সাতক্ষীরায় সাংবাদিককে গলায় রশি পরানোর হুমকি দিলেন এসিল্যান্ড
সাতক্ষীরার তালা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আরাফাত হোসেন গলায় রশি পরানোর হুমকি দিয়েছেন শাহীন হোসেন নামে এক সাংবাদিককে। বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে এসিল্যান্ড মোবাইল ফোনে হুমকি দেন ওই সাংবাদিককে। শাহীন হোসেন তালা উপজেলার পাটকেলঘাটা থানাধীন নগরঘাটা ইউনিয়নের বাসিন্দা এবং সাতক্ষীরার স্থানীয় একটি পত্রিকার প্রতিনিধি। জানা যায়, নগরঘাটা ভূমি অফিসের পিওন সুইটি খাতুন মিউটিশন করে দেওয়ার কথা বলে বাশারত নামের এক ব্যক্তির কাছ থেকে চার হাজার টাকা নেন। তবে দীর্ঘদিন ঘোরানোর পরেও জমির মিউটিশন করে দেননি তিনি। এ বিষয়ে তথ্য নেওয়ার জন্য গত সপ্তাহে নগরঘাটা ভূমি অফিসে যান সাংবাদিক শাহিন। অফিসে গিয়ে সুইটি খাতুনকে দেখতে না পেয়ে অন্য স্টাফের মাধ্যমে জানতে পারেন বেশ কয়েকদিন অফিসে আসেন না সুইটি। অফিসিয়াল কোনো ছুটির আবেদন না করে তিনি কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন এ বিষয়টি উপজেলা ভূমি সহকারীকে জানান ওই সাংবাদিক। এতে দুদিন পরে অর্থাৎ বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার দিকে ওই সাংবাদিককে মোবাইল ফোনে কল করে গলায় রশি পরানোর হুমিক প্রদান করেন ভূমি সহকারী আরাফাত হোসেন। এদিকে, সাংবাদিক ও এসিল্যান্ডের কথাপকথনের একটি কল রেকর্ড এসেছে গণমাধ্যমকর্মীদের হাতে। কল রেকর্ডে সহকারী কমিশনার আরাফাত হোসেন সাংবাদিককে বলেন, ‘আপনি কি শাহিন? গত দিন আমাকে আমাদের অফিসের এক স্টাফের বিষয়ে ফোন দিছিলেন। গত বছর গাছকাটার বিষয়ে ফোন দিছিলেন। আমার অফিসের মহিলা স্টাফ ১ দিন, দুদিন, এক সপ্তাহ অসুস্থ থাকতেই পারে। সেটা নিয়ে আপনি বলার কে রে ভাই? আপনি কী ভাবতেছেন ওইটা করে বাঁচতে পারবেন? গলায় কিন্তু রশি পড়বে আপনার। একজন মহিলাকে আপনি হয়রানি করতেছেন। ফেসবুকে স্টাটাস দেন, হ্যানো করেন, তেনো করেন। আমি কিন্তু আপনার বিরুদ্ধে লিখব। আমি কিন্তু একদিন বলেছি, সাংবাদিকতা করবেন ভালো করে করেন। একজন মহিলার বিরুদ্ধে অবৈধভাবে লেখেন না, আপনি কিন্তু বিপদে পড়বেন।’  তথ্য দেওয়া কী আমাদের অপরাধ শাহিনের এমন প্রশ্নের জবাবে এসিল্যান্ড আরাফাত বলেন, ‘তথ্য দেওয়া অপরাধ না। আপনি তথ্য দিবেন, সেটা আপনার দায়িত্ব। কিন্তু ভুল তথ্য দেবেন কেন? সাংবাদিকতা ভালোভাবে করেন। আর কয় দিন অফিসে এলো, না এলো আপনাকে বলতে হবে কেন? আপনি কে? আপনি যা লেখার লেখেন, যা করার করেন। দেখেন আপনার কপালে কী ঘটে।’ এ বিষয়ে সাংবাদিক শাহিন হোসেন বলেন, নগর ঘাটা ভূমি অফিসের পিয়ন সুইটি খাতুন ছুটি না নিয়ে অনেকদিন কর্মস্থলে অনুপস্থিত ছিলেন। বিষয়টি সহকারী কমিশনার (ভূমি) আরাফাত হোসেনকে জানানো হয়। জানানোর দুদিন পর অর্থাৎ বৃহস্পতিবার তিনি আমাকে ফোন করে গলায় রশি পরানোসহ নানাবিধ আপত্তিকর কথা বলেন। সাংবাদিকরা সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করবে এটাই তো নিয়ম। কিন্তু তথ্য দিয়ে বিপাকে পড়তে হচ্ছে এবং হুমকির সম্মুখীন হতে হচ্ছে। সাংবাদিক নেতারা বিষয়টি নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলবেন। একজন এসিল্যান্ডের আচরণ এমন জঘন্য কেন হবে। বিষয়টি রীতিমতো লজ্জাজনক। বিষয়টি অস্বীকার করে তালার উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আরাফাত হোসেন বলেন, সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে হলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হয়। আর ওই সাংবাদিকদের সঙ্গে কোনো ঘটনা ঘটেনি।
