বেনজীর আহমেদের সম্পদ নিয়ে অনুসন্ধানে দুদক
সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের সম্পদ নিয়ে অনুসন্ধানে তিন সদস্যের কমিটি করে কাজ শুরু করেছে দুদক। গতকাল দুদক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির সচিব খোরশেদা ইয়াসমীন এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ৩১ মার্চ বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জন নিয়ে একটি দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। অভিযোগের বিষয়ে দুদক কার্যক্রম শুরু করেছে। সচিব আরও বলেন, ১৮ এপ্রিল দুদকের সভায় বিষয়টি অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত হয়। বিষয়টি নিয়ে গঠিত অনুসন্ধান কমিটির সদস্যরা হলেন উপপরিচালক হাফিজুল ইসলাম, সহকারী পরিচালক নিয়ামুল হাসান গাজী ও জয়নাল আবেদীন। এখন দুদক আইন অনুযায়ী অনুসন্ধান করে ব্যবস্থা নেবে। এদিকে বেনজীর আহমেদের সম্পদের বিষয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত অভিযোগ অনুসন্ধানের নির্দেশনা চেয়ে গত রোববার হাইকোর্টে রিট করেছেন আইনজীবী সালাহ উদ্দিন রিগ্যান। এ ছাড়া আইনজীবী ও সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনও বিষয়টির অনুসন্ধান চেয়ে দুদকে আবেদন করেছেন।
২৩ এপ্রিল, ২০২৪

সেবা প্রদানে ব্যর্থ দুদক বাংলাদেশ ব্যাংক এনবিআর
দেশের জনগণকে সেবা প্রদানে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), বাংলাদেশ ব্যাংক কিংবা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) মতো সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যর্থ হয়েছে। বৈষম্যহীন প্রাতিষ্ঠানিক সেবার বদলে সেবাদানের ক্ষেত্রে দলীয় পরিচয় বিবেচনা করা হয়। একদিকে প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতার অভাব, অন্যদিকে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের প্রভাবে এসব প্রতিষ্ঠান ঠিকমতো কাজ করতে পারছে না। অবস্থাটা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, এসব প্রতিষ্ঠানকে মানুষ আর বিশ্বাস করে না। গতকাল রোববার রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টার ইনে আয়োজিত ‘ইজ দ্যা বাংলাদেশ প্যারাডক্স সাসটেইনেবল?’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে এমন পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ এবং গবেষকরা। বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম) এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান। বক্তারা বলেন, জনগণের সেবায় সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে ফিরিয়ে আনতে ব্যাপক ভিত্তিক সংস্কার প্রয়োজন। প্রভাবশালী রাজনীতিক, দুর্নীতিবাজ আমলা ও অসাধু ব্যবসায়ী চক্রের কারণে সংস্কার সম্ভব হচ্ছে না। কারণ, এ চক্রটি সংস্কারের পক্ষের শক্তির চেয়ে শক্তিশালী। সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের চেয়ারম্যান ড. রেহমান সোবহান বলেন, দেশের প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা নিয়ে অনেক কথা হয়। আমার মতে, ভালো কাজ করা প্রতিষ্ঠানগুলোকেও চিহ্নিত করা দরকার। বাংলাদেশের সুশাসন আর উন্নয়নের সম্পর্কটা খুব একটা ভালো নয়। আমরা পূর্ব এশিয়ার মডেলগুলো ফলো করার চেষ্টা করি; কিন্তু দক্ষিণ কোরিয়ার নীতি আমরা নিতে চাই না। সেদিকে তাকাইও না। দক্ষিণ কোরিয়া ও তাইওয়ানের সফলতা শুধু তাদের ভালো নীতির কারণে। সানেমের নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান বলেন, স্থিতিশীল দুর্নীতির জায়গা এখন বাংলাদেশ। এখানে এখন সংস্কার প্রয়োজন। কিন্তু যখনই সংস্কারের উদ্যোগ আসে, তখনই এর বিপক্ষে একদলের তৎপরতা শুরু হয়ে যায়। তারা এগুলো হতে দেয় না। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বড় ধরনের রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও উদ্যোগ প্রয়োজন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক সায়মা হক বিদিশা বলেন, আমরা যখনই ব্যাংকের অদক্ষতা নিয়ে কথা বলতে চাই, তখনই সামনে বড় প্রশ্ন হয়ে আসে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দুর্বল স্বায়ত্তশাসন। এ ছাড়া অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংকিং বিভাগ ও ফিন্যান্স বিভাগের ব্যাংক খাতে সংশ্লিষ্টতাও ব্যাংকের দুর্বলতার বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি বলেন, এখন আলোচনায় থাকা ব্যাংক খাতের একীভূতকরণটি মূলত সুদের নিরাপত্তার জন্য। এখানে রাজনৈতিক ইচ্ছাই বেশি। দুর্নীতি, খেলাপি ঋণ, প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা ও সুশাসনের অভাব প্রসঙ্গে বিভিন্ন বক্তার সমালোচনা প্রসঙ্গে ড. মসিউর রহমান বলেন, সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা বাড়াতে কাজ করছে সরকার। তবে রাতারাতি সব সংস্কার সম্ভব নয়। তিনি বলেন, আগের তুলনায় খেলাপি ঋণের সংখ্যা কমলেও পরিমাণে বেড়েছে, যা ব্যাংক খাতে অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে।
২২ এপ্রিল, ২০২৪

রাবির নির্মাণাধীন ভবন ধসের তদন্তে দুদক
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) নির্মাণাধীন ১০ তলাবিশিষ্ট শহীদ এ এইচ এম কামরুজ্জামান হলের প্রথম তলার ছাদের একাংশ ধসের ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল রোববার দুপুর পৌনে ১টায় দুদকের তদন্ত দল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দপ্তরে সংশ্লিষ্টদের জিজ্ঞাসাবাদ করে। এ সময় মিটিংয়ে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক তারিকুল হাসান, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার শাহরিয়ার রহমান ও প্রধান প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) আবুল কালাম আজাদ। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ৭০ কোটি ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে এই হল নির্মাণ করা হচ্ছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মজিদ সন্স কনস্ট্রাকশন এই হলের নির্মাণকাজ করছে। এর আগে, চলতি বছরের ৩০ জানুয়ারি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন শহীদ এ এইচ এম কামারুজ্জামান হলের একাংশের ছাদ ধসে পড়ে। এ দুর্ঘটনায় ৯ নির্মাণ শ্রমিক আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। সেই রাতেই জরুরি সভা ডেকে ওই ঘটনার কারণ নির্ধারণে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সে সময় তদন্ত করে ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে অনিয়ম পাওয়া গেলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। তবে আলোচিত রূপপুর পারমাণবিক বালিশকাণ্ডে জড়িত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মজিদ কন্সট্রাকশনকে কাজ দেওয়ার ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানায়, ই-টেন্ডার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ পেয়েছে। এক্ষেত্রে কোনো অনিয়ম হয়নি। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের বালিশকাণ্ডে বেশ আলোচিত ছিল তিনটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। তাদেরই একটি ‘মজিদ সন্স কনস্ট্রাকশন লিমিটেড’। বালিশকাণ্ডের পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন ভবনের ছাদ ধসে পড়া ঘটনায় আবারও আলোচনায় আসে প্রতিষ্ঠানটি। প্রায় এক ঘণ্টা ২০ মিনিটের মিটিং শেষে দুদকের সহকারী পরিচালক আমির হোসাইন বলেন, আমরা দুদকের যোগাযোগ নম্বরে (১০৬) অভিযোগ পাই। এখানে এসে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেছি। প্রতিবেদন প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হবে। সেখানকার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী কার্যক্রম হবে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক তারিকুল হাসান বলেন, দুদক এসেছিল নির্মাণাধীন এ এইচ এম কামারুজ্জামান হলের দুর্ঘটনার বিষয়ে। তারা আমাদের কাছে কিছু তথ্য চেয়েছিল, আমরা দিয়েছি।
