জঙ্গি ইস্যুতেই পাকিস্তান-ইরানের পাল্টাপাল্টি হামলা
পাকিস্তান ও ইরানের মধ্যে সম্প্রতি যে উত্তেজনা চলছে তার একমাত্র কারণ জঙ্গি ইস্যু। এ ইস্যুকে কেন্দ্র করে এক দশক ধরে দেশ দুটির মধ্যে উত্তেজনা চললেও এবার ইরান যে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে তা নজিরবিহীন। এ ঘটনার দুদিন না যেতেই ইরানে পাল্টা হামলা করে পাকিস্তান। দুই প্রতিবেশী দেশ ইরান ও পাকিস্তান জঙ্গি ইস্যুর সমাধানে আন্তরিক না হলে তাদের কূটনৈতিক সম্পর্ক শেষ পর্যন্ত কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করছেন বিশ্লেষকরাও। খবর সিএনএনের। মধ্যপ্রাচ্যে গাজাকে কেন্দ্র করে সংকটের মধ্যেই মঙ্গলবার আচমকা পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশে জইশ আল-আদল নামে এক জঙ্গি গোষ্ঠীর আস্তানা লক্ষ্য করে হামলা করে বসে ইরান। মধ্যপ্রাচ্যে ইরাক ও সিরিয়ায় হামলার একদিন পরে চালানো এ হামলায় গোটা বিশ্বের নজর এসে পড়ে প্রতিবেশী দেশ ইরান ও পাকিস্তানের প্রতি। কী এমন ঘটনা ঘটল যাতে পাকিস্তানের ভূখণ্ডে হামলার প্রয়োজন পড়ল ইরানের, সে কারণ অনুসন্ধানে যেন ব্যস্ত হয়ে পড়ে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলো। আর মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনার মধ্যেই বা কেন ইরান পাকিস্তানে এ হামলা চালালো, সেটাও একটা প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে। পরস্পরের সীমান্তের উভয় পাশে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিরুদ্ধে পাকিস্তান ও ইরানের লড়াই অবশ্য নতুন নয়। কয়েক বছর ধরে অস্থিতিশীল সীমান্তে নিয়মিতই প্রাণঘাতী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। সর্বশেষ গত মাসে ইরানের সিস্তান ও বেলুচিস্তানের একটি পুলিশ স্টেশনে হামলার ঘটনা ঘটে। এই হামলায় জইশ আল-আদল জঙ্গিগোষ্ঠী জড়িত বলে অভিযোগ করেছে ইরান। হামলায় ইরানের পুলিশের অন্তত ১১ কর্মকর্তা নিহত হন। এ ঘটনার পর ইরান এ জঙ্গি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বড় ধরনের প্রতিশোধ নেওয়ার হুমকি দেয়। কিন্তু দুদিন ধরে প্রতিবেশী দেশ দুটি একে অন্যের আকাশসীমা লঙ্ঘন করে যে হামলা চালায়, তাতে একটি প্রশ্ন দেখা দিয়েছে যে, জঙ্গি ইস্যুতে সৃষ্ট উত্তেজনা নিরসনে কেন আগে থেকেই সমন্বিত কোনো পদক্ষেপ নেয়নি দুই দেশ। আর হামলা চালানোর আগে কেনই বা পাকিস্তানকে জানাল না ইরান। তাছাড়া মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনার মধ্যেই বা কেন প্রতিবেশী দেশে হামলা করে বসল ইরান। বিশ্লেষকরা বলেছেন, জইশ আল-আদল গোষ্ঠীটি ইরানের অভ্যন্তরে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য ইসরায়েলের পাশাপাশি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য পশ্চিমা দেশগুলোর কাছ থেকে আর্থিক ও সামরিক সহায়তা পায়। যদিও এটি জাপান, নিউজিল্যান্ড এবং ইরান ছাড়াও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও একটি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত। ২০০৮ সালে, পাকিস্তানের সাবেক সেনাপ্রধান মির্জা আসলাম বেগ প্রকাশ করেছিলেন যে, আমেরিকা ইরানকে অস্থিতিশীল করতে ‘জইশ আল-আদল’-এর মূল সংগঠন জুনদুল্লাহকে সামরিক ও আর্থিকভাবে সমর্থন করছে। তিনি বলেছিলেন যে, মার্কিন সেনাবাহিনী ইরানের সীমান্ত অঞ্চলে অশান্তি সৃষ্টি করতে এবং ইরান ও তার প্রতিবেশী পাকিস্তানের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ককে প্রভাবিত করার জন্য জুনদাল্লাহ যোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। বিশ্লেষকদের ধারণা, মধ্যপ্রাচ্যে গাজা ইস্যুকে কেন্দ্র করে হামাস, হিজবুল্লাহ, হুতিসহ বিভিন্ন গোষ্ঠীকে সহায়তা করছে ইরান। ইসরায়েল ও তাদের মিত্র যুক্তরাষ্ট্র খুব সম্ভবত জইশ আল-আদলকে ব্যবহার করে ইরানে বড় ধরনের হামলা চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে—এমন তথ্য থাকতে পারে তেহরানের কাছে। তাই তারা তড়িঘড়ি করে পাকিস্তানকে না জানিয়েই আচমকা এ হামলা করে বসে।
