সাংবাদিক জনপ্রতিনিধিরা না পেলেও তথ্য পান ব্যবসায়ীরা
বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) ফেলো ও এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশের আহ্বায়ক ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, একসময় তথ্য-উপাত্তের নৈরাজ্য ছিল। পরে তা অন্ধত্বে পরিণত হয়। আর বর্তমানে তা অপঘাতে পরিণত হয়েছে। যার সবশেষ প্রমাণ কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে যেখান থেকে তথ্য-উপাত্ত দেওয়া রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব, সেখানে সরকার সাংবাদিকদের তথ্য দিতে চায় না, জনপ্রতিনিধিদেরও তথ্য দেয় না। কিন্তু ব্যবসায়ীরা তথ্য পাচ্ছেন। যদিও ব্যবসায়ীদের তথ্য দেওয়া হলে এর প্রভাব বাজারে পড়ে; জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যায়। গতকাল মঙ্গলবার ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) উদ্যোগে সংগঠনটির কার্যালয়ে আয়োজিত ইআরএফের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেনের স্মরণসভায় তিনি এসব কথা বলেন। ইআরএফের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেমের পরিচালনায় ও সংগঠনের সভাপতি রেফায়েত উল্লাহ মীরধার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ইংরেজি দৈনিক ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ। সামষ্টিক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ এবং উত্তরণের উপায় শীর্ষক স্মারক বক্তৃতায় ড. দেবপ্রিয় বলেন, একদিকে তথ্য লুকিয়ে রাখা হবে, আরেক দিকে ডিজিটাল ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার চিন্তা হবে, এ দুটি সাংঘর্ষিক। বাংলাদেশ ব্যাংক রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান। সেখান থেকে তথ্য-উপাত্ত দেওয়া রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব। কিন্তু সাংবাদিকদের সেখানে কেন ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। এটা তখনই হয়, যখন বহুবাদ, গণতন্ত্র উঠে যায়। আমলারা এটা করেন। কারণ তারা জনমানুষের সামনে জবাবদিহি করতে ভয় পান। জনপ্রতিনিধিরাও তথ্য পাচ্ছেন না। জনপ্রতিনিধিদের যেহেতু দুর্বলতা আছে; তাই তারা আমলাদের সামনে বড় গলায় কথা বলতে পারেন না। তথ্যের অপঘাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সুনামের হানি হচ্ছে। এটা দূর করতে হবে। একইভাবে মুদ্রার বিনিময় হার ও সুদহারেও নমনীয়তা আনতে হবে। দেশে নীতি সমন্বয়ের অভাব আছে। মুদ্রানীতি ও আর্থিক নীতি সমন্বয় করার ক্ষেত্রে ব্যবস্থাপনাগত দুর্বলতা রয়েছে। এ সমন্বয়হীনতা মোকাবিলা করার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক শক্তির দুর্বলতা আছে। তা না হলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নির্দেশনা দেওয়ার পরও একটি ব্যাংকের মালিকানা বদল হয় কীভাবে? অর্থনীতির স্বার্থে এসব সমন্বয়হীনতা দূর করতে হবে। দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিতে চারটি ঘাটতি রয়েছে। ফলে জিডিপির আনুপাতিক হারে রাজস্ব আয়, স্বাস্থ্য, শিক্ষাসহ সামাজিক খাতে বিনিয়োগ বাড়ানো যাচ্ছে না। মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি হচ্ছে এক ইঞ্জিনবিশিষ্ট বোয়িংয়ের মতো। সরকারের বিনিয়োগ থেকে প্রবৃদ্ধি হচ্ছে; কিন্তু বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়ছে না। আমাদের দ্বিতীয় ঘাটতি হলো রাজস্ব আয়ে। জিডিপি বাড়লেও আনুপাতিক হারে রাজস্ব আয় বাড়ানো যাচ্ছে