বিএনপির আন্দোলন ‘ডু অর ডাই’- গয়েশ্বর চন্দ্র রায়
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, আন্দোলন-সংগ্রামের জন্য বিএনপি আর প্রশাসনের অনুমতির অপেক্ষা করবে না। আমাদের আন্দোলন ‘ডু অর ডাই’। হয় বাঁচব, না হয় মরে যাব। সেজন্য আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। গোয়েন্দা সংস্থা শেখ হাসিনা সরকারকে আর রক্ষা করতে পারবে না। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গী কলেজগেট এলাকায় মহানগর বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। এদিকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, সিন্ডিকেট সৃষ্টি করে আওয়ামী লীগ কৃত্রিম দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি করতে চায়। গতকাল বিকেলে ঢাকার কেরানীগঞ্জের জিনজিরা বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বিলুপ্ত, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ একদফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আয়োজিত সমাবেশে মহানগর বিএনপির সভাপতি শওকত হোসেন সরকারের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় আরও বলেন, শেখ হাসিনার অত্যাচার নির্যাতন সহ্য করে আর বাঁচতে চাই না। শেখ হাসিনার পতন নিশ্চিত করে সুষ্ঠু, অবাধ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ভোটাধিকার আমরা রক্ষা করব। আমরা লড়ছি জনগণের জন্য। জনগণ আমাদের পাশে থাকবে। আমাদের পুলিশ, এসপি, থানাÑ কিছুই লাগবে না। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মুক্তিযোদ্ধা হাসান উদ্দিন সরকার, জেলা বিএনপি সভাপতি ফজলুল হক মিলনসহ স্থানীয় নেতারা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বেনজীর আহমেদ টিটো, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু প্রমুখ। সমাবেশে আমীর খসরু বলেন, জনগণ আমাদের সঙ্গে রয়েছে। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল, এখন আন্দোলন হচ্ছে এই ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের আন্দোলন। বিএনপির যুগপৎ আন্দোলনের সঙ্গে যারা রয়েছে তারা একটি লক্ষ্যে আন্দোলন করছে, আমাদের লক্ষ্যমাত্রা স্বৈরাচার সরকারের পতন। কেউ পিছিয়ে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত নয়। জীবনের বিনিময়ে বাংলাদেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। আমাদের সঙ্গে জনগণ আছে। কিন্তু তাদের সঙ্গে কেউ নাই। বাংলাদেশের মানুষও নাই, বিদেশিরাও নাই। বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা বৃষ্টি উপেক্ষা করে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে দুপুরের আগেই সমাবেশ স্থলে যোগ দেন। এ সময় নির্দলীয় নিরপেক্ষ নির্বাচন ও খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে স্লোগান দেন নেতাকর্মীরা। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সেখানে বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন ছিল। এদিকে গতকাল বিকেলে ঢাকার কেরানীগঞ্জের জিনজিরা বিএনপি দলীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, জনগণ বলছে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে। বাণিজ্যমন্ত্রী বলছেন সিন্ডিকেট নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি করছে। জনগণ সিন্ডিকেট ভেঙে দিতে বললে মন্ত্রীরা বলছেন সিন্ডিকেট ছাড়া অর্থনীতি অচল হয়ে যাবে। এতেই বোঝা যায়Ñ সরকার চায় সিন্ডিকেট থাকুক। চুরি বাটপারি ছাড়া এই সরকারের মন্ত্রীরা ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারবে না। ১৯৭৪ সালেও দেশে এমন সিন্ডিকেট সৃষ্টি করে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি করা হয়েছিল। এ অবস্থা চলতে দেওয়া যাবে না। আমরা কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এই লুটেরা সরকারকে বিদায় করবই। তিনি বলেন, সরকারের মন্ত্রীরা বলেন বিএনপিকে ক্ষমতা দেওয়া যাবে না। ক্ষমতা কাকে দেওয়া হবে তা নির্ধারণ করবে জনগণ। জনগণের ওপর আস্থা থাকলে ক্ষমতা ছেড়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিন। জনগণ যাদের নির্বাচিত করবে আমরা মেনে নেব। এই বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিএনপি নেতাকর্মী ও সাধারণ জনগণকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার জন্য আহ্বান জানান তিনি। ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু আশফাকের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নিপুণ রায়ের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এই সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুস সালাম। উপস্থিত ছিলেন ঢাকা-২ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী ঢাকা জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার ইরফান ইবনে অমিসহ বিএনপি ও অন্যান্য অঙ্গসংগঠনের নেতারা।
২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

নিরাপত্তাহীনতা ও ন্যায়বিচার না পেয়ে দেশ ছাড়ছে হিন্দুরা : গয়েশ্বর চন্দ্র রায়
নিরাপত্তাহীনতা এবং ন্যায়বিচার না পাওয়ায় হিন্দুরা দেশ ছাড়ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তিনি বলেন, প্রশাসন তাদের নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখে না। আদালতেও পাত্তা পাওয়া যায় না। গতকাল শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান কল্যাণ ফ্রন্টের এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন। গয়েশ্বর রায় বলেন, ’৬০-এর দশকে বাংলাদেশের ভূখণ্ডে হিন্দু সম্প্রদায় ছিল ৩৭ শতাংশ, এখন তা ১০ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। সামাজিক নিরাপত্তা ও তাদের যে নাগরিক অধিকার সংবিধানে আছে, সেটা থেকে তারা বঞ্চিত। প্রশাসন ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের অভিযোগগুলো খুব একটা গুরুত্ব দেয় না, এড়িয়ে চলে। তিনি বলেন, মানুষ যে দলে দলে একসঙ্গে মিছিল করে দেশত্যাগ করেছে, তা নয়। প্রতিদিনই যাচ্ছে, আমরা হয়তো অনুমান করতে পারছি না। পরিসংখ্যান এলে দেখা যায়, ক্রমে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের সংখ্যা কমতে থাকে। এরপর লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের চেয়ারম্যান বিজন কান্তি সরকার। এতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বরাবর চিঠি দেওয়ায় ছয় মার্কিন কংগ্রেসম্যানকে সাধুবাদ জানান। সেইসঙ্গে বিভিন্ন সময়ে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনাও তুলে ধরে অভিযোগ করেন, বিভিন্ন ভিডিও ফুটেজ ও সংবাদ গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলেও ওইসব ঘটনার কোনোটিরই সুষ্ঠু তদন্ত পর্যন্ত হয়নি। কল্যাণ ফ্রন্টের মহাসচিব তরুণ দের পরিচালনায় এ সময় ছিলেন সংগঠনের উপদেষ্টা নিতাই রায় চৌধুরী, সুকোমল বড়ুয়া, তপন চন্দ্র মজুমদার, সুশীল বড়ুয়া, ভাইস চেয়ারম্যান অপর্ণা রায় দাস, নিতাই চন্দ্র ঘোষ, রমেশ দত্ত, রণজিত রায়, বাংলাদেশ মাইনরিটি জনতা পার্টির সুকৃতি মণ্ডল প্রমুখ।
২৪ জুন, ২০২৩
X