চুয়াডাঙ্গায় কেন এত তীব্র তাপমাত্রা
২৯ বছরের তাপমাত্রার রেকর্ড ভেঙে চুয়াডাঙ্গায় আবারও সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪৩ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ১২ শতাংশ। চলতি মৌসুমে এটিই চুয়াডাঙ্গার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। এর আগে ১৯৯৫ সালে চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ২০০৫ সালে ২ জুন চুয়াডাঙ্গার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ২০১২ সালে ৪ জুন চুয়াডাঙ্গার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪২ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ২০১৪ সালের ২১ মে চুয়াডাঙ্গার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪৩ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।  এটি সারা দেশের ৩৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ রেকর্ড তাপমাত্রা। টানা প্রায় এক মাস ধরে এ জেলায় অব্যাহত রয়েছে মাঝারি, তীব্র ও অতি তীব্র তাপপ্রবাহ। চুয়াডাঙ্গায় কেন এত তীব্র তাপমাত্রা- এ প্রশ্নের উত্তরে চুয়াডাঙ্গার প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের সিনিয়র পর্যবেক্ষক রাকিবুল হাসান জানান, ভৌগোলিক কারণে সাধারণত চুয়াডাঙ্গার তাপমাত্রা বেশি থাকে। আবার শীতের দিনে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বিরাজ করে। তবে তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার ৪টি কারণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রথম কারণ হলো চুয়াডাঙ্গাসহ ভারতের পশ্চিমবাংলার বিস্তীর্ণ এলাকা সমভূমি হওয়ার কারণে এখানে মার্চ, এপ্রিল, মে- এই তিন মাস সূর্য লম্বাভাবে কিরণ দেয়। ফলে প্রচুর গরম অনুভূত হয়। এ জায়গায় বায়ুমণ্ডল বেশি উত্তপ্ত হয়। তাপের পরিবহন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এই সময় পশ্চিমা বায়ু চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এর ফলে গরম লু বাতাস যখন চুয়াডাঙ্গা প্রবেশদ্বার দিয়ে প্রবাহিত হয় তখন চুয়াডাঙ্গার তাপমাত্রা অন্যান্য এলাকার চেয়ে বেড়ে যায়। এটা হলো প্রথম কারণ। আর চুয়াডাঙ্গার খুব কাছাকাছি দিয়ে কর্কটক্রান্তি রেখার অবস্থান বলে এপ্রিল মাসের দিকে তাপমাত্রা অনেক বেশি থাকে। চুয়াডাঙ্গাতে অতীতের তুলনায় গাছপালার অনেক কমে গেছে। এ ছাড়াও নদী-নালা, খাল-বিল শুকিয়ে গেছে। মূলত এই চারটি কারণে চুয়াডাঙ্গাতে গরমের সময় গরম বেশি আর শীতের সময় শীত বেশি থাকে। চুয়াডাঙ্গার প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান জানান, মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) বিকেল ৩টায় চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪৩ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ১২ শতাংশ। এদিন দুপুর ১২টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ১৪ শতাংশ এবং সকাল ৯টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৫৬ শতাংশ। বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ অনেক বেশি থাকায় গোটা জেলায় ভ্যাপসা গরম অনুভূত হচ্ছে। তিনি আরও জানান, মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) পর্যন্ত তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকবে। বুধবার (১ মে) থেকে ধীরে ধীরে তাপমাত্রা কমতে থাকবে এবং রোববার (৫ মে) থেকে বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান তিনি।
৩০ এপ্রিল, ২০২৪
X