না। আবার বিনিয়োগ বাড়ানো যাচ্ছে না স্বাস্থ্য, শিক্ষাসহ সামাজিক খাতে। অতিমূল্যায়িত প্রকল্প গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। তবে সমস্যার মধ্যেও অনেক দেশের তুলনায় বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল। আইএমএফের শর্ত বাস্তবায়নে শুল্ক বাড়ানো, প্রণোদনা কমানোর মতো কিছু সুবিধা বাতিল করতে হবে। এগুলোর মধ্যে সমন্বয় হতে হবে সুচারুভাবে। যাতে ক্ষুদ্র প্রতিষ্ঠান, এসএমই, গ্রামীণ শিল্প, অভ্যন্তরীণ বাজারে যারা কাজ করেন, তারা সমস্যায় না পড়েন। আবার করপোরেট করে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা, করের ন্যূনতম মাত্রা বাড়াতে হবে। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। তিনি আরও বলেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতায় সরকার বদল, প্রতিযোগিতামূলক রাজনীতির জন্য ৯০-এর দশক বাংলাদেশের স্বাধীনতা-পরবর্তী অনন্য দশক। ওই সময় বিশ্লেষক এবং সমালোচকরাও বর্তমানের তুলনায় অনেক বেশি স্বাধীনতা ভোগ করতেন। ওই সময় নীতি প্রণেতাদের সঙ্গে সমালোচক, সাংবাদিকদের গভীর আস্থার সম্পর্ক ছিল। তাই ৯০-এর দশককে গণতন্ত্রের স্বর্ণযুগ বলা হয়। সাংবাদিক মোয়াজ্জেম হোসেন স্মরণে তিনি বলেন, ইংরেজি দৈনিক ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের প্রয়াত সম্পাদক এএইচএম মোয়াজ্জেম হোসেন পুরোপুরি পেশাদার ও পরিশুদ্ধ সাংবাদিক ছিলেন। সততা, নৈতিকতার সঙ্গে পুরোপুরি পক্ষপাতহীনভাবে সবসময় দায়িত্ব পালন করেছেন। অর্থনীতির সাংবাদিকতার পুরোধা ছিলেন তিনি।
০৮ মে, ২০২৪

৭০ শতাংশ পরিবেশ সাংবাদিক হামলা-হুমকির মুখে রিপোর্ট করেন : জাতিসংঘ
বিশ্বের ১২৯টি দেশের ৭০ শতাংশ পরিবেশ সাংবাদিক তাদের চাকরি সংক্রান্ত হামলা, হুমকি বা চাপের মুখে পড়ে রিপোর্ট করছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবসে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জাতিসংঘ জানায়, তাদের মধ্যে পাঁচজনের মধ্যে দু’জন পরবর্তীতে শারীরিক সহিংসতার শিকার হয়েছেন। ভোটের জন্য ৯শ’টিরও বেশি সাংবাদিককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। জাতিসংঘের শিক্ষা, বৈজ্ঞানিক ও সাংস্কৃতিক সংস্থা পরিবেশ ও জলবায়ু নিয়ে রিপোর্টকারী সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সহিংসতা বৃদ্ধি এবং ভয় দেখানোর বিষয়ে সতর্ক করেছে। এক বিবৃতিতে ইউনেস্কোর মহাপরিচালক অড্রে আজোলে বলেছেন, চলমান পরিবেশগত সংকট সম্পর্কে নির্ভরযোগ্য বৈজ্ঞানিক তথ্য ব্যতীত, আমরা কখনোই এটি কাটিয়ে উঠার আশা করতে পারি না। এখনো আমরা যে সাংবাদিকদের ওপর নির্ভর করি এই বিষয়ের তদন্ত করতে তারা সারা বিশ্বে অগ্রহণযোগ্যভাবে উচ্চ ঝুঁকির সম্মুখীন। জলবায়ু-সম্পর্কিত বিভ্রান্তি সোশ্যাল মিডিয়াতে ব্যাপকভাবে চলছে। ইউনেস্কো বলছে, ২০০৯ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে অন্তত ৭৪৯ সাংবাদিক এবং নিউজ মিডিয়া পরিবেশগত বিষয়ে রিপোর্ট করে খুন, শারীরিক নির্যাতন, আটক ও গ্রেপ্তার, অনলাইন হয়রানি বা আইনি আক্রমণের শিকার হয়েছেন। ২০১৯ এবং ২০২৩-এর মধ্যে আক্রমণ ঘটেছে ৩০০টিরও বেশি, যা আগের পাঁচ বছরের তুলনায় ৪২ শতাংশ বেশি। সমস্যাটি বিশ্বব্যাপী, বিশ্বের সমস্ত অঞ্চলের ৮৯টি দেশে হামলা হচ্ছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ১৫ বছরে তাদের কাজের জন্য কমপক্ষে ৪৪ জন পরিবেশবাদী সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছে। মাত্র পাঁচটি ক্ষেত্রে দোষী সাব্যস্ত হয়েছে। শারীরিক