দাবি প্রান্তিক খামারিদের  / ডিম-মুরগির বাজারে অস্থিরতার জন্য দায়ী প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর
ডিম-মুরগির বাজারে অস্থিরতার জন্য প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরকে দায়ী করেছেন প্রান্তিক খামারিদের সংগঠন বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিএ) সভাপতি সুমন হাওলাদার। তিনি বলেন, সরকারের প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর যেন করপোরেটদের নিজস্ব দপ্তর। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কিছু কর্মকর্তার জন্য করপোরেট ব্যবসায়ীরা সবকিছু তাদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছেন। গতকাল বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংগঠনটি আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বিপিএ সভাপতি। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এসএমএস ও আড়তদারদের বেঁধে দেওয়া দাম মানবেন না প্রান্তিক খামারিরা। সুমন হাওলাদার বলেন, দেশের ডিম-মুরগির মোট উৎপাদনের ৮০ থেকে ৮৫ শতাংশ করেন প্রান্তিক খামারিরা। কিন্তু এই খামারিদের মতামত না নিয়ে করপোরেটদের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে ডিম-মুরগির দাম নির্ধারণ করছে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। অথচ বাজারে তাদের অবদান মাত্র ১৫-২০ শতাংশ। করপোরেটদের একতরফা গুরুত্ব দিয়ে অধিদপ্তর প্রান্তিক খামারিদের লোকসানের মুখে ঠেলে দিচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে প্রান্তিক খামারি বলে দেশে কোনো শিল্প থাকবে না। পর্যায়ক্রমে খামারিরা করপোরেটদের চুক্তির কবলে পড়বে। সুমন হাওলাদার বলেন, বর্তমানে ১ কেজি ব্রয়লার মুরগির উৎপাদন খরচ ১৬৭ টাকা, এক কেজি সোনালি মুরগির খরচ ২৫৯ টাকা, একটা ডিমের খরচ ১০ টাকা ৭৯ পয়সা। এর মধ্যে গত চার মাস মুরগি উৎপাদনে লোকসান হয়েছে ৩০-৪০ টাকা, আর প্রতি পিস ডিমে ২ টাকা। চলমান বাজার অস্থিরতায় সরকার ডিমের উৎপাদন খরচ সাড়ে ১০ টাকা নির্ধারণ করে খুচরা পর্যায়ে ১২ টাকা বিক্রির সিদ্ধান্ত দিলেও তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয় বলে সুমন হাওলাদার দাবি করেন। তার মতে, ডিমের উৎপাদন খরচ ১০ টাকা ৭৯ পয়সা। তাই খুচরা পর্যায়ে প্রতি পিসের দাম ১৩ টাকা নির্ধারণ করা দরকার। সরকারি হিসাবে খামারি ও পাইকারদের মুনাফা না থাকায় খুচরায় ডিমের দাম কমছে না। লোকসানে থেকেও ব্যবসায় টিকে থাকার কৌশল সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে সুমন হাওলাদার বলেন, খামারিরা ঋণগ্রস্ত এবং করপোরেট ডিলারদের কাছে ব্ল্যাঙ্ক চেকে জিম্মি। তাই চাইলেও খামার বন্ধ করতে পারছেন না। অনেকে মিথ্যা চেকের মামলা খেয়ে পথে পথে ঘুরছে। আমি বলব, পোলট্রি ব্যবসায় চেক জামানত রেখে ব্যবসা বন্ধ করতে হবে। আর আইন সংশোধন করে সব খামারি ও ডিলারকে করপোরেটদের মিথ্যা মামলার হাত থেকে মুক্ত করে উৎপাদনে ফেরাতে হবে। খামারিদের উদ্দেশে সুমন বলেন, প্রান্তিক খামারি সরকারি নিয়ম মেনে খামার করবেন। কেনাবেচায় পাকা রসিদ ব্যবহার করবেন। ডিম-মুরগির উৎপাদন খরচ সমন্বয় করে যৌক্তিক মুনাফা যুক্ত করে আপনারাই পণ্যের মূল্য নির্ধারণ করে বিক্রি করবেন। কোনো প্রকার এসএমএস ও আড়তদারদের বেঁধে দেওয়া দাম মানবেন না। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিপিএ সহসভাপতি বাপ্পি কুমার দে, সাংগঠনিক সম্পাদক ইকবাল হোসেন ও দপ্তর সম্পাদক মেজাবাউল হক। ঢাকার কাপ্তান বাজার ডিম ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি নজরুল ইসলাম, তেজগাঁও ডিম ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আমান উল্লাহ প্রমুখ।
২৪ আগস্ট, ২০২৩
X