১৯ জানুয়ারি, ২০২৪

ইসরায়েল-ফিলিস্তিনের পাল্টাপাল্টি হামলা যেভাবে দেখছে মুসলিম বিশ্ব
অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা থেকে ইসরায়েলের দিকে একের পর এক রকেট হামলা চালিয়েছে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামীদের সংগঠন হামাস। ইসরায়েলও ফিলিস্তিনের গাজায় বিমান হামলা চালাচ্ছে। হামলা-পাল্টা হামলার পর দুদেশেই যুদ্ধ পরিস্থিতি বিরাজ করছে।  এখন পর্যন্ত এসব হামলায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪৩২ জনে দাঁড়িয়েছে। এদের মধ্যে গাজা থেকে হামাসের মুহুর্মুহু রকেট হামলায় ইসরায়লে কমপক্ষে ২০০ জন নিহত হয়েছে, আর ইসরায়েলি বাহিনীর পাল্টা হামলায় গাজায় নিহত ২৩২ জন ছাড়িয়েছে। এই হামলার ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন মুসলিম বিশ্বের নেতারা। আজ আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে তা তুলে ধরা হয়েছে। ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস বলেছেন, ‘দখলদার সন্ত্রাসী ও দখলকারীদের’ বিরুদ্ধে আত্মরক্ষার পূর্ণ অধিকার রয়েছে ফিলিস্তিনি জনগণের। মিশর মিশরের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যকার এই উত্তেজনা বৃদ্ধির ‘গুরুতর পরিণতি’ সম্পর্কে সতর্ক করা হয়েছে। দেশটি ‘সর্বোচ্চ সংযম’ দেখাতে এবং ‘বেসামরিক নাগরিকদের আরও বিপদের সম্মুখীন হওয়া এড়াতে’ আহ্বান জানিয়েছে। মিশরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সামেহ শউকরিও ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি প্রধান জোসেপ বোরেলের সঙ্গে এক আলোচনায় বলেছেন, গুরুতর ঝুঁকি এড়াতে উভয়পক্ষের ‘সংযম দেখানো উচিত’। ইরান ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আলী হোসেইনি খামেনির এক উপদেষ্টা বলেছেন, ইরান ফিলিস্তিনিদের হামলাকে সমর্থন করছে। ইরানি বার্তা সংস্থা আইএসএনএ তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, খামেনির উপদেষ্টা রহিম সাফাভি বলেছেন, আমরা ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের অভিনন্দন জানাই। ফিলিস্তিন ও জেরুজালেমের মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত আমরা ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের পাশে থাকব। ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, তাদের মিত্র হামাসের এই হামলা প্রমাণ করেছে যে ইসরায়েলের দখলদারিত্ব প্রতিরোধে ফিলিস্তিনিরা অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী। ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আইআরএনএকে দেশটির সরকারের মুখপাত্র আলি বাহাদোরি-জাহরোমি বলেছেন, এই হামলা প্রমাণ করেছে যে ইহুদিবাদী সরকার আগের চেয়ে অনেক বেশি দুর্বল এবং এখন পরিস্থিতি ফিলিস্তিনি যুবকদের হাতে রয়েছে। কুয়েত ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে চলমান পরিস্থিতি বিষয়ে ‘গভীর উদ্বেগ’ প্রকাশ করে কুয়েত এ ঘটনায় ইসরায়েলকে দায়ী করেছে। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ‘দখলদারদের উসকানি দেওয়া বন্ধ’ করতে এবং ‘বসতি সম্প্রসারণ নীতি’ বন্ধ করার আহ্বান জানানো হয়েছে। কাতার কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ফিলিস্তিনি জনগণের সঙ্গে চলমান সহিংসতার জন্য ইসরায়েল একাই দায়ী। দেশটি উভয়পক্ষকে সর্বোচ্চ সংযমের আহ্বান জানিয়েছে এবং হামাসের এই হামলার অজুহাতে গাজায় বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি হামলায় বাধা দিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। সৌদি আরব সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থার খবরে বলা হয়েছে, তারা অবিলম্বে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যকার সহিংসতা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে। সৌদি সরকারের ভাষ্য, ‘আমরা বেশ কয়েকটি ফিলিস্তিনি গ্রুপ এবং ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর মধ্যকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি, যা বেশ কয়েকটি ফ্রন্টে অনেক বেশি সহিংসতার দিকে এগোচ্ছে।’ তুরস্ক তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনিদের সংযম দেখানোর আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, আমরা সবপক্ষকেই সংযমের আহ্বান জানাই। তাদের অবশ্যই আক্রমণাত্মক কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে। সংযুক্ত আরব আমিরাত সংযুক্ত আরব আমিরাতের সরকারি বার্তা সংস্থা দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছে, ‘সংযুক্ত আরব আমিরাত সর্বোচ্চ সংযম দেখাতে এবং গুরুতর পরিস্থিতি এড়াতে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানাচ্ছে।’ হিজবুল্লাহ লেবাননের সংগঠন হিজবুল্লাহ তাদের বিবৃতিতে বলেছে, তারা গাজার পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং ফিলিস্তিনি প্রতিরোধের নেতৃত্বের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রাখছে। ইসরায়েলে রকেট হামলার বিষয়ে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এটি ইসরায়েলের অব্যাহত দখলদারিত্বের একটি নিষ্পত্তিমূলক প্রতিক্রিয়া এবং ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে যারা চাইছে তাদের জন্য একটি বার্তা।
০৮ অক্টোবর, ২০২৩

হামাস-ইসরায়েল পাল্টাপাল্টি হামলা নিয়ে মুখ খুললেন এরদোয়ান
ইসরায়েলের দিকে হামাসের মুহুর্মুহু রকেট হামলার পর অবরুদ্ধ গাজায় পাল্টা হামলা শুরু করেছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। হামলা-পাল্টা হামলার পর দুদেশেই যুদ্ধ পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এরই মধ্যে এসব ঘটনায় দুই দেশের প্রায় ৩০০ মানুষ নিহত হয়েছে। হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছে। এমন উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনি দুই পক্ষকেই সংযত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। শনিবার আঙ্কারায় ক্ষমতাসীন একে পার্টির কংগ্রেসে এরদোয়ান বলেন, আমরা সব পক্ষকে সংযমের আহ্বান জানাই। তাদের অবশ্যই আক্রমণাত্মক কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে। এরদোয়ানের এমন আহ্বানের পরপর ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের এই উত্তেজনা নিয়ে গভীর উদ্বেগ করেছে তুর্কি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। পাশাপাশি দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা কমাতে সহায়তা করার কথা জানিয়েছে আঙ্কারা।
০৭ অক্টোবর, ২০২৩

হামাস-ইসরায়েল পাল্টাপাল্টি হামলা নিয়ে এখন পর্যন্ত যা জানা গেল
অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা থেকে ইসরায়েলের দিকে একের পর এক রকেট হামলা চালিয়েছে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামীদের সংগঠন হামাস। এসব হামলায় ৪০ ইসরায়েলি নিহত এবং আরও সাত শতাধিক মানুষ আহত হয়েছে। হামাসের রকেট হামলার জবাবে গাজায় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর পাল্টা বিমান হামলা চালালে ১২১ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। খবর আলজাজিরা ও বিবিসির। ইসরায়েলি কর্মকর্তারা বলেছেন, শনিবারের নজিরবিহীন রকেট হামলায় অন্তত ৪০ জন নিহত হয়েছে। এ ছাড়া ৭৫০ জনের বেশি মানুষ আহত হয়েছে। শনিবার সকালে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে এসব রকেট হামলা শুরু করে হামাস। হামলার প্রথম ২০ মিনিটেই ৫ হাজার রকেট ছোড়ার কথা জানিয়েছে হামাস। ফিলিস্তিনিদের এমন মুহুর্মুহু হামলার পরিপ্রেক্ষিতে দেশে যুদ্ধ পরিস্থিতি ঘোষণা করেছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা ইসরায়েলি সামরিক যান জব্দ করে তা গাজার দিকে নিয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া প্রায় ৪০ জনের মতো ইসরায়েলি সেনাকে গ্রেপ্তার করেছে ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা। এই অভিযানে হামাসের পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে ফিলিস্তিনের আরেক স্বাধীনতাকামী সংগঠন ইসলামিক জিহাদ। হামাসের অব্যাহত হামলার পরপর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, ‘ইসরায়েলের জনগণ, আমরা যুদ্ধের মধ্যে রয়েছি। আমরা জিতব।’ হামাসের হামলার পাঁচ ঘণ্টা পর শনিবার জাতির উদ্দেশে দেওয়া বিবৃতিতে এসব কথা বলেছেন নেতানিয়াহু। তিনি বলেন, ‘শত্রুদের এ জন্য এমন মূল্য দিতে হবে, যে সম্পর্কে তাদের কোনো ধারণা নেই।’ এদিকে হামাসকে পাল্টা জবাব দিতে গাজা উপত্যকায় বিমান হামলা শুরু করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর হামলায় গাজায় অন্তত ১২১ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরও প্রায় এক হাজার মানুষ। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ইসরায়েলি বিমান হামলার মাত্রা বাড়ছে বলে জানিয়েছে আলজাজিরা। এদিকে হামাসের এ হামলার ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র নিন্দা জানিয়েছে। ফিলিস্তিনবিষয়ক যুক্তরাষ্ট্রের কার্যালয় সামাজিক মাধ্যম এক্সে জানিয়েছে, সন্ত্রাস ও সহিংসতায় কোনো কিছুর সমাধান হয় না। তবে ইসরায়েলে স্মরণকালের সবচেয়ে বড় হামলার ঘটনায় ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের অভিবাদন জানিয়েছে ইরান। ইরানের গণমাধ্যম আইএসএনএ বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আলি খামেনির এক উপদেষ্টা শনিবার ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের সবচেয়ে বড় এই হামলা করায় অভিবাদন জানান। রাহিম সাফাভি নামের ওই উপদেষ্টা বলেন, আমরা ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের অভিবাদন জানাই। যতক্ষণ পর্যন্ত ফিলিস্তিন ও জেরুজালেমের স্বাধীনতা অর্জন হচ্ছে না, আমরা ফিলিস্তিনিদের যোদ্ধাদের পাশে থাকতে চাই। হঠাৎ এত বড় হামলা হামাসের মুখপাত্র খালেদ কাদোমি আলজাজিরাকে বলেছেন, দশকের পর দশক ইসরায়েলি দখলদাররা ফিলিস্তিনিদের ওপর নৃশংসতা চালাচ্ছে। এসব নৃশংসতার পাল্টা জবাব হিসেবে তারা এ সামরিক অভিযান শুরু করেছে। তিনি বলেন, আমরা চাই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যেন গাজায় নৃশংসতা বন্ধ করে। ফিলিস্তিনি জনগণ ও আল-আকসার মতো আমাদের পবিত্র স্থানে নৃশংসতা বন্ধ করে। এসব কারণেই এবারে যুদ্ধ শুরু হলো। ইহুদিদের সুকট উৎসবের ছুটির দিনে সম্প্রতি আল আকসা মসজিদে হাজারো ইসরায়েলি সেটেলার ঢুকে পড়ে। এ ছাড়া সম্প্রতি ইসরায়েলি সেটেলারদের আগ্রাসন আরও বেড়েছে। জাতিসংঘ জানিয়েছে, বছরের প্রথম আট মাসে প্রতিদিন অন্তত ৩ জন করে ফিলিস্তিনি নিপীড়নের শিকার হয়েছে। এসব কারণেই এ হামলা চালিয়েছে হামাস। ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিনি কর্মকর্তাদের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরে এ পর্যন্ত ইসরায়েল-ফিলিস্তিনের পাল্টাপাল্টি হামলায় কমপক্ষে ২৪৭ ফিলিস্তিনি, ৩২ ইসরায়েলি এবং দুজন বিদেশি নিহত হয়েছেন। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে বেসামরিক নাগরিকও আছেন। বদলে যাবে মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতি শনিবারের কয়েক ঘণ্টার ঘটনা পুরো মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিতে ‘গেম চেঞ্জার’ হিসেবে কাজ করবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। কাতার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মাহজুব জাওয়েইরি বলেছেন, গত কয়েক ঘণ্টায় যা ঘটেছে তা এ অঞ্চলের রাজনীতিতে গেম চেঞ্জার হিসেবে কাজ করবে। তিনি বলেন, প্রথমবারের মতো (ইসরায়েলি) দখলদার ও সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া দেখানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ফিলিস্তিনিরা স্বাধীনতাকামীরা। আমার মনে হয়, নিজেদের ভাবমূর্তি রক্ষা নিয়ে এবার প্রকৃত চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে ইসরায়েল। এ ছাড়া আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক কুশীলবদের নিয়ে হামাস যে ব্যাখ্যা দিয়েছে তা-ও বেশ আকর্ষণীয়।
০৭ অক্টোবর, ২০২৩
X