কুবিতে উদ্ভূত পরিস্থিতি ও দাবি-দাওয়া নিয়ে পৃথক তদন্ত কমিটি
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) ‘উদ্ভূত অনাকাঙ্ক্ষিত’ ঘটনার তদন্তপূর্বক তথ্য উদঘাটন এবং শিক্ষক সমিতির ‘দাবি-দাওয়া’ পর্যালোচনার জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৭ মে)  বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার আমিরুল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত দুটি পৃথক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।  বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২৮ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ে উদ্ভূত অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার তদন্তপূর্বক তথ্য উদঘাটনের জন্য ৯৩তম জরুরি সিন্ডিকেট সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ্রকে আহ্বায়ক করে ৫ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।   কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন- চট্টগ্রামের বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন ও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক মো. হেলাল উদ্দিন নিজামী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মুস্তাফিজুর রহমান ছিদ্দিকী, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (বিশ্ববিদ্যালয়) খালেদা আক্তার ও সদস্য সচিব হিসেবে রয়েছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) মো. আমিরুল হক চৌধুরী।  এদিকে একই সিন্ডিকেট সভায় শিক্ষকদের বিভিন্ন দাবি-দাওয়ার প্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. আবু তাহেরকে আহবায়ক করে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।  কমিটির অন্যান্যরা হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টেলিভিশন, চলচ্চিত্র ও ফটোগ্রাফি বিভাগের প্রফেসর ড. এ জে এম শফিউল আলম ভূইয়া, আবদুন নূর মুহম্মদ আল ফিরোজ, অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন ও অর্থ), মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ সচিবালয়, ঢাকা, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের ও সদস্য সচিব হিসেবে রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার আমিরুল হক চৌধুরী।  এ বিষয়ে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও মার্কেটিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মেহেদী হাসান বলেন, এখানে বলা হয়েছে আলোচনা করবে কিন্তু আমাদের সঙ্গে কোনো আলোচনা করা হয়নি। যেখানে উপাচার্য নিজেই হামলা করেছেন সেখানে তার নেতৃত্বে সিন্ডিকেট সভায় কার্যকর কোনো সিদ্ধান্ত আসবে বলে মনে করি না।   প্রসঙ্গত, গত ১৯ ফেব্রুয়ারি শিক্ষক সমিতির নির্বাচনের পর ভিসির কক্ষে শুভেচ্ছা বিনিময় ও কিছু দাবি-দাওয়ার বিষয়ে কথা বলতে গেলে দুজন কর্মকর্তা ও ছাত্রলীগের সাবেক সদস্যরা শিক্ষকদের ওপর হামলা করেন। এরই জেরে তিন দফা ক্লাস বর্জনের পাশাপাশি সাত দফা দাবি জানিয়ে আসছিল শিক্ষক সমিতি। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃক কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় ভিসি, ট্রেজারার ও প্রক্টরের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন সাধারণ শিক্ষকরা। সবশেষে, গত ২৮ এপ্রিল শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচিতে ভিসি, ট্রেজারার ও প্রক্টরসহ ভিসিপন্থি সাবেক শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতারা শিক্ষকদের কিল, ঘুষি ও ধাক্কা দিয়ে প্রশাসনিক ভবনের অবস্থান দখলে নেন। এরপর শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন শুরু করলে বিশ্ববিদ্যালয় ও হলগুলো অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে প্রশাসন।   