০৪ এপ্রিল, ২০২৪

আদেশের ৫ দিনেও বদলি হননি সাংবাদিক হেনস্তাকারী সেই এসিল্যান্ড
সাংবাদিকদের নিজ অফিসে আটক রেখে হেনস্তাকারী লালমনিরহাট সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল্লাহ-আল-নোমান সরকারের বদলির আদেশ এখনো কাযর্কর করা হয়নি। তার বদলির আদেশে বলা হয়েছে ‘অবিলম্বে এই আদেশ কাযর্কর করা হবে’ কিন্তু এখনো তা কাযর্কর না হওয়ায় উদ্বিগ্ন প্রকাশ করছেন জেলায় কর্মরত সাংবাদিক সমাজ।  এর আগে গত ১৪ মার্চ রাতে তার বদলির আদেশ দেন রংপুর বিভাগীয় কমিশনার। তাকে লালমনিরহাট সদর উপজেলা থেকে বদলি করা হয় ঠাকুরগাঁও জেলার হরিপুর উপজেলায়। কিন্তু তিনি বদলির আদেশ পেয়েও মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) পযর্ন্ত লালমনিরহাট সদর উপজেলায় কর্মরত আছেন।   এদিকে গত সোমবার (১৮ মার্চ) দুপুরে লালমনিরহাট প্রেসক্লাবে জরুরি সভার আয়োজন করে সাংবাদিকরা তাদের উদ্বিগ্ন হওয়ার বিষয়টি লিখিতভাবে বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসককে অবহিত করেছেন। সাংবাদিকরা জানান, এসিল্যান্ডের বদলির আদেশকে কেন্দ্র করে কিছুসংখ্যক তরুণ এসিল্যান্ডের পক্ষ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে সাংবাদিক সম্পর্কে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এসব তরুণ বিএনপি, জামায়াত ও আহলে হাদিস সমর্থিত পরিবারের সদস্য। তারা এসিল্যান্ডের বদলি বাতিলের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে।   লালমনিরহাট প্রেসক্লাবের আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন বলেন, আমরা প্রেসক্লাবে জরুরি সভা করেছি। সাংবাদিকদের উদ্বিগ্ন হওয়ার বিষয়টি লিখিতভাবে বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসককে জানানো হয়েছে। এসিল্যান্ডের বদলি দ্রুত কাযর্কর ও তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছি। লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্ল্যাহ মঙ্গলবার দুপুরে সাংবাদিকদের জানান, এসিল্যান্ডের বদলির আদেশ দ্রুত কাযর্কর করা হবে। লালমনিরহাট সদর উপজেলায় যোগদান করতে বলা হয়েছে কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার এসিল্যান্ডকে। লালমনিরহাটে তার যোগদানে কিছুটা বিলম্ব হওয়ায় লালমনিরহাট সদর উপজেলার এসিল্যান্ডের বদলির আদেশ কাযর্কর করতে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে। তবে এ আদেশ বহাল থাকবে। প্রসঙ্গত, গত ১৪ মার্চ দুপুরে অফিসে জমির খারিজ সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহের জন্য যাওয়া ৫ সাংবাদিককে নিজ অফিসে আটকে রেখে হেনস্তা করেন এসিল্যান্ড আব্দুল্লা-আল-নোমান সরকার। এ সময় ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে সাংবাদিকদের জেলে পাঠানোর প্রস্তুতিও নেন। খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) টি এম এ মমিন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে অফিসের তালা খুলে সাংবাদিকদের মুক্ত করেন। এ সময় ক্ষিপ্ত হয়ে ওই এসিল্যান্ড অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের উপস্থিতিতে সাংবাদিক সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্য করেন। এরপর সেখানে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়। তবে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সৃষ্ট পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। এ ঘটনার কিছুক্ষণ পরেই ক্ষুব্ধ এসিল্যান্ড তার অফিস চত্বরে অবস্থান করা চ্যানেল আইয়ের ক্যামেরা পারসনের মোটরসাইকেলের কাগজপত্র সঙ্গে না থাকায় ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