২২ এপ্রিল, ২০২৪

অধিকাংশ লোক দুর্নীতিকে দুর্নীতি মনে করে না : দুদক চেয়ারম্যান
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈন উদ্দীন আবদুল্লাহ বলেছেন, অধিকাংশ লোক দুর্নীতিকে এখন আর দুর্নীতি মনে করে না। এক সময় দুর্নীতিবাজরা সন্ধ্যার পরে বাসা থেকে বের হয়ে রাস্তার পাশ দিয়ে হাঁটত। এখন তারা দিনের আলোয় প্রকাশ্যে বের হয়ে রাস্তার মাঝ দিয়ে হাটে। মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) দুদকের সম্মেলন কক্ষে রিপোর্টার্স অ্যাগেইনস্ট করাপশনের (র‌্যাক) স্মরণিকা ‘সুপথ’র মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দুদক চেয়ারম্যান এ কথা বলেন। এসময় মোহাম্মদ মঈন উদ্দীন বলেন, ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে কাজ করতে গিয়ে কাদের সঙ্গে রাখব, সেটাও দেখতে হবে। দুর্নীতিবাজদের সহায়তা নিয়ে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কাজ করলে প্রশ্ন তৈরি হয়। তিনি সাংবাদিকদের কাছে দুর্নীতি প্রতিরোধে সহযোগিতা চান।  অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের উদ্দেশে দুদকের কমিশনার (অনুসন্ধান) মোছা. আছিয়া খাতুন বলেন, মামলার চার্জশিট ছাড়াও প্রতিরোধের কাজ এগিয়ে নিতে হবে। পূর্ণাঙ্গ তথ্য-উপাত্ত দিয়ে খবর প্রকাশ করুন। তিনি বলেন, একসময় রাস্তা দিয়ে অসৎ মানুষ হেটে গেলে সবাই বলত- একজন অসৎ মানুষ হেঁটে যাচ্ছেন। এখন বিষয়টি উল্টো হয়ে গেছে। এখন বরং সৎ মানুষ হেটে গেলে সবাই বলে একজন সৎ মানুষ হেঁটে যাচ্ছেন। স্বাধীনতা যুদ্ধের মতোই আমাদের জেগে উঠতে হবে। আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের জন্য দুর্নীতি মুক্ত দেশ গড়তে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। অনুষ্ঠানে সাংবাদিক নেতারা বলেন, দুদক এবং সাংবাদিকদের লক্ষ্য উদ্দেশ্য একই। তা হলো দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়া। এসময় সাংবাদিক নেতারা দুদকে কাজ করার ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার কথা বলেন। এর প্রেক্ষিতে দুদক চেয়ারম্যান সব সীমাবদ্ধতা সমাধানের আশ্বাস দেন সাংবাদিকদের। এ ছাড়াও অনুষ্ঠানে দুদক সচিব খোরশেদা ইয়াসমীন, উপপরিচালক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা আখতারুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন র‌্যাকের সভাপতি জেমসন মাহবুব। সঞ্চালনায় ছিলেন র‌্যাকের সাধারণ সম্পাদক শাফি উদ্দিন আহমদ।
০২ এপ্রিল, ২০২৪

ডিসিদের দুর্নীতিমুক্ত থাকতে বললেন দুদক চেয়ারম্যান
জেলা প্রশাসকদের উদ্দেশ করে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ বলেছেন, আগে নিজের ঘরকে দুর্নীতিমুক্ত করুন। আপনি নিজে দুর্নীতিমুক্ত কি না, আপনার অফিস দুর্নীতিমুক্ত কি না; আগে নিজের কাছে প্রশ্ন করুন। গতকাল সোমবার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জেলা প্রশাসক সম্মেলনে দুদকের অধিবেশন শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান দুদক চেয়ারম্যান। মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ বলেন, আমি তাদের (জেলা প্রশাসক) বলেছি, যদি আপনার অফিস দুর্নীতিমুক্ত না হয়, নিজের অফিসকে দুর্নীতিমুক্ত করুন। জেলা-উপজেলা, ইউনিয়ন পর্যায়ে আপনার অধীনে যেসব অফিস আছে সেখানে দুর্নীতিমুক্ত করার চেষ্টা করুন। নিজের ঘর দুর্নীতিমুক্ত করুন, তারপর অন্যান্য দুর্নীতির খোঁজখবর রাখুন। জেলা প্রশাসকদের সরকারের প্রতিনিধি উল্লেখ করে কমিশন চেয়ারম্যান বলেন, তারা ৩০-৩৫টি কমিটির প্রধান। জেলার সব কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত থাকেন। এজন্য অনিয়ম-দুর্নীতির তথ্য তাদের কাছে আগে থাকে। জেলা প্রশাসকদের আমরা এ বিষয়ে সচেতন থাকতে বলেছি। কোথায় অনিয়ম-দুর্নীতি হচ্ছে এগুলো আপনাদের কাছে আগে আসে। কীভাবে সব তথ্য আসতে পারে, সেই ম্যাকানিজম তৈরি করে, তথ্য