদেশেও আশ্রয় নেয়, আমরা ইন্টারপোলের মাধ্যমে তাদের দেশে ফেরত এনে বিচারের ব্যবস্থা করব।’ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘কোনো ধরনের অস্ত্রধারীকে বাংলাদেশের ভূখণ্ডে থাকতে দেব না। আমরা অনেক ধৈর্যের সঙ্গে তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। বান্দরবান জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান তাদের সঙ্গে দুবার আলোচনায় বসেছেন। তারা আলোচনায় না গিয়ে তাদের অবস্থান জানান দেওয়ার জন্য এ ধরনের কর্মকাণ্ড করেছে।’
০৭ এপ্রিল, ২০২৪

ইঁদুর মারার ওষুধ খেয়ে এনজিও কর্মকর্তার আত্মহত্যা 
নওগাঁর মান্দায় আমানতের টাকা ফেরত নেওয়ার চাপে সিরাজুল ইসলাম বকুল (৪৫) নামে এক এনজিও কর্মকর্তা আত্মহত্যা করেছেন বলে জানা গেছে। শুক্রবার (৮ মার্চ) সন্ধ্যার পর রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। নিহত সিরাজুল ইসলাম বকুল উপজেলার কশব গ্রামের ইয়াদ আলী সরদারের ছেলে। তিনি সুরমা মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিঃ নামে বেসরকারি সংস্থার পলাশবাড়ি শাখায় ব্যবস্থাপক পদে কর্মরত ছিলেন। জানা গেছে, দুই সপ্তাহ আগে কার্যালয় তালাবদ্ধ করে আমানতকারীদের জমা করা অন্তত ৬ কোটি টাকা নিয়ে রাতারাতি উধাও হন সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। আমানতকারীদের চাপের মুখে শুক্রবার (৮ মার্চ) বিকেলে টাকা ফেরত দেওয়ার দিন ধার্য ছিল। এ অবস্থায় শুক্রবার দুপুরের দিকে গ্যাসবড়ি (ইঁদুর মারার বিষের ট্যাবলেট) খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন সিরাজুল ইসলাম। পরে তাকে উদ্ধার করে মান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার সন্ধ্যার পর তিনি মারা যান। এতে দিশোহারা হয়ে পড়েছেন ৮৮ থেকে ৯০ জন আমানতকারী। সংস্থায় জমা করা অন্তত ৬ কোটি টাকা ফেরত পাওয়া নিয়েও শঙ্কায় তারা। স্থানীয়রা জানান, প্রায় দুইবছর আগে কশব ইউনিয়নের পলাশবাড়ি বাজারে সুরমা মাল্টিপারপাসের একটি শাখা খোলা হয়। এরপর দৈনিক কিস্তিতে এলাকার ব্যবসায়ীদের মাঝে ক্ষুদ্র ঋণ বিতরণের কার্যক্রম শুরু করে সংস্থাটি। অল্প দিনেই এর ব্যবসায়ীসহ এলাকার লোকজনের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলেন সংস্থার ব্যবস্থাপক ও মাঠকর্মীরা। পলাশবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা ময়েন উদ্দিন বলেন, সুরমা মাল্টিপারপাস পলাশবাড়ি শাখার ব্যবস্থাপক সিরাজুল ইসলাম বকুল এলাকার বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীদের মাঝে ক্ষুদ্র ঋণ বিতরণের পাশাপাশি ব্যক্তিগত পর্যায় থেকে আমানত সংগ্রহের জন্য তৎপরতা শুরু করেন। এক লাখ টাকায় প্রতিমাসে দুই হাজার টাকা করে মুনাফা দেওয়ার প্রলোভন দেওয়া হয়। ভুক্তভোগী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ম্যানেজার বকুলের প্রলোভনে পা দিয়ে ওই সংস্থায় আমি ২৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করি। চুক্তি অনুযায়ী কয়েক মাস