এ ছাড়াও শিক্ষক সমিতির ৭ দফা দাবি হলো- ১৯ ফেব্রুয়ারি উপাচার্যের দপ্তরে শিক্ষকদের ওপর হামলার নেতৃত্ব দেওয়া কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাকির হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার করা ও ঘটনার তদন্ত করা। পাশাপাশি হামলায় মদদ দেওয়া প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকীকে অপসারণ করা।   অন্য দাবিগুলোর মধ্যে আছে ঢাকার অতিথিশালা শিক্ষক-কর্মকর্তাদের জন্য অবমুক্ত করা, অধ্যাপক গ্রেড ১ ও ২ তে আবেদন করা শিক্ষকদের পদোন্নতির ব্যবস্থা করা; কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী বিভাগীয় প্রধান ও ডিন নিয়োগ এবং ইতোমধ্যে বেআইনিভাবে নিয়োগ পাওয়া ব্যক্তিদের প্রত্যাহার করা; শিক্ষক নিয়োগ, পদোন্নতি স্থায়ীকরণে আইনবহির্ভূত শর্তারোপ করে জ্যেষ্ঠতা ক্ষুণ্নের বিষয়টি নিষ্পত্তি করা; ৯০তম সিন্ডিকেট সভায় বিতর্কিত শিক্ষাছুটি নীতিমালা প্রত্যাহার করে আগের নীতিমালা বহাল এবং ৮৬তম সিন্ডিকেট সভায় অনুমোদিত স্থায়ীকরণ সিদ্ধান্ত বাতিল করা।
০৮ মে, ২০২৪

কুবি প্রশাসনকে ৭২ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিল শিক্ষার্থীরা
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) প্রশাসনের অগণতান্ত্রিক সিদ্ধান্ত বাতিল করে বিশ্ববিদ্যালয় খোলা এবং ক্লাস-পরীক্ষা চালু করতে ৭২ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। শনিবার (৪ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বরে মানববন্ধনে এ ঘোষণা দেন তারা।  মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা অবিলম্বে ক্যাম্পাস বন্ধের সিদ্ধান্ত বাতিল করা, অবিলম্বে ক্লাস-পরীক্ষা চালু করা, পরিবহন ব্যবস্থা চালু করা, শিক্ষকদের ক্লাস বর্জনের সিদ্ধান্ত বাতিল ও ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ইউজিসি/সিন্ডিকেট সভার মাধ্যমে সংকট নিরসন করার ৫ দফা দাবি উথাপন করেন। প্রশাসনের সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে গনিত ১৪ ব্যাচের শিক্ষার্থী রাকিব বলেন, শিক্ষক সমিতি একে একে তিনবার ক্লাস বর্জন করল। এখন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্যাম্পাস বন্ধের ঘোষণা দিল। আমরা শিক্ষার্থীরা তা মানতে পারছি না। উপাচার্য ও শিক্ষক সমিতির বিরোধে আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। এই বিরোধের কারণে আমরা পুনরায় সেশনজটে পড়তে যাচ্ছি। মূলত, তাদের এই সংকটগুলোর মাধ্যমে সাধারণ শিক্ষার্থীদের জিম্মি করা হচ্ছে। গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী ফাহমিদা কানন বলেন, উপাচার্য ও শিক্ষকদের বিরোধে শক্তিপ্রয়োগের ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে। আমরা যেমন শিক্ষকদের ন্যায্য দাবিকে সাদুবাদ জানাই তেমনি তাদের ক্লাস বর্জনের প্রতিবাদ জানাই। বিশ্ববিদ্যালয়ে সুস্থ ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনা এখন সময়ের দাবি। এ ছাড়াও সকল অন্তঃকোন্দল দ্রুত সমাধান করে শিক্ষার্থীবান্ধব সিদ্ধান্ত ঘোষণার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিকট আহ্বান জানাই, না হলে আমরা কঠোর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হব।
০৪ মে, ২০২৪

এক টেবিলে ভর্তি পরীক্ষা দিল ১৮ শিক্ষার্থী
