সাকিবের ব্যাংক ঋণ ৩০ কোটি টাকা
তারকা ক্রিকেটার মাগুরা-১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাকিব আল হাসান বছরে সাড়ে ৫ কোটিরও বেশি টাকা আয় করেন জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে মনোনয়নপত্রের সঙ্গে দেওয়া হলফনামায় তিনি এ তথ্য দিয়েছেন। তিনি পেশায় নিজেকে ক্রিকেটার উল্লেখ করেছেন। শিক্ষাগতযোগ্যতা দেখিয়েছেন বিবিএ পাস। আবার ব্যাংক ঋণ দেখিয়েছেন ৩০ কোটি টাকার বেশি। গতকাল সোমবার জেলা প্রাশাসক ও জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবু নাসের বেগ তার সম্মেলনকক্ষে মাগুরার দুটি আসনের মনোনয়ন বাছাইকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। জানা গছে, সাকিব হলফনামায় বার্ষিক আয় দেখিয়েছেন ৫ কোটি ৫৫ লাখ ৭১ হাজার ২৬২ টাকা। বৈদেশিক মুদ্রা দেখিয়েছেন ২৪ হাজার ২৬১ ডলার। ক্রিকেটে বছরে আয় দেখিয়েছেন ৫ কোটি ৩২ লাখ ৭৪ হাজার ৭৬৯ টাকা। অস্থাবর সম্পদ হিসেবে ব্যাংকে জমা দেখিয়েছেন ১১ কোটি ৫৬ লাখ ৯১ হাজার ৮৭৬ টাকা। শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ দেখিয়েছেন ৪৩ কোটি ৬৩ লাখ ৯৬ হাজার ৮৭৪ টাকা। স্বর্ণ দেখিয়েছেন ২৫ ভরি। আসবাব ও ইলেকট্রনিকস সামগ্রী দেখিয়েছেন ১৩ লাখ টাকা। জামানতের বিপরীতে ব্যাংক লোন দেখিয়েছেন ৩১ কোটি ৯৮ লাখ ৬১ হাজার ৩৮২ টাকা। ইস্টার্ন ব্যাংকে লোন রয়েছে ১ কোটি ৫০ লাখ ২০ হাজার ৩৬৩ টাকা। আয় থেকে ব্যাংক আমানত দেখিয়েছেন ২২ লাখ ৯৬ হাজার ৪৯৩ টাকা।
০১ জানুয়ারি, ১৯৭০

কৃষিঋণ নীতিমালা ঘোষণা / ছাদবাগান করতেও মিলবে ব্যাংক ঋণ
এখন থেকে বাড়ির ছাদে বাগান করতেও ঋণ পাবেন গ্রাহক। চলতি অর্থবছরের ঘোষিত কৃষি ঋণ নীতিমালা ও কর্মসূচিতে এ সুযোগ রাখা হয়েছে। আগ্রহী ছাদ মালিকের আবেদনের ভিত্তিতে ব্যাংক সরেজমিন ছাদের আয়তন ও আবেদনকারীর সক্ষমতা পর্যালোচনা করে ব্যাংক ঋণের পরিমাণ এবং আদায়ের পদ্ধতি নির্ধারণ করবে। মূলত বাড়ির ছাদে বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতিতে ফুল, ফল ও শাকসবজির যে বাগান গড়ে তোলা হয়, তা ছাদবাগান হিসেবে পরিচিত। শহরাঞ্চলে বর্তমানে এই প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। গতকাল রোববার ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য ব্যাংকগুলোকে কৃষি খাতে ৩৫ হাজার কোটি টাকা ঋণ বিতরণের নির্দেশ দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কৃষি ও পল্লি ঋণ নীতিমালা এবং কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের কৃষি ঋণ বিভাগ। এই নীতিমালা ও কর্মসূচি ঘোষণা করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এ কে এম সাজেদুর রহমান খান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন কৃষি ঋণ বিভাগের নির্বাহী পরিচালক নুরুল আমীন, পরিচালক কানিজ ফাতেমাসহ বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকরা। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, আগের অর্থবছরের তুলনায় চলতি অর্থবছরের ঘোষিত এই ঋণ কর্মসূচির পরিমাণ ১৩ দশমিক ৬০ শতাংশ বেশি। গত ২০২২-২৩ অর্থবছর কৃষি ঋণের লক্ষ্য ছিল ৩০ হাজার ৮১১ কোটি টাকা। এবার নতুন এই কর্মসূচিতে বেশকিছু বিষয় যুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে নতুন কৃষকদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ঋণ বিতরণ, পল্লি অঞ্চলে আয়-উৎসারী কর্মকাণ্ডে ঋণের সর্বোচ্চ সীমা ৫ লাখ টাকা নির্ধারণ এবং ছাদ কৃষিতে অর্থায়নের