নির্যাতনের শিকার জরিপে অংশ নেওয়া সাংবাদিকদের এক-তৃতীয়াংশ বলেছেন, তাদের সেন্সর করা হয়েছে। প্রায় ৪৫ শতাংশ সাংবাদিক বলেছেন, তারা হামলার ভয়ে তাদের উৎস প্রকাশ করার ভয়ে বা তাদের গল্পগুলো সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের স্বার্থের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হওয়ার কারণে পরিবেশকে কভার করার সময় তারা নিজেরাই সেন্সর আরোপ করেছিল। বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, এই সপ্তাহে চিলিতে একটি সংবাদ স্বাধীনতা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে ইউনেস্কো নিপীড়নের সম্মুখীন ৫০০টিরও বেশি পরিবেশগত সাংবাদিকদের আইনি ও প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদানের জন্য একটি অনুদান কর্মসূচি চালু করার ঘোষণা দেবে।
০৩ মে, ২০২৪

পাটকেলঘাটাকে উপজেলায় রুপান্তরিত করতে চান সাংবাদিক নজরুল
আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দ্বিতীয় ধাপের প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২ মে) সকালে রিটার্নিং কর্মকর্তার দপ্তর থেকে প্রতীক পেয়েই প্রার্থীদের অনেকেই প্রচারের কাজ শুরু করেছেন। প্রতীক পেয়েই নির্বাচনী প্রচার শুরু করেছেন নাগরিক ঐক্য সমর্থিত স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী সাংবাদিক এসএম নজরুল ইসলাম। বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার দিকে তিনি লটারির মাধ্যমে ঘোড়া প্রতীক নিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে বের হন। এ সময় নিচে অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের সঙ্গে উপজেলা পরিষদের কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরে তিনি বলেন, তালা উপজেলার পাটকেলঘাটা থানা হলো জেলার একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক শহর, আমাকে যদি তালাবাসী উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত করে, আমার প্রথম পদক্ষেপ থাকবে পাটকেলঘাটা থানাকে উপজেলায় রুপান্তরিত করা।  তিনি আরও বলেন, আমি তালা সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায় নজির বিহীন উন্নয়ন হয়েছে। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আগামী ২১ মে জনগণ যে রায় দেবে, আমরা সেই রায় মেনে নেব।
০৩ মে, ২০২৪

সাংবাদিক সুরক্ষা আইন প্রণয়নের দাবি বিএফইউজে-ডিইউজের
শ্রমজীবী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা, বন্ধ গণমাধ্যম খুলে দিয়ে কর্মহীন সাংবাদিকদের কাজের নিশ্চয়তা বিধান, বিভিন্ন গণমাধ্যমে সাংবাদিক ছাঁটাই বন্ধ, সাংবাদিকদের সুরক্ষায় আইন প্রণয়নের দাবি এবং শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার অঙ্গিকারের মধ্য দিয়ে মহান মে দিবস পালন করেছে বিএনপিপন্থি সাংবাদিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে)। মহান মে দিবস উপলক্ষে বুধবার (১ মে) সংগঠন দুটির উদ্যোগে জাতীয় প্রেস ক্লাবে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএফইউজের সভাপতি রুহুল আমিন গাজী বলেন, শ্রমিকের রক্ত, শ্রম ও ঘামে গড়া আধুনিক সভ্যতা। কিন্তু আজ এই শ্রমিকরাই সবচেয়ে বেশি অবহেলিত। সাংবাদিকরা আজ সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত।  