দেশের ২৪টি সাধারণ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক প্রথম বর্ষের ‘বি’ ইউনিটের গুচ্ছ পদ্ধতির ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে শুক্রবার (৩ মে)। এর মধ্যে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) কেন্দ্রে কয়েকটি বিভাগের সেমিনার ও লাইব্রেরি কক্ষের এক টেবিলে বসে ১৮-২০ জন পরীক্ষার্থী গাদাগাদি করে বসে পরীক্ষা দিচ্ছেন। সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের সব সেমিনার লাইব্রেরিতেই ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হয়। এ সময় সেখানে একেক টেবিলে ১৮-২০ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় বসেছেন। এ ছাড়া প্রশাসনিক ভবনের হলরুমেও এবার ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। পূর্বের ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায়ও এভাবে সেমিনার লাইব্রেরিগুলোতে আসন বিন্যাস করা হয়েছে। সেমিনার লাইব্রেরিতে পরীক্ষা দেওয়া এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সেমিনার কক্ষে তাদের কোনো সিট প্ল্যান বসানো হয়নি। শিক্ষকরা যাকে যেখানে বসতে বলেছেন তারা সেখানেই বসে পরীক্ষা দেন। এক সঙ্গে এক টেবিলে এতজন গাদাগাদি করে পরীক্ষা দেওয়াতে মনোযোগেও সমস্যা হচ্ছিল বারবার। আরও বিভিন্ন জায়গায় ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে আসলেও এভাবে ঠাসাঠাসিভাবে বসে পরীক্ষা দেওয়ার অভিজ্ঞতা এখানেই প্রথম। এ নিয়ে বিজ্ঞান অনুষদের পঞ্চম তলার হল পরিদর্শক ও গণিত বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আবদুল হাকিমকে প্রশ্ন করা হলে তিনি কেন্দ্র ব্যবস্থাপনা কমিটির আহ্বায়ককে প্রশ্ন করতে বলেন। ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার আহ্বায়ক ড. মুহাম্মদ সোহরাব উদ্দিন বলেন, আমি ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার আহ্বায়ক। কিন্তু সিট প্ল্যানের জন্য ‘কেন্দ্র ব্যবস্থাপনা কমিটি’ নামে আলাদা একটি কমিটি রয়েছে। সেই কমিটিই আসন বিন্যাসের ব্যাপারে ভালো বলতে পারবে। বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. প্রদীপ দেবনাথ বলেন, আমার অনুষদের প্রতিটি বিভাগের সেমিনার লাইব্রেরিতেই পরীক্ষা হয়েছে। এভাবে এক টেবিলে ১৮-২০ জন পরীক্ষা দিলে সেটার স্বচ্ছতা কতটুকু থাকবে? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এটা কেন্দ্র ব্যবস্থাপনা কমিটিই বলতে পারবে। শিক্ষক সমিতির সহসভাপতি অধ্যাপক ড. কাজী মো. কামাল উদ্দিন বলেন, পূর্বে যত ভর্তি পরীক্ষা হয়েছে সেগুলো আমরা খুব ইমেজের সঙ্গে শেষ করেছি। কিন্তু এই উপাচার্য এবার আসন বণ্টনের যে কমিটি করেছেন সেখানে তিনি তার আস্থাভাজন একেবারে অনভিজ্ঞ, জুনিয়র শিক্ষকদের তিনি দায়িত্ব দিয়েছেন। ফলে এরা ল্যাব, সেমিনারের মতো রুমগুলোতেও এবার পরীক্ষা নিয়েছে।  তিনি বলেন, যেখানে পাঁচজন বসতে পারবে সেখানে ১০ জন বসিয়েছে। এটা আসলে এদের অনভিজ্ঞতার ফল। আর এ দায়ভার সম্পূর্ণ উপাচার্যের। তিনি ভর্তি পরীক্ষার মতো একটি আয়োজনকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলছেন। দেশবাসীর কাছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়কে হাস্যকর করে তুলছেন। কেন্দ্র ব্যবস্থা কমিটির সদস্য সচিব আবু উবায়দা রাহিদের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তার কমিটির আহ্বায়কের অনুমতি ব্যতীত এটা নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে পারবেন না বলে জানান। এমন অদ্ভুত আসন বিন্যাসের দায়ভার তিনি নিবেন কিনা, সেই প্রশ্ন করা হলে তিনি নিজে কোনো দায় না নিয়ে কমিটির আহ্বায়কের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন। কেন্দ্র ব্যবস্থাপনা কমিটির আহ্বায়ক ও লোক প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ড. রশিদুল ইসলাম শেখ বলেন, এবার আমরা চেয়েছি বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে সর্বোচ্চ সংখ্যক পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা নিতে। সেজন্যই সেমিনার ও লাইব্রেরিগুলোতেও পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া অল্পসংখ্যক পরীক্ষার্থীর জন্য আরেকটা কেন্দ্র ব্যবস্থা করা কঠিন ছিল। এক টেবিলে ১৮ থেকে ২০ জন একসঙ্গে পরীক্ষা দিলে সেখানে স্বচ্ছতা থাকবে কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, সেখানে আমাদের শিক্ষকেরা দায়িত্বে ছিলেন। তারা সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা নিশ্চিত করেছেন। এখন যদি কোনো অভিযোগ থাকে তাহলে পরবর্তীতে এভাবে সেমিনার লাইব্রেরিগুলোতে আমরা আর পরীক্ষা নেব না। গুচ্ছভুক্ত কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে এবার চার হাজার ২৯২ জন পরীক্ষার্থীর আসনের ব্যবস্থা করা হয়। এর মধ্যে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় এবং কুমিল্লা টিচার্স ট্রেনিং সেন্টারে এ দুই কেন্দ্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। শুক্রবার সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এ পরীক্ষা নেওয়া হয়।
০৩ মে, ২০২৪

কুমিল্লা সদরে ৩ প্রার্থীই নির্বাচিত বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়
কুমিল্লা সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মো. আমিনুল ইসলাম টুটুল, ভাইস চেয়ারম্যান পদে আহাম্মেদ নিয়াজ পাবেল এবং নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে হোসেনেয়ারা বেগম বকুলকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) পঙ্কজ বড়ুয়া স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে তিন প্রার্থীকে নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়। জানা যায়, দ্বিতীয় ধাপে অনুষ্ঠিতব্য কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল গত ২১ এপ্রিল। ওই দিন পর্যন্ত এ তিন প্রার্থী ছাড়া আর কোনো প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেননি। ২৩ এপ্রিল তাদের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষে বৈধ ঘোষণা করা হয়। আর কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী না থাকায় তিনজনকে একক প্রার্থী হিসেবে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। এদিকে কুমিল্লার মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আ ক ম বাহাউদ্দীন বাহার এমপির আস্থাভাজন এ তিনজনকে আগাম অভিনন্দন জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুভেচ্ছা-অভিনন্দনের হিড়িক পড়েছে। কুমিল্লা জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মো. মুনীর হোসাইন খান জানান, দ্বিতীয় ধাপে কুমিল্লার আদর্শ সদর, সদর দক্ষিণ ও বরুড়া—এ তিন উপজেলায় নির্বাচন হচ্ছে। ২১ এপ্রিল অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন কুমিল্লা আদর্শ সদরে প্রতি পদে ১ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। তাদের মনোননয়পত্র বৈধ হওয়ায় এবং প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী না থাকায় এ উপজেলায় আর ভোটের প্রয়োজন হচ্ছে না।
০৩ মে, ২০২৪

বিশ্ববিদ্যালয় ও হল বন্ধের সিদ্ধান্তের নির্দেশ প্রত্যাখ্যান কুবি শিক্ষার্থীদের