২০ মার্চ, ২০২৪

সাংবাদিককে হুমকি দেওয়া এসিল্যান্ড প্রত্যাহার
লালমনিরহাটে কর্মরত পাঁচ সাংবাদিককে নিজ কার্যালয়ে হুমকি দেওয়ার অভিযোগের পর সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবদুল্লাহ-আল-নোমান সরকারকে বদলি করা হয়েছে। তাকে ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুরে এসিল্যান্ড হিসেবে যোগদান করতে বলা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রংপুর বিভাগীয় কমিশনার হাবিবুর রহমান এ আদেশ দেন। গতকাল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন লালমনিরহাটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) টি এম এ মমিন। বৃহস্পতিবার সদর উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কার্যালয়ে পাঁচ সাংবাদিককে অফিসে আটকে রাখেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবদুল্লাহ-আল-নোমান সরকার। প্রায় ৪০ মিনিট পর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক টি এম মমিন তাদের মুক্ত করেন। সাংবাদিকরা জানান, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসের তিনজন অফিস সহকারী ভূমি-সংক্রান্ত শুনানি করছিলেন। সেখানে মাই টিভি ও ডেইলি অবজারভারের সাংবাদিক মাহফুজ সাজু এ শুনানির ভিডিও ধারণ করেন। এতে অফিসের স্টাফরা ক্ষুব্ধ হয়ে সহকারী কমিশনার আবদুল্লাহ-আল-নোমানকে ডেকে তার নির্দেশে সাংবাদিক মাহফজু সাজুকে আটকে রাখেন। খবর পেয়ে প্রেস ক্লাব সদস্য সচিব লিয়াকত আলী, এশিয়ান টিভির নিয়ন দুলাল, কালবেলার এস কে সাহেদ, আমার বার্তার কাউসার মাহমুদসহ চার সাংবাদিক ঘটনাস্থলে গেলে তাদেরও আটকে রাখা হয়। সাংবাদিক মাহফুজ সাজু বলেন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর অনুপস্থিতে দলিলের শুনানি নেওয়া এবং সেবা নিতে আসা লোকজনের সঙ্গে খারাপ আচরণ করা হচ্ছে—এমন সংবাদের তথ্য সংগ্রহ করতে যাই। এ সময় এসিল্যান্ড সাংবাদিকদের জেলে পাঠানোর হুমকি দিয়েছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে আবদুল্লাহ-আল-নোমান সরকার কোনো উত্তর দেননি। তবে কাগজপত্র দেখাতে না পারায় এক মোটরসাইকেল আরোহীর ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন বলে জানান। লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্ল্যাহ বলেন, পুরো বিষয়টি অবগত হয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
১৬ মার্চ, ২০২৪

সাংবাদিকদের কারাগারে পাঠানোর চেষ্টা, সেই এসিল্যান্ড প্রত্যাহার
লালমনিরহাট সদর উপজেলার এসিল্যান্ড আব্দুল্লাহ আল নোমান সরকারকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। সাংবাদিকদের তালাবদ্ধ করে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা চেষ্টার অভিযোগ ওঠার দিনগত রাতেই এ আদেশ এলো। বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) রাতে রংপুর বিভাগীয় কমিশনার হাবিবুর রহমানের দেওয়া আদেশে তাকে ঠাকুরগাঁও জেলার হরিপুর উপজেলায় এসিল্যান্ড হিসেবে যোগদান করতে বলা হয়েছে। শুক্রবার (১৫ মার্চ) সকালে লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্ল্যাহ সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।  জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্ল্যাহ বলেন, আব্দুল্লাহ-আল-নোমান সরকারের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অনুমতি চাওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে অনুমতি পাওয়া গেলে দ্রুত বিভাগীয় তদন্তকাজ শুরু করা হবে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) দুপুর ১২টায় শহরের টিএনটি রোডে সদর এসিল্যান্ড অফিস প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের আটকে রাখেন ওই এসিল্যান্ড। প্রতিবাদে ঢাকা-বুড়িমারী মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে বিচার দাবি করেন স্থানীয় সাংবাদিকরা। ওই অফিসে আবেদনকৃত জমির খারিজের শুনানি উপজেলা এসিল্যান্ডের অনুপস্থিতিতে করা হচ্ছে এমন সংবাদ পেয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে যান মাইটিভি লালমনিরহাট জেলা প্রতিনিধি মাহফুজ সাজু। এ সময় ভুক্তভোগী এক ব্যক্তির ভিডিও সাক্ষাৎকার নেওয়ার সময় এসিল্যান্ডের নির্দেশে ক্যামেরা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে অফিসের কর্মচারীরা। খবর পেয়ে আরও চার সাংবাদিক ঘটনাস্থলে এলে তাদের অফিসে আটকে রেখে অফিস গেটে তালা লাগিয়ে দেওয়া হয়। এ সময় এসিল্যান্ড অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। একপর্যায়ে তিনি পুলিশ ডেকে এনে সাংবাদিকদের ভ্রাম্যমাণ আদালতে দেওয়ার চেষ্টা করেন। খবর পেয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) টি. এম এ মমিন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে অফিস গেটের তালা খুলে সাংবাদিকদের মুক্ত করেন। পরে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের উপস্থিতিতেই ওই সহকারী কমিশনার সাংবাদিকদের ‘দালাল’ বলে অপমান করতে থাকেন। এ সময় সাংবাদিকরা অফিসের সামনে অবস্থান নিলে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক পরিস্থিতি শান্ত করেন। এ ঘটনায় জেলা প্রশাসকের সঙ্গে সমন্বয় করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন। পরে সাংবাদিকরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। এ সময় পেছনে থাকা চ্যানেল আই-এর ক্যামেরা পারসনের মোটরসাইকেল আটকে দিয়ে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করেন সহকারী কমিশনার আব্দুল্লাহ আল নোমান সরকার।
১৫ মার্চ, ২০২৪

যশোরে এসিল্যান্ড পরিচয়ে মোবাইলে প্রতারণা
যশোরের মনিরামপুরে সহকারী কমিশনার (ভূমি) আলী হাসান পরিচয়ে মোবাইল ফোনে প্রতারণার চেষ্টা করেছে একটি চক্র। মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার কয়েকজন জনপ্রতিনিধি ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে প্রতারণার চেষ্টা করে চক্রটি। এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাসের মাধ্যমে উপজেলার সবাইকে সাবধান থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন এসিলান্ড আলী হাসান। স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন, একটি প্রতারণা চক্র এসিল্যান্ড মনিরামপুরের পরিচয়ে বিভিন্ন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে বিকাশে টাকা চাচ্ছে। যার নম্বর : ০১৭৪০৮০৪৪৭৮। এ ধরনের লেনদেন না করার জন্য সবাইকে বলা হলো। এসিল্যান্ড মনিরামপুর এ ধরনের কোনো অনৈতিক লেনদেনের সঙ্গে জড়িত নন। প্রয়োজনে ০১৩১৮২৫২৯৪২ এই নম্বরে কথা বলুন। এ বিষয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) আলী হাসান কালবেলাকে বলেন, মঙ্গলবার সকালে কয়েক ব্যবসায়ী ও জনপ্রতিনিধি আমাকে ফোনে বিষয়টি অবহিত করেন। সঙ্গে সঙ্গে আমি সবাইকে এ বিষয়ে সতর্ক করেছি। তিনি আরও বলেন, এ ধরনের কোনো চাঁদা বা টাকা দাবি করলে সঙ্গে সঙ্গে আমাকে জানানোর অনুরোধ জানাচ্ছি। এ ব্যাপারে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৩