ঠিকভাবে মুনাফার টাকা দেওয়া হয়েছে। এর পর থেকে টালবাহানা শুরু করে। দুই সপ্তাহ আগে কার্যালয় তালা দিয়ে তারা পালিয়ে যান। এ বিষয়ে জানতে সুরমা মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটির কোনো লোকজনকে পাওয়া যায়নি। মান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাম্মেল হক কাজী বলেন, বিষয়টি জেনেছি। রাজশাহী হাসপাতালে ময়নাতদন্তের পর তার মরদেহ পরিবারের লোকজনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় মান্দা থানায় অপমৃত্যুর একটি মামলা হয়েছে।
১০ মার্চ, ২০২৪

দেশে বিদেশি অনুদানে পরিচালিত এনজিও ২৬১২টি
বর্তমানে দেশে বৈদেশিক অনুদানে পরিচালিত বেসরকারি সংস্থার (এনজিও) সংখ্যা দুই হাজার ৬১২টি। এর মধ্যে বিদেশি ২৬৮টি এবং দেশীয় দুই হাজার ৩৪৪টি। মঙ্গলবার (৫ মার্চ) জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তরে ভোলা-৩ আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে সংসদীয় কাজে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এ তথ্য জানান। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উপস্থাপিত হয়। ঢাকা-১৪ আসনের মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিলের প্রশ্নের জবাবে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেন, চাহিদা অনুযায়ী ঢাকা সিটিতে পানির কোনো ঘাটতি নেই। বর্তমানে ঢাকা শহরের মোট পানির চাহিদা ২৬৫-২৭০ কোটি লিটার। চাহিদার তুলনায় পানির উৎপাদন ক্ষমতা ২৭৫-২৮০ কোটি লিটার। গ্রীষ্ম মৌসুমে তাৎক্ষণিক পানির বাড়তি চাহিদা মেটাতে বিভিন্ন স্থানে স্টান্ডবাই ডিপ টিউবওয়েল স্থাপন করা হয়েছে। ফরিদপুর-৩ আসনের আব্দুল কাদের আজাদের প্রশ্নের জবাবে যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রী নাজমুল হাসান বলেন, যুব-উন্নয়ন অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ পর্যন্ত ৭০ লাখ ৮৪ হাজার যুবক প্রশিক্ষণ দিয়েছে। অধিদপ্তরে মাধ্যমে গত অর্থবছরে বিভিন্ন ট্রেডে এক লাখ ৬১ হাজার যুবকে বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। চলতি অর্থবছরে তিন লাখ ৮ হাজার যুবকে প্রশিক্ষণ প্রদানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ঢাকা-১৯ আসনের মুহাম্মদ সাইফুল ইসলামের প্রশ্নের জবাবে তাজুল ইসলাম বলেন, বিআরডিবি ও পল্লী দারিদ্র্যবিমোচন ফাউন্ডেশনের (পিডিবিএফ) মাধ্যমে ক্ষুদ্র ঋণ, নারী উদ্যোক্তা ঋণ, ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা ঋণ ও কোভিড প্রণোদনা ঋণ কর্মসূচির মাধ্যমে দেশের কৃষকদের মাঝে ঋণ প্রদান করা হয়েছে। এ খাতের মোট ঋণের পরিমাণ ২৪ হাজার ১৩৬ কোটি ১৭ লাখ টাকা। এর মধ্যে বিআরডিবির ৫৭৪ কোটি ৬ লাখ টাকা ও ডিপিবিএফ-র ২৩ হাজার ৫৬২ কোটি ১১ লাখ টাকা। এ ঋণের মধ্যে অনাদায়ী ২৮৩ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। মো. নাসের শাহরিয়ার জাহেদীর এক প্রশ্নের জবাবে তাজুল ইসলাম বলেন, ঢাকা শহরের বিভিন্ন খাল এবং নালা দখল করে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা আবাসিক ভবন ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান উচ্ছেদের বিরুদ্ধে জোরালো পদক্ষেপ গ্রহণ কার্যক্রম চলমান আছে। কামরাঙ্গীর চর এলাকায় ২০১৮ সালের ২৪ ডিসেম্বর নির্বাচনী জনসভায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রম শেষ হয়েছে এবং আদি বুড়িগঙ্গা পূর্বের অবস্থায় ফিরে এসেছে।