সংগ্রহ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন। যেগুলো দুদককে পাঠানো দরকার পাঠিয়ে দেবেন। কোনো কারণে যদি সরাসরি পাঠাতে সমস্যা হয়, তাহলে প্রতি ১৫ দিন পরপর একটা গোপন প্রতিবেদন দেন মন্ত্রিপরিষদে পাঠান। সেখানে দিলে আমরাও জেনে যাব। প্রতিকার ও প্রতিরোধ দুদকের প্রধান কাজ উল্লেখ করে তিনি বলেন, অনুসন্ধান তদন্ত করে মামলার মাধ্যমে আদালতে সোপর্দ করি, এটা প্রতিকার। ডিসির সাহায্য ছাড়া প্রতিরোধ আমরা সুচারুভাবে করতে পারি না। দুর্নীতি যেন না হয় সেজন্য প্রচার করা ও আমাদের সাহায্য করতে তাদের (ডিসি) আহ্বান জানিয়েছি। জেলা ও বিভাগীয় অফিসে তারা যেন সার্বিক সহায়তা করেন। জেলা পর্যায়ে আমাদের লোকবল যথেষ্ট নয়, এজন্য প্রতিরোধমূলক কার্যক্রমে তাদের সহায়তা চেয়েছি।
০৫ মার্চ, ২০২৪

ডিসিদের দুর্নীতিমুক্ত থাকতে বললেন দুদক চেয়ারম্যান
জেলা প্রশাসকদের উদ্দেশ্য করে দুর্নীতি দমন কমিশনের ( দুদক) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ বলেছেন, আগে নিজের ঘরকে দুর্নীতিমুক্ত করুন। আপনি নিজে দুর্নীতিমুক্ত কিনা, আপনার অফিস দুর্নীতিমুক্ত কিনা আগে নিজের কাছে প্রশ্ন করেন। সোমবার (৪ মার্চ) ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জেলা প্রশাসক সম্মেলনে দুদকের অধিবেশন শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান দুদক চেয়ারম্যান। মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ বলেন, আমি তাদের (জেলা প্রশাসক) বলেছি, যদি আপনার অফিস দুর্নীতিমুক্ত না হয়, নিজের অফিসকে দুর্নীতিমুক্ত করেন। জেলা-উপজেলা, ইউনিয়ন পর্যায়ে আপনার অধীনে যেসব অফিস আছে সেখানে দুর্নীতিমুক্ত করার চেষ্টা করেন। নিজের ঘর দুর্নীতিমুক্ত করেন, তারপর অন্যান্য দুর্নীতির খোঁজখবর রাখেন। জেলা প্রশাসকদের সরকারের প্রতিনিধি উল্লেখ করে কমিশন চেয়ারম্যান বলেন, তারা ৩০-৩৫টা কমিটির প্রধান। জেলার সব কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত থাকেন। এজন্য অনিয়ম-দুর্নীতির তথ্য তাদের কাছে আগে থাকে। জেলা প্রশাসকদের আমরা এ বিষয়ে সচেতন থাকতে বলেছি। কোথায় অনিয়ম-দুর্নীতি হচ্ছে এগুলো আপনাদের কাছে আগে আসে। কীভাবে সব তথ্য আসতে পারে সেই ম্যাকানিজম তৈরি করে, তথ্যসংগ্রহ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন। যেগুলো দুদককে পাঠানো দরকার ওইগুলো পাঠিয়ে দেবেন। কোনো কারণে যদি সরাসরি পাঠাতে সমস্যা হয়, তাহলে প্রতি ১৫ দিন পর পর একটা গোপন প্রতিবেদন দেন মন্ত্রিপরিষদে পাঠান। সেখানে দিলে আমরাও জেনে যাব। প্রতিকার ও প্রতিরোধ দুদকের প্রধান কাজ উল্লেখ করে তিনি বলেন, অনুসন্ধান তদন্ত করে মামলার মাধ্যমে আদালতে সোপর্দ করি, এটা প্রতিকার। ডিসির সাহায্য ছাড়া প্রতিরোধ আমরা সুচারুভাবে করতে পারি না। দুর্নীতি যেন না হয় সেজন্য প্রচার করা ও আমাদের সাহায্য করতে তাদের (ডিসি) আহ্বান জানিয়েছি। জেলা ও বিভাগীয় অফিসে তারা যেন সার্বিক সহায়তা করেন। জেলা পর্যায়ে আমাদের লোকবল যথেষ্ট না, এজন্য প্রতিরোধমূলক কার্যক্রমে তাদের সহায়তা চেয়েছি।
০৪ মার্চ, ২০২৪

দুদক সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের তৃতীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন
দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রধান কার্যালয়ে ‘দুদক সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন (ডুসা) তৃতীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করা হয়েছে। রোববার (১৮ ফেব্রুয়ারি) ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি বাস্তবায়নের মাধ্যমে কমিশনের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করা’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে কেক কেটে ডুসার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করা হয়। এ সময় কমিশনের সর্বস্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা উপস্থিত থেকে দুর্নীতি দমন ও প্রতিরোধে কাজ করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এ ছাড়াও অনুষ্ঠানে বিগত বছরগুলোতে ডুসার সার্বিক কর্মকাণ্ড তুলে ধরার পাশাপাশি ডুসার ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা নিয়েও আলোচনা করা হয়। ২০২২ সালে ১৭ ফেব্রুয়ারি যাত্রা শুরু করে দুদক সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন (ডুসা)। বিগত বছরগুলোতে ডুসার পক্ষ থেকে দুদকে কর্মরত বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পরিবারকে চিকিৎসা সহায়তা, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা, দেশের বিভিন্ন এলাকায় বন্যা দুর্গতদের ত্রাণ সহায়তা, বিভিন্ন সামাজিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণসহ বিভিন্ন জাতীয় দিবস উদযাপন করে। এ ছাড়া কমিশনে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পেশাগত দক্ষতা উন্নয়নেও ডুসার পক্ষ থেকে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়।
১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছি : দুদক মহাপরিচালক
দুর্নীতি দমন কমিশনের মহাপরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন বলেছেন, ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার মিশন ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়ন করেছেন। এখন তার নেতৃত্বে আমরা স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছি। রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার বামনী ইউনিয়নের শামছুন্নাহার উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি এবং আল আরাফাহ দাখিল মাদ্রাসার দাখিল পরীক্ষার্থীদের বিদায় অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সৈয়দ ইকবাল হোসেন বলেন, কোনো জাতিই শিক্ষা ছাড়া উন্নত হতে পারেনি। উন্নত বাংলাদেশ গড়তে সুশিক্ষায় সবাইকে শিক্ষিত হতে হবে। স্মার্ট জাতি ও নাগরিক হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে হবে। এতে ২০৪১ সালে আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে পারব। বিদ্যালয় ও মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি বেল্লাল হোসেন ভূঁইয়া সভাপতিত্ব করেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন রায়পুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মামুনুর রশিদ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমা বিনতে আমিন, রায়পুর থানার ওসি ইয়াছিন ফারুক মজুমদার প্রমুখ।
১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

দুদক সচিব হলেন খোরশেদা শ্রমে নতুন সচিব
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সচিব মাহবুব হোসেনকে বদলি করা হয়েছে। তার স্থানে নতুন সচিব হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন খোরশেদা ইয়াসমীন। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এ অতিরিক্ত সচিবকে গতকাল বৃহস্পতিবার সচিব পদে পদোন্নতি দিয়ে দুদকে পদায়ন করা হয়। তিনিই দুদকের প্রথম নারী সচিব। দুদক সচিবকে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব পদে ন্যস্ত করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পৃথক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে চুক্তিতে সচিবের দায়িত্ব চালিয়ে আসা এহছানে এলাহীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে চুক্তির অবশিষ্ট মেয়াদ বাতিল করা হয়। ২০২৩ সালের ২৩ নভেম্বর চুক্তিতে সচিব হিসেবে নিয়োগ পান তিনি। এদিকে খোরশেদাকে দুদক সচিব করায় দুদক সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের (ডুসা) পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা জানানো হয়েছে।
০৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

সম্পাদকীয় / দুদক যেন আস্থা না হারায়