ওসি এসিল্যান্ড ইউএনওকে নিয়ে মাঝ নদীতে ডুবল নৌকা
গভীর রাতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চালাতে গিয়ে নৌকা ভেঙে পানিতে পড়ে গেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সদর থানার ইউএনও, সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও সদর মডেল থানার ওসি। পরে নৌকা ডুবে গেলে সাঁতার কেটে তীরে ওঠেন তারা।   বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) রাত ১২টার দিকে সদর উপজেলার কাঞ্চনপুরে এ ঘটনা ঘটে।  ভ্রাম্যমাণ আদালতে থাকা কয়েকজন জানান, সদর উপজেলার কাঞ্চনপুরে তিতাস নদী থেকে অবৈধভাবে ড্রেজারে বালু উত্তোলনের খবর পাওয়া যায়। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সেলিম শেখের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযানে যায়। এসময় তার সঙ্গে ছিলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোশারফ হোসেন ও সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসলাম হোসাইনের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল। ভ্রাম্যমাণ আদালতের দলটি নৌকাযোগে তিতাস নদীতে ড্রেজারে বালু উত্তোলনের স্থানে যাচ্ছিল। কিছু দূর যাওয়ার পর নৌকাটি মাঝ নদীতে ভেঙে ডুবে যায়। এতে নৌকায় থাকা ইউএনও, এসিল্যান্ড ও ওসিসহ সবাই পানিতে ডুবে যায়। মধ্যরাতের অন্ধকারে নদীতে এ ঘটনা ঘটায় এক ভীতিকর পরিবেশ তৈরি হয়। পরে তারা সাঁতরে নদীর তীরে ওঠেন। জানতে চাইলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ওসি আসলাম হোসাইন বলেন, আমি ভেবেছিলাম কাছাকাছি কোনো জায়গায় যাবে। নৌকা ওনারাই নিয়েছিলেন। তবে এ ঘটনায় জানমালের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। এই বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ সেলিম শেখ বলেন, নৌকাটি অনেক নড়বড়ে ছিল। বড় কোনো ঘটনা ঘটেনি।
২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

এসিল্যান্ড ছাড়াই ২ মাস চলছে আশাশুনি, ভোগান্তিতে সাধারণ মানুষ
প্রায় দুই মাস সাতক্ষীরার আশাশুনিতে নেই এসিল্যান্ড। দীর্ঘ সময় এসিল্যান্ডের অনুপস্থিতিতে দেখা দিয়েছে দাপ্তরিক জটিলতা। নামপত্তন (মিউটেশন) থেকে শুরু করে আটকে গেছে ভূমিসংক্রান্ত নানান কাজ। ফলে একদিকে যেমন বেড়েছে জনদুর্ভোগ, তেমনি কমেছে সরকারি রাজস্ব আয়। কবে যোগদান করবেন নতুন এসিল্যান্ড সে বিষয়টি জানে না কেউ। এসিল্যান্ড না থাকায় চলতি দায়িত্ব নিয়ে কাজ করছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)। উপজেলা প্রশাসনের কাজ শেষ করে এসিল্যান্ডের দাপ্তরিক দায়িত্ব পালন করতে অনেকটাই হিমশিম খাচ্ছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।  এসিল্যান্ড অফিস সূত্রে জানা যায়, গত ১৪ আগস্ট এসিল্যান্ড দীপা রানী সরকার বদলি আদেশ সহকারে মাতৃত্বকালীন ছুটিতে যান। এর কয়েক দিনের মধ্যে তালা উপজেলার এসিল্যান্ড রুহুল কুদ্দুসকে আশাশুনিতে পোস্টিং দেওয়া হয়। কিন্তু তিনিও এই বদলি আদেশ পরিবর্তন করিয়ে অন্যত্র যোগদান করেছেন বলে জানা গেছে। এরপর থেকে অদ্যাবধি কোনো কর্মকর্তা যোগদান না করায় সমস্যা বেড়েই চলেছে।  গত ৪২ দিনে নতুন কোনো এসিল্যান্ড না আসায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রনি আলম নূর অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ইউএনও হিসেবে অর্পিত গুরু দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি ভূমি অফিসের দায়িত্ব পালন করা কষ্টকর। উপজেলার ১১ ইউনিয়নের ৯টি ভূমি অফিসের অধীন জনগণ তাদের প্রয়োজনীয় কাজ মেটাতে প্রতিদিন উপজেলা ভূমি অফিসে গিয়ে শূন্য হাতে ফিরে যেতে বাধ্য হচ্ছে। এ ব্যাপারে কুল্যা ইউনিয়নের কচুয়া গ্রামের জ্ঞানান্দর ঢালী জানান, আমি এক মাসের অধিককাল নামজারি আবেদন করেছি। কিন্তু আজ পর্যন্ত ভূমি অফিস থেকে পেলাম না। তার জন্য আমি খুব অসুবিধায় পড়েছি।  