সুযোগ রাখা হয়। এ ছাড়া ভেনামি চিংড়ি, কাঁকড়া ও কুচিয়া চাষেও ঋণ বিতরণ করতে পারবে ব্যাংক। নির্দেশনা অনুযায়ী, মৎস্য খাতে লক্ষ্যমাত্রার ন্যূনতম ১৩ শতাংশ এবং প্রাণিসম্পদ খাতে লক্ষ্যমাত্রার ন্যূনতম ১৫ শতাংশ ঋণ বিতরণ করতে হবে। ছাদবাগান প্রসঙ্গে ঘোষিত কৃষি ঋণ নীতিমালায় বলা হয়, ভবনের ছাদে বিভিন্ন কৃষি কাজ করা একটি নতুন ধারণা। বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, যাদের চাষের জন্য পর্যাপ্ত জমি নেই, কিন্তু নিজ হাতে কৃষি কাজ করতে ইচ্ছুক তাদের জন্য ছাদকৃষি একটি উত্তম বিকল্প ব্যবস্থা। শহরাঞ্চলে বাড়ির ছাদে বাগান সৃষ্টির মাধ্যমে পরিবারের দৈনন্দিন খাদ্যের চাহিদা অনেকাংশে পূরণ করা সম্ভব। পাশাপাশি ছাদকৃষি পরিবেশ রক্ষা ও বায়ুদূষণ প্রতিরোধেও সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ছাদকৃষিতে অর্থায়নের জন্য ব্যাংকগুলোকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হয়েছে। নতুন নীতিমালায় বলা হয়েছে, পরিবর্তিত বিশ্ব পরিস্থিতিতে দেশে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়টি বিবেচনা করে ব্যাংকগুলোকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কৃষি খাতে ঋণ বিতরণ করতে হবে। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর লক্ষ্যমাত্রার বাইরে বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংক লিমিটেড এবং বাংলাদেশ পল্লি উন্নয়ন বোর্ড (বিআরডিবি) তাদের নিজস্ব অর্থায়নে যথাক্রমে ২৬ কোটি ও ১ হাজার ৪২৩ কোটি টাকা কৃষি ও পল্লি ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। নীতিমালায় কৃষি ঋণ বিতরণে এনজিওনির্ভরতা কমাতে বলা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য ব্যাংকগুলোকে নিজস্ব নেটওয়ার্ক (শাখা, উপশাখা, এজেন্ট ব্যাংকিং, কন্ট্রাক্ট ফার্মিং, দলবদ্ধ ঋণ বিতরণ) ও ব্যাংক-এমএফআই লিংকেজ ব্যবহার করতে পারবে। এক্ষেত্রে ব্যাংকের নিজস্ব নেটওয়ার্কের মাধ্যমে বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ লক্ষ্যমাত্রার ন্যূনতম ৫০ শতাংশ হতে হবে। আগে তা ছিল ৩০ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, এবার কৃষি ও পল্লি ঋণের চাহিদা বিবেচনায় চলতি অর্থবছর মোট লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ও বিশেষায়িত ব্যাংকগুলো ১২ হাজার ৩০ কোটি টাকা এবং বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো ২১ হাজার ৯২৩ কোটি টাকা, কৃষি ও বিদেশি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো ১ হাজার ৪৭ কোটি টাকা পল্লি ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। বিগত ২০২২-২৩ অর্থবছরে ব্যাংকগুলো মোট ৩২ হাজার ৮৩০ কোটি টাকা কৃষি ও পল্লি ঋণ বিতরণ করেছে, যা অর্থবছরের মোট লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১০৬ দশমিক ৫৫ শতাংশ বেশি। ৩৩ লাখ ৪ হাজার ৮১১ জন কৃষক এই কৃষি ও পল্লি ঋণ পেয়েছেন। এর মধ্যে ব্যাংকগুলোর নিজস্ব নেটওয়ার্ক ও এমএফআই লিংকেজের মাধ্যমে ৩৬ লাখ ১৮ হাজার ৫৪৫ জন ঋণ পেয়েছেন। আর ১৮ লাখ ৮১ হাজার ৯৩৩ জন নারী কৃষক মোট ১২ হাজার ৭৫২ কোটি টাকা কৃষি ও পল্লি ঋণ পেয়েছেন। এ ছাড়া গত অর্থবছর ২৭ লাখ ৩৬ হাজার ৮৭ জন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষি বিভিন্ন ব্যাংক থেকে প্রায় ২২ হাজার ৪০২ কোটি টাকা এবং চর, হাওর প্রভৃতি অনগ্রসর এলাকার ৩ হাজার ৪৪৯ জন কৃষক প্রায় ১৮ কোটি টাকা ঋণ পেয়েছেন।
০৭ আগস্ট, ২০২৩
X