অনাবৃষ্টির পর ভারী বর্ষণে প্রাণ ফিরে পেয়েছেন কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ার আউশ ধানের বীজতলা নিয়ে শঙ্কিত কৃষকরা। শনিবার (১৮ মে) বেলা সাড়ে ১১টার এই বৃষ্টিতে আউশ ধানের বীজতলায় পানি জমেছে। এতে খরায় নষ্ট হওয়ার পথে বীজতলায় প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে। ফলে কৃষকদের মুখে স্বস্তির হাসি ফিরেছে।
জানা গেছে, এ উপজেলায় বৃষ্টির অভাবে আর তীব্র রোদে ইতোপূর্বে তৈরি করা আউশের বীজতলা শুকিয়ে মাটি ফেটে বীজতলা নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছিল। তবে শনিবারের হঠাৎ ভারী বৃষ্টিতে বীজতলায় পানি জমে আবার নতুন জীবন পেতে শুরু করেছে খরায় নষ্ট হওয়ার পথে আউশের বীজতলা। এতে শঙ্কিত কৃষকদের মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, আউশ মৌসুমে এ উপজেলায় বীজতলার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ২৭৩ দশমিক ৯৫ হেক্টর। তবে খরার কারণে বীজতলার লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে ২৩২ হেক্টর। ভারী এই বৃষ্টিতে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে বীজতলা তৈরি হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এ বছর আউশ ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ হাজর ৪৯৬ হেক্টর। অনাবৃষ্টির কারণে কোথাও কোথাও বীজতলায় সমস্যা দেখা দিয়েছিল। উপজেলা কৃষি বিভাগ বীজতলা সুরক্ষিত রাখতে সেচের মাধ্যমে পানি দিতে কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তবে হঠাৎ ভারী বৃষ্টির ফলে নষ্ট হওয়ার পথে বীজতলায় সজীবতা ফিরে আসবে বলে দাবি উপজেলা কৃষি বিভাগের।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, চলতি আউশ মৌসুমের শুরুর দিকে তীব্র তাপপ্রবাহের পর কিছুটা বৃষ্টি হওয়ায় সেই বৃষ্টির পানিতে জমি প্রস্তুত করে বীজতলা তৈরি করেছিলেন কৃষকরা। তবে বীজতলা তৈরি পর থেকে আবারও শুরু হওয়া খরায় পানি শুকিয়ে বীজতলা নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছিল। এ নিয়ে কৃষকরা চরম উৎকণ্ঠার মধ্যে সময় পার করছিলেন। শনিবারের হঠাৎ ভারী বৃষ্টির ফলে নষ্ট হওয়ার পথে বীজতলায় ধানের চারা নতুন জীবন পেতে শুরু করেছে।
স্থানীয় কৃষক হিমন মিয়া কালবেলাকে বলেন, অনাবৃষ্টিতে খরার কারণে আমার আউশের বীজতলার মাটি ফেটে ধানের চারা নষ্ট হয়ে পড়ছিল। এই ভারী বৃষ্টিতে আমরা প্রাণ ফিরে পেয়েছি। বীজতলায় নষ্ট হওয়ার পথে চারাগুলো এখন ধীরে ধীরে সজীব হয়ে উঠবে।
উপজেলার মহালক্ষীপাড়া এলাকার কৃষক আবু সালেক মোল্লা কালবেলাকে বলেন, তীব্র খরার ফলে আমাদের মুমূর্ষু হয়ে পড়া বীজতলা নিয়ে চিন্তিত ছিলাম। ধারে কাছে পানির উৎস না থাকায় রোদে শুকিয়ে মাটি ফেটে গেলেও বীজতলায় পানি দিতে পারিনি। তবে আজকের এই বৃষ্টিতে আউশ আবাদের শঙ্কায় ভরসা ফিরে এসেছে।
ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. মাসুদ রানা কালবেলাকে বলেন, অনাবৃষ্টির দুর্যোগ কাটিয়ে প্রার্থিত বৃষ্টিতে আউশ ধানের বীজতলায় পানি জমেছে। প্রকৃতির ওপর নির্ভর করে যে কৃষক ভাইয়েরা আউশের বীজতলা তৈরি করেছেন তাদের জন্য এ বৃষ্টি আশীর্বাদ হয়ে এসেছে। যারা এখনো বীজতলা তৈরি করেননি তাদের জন্যও এই বৃষ্টি আশার আলো নিয়ে এসেছে। এতে এই উপজেলার কৃষকদের মধ্যে গতি ফিরে এসেছে।
মন্তব্য করুন