কাদাকাটি ইউনিয়নের কাদাকাটি গ্রামের বিল্লাল হোসেন জানান, আমি একজন সাইকেল মিস্ত্রি। দীর্ঘ এক দেড় মাস ধরে একটা নামজারি করতে দিয়েছি কিন্তু আজ পর্যন্ত পেলাম না। রেজিস্ট্রি অফিসের জমি রেজিস্ট্রির জন্য নামজারি না হলে রেজিস্ট্রি করতে পারছি না। কোনো কায়দায় নামজারি করতে পারলাম না। করোর কাছে বলার জায়গা নাই। কোনোভাবে জমিটা বিক্রয় করতেও পারছি না। অপরদিকে এই বিষয়ে আশাশুনি সাব-রেজিস্ট্রি অফিস ও দলিল লেখকদের সাথে আলাপকালে তারা বলেন- মিউটেশন বন্ধ থাকার কারণে রেজিস্ট্রি কমে গেছে। এতে করে কমে গেছে সরকারি রাজস্ব আদায়। আশাশুনি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রনি আলম নূর বলেন, বর্তমানে আশাশুনিতে কোনো এসিল্যান্ড না থাকায়, আমি সহকারী কমিশনার ভূমির অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছি। ভূমি অফিসের সমস্ত কাজ চলছে। তবে এসিল্যান্ড না থাকায় আমার একার পক্ষে উভয় দপ্তর সামলানো কষ্ট কর হয়ে যাচ্ছে। নতুন একজন এসিল্যান্ড এখানে যোগদান করার কথা রয়েছে। তবে তিনি কবে যোগদান করবেন সে বিষয়ে নিশ্চিতভাবে জানেন না বলেও জানান তিনি।  
২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

ঘুষের রেট নির্ধারণ করা এসিল্যান্ড সাসপেন্ড
ঘুষের রেট নির্ধারণ করে দেওয়া পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার সেই এসিল্যান্ড মাসুদুর রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত (সাসপেন্ড) করা হয়েছে। তদন্তে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় গতকাল বুধবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রাষ্ট্রপতির আদেশে তাকে সাময়িক বরখাস্তের প্রজ্ঞাপনে সই করেন মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব মো. আব্দুস সবুর মণ্ডল। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, মাসুদুর রহমানের বিরুদ্ধে নামজারি মামলায় সহকর্মীদের অবৈধ অর্থ লেনদেন-সংক্রান্ত নির্দেশনা প্রদানের অভিযোগ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। পিরোজপুর জেলা প্রশাসক কর্তৃক গঠিত তিন সদস্যের কমিটি অডিও ক্লিপের বিষয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছেন তারা। এ ধরনের আচরণকে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা অনুযায়ী অসদাচরণ হিসেবে গণ্য করে মাসুদুরের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করার প্রস্তাব করেন বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার। এতে আরও বলা হয়, মাসুদুর রহমানকে তার দায়িত্ব থেকে বিরত রাখা আবশ্যক। সরকারি চাকরি আইন অনুযায়ী তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো। বরখাস্ত থাকার সময় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (সহকারী সচিব) হিসেবে সংযুক্ত থাকবেন এবং বিধি অনুযায়ী খোরপোশ ভাতা প্রাপ্য হবেন। গত ১৮ সেপ্টেম্বর কালবেলায় ‘এসিল্যান্ড বলে দিলেন নামজারিতে ঘুষ কত’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এর আগে গত জুলাইয়ে নাজিরপুরে জমির নামজারির জন্য ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তাদের ৬ হাজার টাকা ঘুষ নেওয়ার রেট