দুর্নীতি দমনে দেশে একটি কমিশন আছে। তার নাম দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুর্নীতি দমনে এ প্রতিষ্ঠানটির বিশেষ কোনো সাফল্য নেই। উল্টো এরই মধ্যে নিজেদের কার্যক্রম নিয়ে একাধিকবার প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। দুদক তার উপসহকারী পরিচালক শরীফ উদ্দিনের সঙ্গে যে আচরণ করেছে, তাতে বিস্মিত হয়েছে সারা দেশের মানুষ। ঘুষ ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে তার করা মামলার বিষয়ে খোঁজ না নিয়ে, ভূমি অধিগ্রহণ সিন্ডিকেটের যাদের বিরুদ্ধে তিনি মামলা করেছিলেন তাদের কিছু অভিযোগের ভিত্তিতে সংস্থাটি শরীফ উদ্দিনকে বরখাস্ত করে। বছর দুয়েক আগে আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় অন্যের দুর্নীতি চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনার আগে নিজেদের অনিয়ম ও অসততা দূর করতে দুদকের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ। এ থেকে দুর্নীতি দমনের প্রতিষ্ঠান হিসেবে দুদকের যে গ্রহণযোগ্যতা, এ বিষয়ে একটি স্বচ্ছ ধারণা পাওয়া পায়। অত্যন্ত দুঃখজনক বিষয় হলো, দুদক তার ভাবমূর্তির উন্নয়নে অনেকটাই উদাসীন। উল্টো তারা প্রায়ই এমন সব কর্মকাণ্ড করছে, এতে তাদের প্রতি আস্থার সংকট বাড়ছে। বুধবার কালবেলায় প্রকাশিত ‘মূল অভিযুক্তই নেই দুদকের মামলায়’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে সরকারি সম্পত্তি আত্মসাতের অভিযোগে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) সাবেক দুই চেয়ারম্যানসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তবে সেই মামলায় আসামি করা হয়নি সম্পত্তির দখলে থাকা মূল অভিযুক্ত খুলনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য সালাম মুর্শেদীকে। এদিকে দখল হওয়া বাড়িটি উদ্ধারে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়কে একটি চিঠি দিয়েছে দুদক। চিঠিতে বলা হয়েছে, সম্পত্তির মালিকানা জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে অনুসন্ধানে প্রমাণিত হয়েছে। জাল কাগজ তৈরি করে পরিত্যক্ত সম্পত্তির মালিকানা পরিবর্তন করে তা ব্যক্তিমালিকানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এ অবস্থায় কমিশনের সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করা হলো। সোমবার দায়ের হওয়া দুদকের মামলায় আসামিরা হলেন—রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান হুমায়ুন খাদেম, সাবেক প্রকৌশলী এম আজিজুল হক, সাবেক সদস্য (এস্টেট) লে. কর্নেল (অব.) এম নুরুল হক, সাবেক পরিচালক আবদুর রহমান ভূঞা, সাবেক উপপরিচালক (এস্টেট) মো. আজহারুল ইসলাম, রাজউকের সহকারী পরিচালক (নিরীক্ষা ও বাজেট) শাহ মো. সদরুল আলম, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক মো. হাবিব উল্লাহ, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সাবেক সহকারী সচিব আবদুস সোবহান, সাবেক শাখা সহকারী মো. মাহবুবুল হক এবং কক্সবাজারের রামুর বাসিন্দা মীর মোহাম্মদ হাসান ও তার ভাই মীর মো. নুরুল আফছার। আমরা মনে করি, মূল আসামিকে বাদ দিয়ে মামলা করার বিষয়টি দুঃখজনক ও হাস্যকর। আরেকটি বিষয় হলো, কোনো দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের বিষয়ে অনুসন্ধান ও তদন্তে দুদকের দীর্ঘসূত্রতা। দুদকের অনুসন্ধান ও তদন্তে বছরের পর বছর কেটে যায়। এ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন হাইকোর্টও। আদালত অর্থ পাচার রোধে প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট আইন সংস্কারের কথা বললেও এ নিয়ে দুদকের কোনো উদ্যোগ নেই। আবার সমাজের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত আয়ের বিরুদ্ধেও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যাচ্ছে না। ফলে দুর্নীতি দমনে দুদকের পদক্ষেপ নিয়ে মানুষের মধ্যে আস্থাহীনতা তৈরি হয়েছে। সেটি ঘোচাতে দুদককেই উদ্যোগী হতে হবে। দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা হিসেবে তার অবস্থান শক্তিশালী করতে হবে যাতে জনগণ বিশ্বাস রাখতে পারে।
০৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪
X