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘উদ্ভূত পরিস্থিতি’ নিরসনের জন্য অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় এবং হল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এদিকে প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে মানববন্ধন করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।  বুধবার (১ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসা শিক্ষা অনুষদের সামনে ও গোলচত্বরে মানববন্ধন করেন তারা। সকাল ১১টায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে গোল চত্বরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নেওয়া সিদ্ধান্তের বিপক্ষে প্রতিবাদ করতে দেখা যায়। এ সময় শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, তারা দ্রুত ক্লাসে ফিরতে চান। বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দিয়ে যেন হলগুলোতে প্রবেশাধিকার দেওয়া হয়। এরপর দুপুর ১২টায় গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী অর্নব সিংহ রায়ের সঞ্চালনায় প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী মানববন্ধন করেন। শিক্ষার্থীদের বলেন, যে সমস্যা তৈরি হয়েছে তা যেন অতিদ্রুত সমাধান করা হয়। মানববন্ধনে অংশ নেওয়া ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী ফাহমিদা সুলতানা বলেন, ‘শিক্ষক সমিতি আর ভিসিপন্থির ঝামেলার বলিরপাঁঠা হচ্ছি আমরা। আপনারা কথায় কথায় ক্লাস বর্জন করছেন, মগের মুল্লুক পেয়ে গেছেন না কি আপনারা? আমরা শিগগিরই ক্লাসে ফিরতে চাই।’ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪তম আবর্তনের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষার্থী সাদিয়া আফরিন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছিলাম পড়াশোনা করার জন্য, তবে গত কয়েক মাস ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি চলছে। কখনো শিক্ষক সমিতি ক্লাস বর্জন করছে, এখন আবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দিচ্ছে, হল বন্ধ করার নির্দেশ দিচ্ছে। একজন সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে আমার প্রশ্ন শিক্ষকদের এই দ্বন্দ্বে আমরা শিক্ষার্থীরা কীভাবে দোষী? আমরা কেন ভুক্তভোগী? এখানে অনেক শিক্ষার্থী অর্থাভাবে হলে থাকে, টিউশন করিয়ে নিজের আর পরিবারের ভরণপোষণ সামলায়। তারা কোথায় যাবে?’ এ বিষয়ে জানতে চাইলে আন্দোলনরত শিক্ষক সমিতির সহসভাপতি অধ্যাপক কাজী কামাল বলেন, প্রশাসনের এ সিদ্ধান্ত একটি স্বৈরাচারী সিদ্ধান্ত। বিভিন্ন হল প্রভোস্টদের সঙ্গে কথা বলেছি তারা বলেছে হল খুব সুন্দরভাবেই চলছে। আর একাডেমিক কার্যক্রম চলুক সেটাও আমি চাই। আমি মনে করি এ উপাচার্য একজন অদক্ষ প্রশাসক। তার পদত্যাগই সবকিছুর সমাধান।’ এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) কাজী ওমর সিদ্দিকী বলেন, ‘আমরা শিক্ষার্থীদের পক্ষেই আছি। যখন কোনো একটা ছুটি হয়, তখন কিন্তু প্রতিবার একই নোটিশ যায় যে হল ছাড়তে হবে। অনেক সময় হল সিলগালা করে দেওয়া হয় সেক্ষেত্রে সবাইকে সেটা মানতে হবে। যেহেতু এই নোটিশে সিলগালার কথা বলা নেই, সেক্ষেত্রে কেউ যদি বিকেল ৪টার মধ্যে হল ত্যাগ না করে তাহলে নিশ্চয়ই হল প্রশাসন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করে শিক্ষার্থীবান্ধব সিদ্ধান্ত নেবে।’ এর আগে মঙ্গলবার ৯৩তম সিন্ডিকেট সভায় পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় ও হলগুলো বন্ধের সিদ্ধান্তসহ মোট ৪টি সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন।
০১ মে, ২০২৪

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ
শিক্ষকদের চলমান আন্দোলনের জেরে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। গতকাল মঙ্গলবার ৯২তম জরুরি সিন্ডিকেট সভায় অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় ও আবাসিক হলগুলো বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সিন্ডিকেট সূত্র জানায়, অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় ও হলগুলো বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে গুচ্ছের পরীক্ষাগুলো চলমান থাকবে। পরে আলোচনা করে দুটি কমিটি গঠন করা হবে। একটা শিক্ষকদের দাবি-দাওয়ার ব্যাপারে এবং অন্যটি ২৮ এপ্রিল যে ঘটনা ঘটেছে সে ঘটনার একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। আবাসিক হল কেন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে—এমন প্রশ্নের জবাবে সিন্ডিকেট সদস্য জানান, উপাচার্য দাবি করেছেন আবাসিক হলগুলোয় প্রচুর অস্ত্র ঢুকতেছে। শিক্ষার্থীদের টাকা দেওয়া হচ্ছে। এতে এখানে অন্যরকম ঘটনা ঘটে যেতে পারে। এ বিষয়ে শিক্ষক সমিতির সহসভাপতি ড. কাজী মোহাম্মদ কামাল উদ্দীন বলেন, উপাচার্য এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে আবারও ছলচাতুরীর আশ্রয় নিয়েছেন। তিনি শিক্ষকদের সমস্যার সমাধান না করে তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দুরভিসন্ধিমূলক সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।
০১ মে, ২০২৪

অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের চলমান আন্দোলনের কারণে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল)  ৯২তম জরুরি সিন্ডিকেট সভায় অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় ও আবাসিক হলসমূহ বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য সূত্রে বিষয়টি জানা গেছে। সিন্ডিকেট সূত্র জানায়, অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় ও হলসমূহ বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে গুচ্ছের পরীক্ষাগুলো চলমান থাকবে। পরবর্তীতে আলাপ-আলোচনা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি কমিটি গঠন করা হবে। শিক্ষকদের দাবি-দাওয়ার ব্যাপারে এবং অন্যটি ২৮ এপ্রিলের ঘটনা ঘটেছে সে ঘটনার একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। আবাসিক হল কেন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে- এমন প্রশ্নের জবাবে সিন্ডিকেট সদস্য জানান, উপাচার্য দাবি করেছেন আবাসিক হলগুলোতে প্রচুর অস্ত্র ডুকতেছে। শিক্ষার্থীদের টাকা দেওয়া হচ্ছে। এতে এখানে অন্যরকম ঘটনা ঘটে যেতে পারে। গোলাম মোস্তফা নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, করোনা মহামারির কারণে আমাদের জীবন থেকে একটি বছর হারিয়ে গিয়েছে। এখন উপচার্য ও শিক্ষক সমিতির মধ্যকার যে দ্বন্দ্ব চলছে তা কখন শেষ হবে জানি না। এখন প্রশাসন ক্যাম্পাস অনির্দিষ্টকালের বন্ধ করে দিল, এভাবে চলতে থাকলে আমাদের জীবন বিশ্ববিদ্যালয়েই শেষ হয়ে যাবে। আমাদের পরিবারের স্বপ্নগুলো অঙ্কুরেই বিনষ্ট হয়ে যাবে। তাই আমরা আশা করবো উভয়ই শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিবেন। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মাহফুজুর রহমান বলেন, শিক্ষকদের আন্দোলন দমানোর জন্য ভিসি ক্যাম্পাস বন্ধ করে দিল। আমরা এতদিন সংকটের কথা বলছিলাম, তিনি বলছিলেন কোন সংকট নেই। তাহলে সিন্ডিকেট সভায় সংকট আছে বলে কেন ক্যাম্পাস বন্ধ হলো? তিনি আরও বলেন, ভিসি মুখে শিক্ষার্থীদের কথা বললেও আসলে শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে না। আমরা মানববন্ধনে বলছি খুবই শীগ্রই ক্লাসে ফিরবো কিন্তু তিনি সিন্ডিকেটের ক্ষমতা বলে সবকিছু বন্ধ করে দিলেন। বর্তমানে প্রায় ডিপার্টমেন্টে সেমিস্টার ফাইনাল চলতেছে। ক্যাম্পাস বন্ধ হওয়ার কারণে সব পরীক্ষা স্থগিত হয়ে গেছে, এতে ক্ষতিগ্রস্ত হলো শিক্ষার্থীরা।
৩০ এপ্রিল, ২০২৪

শিক্ষকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে কুবিতে আবাসিক শিক্ষকের পদত্যাগ