নির্ধারণ করে দেন এসিল্যান্ড বা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাসুদুর। সে বৈঠকের অডিও রেকর্ড পরে ফাঁস হয়। এরপর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তদন্ত কমিটি গঠন করে ঘটনার সত্যতা যাচাই করা হয়। এসিল্যান্ডকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন নাজিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সঞ্জীব দাশ। ঘুষের রেট নির্ধারণ করে যা বলেছিলেন মাসুদুর রহমান: কোনো কারণে জমি হস্তান্তর হলে খতিয়ানে পুরোনো মালিকের নাম বাদ দিয়ে নতুন মালিকের নাম প্রতিস্থাপন করানোকে বলে নামজারি। উত্তরাধিকারসূত্রে, বিক্রয়, দান, খাসজমি বন্দোবস্তসহ বিভিন্ন কারণে জমির মালিকানা বদল হয়। নামজারিতে সরকার নির্ধারিত ফি ১ হাজার ১৭০ টাকা। আর এই কাজটি করেন উপজেলা ও ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কর্মকর্তারা। এ সংক্রান্ত কাজে গ্রাহকদের কাছ থেকে কী পরিমাণ ঘুষ নিতে হবে সে বিষয়ে অধস্তনদের নির্দেশনা দিয়ে বৈঠক করেছিলেন অভিযুক্ত এসিল্যান্ড। এমনকি ঘুষের পরিমাণ নির্ধারণ করে বলেছিলেন, ৬ হাজার মানে ৬ হাজারই। ৬ হাজার ১০০ টাকা হলেও পরবর্তী সময়ে আমি ব্যবস্থা নেব; কিন্তু বিধি বাম! সেই অডিও রেকর্ড ফাঁস হলে তার কুকীর্তির পর্দাও ফাঁস হয়।
২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

ঘুসের রেট নির্ধারণকারী সেই এসিল্যান্ড সাময়িক বরখাস্ত
ঘুসের রেট নির্ধারণ করে দেওয়া পিরোজপুরের নাজিপুর উপজেলার সেই এসিল্যান্ড মাসুদুর রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে সরকার। তদন্তে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় আজ বুধবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।  রাষ্ট্রপতির আদেশে প্রজ্ঞাপনে সই করেন মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব মো. আব্দুস সবুর মন্ডল। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, মাসুদুর রহমানের বিরুদ্ধে তার সহকর্মীদের নামজারি মামলায় অবৈধ অর্থ লেনদেন সংক্রান্ত নির্দেশনা প্রদানের অভিযোগ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। পিরোজপুর জেলা প্রশাসক কর্তৃক গঠিত ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি অডিও ক্লিপের কথোপকথনের বিষয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করেছেন এবং তদন্তে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছেন। মাসুদুর রহমানের এরূপ আচরণকে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর ৩(খ) বিধি মোতাবেক অসদাচরণ হিসেবে গণ্য করে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা রুজু করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তাব করেছেন বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার।  প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, মাসুদুর রহমানকে তার দায়িত্ব থেকে বিরত রাখা আবশ্যক। সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ এর ধারা ৩৯(১) অনুযায়ী সরকারি চাকরি হতে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো। সাময়িক বরখাস্তকালীন মাসুদুর রহমান জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (সহকারী সচিব) হিসেবে সংযুক্ত থাকবেন এবং বিধি অনুযায়ী খোরপোষ ভাতা প্রাপ্য হবেন। জনস্বার্থে এ আদেশ জারি করা হলো। গত ১৮ সেপ্টেম্বর দৈনিক কালবেলায় ‘এসিল্যান্ড বলে দিলেন নামজারিতে ঘুস কত’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, গত জুলাই মাসে পিরোজপুরের নাজিরপুরে জমির নামজারি করার জন্য ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তারা ছয় হাজার টাকা ঘুস নেবেন, এমন রেট নির্ধারণ করে দিয়েছেন এসিল্যান্ড বা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাসুদুর রহমান। ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তাদের নিয়ে করা ওই সভার অডিও রেকর্ড ফাঁস হয়। এরপর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তদন্ত কমিটি গঠন করে ঘটনার সত্যতা যাচাই করা হয়। এসিল্যান্ডকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন নাজিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সঞ্জীব দাশ।  ঘুসের রেট নির্ধারণ করে যা বলেছিলেন মাসুদুর রহমান  কোনো কারণে জমি হস্তান্তর হলে খতিয়ানে পুরোনো মালিকের নাম বাদ দিয়ে নতুন মালিকের নাম প্রতিস্থাপন করানোকে বলে নামজারি। উত্তরাধিকার সূত্রে, বিক্রয়, দান, খাসজমি বন্দোবস্তসহ বিভিন্ন ধরনের হস্তান্তরের কারণে জমির মালিকানা বদল হয়। নামজারি করতে সরকার নির্ধারিত ফি ১ হাজার ১৭০ টাকা। নাম খারজের পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন উপজেলা ভূমি অফিস ও ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কর্মকর্তারা। এ সংক্রান্ত কাজে অবৈধভাবে কত টাকা গ্রাহকদের কাছ থেকে আদায় করতে হবে, তারই এক ধরণের নির্দেশনা তার অধস্তনদের দিয়েছিলেন এসিল্যান্ড মাসুদুর রহমান। বিধি বাম, সেই নির্দেশনার অডিও রেকর্ড ফাঁস হয়ে যাওয়ায় ধরা পড়ে গেছেন। এসিল্যান্ড তার নির্দেশনায় বলেছিলন, ‘এখান আমাকে পরিষ্কার করে একটি বিষয় আপনাদের অবগত করতে হবে, আমি ইউএনও স্যারের কাছ থেকে চাপে আছি। ধরেন, আমার অফিস থেকে নামজারিতে অতিরিক্ত আদায় বন্ধ করা হলো। আপনারা পার কেইস যে ডিল করেন, এটা আপনারা নিশ্চিত করবেন কীভাবে যে আপনারা টাকা নিচ্ছেন না। আপনাদের মতামত শুনি, আপনারা কী চান? কত করে নেওয়া হোক? খোলামেলা আলোচনা করেন, মতামত দেন। সবাই এখানে উপস্থিত আছেন। যদি বলেন স্যার, আপনি যদি না করে দেন, তাহলে নিশ্চিত করব আমরা কোনো টাকাপয়সার লেনদেন করব না। কিন্তু বাস্তবে এটা কখনো হবে না। আপনারা মাঠপর্যায়ে কাজ করেন। কাজ করতে গেলে স্বাভাবিকভাবেই মানে খরচ আছে এবং বিভিন্ন ধরনের বিষয় আছে, যেটার কারণে এটা নিতে হচ্ছে বা নিচ্ছেন। এটা কমবেশি সবাই নিচ্ছে। কিন্তু এটা যে এই অফিসে দেওয়া ইইতেছে বিধায় আপনারা এটাকে বড় আকারে একটা কিছু করবেন, এই ধরনের অভিযোগ আসলে আমার জন্য বিব্রতকর।’ ওইদিনের সভায় এসিল্যান্ড আরও বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমার সাথে শাখারীকাঠী ইউনিয়ন তহসিলদার মো. শাখাওয়াত সাহেবের সব বিষয়ে কথা হয়েছে। ধরেন, একজনের দুই একর জমি আছে, তার কাছ থেকে নামজারির ক্ষেত্রে কত টাকা নেবেন? যেহেতু তার জমি বেশি, তার কাছ থেকে বেশি টাকা নেবেন, এ রকম।’ এমন কথার উত্তরে এক কর্মকর্তা বলেন, ‘টাকা সবার জন্য সমান হওয়া উচিত। যেমন পাঁচ হাজার ছিল, সেখানে আপনি বললে, চার হাজার টাকায় নামিয়ে আনতে পারি। আপনি যেভাবে বলবেন স্যার।’ তখন এসিল্যান্ড বলেন, ‘ধরেন, আমি চার হাজার নির্ধারণ করে দিলাম। আপনারা কত ডিল করবেন? ক্লিয়ার কথা বলেন। প্রয়োজনে কথাগুলো রেকর্ড থাকবে।’ এর পরিপ্রেক্ষিতে ওপর এক কর্মকর্তা বলেন, ‘সর্বোচ্চ ৬-এর বেশি আমরা নেব না।’ তখন এসিল্যান্ড মাসুদুর রহমান আবার বলেন, ‘ছয় হাজার মানে ছয় হাজারই। ছয় হাজার ১০০ টাকা হলে পরবর্তী সময়ে আমি ব্যবস্থা নেব।’
২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
X