০৫ মার্চ, ২০২৪

কোটি টাকা নিয়ে এনজিও উধাও, গ্রাহকদের বিক্ষোভ
লক্ষ্মীপুরে স্বল্পসুদে ঋণ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকের টাকা নিয়ে উধাও সাউথ প্যাসিফিক বিজনেস ডেভেলপমেন্ট নামের একটি এনজিও সংস্থা। সদর উপজেলার ৩ শতাধিক গ্রাহক থেকে প্রায় ১ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। রোববার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে টাকা ফেরত পেতে লক্ষ্মীপুর পৌর শহরের ৮ নং ওয়ার্ডের লামচরী গ্রামে ওই এনজিও কার্যালয়ের সামনে জড়ো হয়ে প্রতিবাদ জানান গ্রাহকরা। গ্রাহকরা জানায়, পৌরসভার লামচরী এলাকায় মাসখানেক পূর্বে ভাড়া বাসা নিয়ে এনজিওটির অফিস চালু করেন আব্দুল আসাদ রাসেলসহ কয়েকজন ব্যক্তি। স্থানীয় ছুট্টির বাড়িতে এ কার্যক্রম শুরু করেন তারা। পৌর এলাকাসহ সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় দরিদ্র মানুষকে গ্রুপ সদস্য করে সঞ্চয় গ্রহণ করে তারা। গত একমাসে কথিত এই এনজিও শতাধিক গ্রুপ সদস্যের মাধ্যমে প্রায় কোটি টাকা সঞ্চয় নেয়। কোনো রশিদ ছাড়াই শুধু একটি ভিজিটিং কার্ড ডকুমেন্টস হিসেবে গ্রাহকদের ধরিয়ে দেয়। শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) থেকে সদস্যদের জনপ্রতি একলাখ টাকা করে ঋণ দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ওদিন অফিসে এসে দেখা যায় তা তালাবদ্ধ অবস্থায় আছে, কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী নেই। ব্রাঞ্চ ম্যানেজার আব্দুল আসাদ রাসেলসহ সংশ্লিষ্ট সবার মোবাইল ফোনও বন্ধ রয়েছে। দিনভর সদস্যরা অপেক্ষা করে ফিরে যান।  রোববার শত শত সদস্যরা অফিসের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। এ সময় অনেক সদস্য সঞ্চিত টাকা হারিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ গ্রামের রোকেয়া জানান, ঘরে বিবাহ উপযুক্ত মেয়ে। স্বামী ১০ বছর ধরে অসুস্থ। ঘর না থাকায় মেয়ে বিয়ে দিতে পারছি না। তাই তিন লাখ টাকা ঋণ দেবে বলে ২৩ হাজার টাকা সঞ্চয় নেয়। ধার-দেনা করে আমি এ অর্থ দিয়েছি। এখন আমি কী করব। আত্মহত্যা ছাড়া কোনো উপায় নেই। সদর উপজেলার মান্দারী ইউনিয়নের মোহাম্মদনগর গ্রামের বৃদ্ধ আব্দুল্যাহ জানান, তাদের ১২ জনের গ্রুপ থেকে ১ লাখ ৯২ হাজার টাকা সঞ্চয় নিয়েছে। রোববার তাদের ১২ লখ টাকা ঋণ দওেয়ার কথা ছিল। এখন তারা পালিয়ে গেছে। এ ছাড়া একই উপজেলার লাহার কান্দি গ্রামের বদর আলী, আবু জাহের, মর্জিনা, বিলকিছ, চররুহিতা গ্রামের  হুমায়ূন কবির, খোরশেদ আলমসহ অনেকেই তাদের সঞ্চিত টাকা হারিয়ে