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শিক্ষকদের উপর সংঘবদ্ধ হামলা ও গণমাধ্যমে উপাচার্য কর্তৃক কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষকদের স্বাধীনতাবিরোধী ও জামাত শিবির বলে অবিহিত করার প্রতিবাদ জানিয়ে আবাসিক শিক্ষকের পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোছা. আশিখা আক্তার। মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) মোছা. আশিখা আক্তার স্বাক্ষরিত এক পদত্যাগপত্রের সূত্রে বিষয়টি জানা যায়। পদত্যাগপত্রে তিনি লিখেছেন, ‘আমি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের নওয়াব ফয়জুন্নেছা চৌধুরাণী হলের হাউস টিউটর পদে অদ্যবধি দায়িত্ব পালন করছি। সম্প্রতি গণমাধ্যমে উপাচার্য কর্তৃক কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষকদের স্বাধীনতাবিরোধী ও জামায়াত-শিবির বলে অবিহিত করা এবং গত ২৮ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ওপর সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী হামলার অনাকাক্ষিত পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসনিক দায়িত্ব পালনে আমি নিজেকে অনিরাপদ বলে মনে করছি। তথাপি ওই হামলায় সম্মানিত নারী সহকর্মীদের ওপর আক্রমণ নজিরবিহীন ও নিন্দনীয়। এমতাবস্থায়, আমি ওই প্রশাসনিক দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করছি।’ এ ছাড়াও ভবিষ্যতে তিনি নিরাপদ বিশ্ববিদ্যালয়ে যে কোনো প্রশাসনিক দায়িত্ব নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করার অঙ্গীকার করেন এবং পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ জানান।
৩০ এপ্রিল, ২০২৪

শিক্ষকদের ওপর হামলার ঘটনায় কুবির আবাসিক শিক্ষকের পদত্যাগ
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) শিক্ষকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে নওয়াব ফয়জুন্নেছা চৌধুরানী হলের আবাসিক শিক্ষকের পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন নৃ-বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক সালমা আক্তার উর্মি। সোমবার (২৯ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের সালমা আক্তার উর্মি স্বাক্ষরিত এক পদত্যাগপত্রে বিষয়টি জানা গেছে। পদত্যাগপত্রে তিনি বলেন, আমি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের নওয়াব ফয়জুন্নেছা চৌধুরানী হলের হাউস টিউটর পদে অদ্যাবধি দায়িত্ব পালন করেছি। গতকালকে বিশ্ববিদ্যালয়ে সৃষ্ট অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসনিক দায়িত্ব পালনে আমি অনিরাপদ বলে মনে করেছি। এ অবস্থায়, আমি প্রশাসনিক দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চাচ্ছি। তবে আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের যে কোনো দায়িত্ব নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করার অঙ্গীকার করেছি। এছাড়াও চিঠিতে বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ জানান তিনি। পদত্যাগের বিষয়ে সালমা আক্তার উর্মি বলেন, গতকাল আমাদের শিক্ষকদের ওপর সাবেক শিক্ষার্থীরা হামলা করেছে। এমন পরিস্থিতিতে নিজেকে নিরাপদ মনে করছি না। তাই আবাসিক শিক্ষকের পদ থেকে পদত্যাগ করেছি। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএফএম. আবদুল মঈনের অপসারণের দাবিতে কুবির সকল প্রশাসনিক ও একাডেমিক কার্যক্রম বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। সোমবার (২৯ এপ্রিল) কুবি শিক্ষক সমিতির জরুরি সাধারণ সভা শেষে বিষয়টি নিশ্চিত করেন সংগঠনটির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের। তিনি বলেন, উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষের অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত সকল একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। এতে কোনো শিক্ষক ক্লাস ও পরীক্ষা নিবে না। এমনকি শিক্ষকদের কেউ উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষকে কোনো ধরনের কার্যক্রমে সহযোগিতা করবে না। শিক্ষকদের ওপর হামলার ঘটনায় প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকী ও আইকিউএসি এর পরিচালক অধ্যাপক ড. রশিদুল ইসলাম শেখের সদস্যপদ সাময়িক স্থগিত করা হয়েছে। কেন স্থায়ী বহিষ্কার করা হবে না সেজন্য কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানো হবে। তিনি আরও বলেন, যারা শিক্ষকদের ওপর হামলা করেছে তাদের সার্টিফিকেট বাতিল করার জন্য রেজিস্ট্রার বরাবর চিঠি দেওয়া হবে। শিক্ষকদের ওপর হামলার ঘটনায় আগামীকাল সাড়ে ১১টায় মানববন্ধন করব। তবে গুচ্ছের ভর্তি কার্যক্রম এ কর্মসূচির আওতামুক্ত থাকবে। শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান বলেন, হামলাকারীদের ও সন্ত্রাসী উপাচার্যকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছি আমরা।
২৯ এপ্রিল, ২০২৪

কুবিতে উপাচার্য, ট্রেজারার ও প্রক্টরের কার্যালয়ে তালা
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) উপাচার্য, ট্রেজারার এবং প্রক্টরকে ২৪ ঘণ্টা আলটিমেটামের পর দাবি বাস্তবায়ন না হওয়ায় অবাঞ্চিত ঘোষণা করে তিন কার্যালয়ে তালা দিয়েছে শিক্ষক সমিতি। বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টায় শিক্ষক নেতাদের উপস্থিতিতে এসব কার্যালয়ে তালা দেওয়া হয়। জানা যায়, শিক্ষকদের ওপর হামলায় জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতকরণ এবং হামলায় ‘মদতদানকারী’ ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকীর অপসারণ, গেস্টহাউস শিক্ষক-কর্মকর্তাদের জন্য অবমুক্ত করা, পদোন্নতির জন্য আবেদনকৃত শিক্ষকদের অবিলম্বে পদোন্নতির ব্যবস্থা করাসহ সাত দফা দাবি জানিয়ে আসছিল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। কিন্তু প্রশাসন এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। ফলে শিক্ষকরা তিন দফায় ক্লাস বর্জনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে। যার সঙ্গে সবশেষ যুক্ত হয় ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম।  দপ্তরে তালা দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও সহযোগী অধ্যাপক মেহেদী হাসান বলেন, আমরা উপাচার্য স্যারকে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছিলাম কিন্তু তিনি সমাধানের জন্য আমাদের সঙ্গে আলোচনায় বসেননি। তাই পূর্বের ঘোষণা অনুযায়ী প্রক্টর, ট্রেজারার ও উপাচার্যকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করে তাদের কার্যালয়ে তালা দেওয়া হয়েছে। আমাদের দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত তালা থাকবে। শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের বলেন, আন্দোলন চললেও নিয়মিত ক্লাস, পরীক্ষা হবে। আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয় শান্তিপূর্ণ অবস্থা বিরাজ করুক। কিন্তু যেভাবে শিক্ষকদের অধিকার বঞ্চিত করা হচ্ছে, অবৈধ শর্ত চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে তারই প্রেক্ষিতে আজকে আমাদের এই পদক্ষেপ। আমরা আশাবাদী উপাচার্য এই সংকট নিরসনে এগিয়ে আসবেন।  এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈনকে একাধিকবার কল দিয়েও পাওয়া যায়নি। অন্যদিকে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহা. হুমায়ুন কবিরও এ বিষয়ে কিছু বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন। 
২৫ এপ্রিল, ২০২৪
X