গ্রামীণ টেলিকম ভবনে ড. ইউনূসের আটটি প্রতিষ্ঠান দখলের চেষ্টা
রাজধানীর মিরপুর চিড়িয়াখানা সড়কে অবস্থিত গ্রামীণ টেলিকম ভবনে থাকা নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আটটি প্রতিষ্ঠান দখলচেষ্টার অভিযোগ এসেছে গ্রামীণ ব্যাংকের বিরুদ্ধে। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো গ্রামীণ কল্যাণ, গ্রামীণ টেলিকম, গ্রামীণ শক্তি, গ্রামীণ সামগ্রী, গ্রামীণ ফান্ড, গ্রামীণ মৎস্য ও পশুসম্পদ ফাউন্ডেশন, গ্রামীণ কৃষি ফাউন্ডেশন এবং গ্রামীণ উদ্যোগ। এ আটটি প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ড. ইউনূস। তবে এ বিষয়ে গ্রামীণ ব্যাংকের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। জানা যায়, গত সোমবার ভবনটিতে প্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিতে যায় গ্রামীণ ব্যাংকের একটি দল। পরবর্তী সময়ে তারা গ্রামীণ কল্যাণ এবং গ্রামীণ টেলিকম কার্যালয়ের নিয়ন্ত্রণ নেন বলে অভিযোগ করেছেন গ্রামীণ কল্যাণের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে এম মঈনুদ্দিন চৌধুরী। তিনি বলেন, গ্রামীণ ব্যাংকের কর্মকর্তা পরিচয় দেওয়া ওই ব্যক্তিরা কার্যালয় নিয়ন্ত্রণে নিয়েছেন। তারাই অফিসের তালা খোলেন, আবার রাতে তালা লাগিয়ে দেন। যখন-তখন ফাইলপত্র ঘাটেন। কর্মকর্তাদের সঙ্গে অপেশাদার আচরণ করেন এবং কাউকে গালাগালাও করেন। এমন অবস্থায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন তারা। পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো আইনি সহায়তা না পাওয়ার দাবি করে মঈনুদ্দিন বলেন, এ ঘটনায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করার চেষ্টা করেছি। শাহ আলী থানা থেকে আমাদের অভিযোগ নিয়ে গেলেও কোনো কপি দেয়নি। ভবনে নিরাপত্তা চেয়েছিলাম, সেটিও পাচ্ছি না। গ্রামীণ ব্যাংকের পরিচয় দেওয়া ব্যক্তিরা যা করছেন, সেটি পুরোপুরি বেআইনি, গায়ের জোরে করছেন। তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করে শাহ আলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মওদুত হাওলাদার কালবেলাকে বলেন, মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে দেখেছি। এটি তাদের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। গ্রামীণ ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা প্রধান কার্যালয় থেকে ওই ভবনে প্রতিনিধি পাঠিয়েছে। এ বিষয়ে কোনো জিডি হয়নি। এমন অবস্থায় গ্রামীণ সেন্টারের পক্ষ থেকে আটটি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের দায়িত্ব অব্যাহত রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। গ্রামীণ কল্যাণের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মঈনুদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘চেয়ারম্যান স্যারের (ড. ইউনূস) পক্ষ থেকে আমাদের নিয়মিত দায়িত্ব পালন করে যেতে বলা হয়েছে। বোর্ড যেভাবে নির্দেশনা দেবে সেভাবে দায়িত্ব পালন করে যাব।’
১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

নোবেলজয়ীর নয় এই বিচার গ্রামীণ টেলিকম প্রধানের
শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। গতকাল সোমবার এ রায়ের পর্যবেক্ষণে ঢাকার শ্রম আদালত বলেন, আসামিপক্ষ এক নম্বর আসামির (ড. ইউনূস) বিষয়ে প্রশংসাসূচক বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন। যেখানে তাকে দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে লড়াই করা নোবেলজয়ী আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে; কিন্তু এই আদালতে নোবেলজয়ী ইউনূসের বিচার হচ্ছে না, গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান হিসেবে বিচার হয়েছে। রায়ের প্রক্রিয়ায় ড. ইউনূসের আইনজীবী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, আমরা এই রায়ে ক্ষুব্ধ। লেবার কোর্টের ইতিহাসে এত তাড়াতাড়ি ড. ইউনূসের মামলার শুনানির জন্য ১০টি ডেট দেওয়া হয়েছে। তড়িঘড়ি করে, রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত ইতিহাস ব্রেক করে শুনানি নিয়ে এই রায় ঘোষণা করা হয়েছে। আমরা বিক্ষুব্ধ, এই রায় অন্যায় ও আইনবিরোধী। ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছি। এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করব। রাষ্ট্রপক্ষ কোনো কিছু প্রমাণ করতে পারেনি। আপিল কোর্টে আমরা এর বিরুদ্ধে প্রতিকার চাইব। নোবেলজয়ী হলেও কেউ আদালত ও আইনের ঊর্ধ্বে নন, এমন মন্তব্য করে কলকারখানা প্রতিষ্ঠান ও পরিদর্শন অধিদপ্তর পক্ষের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, তারা শুধু বলেন, ড. ইউনূস নোবেল বিজয়ী। নোবেল বিজয়ী হিসেবে তো তার বিরুদ্ধে মামলা হয়নি। এখানে তার বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানপ্রধান হিসেবে শ্রম আইন লঙ্ঘনের দায়ে মামলা হয়েছে। কিছু হলেই তারা বলেন, তিনি নোবেল বিজয়ী। এটা তার ব্যক্তিগত অর্জন। প্রতিষ্ঠানপ্রধান হিসেবে তিনি যে শ্রম আইন লঙ্ঘন করেছেন, সেটি আমরা আদালতে উপস্থাপন করেছি। এক্ষেত্রে আমরা একবারও বলিনি যে, নোবেল বিজয়ী ড. ইউনূসকে শাস্তি দেওয়া হোক। এ ধরনের কথা আমরা কখনোই বলিনি। বরং তারা ড. ইউনূসকে নোবেল বিজয়ী বলে সাধারণ জনগণকে বিভ্রান্ত করতে চাচ্ছেন।
০২ জানুয়ারি, ২০২৪
X