এখন নিঃস্ব প্রায়। তারা টাকা উদ্ধারে প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেন। ওই অফিসের ঝাড়ুদার লামচরী গ্রামের সুমী জানান, তাকে ছয় হাজার টাকা সঞ্চয় নিয়ে সদস্য করা হয়েছে। পরে সাত হাজার টাকা মাসিক বেতনে অফিসে ঝাড়ুদারের চাকরি দেওয়া হয়। এখন তার সঞ্চিত টাকা ও বেতন কোনোটাই নেই। এ ব্যাপারে বাড়ির মালিক ছুট্টির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। তার ব্যবহৃত মোবাইলটি বন্ধ রয়েছে। তার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় ঘরে তালা দিয়ে পরিবারের সদস্যরা বাড়ি থেকে চলে গেছে। কোথায় গেছে তা প্রতিবেশীরা জানাতে পারেনি। লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ সাইফ উদ্দিন আনোয়ার জনান, গ্রাহকদের পক্ষ থেকে থানায় একটি অভিযোগ করা হয়েছে। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখতেছি। অফিসটি তালাবদ্ধ থাকায় আমরা অফিসটির ভেতরে ঢুকতে পারিনি।  লক্ষ্মীপুর শহর পুলিশ ফাঁড়ি থানার এসআই অখিল পোদ্দার বলেন, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে আসি। গ্রাহকদের অভিযোগ অনুযায়ী তদন্ত সাপেক্ষে আমরা ব্যবস্থা নেব।
১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

কুড়িগ্রামে এনজিও নারী কর্মীর মরদেহ উদ্ধার
কুড়িগ্রাম পৌর শহরের খলিলগঞ্জ বাজারে এক নারী এনজিও কর্মীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে শোবার ঘর থেকে গলায় দড়ি পেচানো অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে পুলিশ।  নিহত নারীর নাম শেফালী বেগম (৩২)। তার বাড়ী জেলার উলিপুর উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের পাঁচপীর মন্ডলপাড়া গ্রামে। তিনি খলিলগঞ্জ বাজার সংলগ্ন জনৈক কাজলের বাড়িতে স্বামীসহ ভাড়া থাকতেন।  তিনি শহরের ত্রিমোহণী পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের সামনে ‘দারিদ্র বিমোচন জনকল্যাণ প্রকল্পে’ থানা অডিটর হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তার স্বামী রঞ্জু সরকার একই অফিসে প্রকল্প পরিচলেকের দায়িত্ব পালন করছেন। ঘটনার পর থেকে তিনি গা ঢাকা দিয়েছেন। এটি হত্যা না আত্মহত্যা সেটি নিয়ে রহস্য দেখা দিয়েছে। নিহতের সহকর্মী ফিল্ডকর্মী সাথী জানান, আমি অসুস্থতাজনিত কারণে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলাম। দুপুর ১১টা ৫৬মিনিটে শেফালী আপার সঙ্গে আমার মোবাইলে কথা হয়। দুপুর আড়াইটার দিকে তার স্বামী প্রকল্প পরিচালক রঞ্জু সরকার আমাকে দেখতে হাসপাতালে আসেন। তিনি আমাকে বাড়িতে গিয়ে থাকতে বলার পর তার সঙ্গে আমার আর কোনো যোগাযোগ হচ্ছে না।  তিনি আরও বলেন, আমি সন্ধ্যায় শেফালী আপার বাড়ী এসে দেখি ঘরের দরজা বন্ধ। পরে বাড়ীর লোকজন পুলিশে খবর দিলে তারা দরজা খুলে তাকে আধবসা অবস্থায় গলায় ও জানালার গ্রীলের সঙ্গে রশি পেঁচানো অবস্থায় দেখতে পান।  