বাঙলা কলেজ ছাত্রলীগ নিয়ে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ
‘বাঙলা কলেজের ছাত্রই নন, তবুও ছাত্রলীগের প্রেসিডেন্ট-সেক্রেটারি’ শিরোনামে দৈনিক কালবেলা অনলাইনে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম পান্থ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ প্রতিবাদ জানানো হয়।  প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘দীর্ঘ ৮ বছর পর রাজধানীর সরকারি বাঙলা কলেজ শাখা ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। এতে ফয়েজ আহমেদ নিজু সভাপতি ও মো. রুবেল হোসেন সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন। বুধবার (২৭ মার্চ) রাতে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান এ কমিটি ঘোষণা করেন। কমিটি ঘোষণার পর থেকেই শুরু হয়েছে সমালোচনা। দেখা দিয়েছে নানা বিতর্ক। অভিযোগ উঠেছে সদ্য ঘোষিত কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক কেউই বাঙলা কলেজের শিক্ষার্থী নন।’ এদিকে ছাত্রলীগের দেওয়া প্রতিবাদ সংশোধনীতে বলা হয়েছে, ‘বাঙলা কলেজের ছাত্র নন, তবুও ছাত্রলীগের প্রেসিডেন্ট- সেক্রেটারি’ শীর্ষক একটি সংবাদ প্রকাশ করা হয়। সংবাদটি দৃষ্টিগোচর হলে এর সংশোধনী দাবি করে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। সংগঠনটির দাবি, প্রতিবেদটি সম্পূর্ণভাবে অসত্য, কল্পনাপ্রসূত ও ভিত্তিহীণ। প্রতিবেদনটিতে দাবি করা হয় সরকারি বাঙলা কলেজের নব গঠিত কমিটির সভাপতি ফয়েজ আহমেদ নিজু ও সাধারণ সম্পাদক মো. রুবেল হোসেন বাঙলা কলেজের ছাত্রই নন। কিন্তু সভাপতি ফয়েজ আহমেদ নিজু (সেশন ২০১৬-১৭) সরকারি বাঙলা কলেজের ম্যানেজমেন্ট বিভাগ থেকে ২০১৮ সালে স্নাতকোত্তর পর্যায়ের চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। যেখানে তার পরীক্ষার রোল ৬৭৭১০ এবং রেজিস্ট্রেশন নম্বর : ৬১৭২৬০০০৪০৪। অপরদিকে সাধারণ সম্পাদক মো. রুবেল হোসেন ২০১৪-১৫ সেশনে সরকারি বাঙলা কলেজে ভর্তি হন এবং ২০২০ সালের বিএসএস (ডিগ্রি) তৃতীয় বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। যেখানে তার রোল নম্বর : ১১৯৭৯৩ এবং রেজিস্ট্রেশন নম্বর ৬১৫৩০০০৬৪৫৭। সংশ্লিষ্ট কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. জাহাঙ্গীর হোসেনেও এর সত্যতা নিশ্চিত করেন। প্রতিবেদকের বক্তব্য : প্রতিবেদনে সভাপতি ফয়েজ আহমেদ মিরপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক করেছেন বলে যে দাবি করা হয়েছে তা সত্য। এ সংক্রান্ত যাবতীয় প্রমাণ কালবেলার হাতে রয়েছে। তবে প্রতিবেদন প্রকাশের সময় তিনি ফোন না ধরায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। কালবেলার অনলাইনে প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর ফয়েজ আহমেদ নিজু নিজেকে বাঙলা কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের স্নাতকোত্তরের (২০১৬-১৭) সেশনের অনিয়মিত শিক্ষার্থী দাবি করেন। এর স্বপক্ষে তিনি ২০১৮ সালের স্নাতকোত্তরের বিশেষ পরীক্ষার একটি প্রবেশপত্র এবং ফলাফল সিট উপস্থাপন করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণের কার্যালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কোন শিক্ষার্থী বার বার ফেল করলে একটি নির্ধারিত সময় পরে তার রেজিস্ট্রেশন নম্বর বাতিল হয়ে যায়। এরপর জরিমানা দিয়ে বিশেষ পরীক্ষা দেওয়া যায়। বিশেষ পরীক্ষায় পুনরায় ফেল করলে তার রেজিস্ট্রেশন ফের বাতিল হয়ে যায়। এভাবে একজন শিক্ষার্থী জরিমানা দিয়ে বিশেষ পরীক্ষার মাধ্যমে সর্বোচ্চ ৬ বছর পর্যন্ত তার ছাত্রত্ব ধরে রাখতে পারেন। এছাড়াও সাধারণ সম্পাদক রুবেল হোসেন বাঙলা কলেজ ছাত্রলীগের পদের জন্য জমা দেয়া সিভিতে তিনি নিজেকে বাঙলা কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের (২০১৭-১৮) সেশনের শিক্ষার্থী দাবি করেছেন। ছাত্রলীগের দপ্তর সেল থেকে সংগ্রহ করা ওই প্রত্যায়ণপত্রটি বিশ্লষণ করে দেখা গেছে সেটি ভুয়া। দপ্তর সেলে জমা দেয়া ওই প্রত্যয়নপত্রের রোল এবং রেজিস্ট্রেশন নম্বরের কোন শিক্ষার্থী বাঙলা কলেজে নেই। ২০১৭-১৮ সেশনের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতকোত্তরের ১২৪ জন শিক্ষার্থীর তালিকা কালবেলার হাতে রয়েছে। এছাড়াও ছাত্রলীগের দপ্তর সেল থেকে রুবেল হোসেনকে ডিগ্রির শিক্ষার্থী হিসেবে যে দাবি করা হয়েছে সেটি প্রতিবেদনেও উল্লেখ রয়েছে।   বাঙলা কলেজ ছাত্রলীগের একাধিক নেতা প্রতিবেদককে জানিয়েছেন, সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক বাঙলা কলেজের ছাত্র নয়। ২০১৬ সালের পর থেকে বাঙলা কলেজে কোন ডিগ্রির ভর্তি কার্যক্রম নেই। আর প্রাইভেট ডিগ্রি এবং প্রাইভেট বা প্রিলিমিনারি স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থীদের বাঙলা কলেজের শিক্ষার্থী হিসেবে গণ্য করা হয় না। এটা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ধরনের সান্ধ্যকালীন কোর্স। 
২৮ মার্চ, ২০২৪
X