লালমনিরহাট প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৪ মে ২০২৪, ০৭:৩৫ এএম
অনলাইন সংস্করণ

লালমনিরহাটের সেই দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী নাবিলা এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ

দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী নাবিলা প্রশ্নের উত্তর বলে দিচ্ছে আর উত্তর শোনে খাতায় লিখে দিচ্ছে স্কুল ছাত্রী রহিমা খাতুন। পুরোনো ছবি
দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী নাবিলা প্রশ্নের উত্তর বলে দিচ্ছে আর উত্তর শোনে খাতায় লিখে দিচ্ছে স্কুল ছাত্রী রহিমা খাতুন। পুরোনো ছবি

মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষায় লালমনিরহাটের দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী খন্দকার নাবিলা তাবাসসুম (১৮) উত্তীর্ণ হয়েছে। রোববার (১২মে) ফলাফলে জিপিএ ৩.৮৯ পেয়ে উত্তীর্ণ হয় নাবিলা।

দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের অধীন লালমনিরহাট শহরের চার্চ অব গড উচ্চবিদ্যালয়ের মানবিক বিভাগ থেকে নাবিলাব এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়। সে লেখাপড়া শেষ করে তার মা খন্দকার ফারজানা আফরিনের মতো শিক্ষক হতে চান। পাশাপাশি চালিয়ে যেতে চান কবিতা আবৃত্তি ও সংগীতচর্চা।

নাবিলা তাবাসসুম শ্রুতলিখন পদ্ধতিতে লালমনিরহাট সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন। দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী হওয়ায় তাকে পরীক্ষার নির্ধারিত সময়ের অতিরিক্ত ২০ মিনিট বেশি দেওয়া হয়। পরীক্ষার হলে শ্রুতলিখনে সহায়তা করেছে জেলার আদিতমারী উপজেলার সাপ্টিবাড়ি বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী রহিমা খাতুন। পরীক্ষার হলে নাবিলা মৃদু কণ্ঠে প্রশ্নের উত্তরগুলো বলে দিতো আর স্কুল ছাত্রী রহিমা সেই উত্তর শুনে পরীক্ষার খাতায় লিখে দিয়েছে।

এ বিষয়ে এসএসসি পরীক্ষা চলাকালীন জাতীয় দৈনিক ‘কালবেলা’ পত্রিকার অনলাইন ও প্রিন্ট সংস্করণে ‘প্রশ্নের উত্তর বলে দিচ্ছে নাবিলা, খাতায় লিখছে রহিমা’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল।

এদিকে পরীক্ষার ফলাফল শোনে স্কুল ছাত্রী রহিমা খাতুন বলেন, ‘নাবিলা আপু জিপিএ ৩.৮৯ পেয়েছে জেনে আমি খুশি হয়েছি। একজন মেধাবী দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ছাত্রীকে শ্রুতলিখন পদ্ধতিতে পরীক্ষার হলে সহায়তা করতে পেরে আমি আনন্দিত।’

জানা গেছে, নাবিলা তাবাসসুম ১০ বছরের বেশি সময় ধরে লালমনিরহাট শহরের পাশে হাঁড়িভাঙ্গা এলাকায় অবস্থিত বেসরকারি সংস্থা আরডিআর পরিচালিত দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী পুনর্বাসন কেন্দ্রের আবাসিক ছাত্রী ছিল।

ওই পুনর্বাসন কেন্দ্রটির অ্যাডমিন অ্যান্ড আউটরিচ অফিসার প্রদীপ কুমার রায় বলেন, শুধু পড়াশোনায় নয়, অদম্য মেধাবী দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী খন্দকার নাবিলা কবিতা আবৃত্তি ও সংগীতচর্চাও সুনাম রয়েছে।

নাবিলা তাবাসসুম বলেন, ‘আমার দুচোখে আলো নেই। শিক্ষা ও সংগীতের মাধ্যমে আমার অন্তরের আলোয় আলোকিত হতে চাই। আমি সাধ্যমতো সেই চেষ্টাই করছি।’

নাবিলার মা স্কুলশিক্ষিকা ফারজানা আফরিন বলেন, ‘আমার মেয়ে প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে এই সাফল্য অর্জন করেছে। সে আরও সামনে এগিয়ে যেতে চায়। আমার মতো শিক্ষকতাকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করতে চায়। আমরা নাবিলার জন্য গর্বিত।’

সরকারি চাকরিজীবী বাবা আল এমরান খন্দকার বলেন, ‘মেয়ের এ সাফল্যে পরিবারের সবাই আনন্দিত। আপনারা সবাই আমার মেয়ের জন্য দোয়া করবেন, সে যেন তার স্বপ্ন পূরণ করতে পারে।’

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

রাজধানীতে আজ কোথায় কী

পলাশীতে ‘আগ্রাসনবিরোধী আট স্তম্ভ’ উদ্বোধন আজ

ডিভিশনাল ম্যানেজার পদে চাকরি দিচ্ছে মিনিস্টার

মেঘনা গ্রুপে চাকরির সুযোগ, আজই আবেদন করুন

মঙ্গলবার রাজধানীর যেসব এলাকার মার্কেট বন্ধ

১০ কিলোমিটার হেঁটে মাঠে যাওয়া রিয়ানের পাশে ডিসি

৭ অক্টোবর : আজকের নামাজের সময়সূচি

এক্সিকিউটিভ পদে নিয়োগ দিচ্ছে আকিজ মটরস

কম দামে দুধ বিক্রি করে আলোচনায় খামারি জামান

সচল নেই রোহিঙ্গা ক্যাম্পে স্থাপিত ৭০০ সিসি ক্যামেরার একটিও

১০

বিতর্কের মধ্যেই এবার ধলাই বিল ইজারা

১১

জুলাই যোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের অনশন ভাঙালেন বিভাগীয় কমিশনার

১২

আ.লীগ নেতা ছাইফ গ্রেপ্তার

১৩

জাতিসংঘ ফেলোশিপে ১০ নারীর মধ্যে স্থান পেলেন বাকৃবির মারজানা

১৪

জিয়া পরিবারকে সবচেয়ে নির্যাতন করেছে আওয়ামী সরকার : কবির ভূইয়া

১৫

মাদ্রাসা ও এতিমখানার ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলেন আমিনুল হক

১৬

এবার এক ভিসায় যাওয়া যাবে আরবের ৬ দেশে

১৭

তারেক রহমানের সাক্ষাৎকার নিয়ে মির্জা গালিবের পোস্ট

১৮

মায়ামিতে হতে যাচ্ছে লা লিগার ম্যাচ!

১৯

বিএনপি এককভাবে ক্ষমতায় গেলে দেশে চাঁদাবাজি বাড়বে : চরমোনাই পীর

২০
X