প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মৃত্যুর ঘটনাটি রহস্যজনক। দুপুরে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়েছিল। স্বামী বাড়ি থেকে বের হয়ে যাওয়ার পর আর আসেনি। আমরা ফোন করলে প্রথমে রিসিভ করে আসতে চাইলেও এখন ফোন বন্ধ করে দিয়েছে মেয়েটির স্বামী। বাড়ীর মালিক কাজলের ছোট ভাই বাদল জানান, এ পরিবারটি গত ১৫ ডিসেম্বর বাড়ী ভাড়া নেয়। তারা দুজনে এনজিওতে চাকরী করেন। তাদের ৭ বছরের একটি ছেলে সন্তান নানা বাড়ীতে থাকে।  এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম সদর থানা পুলিশের ওসি মাসুদুর রহমান জানান, আমরা ঘটনাস্থলে এসেছি। লাশের সুরতহাল শেষে থানায় নেওয়া হবে। তদন্ত সাপেক্ষে ময়নাতদন্তের পর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

গ্রাহকের টাকা নিয়ে উধাও এনজিও
কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ায় সহজ শর্তে ঋণ দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে গ্রাহকের টাকা নিয়ে উধাও হয়েছে ‘ইনস্টিটিউট ফর রিসার্চ অন পোভার্টি’ নামের একটি এনজিও। এতে উপজেলার দুই থেকে আড়াই শতাধিক গ্রাহকের মাথায় হাত পড়েছে। এ ঘটনায় সোমবার (১৫ জানুয়ারি) সকালে ওই এনজিওর অফিসের সামনে ভিড় করেন প্রতারণার শিকার ভুক্তভোগী উদ্বিগ্ন শতাধিক গ্রাহক। পরে গ্রাহকরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে মৌখিক ও থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন। জানা যায়, গত ৩ জানুয়ারি উপজেলার সদর এলাকার আবুল কাশেম মুহুরির বাসা ভাড়া নেয় ইনস্টিটিউট ফর রিসার্চ অন পোভার্টি নামের একটি এনজিও। ওই ভাড়া বাসায় অফিস চালু করে দাপ্তরিক কাজ শুরু করেন এনজিওর সংশ্লিষ্ট কর্মীরা। এরপর থেকে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পুরোদমে কাজ শুরু করেন তারা। সোমবার (১৫ জানুয়ারি) গ্রাহকদের ঋণ দেওয়ার কথা ছিল। ঋণ নিতে নির্ধারিত তারিখে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার অর্ধশত গ্রাহক এসে এনজিওর অফিস তালাবদ্ধ পায়। এ সময় ক্ষুব্ধ গ্রাহকরা উদ্বিগ্ন হয়ে হট্টগোল শুরু করেন। পরে তারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে মৌখিকভাবে ও থানায় এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ করেন। আরও জানা যায়, ঋণ প্রদানের ফাঁদে ফেলে এরই মধ্যে এনজিওটি উপজেলার বিভিন্ন এলাকার সহজসরল মানুষের কাছ থেকে বিভিন্ন অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এনজিও কর্মীরা ঋণের প্রলোভন দেখিয়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে ১০ শতাংশ সঞ্চয়ের নামে হাতিয়ে নেয় বেশ পরিমাণ টাকা।  ভুক্তভোগী পূর্ণমতি এলাকার বাসিন্দা শাহজাহান, নাল্লা এলাকার মিজানুর রহমান, নাগাইশ এলাকার মো. ফেরদৌস, ইয়াসিন মিয়া, শাহ আলম, তোফাজ্জল হোসেন, কাইয়ুম, মুমিন মিয়া, আলম হোসেন, মহিবুল হাসান, কায়ছার মিয়া, ডগ্রাপাড়া এলাকার মিজানুর রহমান, লাভলী আক্তার, পপি আক্তারসহ প্রায় দুই থেকে আড়াই শতাধিক গ্রাহক এ প্রতারণার শিকার হয়েছেন।  