লোহাগড়ায় নিহত দলিল লেখকের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাত করে সমবেদনা জানালেন পুলিশ সুপার
নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার ইতনা ইউপির দক্ষিণ পাংখারচর কাজী পাড়া গ্রামে জমি জমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষের হাতুড়ি ও লাঠির আঘাতে এস এম বরকত আলী (৬০) নামে এক দলিল লেখক খুন হয়। বুধবার (৩০ আগস্ট) নড়াইল পুলিশ সুপার মোসা. সাদিরা খাতুন নিহত বরকত আলীর বাড়িতে গিয়ে পরিবারের লোকজনের সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন। এ সময় পরিবারের লোকজন কান্নায় ভেঙে পড়েন এবং পরিবারের লোকজন পুলিশ সুপারের নিকট খুনীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবি জানান।  পুলিশ সুপার মোসা. সাদিরা খাতুন নিহত পরিবারের সদস্যদের আশ্বস্ত করে বলেন, খুনীদের শনাক্ত করে দ্রুত গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান পরিচালনা অব্যাহত রেখেছি। আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনগত ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে।  তিনি আরও বলেন, নড়াইল পুলিশের পক্ষ থেকে পরিবারের সদস্যদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন নড়াইলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. দোলন মিয়া, লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নাসির উদ্দীন, ওসি তদন্ত আব্দুল্লাহ আল মামুন, লোহাগড়া উপজেলার ১১নং ইতনা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শেখ সিহানুক রহমান প্রমুখ।  বুধবার (৩০ আগস্ট) দুপুরে নড়াইল সদর হাসপাতালে নিহত এস এম বরকত আলীর লাশের ময়না তদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। ওইদিন বিকালে বরকত আলীর নামাজের জানাজা শেষে পাংখারচর গ্রামে পারিবারিক কবর স্থানে নিহতের লাশ দাফন সম্পূর্ণ হয়েছে।  নিহত এস এম বরকত আলী দক্ষিণ পাংখারচর কাজী পাড়া গ্রামের মৃত আলফু শেখের ছেলে, তিনি পেশায় একজন দলিল লেখক ছিলেন।                  পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার দক্ষিন পাংখারচর কাজী পাড়া গ্রামের এস এম বরকত আলীর সঙ্গে একই গ্রামের কেরামত মোল্যার দীর্ঘদিন যাবৎ জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। বিরোধপূর্ণ জমিতে ১৪৪ ধারা বিদ্যমান থাকায় আদালত লোহাগড়া সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। মঙ্গলবার (২৯আগস্ট) বিকেলে বিরোধপূর্ণ জমির সমাধানের জন্য ভূমি অফিসের নায়েব পংকজ কুমারের উপস্থিতিতে উভয় পক্ষ দক্ষিণ পাংখারচর কাজীপাড়া চৌরাস্তা বাজারে সালিশে বসেন। জমির কাগজপত্র যাচাই বাছাইয়ের এক পর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। পরে কেরামত মোল্যার ছেলে নেপাল ও রকির নেতৃত্বে রুনু, হামীম ও আমীনসহ ৮ থেকে ১০ জন হাতুড়ি ও লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি ভাবে পিটিয়ে এস এম বরকত আলীকে গুরুতর আহত করেন।  এ সময় স্থানীয় লোকজন আহত এস এম বরকত আলীকে উদ্ধার করে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক দিলরুবা খাতুন তাকে মৃত ঘোষণা করেন। প্রতিপক্ষের মৃত্যুর খবর শুনে বৃদ্ধ কেরামত মোল্যা (৭২) হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ওই সময় মারা যান।  এ ব্যাপারে লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নাসির উদ্দীন কালবেলাকে বলেন, এলাকার পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক রয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশের একাধিক টিম অভিযান পরিচালনা করছেন।  তিনি আরও জানান, নিহতের পরিবারের কেউ থানায় এসে এখনো কোন মামলা দায়ের করেননি।
৩১ আগস্ট, ২০২৩
X