ভুক্তভোগীরা জানান, আমরা খেটে-খাওয়া মানুষ। তাদের প্রলোভনে পড়ে আমরা প্রায় নিঃস্ব হয়ে গেলাম। আমরা এর বিচার চাই।  ভুক্তভোগী ইব্রাহিম জানান, প্রতারকচক্র গত ৪ দিন আগে আমাদের গ্রামে এসে স্বল্প সুদে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ ও পণ্য দেওয়ার নামে কয়েকজনের কাছ থেকে কয়েক হাজার টাকা নেয়। এখন শুনি এটি ভুয়া এনজিও। আমরা এই প্রতারক চক্রের দৃষ্ঠান্তমূলক শাস্তি চাই। আরেক ভুক্তভোগী শাহ আলম বলেন, আমরা সহজ সরল মনে ‘ইনস্টিটিউট ফর রিসার্চ অন পোভার্টি’ নামে একটি এনজিওতে ঋণ পাওয়ার আশায় বেশ কয়েকজন কয়েক হাজার টাকা সঞ্চয় জমা দেই। সেই এনজিও থেকে আমাদের কয়েক লাখ টাকা ঋণ দেওয়ার কথা হয় কিন্তু এখন দেখি অফিস বন্ধ।  বাড়ির মালিক আবুল কাশেম মুহুরি কালবেলাকে বলেন, আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না। আমি কোনো এনজিওকে ঘর ভাড়া দেইনি।  এ দিকে বাড়ির মালিকের ছেলে শরিফুল ইসলাম সৌরভ কালবেলাকে বলেন, অপরিচিত এক ব্যক্তি হঠাৎ করে এসে বলেন তার কয়েকটি রুম লাগবে অফিস করার জন্য। তারা ১৫ জানুয়ারি ডিট করার কথা ছিল। সে আমার শর্তে রাজি হলে তাকে আমি বলি আপনি আপনার মালামাল রাখতে পারেন। কিন্তু ডিট না হওয়ার আগেই তারা পালিয়ে যায়। গ্রাহকদের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার বিষয়ে আমি জানি না। এ ব্যপারে ব্রাহ্মণপাড়া থানার ওসি এসএম আতিক উল্লাহ কালবেলাকে বলেন, এ বিষয়ে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তসাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  এ বিষয়ে ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স.ম আজহারুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, একটি ভুয়া এনজিও গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার বিষয়টি ভুক্তভোগী কিছু গ্রাহকের কাছ থেকে শুনতে পেয়েছি। তবে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  তিনি আরও বলেন, উপজেলার সকলের প্রতি আহ্বান করব যে কোনো এনজিও থেকে টাকা লেনদেন করার আগে অবশ্যই উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে ওই এনজিওর কোনো প্রত্যয়ন আছে কি না তা ভালোভাবে যাচাই করবেন। এসব বিষয়ে উপজেলাবাসীকে আরও সতর্ক হওয়ার পরামর্শও দেন তিনি।
১৬ জানুয়ারি, ২০২৪

এনজিও কর্মকর্তার মৃত্যু ট্রেনে কাটা পড়ে
রাজধানীর খিলক্ষেতে রেললাইন পার হওয়ার সময় ট্রেনে কাটা পড়ে নূর ই আলম তৈমুর (৩৪) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে খিলক্ষেত লেভেল ক্রসিং এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নূর ই আলম তৈমুর বেসরকারি সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেনের একজন কর্মকর্তা। সাত মাস বয়সী এক সন্তানের বাবা তৈমুরের বাড়ি ঢাকার মোহাম্মদপুরে। খিলক্ষেত ব্যাপারীপাড়া এলাকায় ভাড়া বাসায় পরিবার নিয়ে থাকতেন তিনি। সকালে বাসা থেকে অফিসের উদ্দেশে বের হয়েছিলেন তৈমুর। প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে রেলওয়ে পুলিশ জানায়, কানে হেডফোন লাগিয়ে রেললাইন পার হওয়ার সময় ট্রেনে কাটা পড়েন তৈমুর। হেডফোন লাগিয়ে ফোনে কথা বলতে বলতে রেললাইন পার হওয়ার সময় দুই দিক থেকে ট্রেন আসছিল।
২৯ নভেম্বর, ২০২৩

কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা এনজিও
হাজারো গ্রাহকের সঞ্চয় ও স্থায়ী আমানতের কোটি কোটি টাকা নিয়ে পালিয়েছে বিশ্বাস ফাউন্ডেশন এবং বিশ্বাস সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি লিমিটেড। টাকা ফেরত ও অভিযুক্তদের শাস্তির দাবিতে গতকাল শনিবার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যানের আনিসুর রহমানের বাড়ি ঘেরাও করে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন কয়েকশ গ্রাহক। সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, আনিসুর রহমানের বাড়ির সামনের সড়কের দুপাশে দাঁড়িয়ে আছেন শত শত ভুক্তভোগী। তারা টাকা ফেরত ও অভিযুক্তদের শাস্তির দাবিতে স্লোগান দিচ্ছেন। অভিযুক্ত আনিস ওই গ্রামের মৃত ইব্রাহিম বিশ্বাসের ছেলে। এ সময় আকবর হোসেন মণ্ডল বলেন, মাসে ২ হাজার টাকা লাভের আশায় আমি ২ লাখ ৩৮ হাজার টাকা তিন বছরের জন্য জমা রেখেছিলাম বিশ্বাস ফাউন্ডেশনে। টাকা উত্তোলনের সময় হয়ে গেছে। কিন্তু টাকা না দিয়ে পালিয়েছে সমিতির লোকজন। নন্দলালপুর ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান খোকন জানান, পাঁচ থেকে সাত বছর ধরে আলাউদ্দিনগর প্রধান শাখা খুলে এনজিও ব্যবসা চালিয়ে আসছিল বিশ্বাস ফাউন্ডেশন এবং বিশ্বাস সঞ্চয় ও ঋণদান সমিতি লিমিটেড। সম্প্রতি কয়েকশ গ্রাহক পরিষদে অভিযোগ দিলে তিনি জানতে পেরেছেন তাদের কার্যক্রম অবৈধ। এর পর থেকেই কিন্তু গ্রাহকদের টাকা ফেরত দেওয়ার তিনি চেষ্টা চালাচ্ছেন। কিন্তু দুই সপ্তাহ ধরে সমিতির লোকজন উধাও। তিনি আরও জানান, প্রতারণা করে ওই ফাউন্ডেশন শুধু কুমারখালী উপজেলা থেকেই অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। তার ভাষ্য, সারা দেশেই বিভিন্ন নামে এনজিও খুলেছে প্রতিষ্ঠানটি। সরেজমিন আলাউদ্দিন নগর এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, প্রধান কার্যালয় বন্ধ। সরানো হয়েছে সাইনবোর্ডও। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নম্বর বন্ধ থাকায় তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। জানতে চাইলে উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা জহুরা খানম জানান, বিশ্বাস সমবায় সমিতির নামে নিবন্ধন আছে, কিন্তু ফাউন্ডেশনের কোনো নিবন্ধন নাই। বিশ্বাসের নামে নানা অভিযোগ থাকায় সমবায় কর্তৃপক্ষ তাদের প্রতিষ্ঠানে অডিটও করে না। তার ভাষ্য, বিশ্বাস ফাউন্ডেশন মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। ইউএনও বিতান কুমার মণ্ডল জানান, বিশ্বাস মানুষের সঙ্গে অবিশ্বাসের কাজ করেছে। একাধিক অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
২৬ নভেম্বর, ২০২৩
X