তিনি বলেন, কথায় কথায় আজ সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে। কোনো প্রতিকার নেই। উল্টো রাষ্ট্র তাদের (নির্যাতনকারীদের) পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে। বর্তমান সরকারের আমলে সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনিসহ ৬০ জন সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছে। কোনো বিচার নেই। শুধু তা-ই নয়, সরকার গণমাধ্যমের টুঁটি চেপে ধরতে একের পর এক কালাকানুন তৈরি করছে। বর্তমানে দেশে ৯টি আইন রয়েছে, যা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকে প্রভাবিত করে। আরও ৩টি আইন চূড়ান্ত খসড়া পর্যায়ে রয়েছে। এর পাশাপাশি প্রেস কাউন্সিল আইন সংশোধনের বিষয়টি ধরলে এমন আইনের সংখ্যা হবে ১৩টি। প্রেস কাউন্সিল আইন সংশোধনের খসড়া বারবার দেখতে চাওয়া সত্ত্বেও গণমাধ্যমের কাউকে দেখতে দেওয়া হয়নি। বিএফইউজের মহাসচিব ও বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব কাদের গনি চৌধুরী বলেন, মে দিবস হচ্ছে সমগ্র পৃথিবীর শ্রমজীবী সমাজের বৈপ্লবিক পরিবর্তন সূচনা করার দিন। শ্রেণি-বৈষম্যের বেঁড়াজালে যখন তাদের জীবন বন্দি ছিল, তখন মে দিবসের প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে খুলে যায় তাদের শৃঙ্খল। এর ফলে আস্তে আস্তে লোপ পেতে লাগল সমাজের শ্রেণি-বৈষম্য। পুঁজিবাদের দুর্বল দিকগুলোকে পুঁজি করা অবৈধ অর্থলোভীদের আগ্রাসী দংশন থেকে রেহাই পেল কোটি কোটি শ্রমিক। বৈষম্য ও শোষণমুক্ত একটি সমাজ গোটা বিশ্বকে উপহার দিল এই মে দিবস। মালিকপক্ষের সঙ্গে শ্রমিকের যে উঁচু-নিচু সম্পর্ক ছিল, মোর্দা কথায় যদি বলি মুনিব আর দাসের যে সম্পর্ক ছিল তা সমতলে আসল শুধুমাত্র মে দিবসের স্বীকৃতির ফলেই। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার একটি উন্নয়নশীল দেশ। এই দেশে শ্রমজীবী মানুষের সংখ্যাই অধিক। কিন্তু এই শ্রমজীবী মানুষেরা এখনো তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত। বন্ধ হয়নি শ্রমিক শোষণ। বাংলাদেশে বিভিন্ন খাতে যেসব শ্রমিক কাজ করেন, তারা সবচেয়ে বেশি ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত এবং বৈষম্যের শিকার। বাংলাদেশে বিভিন্ন খাতের শ্রমিকদের এখনো আট ঘণ্টার চেয়ে অনেক বেশি সময় কাজ করতে হয়। সে অনুযায়ী তাদের মজুরি ও বেতন-ভাতা নেই। মে দিবসের পথ ধরেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শ্রমিকদের অধিকার, বিশেষ করে মজুরি, কাজের পরিবেশ, সুযোগ-সুবিধা এসব ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন এলেও বাংলাদেশে শ্রমিকেরা বেতনবৈষম্যের শিকার। দুই-একটি খাত ছাড়া শ্রমিকদের কর্মপরিবেশও নাজুক। বিশেষ করে জাহাজভাঙাশিল্প, পরিবহন শিল্প, ইমারত নির্মাণশিল্পে শ্রমিকদের কাজ করতে হয় অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে। আবার অনেক শিল্পপ্রতিষ্ঠান শ্রমিকদের বাড়তি সময় কাজ করিয়ে নিলেও ন্যায্য মজুরি দেওয়া হয় না। এটি আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। এ ব্যাপারে সরকারের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। বিএফইউজের মহাসচিব কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকদের নিরাপত্তা, সকল শ্রমিকের জন্য বিমা চালু, কর্মক্ষেত্রে কর্মঘণ্টা ৮ ঘণ্টা নিশ্চিত করা, সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনিসহ সকল সাংবাদিক ও শ্রমিক হত্যার বিচার, সাংবাদিক ও ট্রেড ইউনিয়ন নেতাদের নামে দায়েরকৃত সকল মামলা প্রত্যাহার, সকল গণমাধ্যমে নবম ওয়েজবোর্ড কার্যকর এবং সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট বাতিলের দাবি জানান। সভাপতির বক্তব্যে ডিইউজের সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, যাদের রক্তের বিনিময়ে মহান মে দিবস পালিত হচ্ছে তাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করছি। সেদিন তারা ৮ ঘণ্টা কর্মঘণ্টার দাবিতে আন্দোলন করেছিল। তাদের দাবি তারা আদায় করছিল। কিন্তু বাংলাদেশে শ্রমিকদের বেলায় তা পালন করা হচ্ছে না।  ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলমের উপস্থাপনায় এতে আরও বক্তব্য রাখেন বিএফইউজের সহ-সভাপতি খায়রুল বাশার, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সভাপতি মোরসালিন নোমানী, ডিইউজের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. দিদারুল আলম দিদার, কোষাধ্যক্ষ খন্দকার আলমগীর হোসাইন, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক রফিক লিটন, বিএফইউজের নির্বাহী সদস্য মোদাব্বের হোসেন, মোহাম্মদ আবু হানিফ, আবুল হোসেন খান মোহন, ডিইউজের নির্বাহী সদস্য মো. আবদুল্লাহ মজুমদার, কাজী ফখরুল ইসলাম, ডিইউজের সাবেক দপ্তর সম্পাদক ডি এম আমীরুল ইসলাম অমর, বাবুল তালুকদার, এম এ মোনায়েম, সাখাওয়াত ইবনে মঈন চৌধুরী প্রমুখ। 
০১ মে, ২০২৪

প্রবীণ সাংবাদিক জিয়াউল হকের মৃত্যু
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের স্থায়ী সদস্য, প্রবীণ সাংবাদিক জিয়াউল হক মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) বিকাল ৫টা ১৫ মিনিটে বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বার্ধক্যজনিত কারণে তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।  তার বয়স হয়েছিল ৮২ বছর। তিনি এক ছেলেসহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন, সহকর্মী ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।   জিয়াউল হক দীর্ঘদিন স্পোর্টস সাংবাদিকতার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। সর্বশেষ তিনি দৈনিক ইত্তেফাকে সিনিয়র সহকারী সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। কাজ করেছেন দৈনিক পূর্বদেশসহ আরও বেশ কয়েকটি দৈনিকে। নেতৃত্ব দিয়েছেন জাতীয় প্রেস ক্লাব, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন ও বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নে। তিনি বাংলাদেশ ক্রীড়া লেখক সমিতির সভাপতি ছিলেন। সোমবার বাদ এশা মিরপুর সাংবাদিক আবাসিক এলাকার মসজিদে জানাজা শেষে কালশী কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।   সাংবাদিক জিয়াউল হকের মৃত্যুতে তার রুহের মাগফেরাত কামনা এবং শোকাহত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছে বাংলাদেশ স্পোর্টস প্রেস অ্যাসোসিয়েশন (বিএসপিএ)। জাতীয় প্রেসক্লাব সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন এমপি ও সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত। 
৩০ এপ্রিল, ২০২৪

সাংবাদিক পরিচয়ে ব্ল্যাকমেইল-চাঁদাবাজি
মেহেরপুরে স্থানীয় একটি পত্রিকার সাংবাদিক পরিচয়ে চাঁদাবাজি ও ব্ল্যাকমেইলের অভিযোগ উঠেছে কথিত দুই সাংবাদিক মো. আব্দুর রউফ ও মো. মহসিন আলীর বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী ওবায়দুল্লাহ বিষয়টি নিয়ে মেহেরপুর সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগের পাশাপাশি ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ হস্তান্তর করেছেন। মেহেরপুর সদর থানার ডিউটি অফিসার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। মেহেরপুর সদর উপজেলার কুলবাড়িয়া গ্রামের হার্ডওয়ার ব্যবসায়ী মো. ওবায়দুল্লাহর (৪৮) দায়ের করা অভিযোগ থেকে জানা গেছে, মো. আব্দুর রউফ (৫৮) ও মো. মহসিন আলী (৬০) নিজেদের স্থানীয় দৈনিক আমাদের সূর্যোদয় পত্রিকার প্রতিনিধি পরিচয় দিয়ে ২৩ এপ্রিল মঙ্গলবার ওবায়দুল্লাহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে যান। এ সময় তারা তাকে সুদি ব্যবসায়ী আখ্যা দিয়ে বলেন জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের কাছে তার অপকর্মের সকল প্রমাণ রয়েছে। এ সময় তারা তাকে ভয়ভীতি দেখান এবং মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করেন।  এ সময় বলেন, তাদের টাকা দিলে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনকে ম্যানেজ করে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়া হবে। একইসঙ্গে তারা হুমকি দেন যে, টাকা না দিলে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় তাকে নিয়ে খবর প্রকাশ করা হবে। পরে তারা ব্যবসায়ী ওবায়দুল্লাহর কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা নিয়ে স্থান ত্যাগ করেন এবং পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আরও ১ লাখ টাকা দেওয়ার জন্য আলটিমেটাম দেন। এরপর বুধবার ২৪ এপ্রিল বিকেল ৫টা ২৫ মিনিটে আব্দুর রউফ ০১৭১৬১৩৪৮৩০ নম্বর থেকে ওবায়দুল্লাহকে কল দিয়ে আবারো ১ লাখ টাকা চাঁদা চেয়ে হুমকিধমকি দিলে তিনি থানায় এসে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এ সময় তিনি তার প্রতিষ্ঠানে সিসিটিভি ক্যমেরায় ধারণকৃত পূর্বে চাঁদা প্রদানের ভিডিওটি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন। উল্লেখ্য, নব্য সাংবাদিক সাজা আব্দুর রউফ ইতোপূর্বে আইনবহির্ভূতভাবে নিজেকে ডাক্তার পরিচয় দেওয়া এবং চিকিৎসাসেবা দেওয়ার অপরাধে একাধিকবার ভ্রাম্যমাণ আদালত দ্বারা দণ্ডিত হয়েছেন। বিগত তিন চার দিন যাবৎ তিনি আবার নিজেকে সাংবাদিক হিসেবে পরিচয় দিয়ে বেড়াচ্ছেন।  মেহেরপুর জেলা তথ্য অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন এ বিষয়ে কালবেলাকে বলেন, এ ধরনের ব্ল্যাকমেইল ও চাঁদাবাজির ঘটনা প্রকৃত সাংবাদিকদের মান ক্ষুণ্ণ করে। এদের বিরুদ্ধে জেলার সকল সাংবাদিকদের সোচ্চার হওয়া প্রয়োজন। ভুক্তভোগীকে অনুরোধ করব পুলিশের পাশাপাশি জেলা প্রশাসক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিতে। জেলা প্রশাসক একটি কমিটি গঠন করে দিলে সেই কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন ও সুপারিশের ভিত্তিতে আমরা অভিযুক্ত কথিত সাংবাদিকদের কালো তালিকাভুক্ত করব। যাতে তারা পরবর্তীতে নিজেদের সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে কোনো ধরনের সুযোগ-সুবিধা না নিতে পারে। কথিত সাংবাদিক আব্দুর রউফ সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০০৪ সালে গাংনী উপজেলার বামন্দী ইউনিয়নের চেরাগী পাড়ার ফর্মান আলী নামের এক ব‍্যক্তির মাধ্যমে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের ডোমকল থেকে বাংলাদেশে আসেন আব্দুর রউফ। সেই সময় তার ঠোঁটের ওপর কাটা দাগ ছিল, যা আঞ্চলিক ভাষায় গর্ণা কাটা বলে পরিচিত। তিনি সেই সময় এলাকায় ঠান্ডা জ্বর নিয়ে চিকিৎসাসেবা দিতে শুরু করলে এলাকায় পরিচিতি লাভ করেন ভারতীয় গর্ণা কাটা ডাক্তার হিসেবে। ২০০৭ সালের দিকে বামন্দী আলহেরা ফার্মেসিতে অস্থায়ী চেম্বার খুলে রোগী দেখা শুরু করেন। একপর্যায়ে আব্দুর রউফ তার ঠোঁট অপারেশন করে গর্ণাকাটা সারিয়ে ফেলেন। সেই সময় গাংনী র‍্যাব ক‍্যাম্প বামন্দীর আলহেরা ফার্মেসিতে অভিযান পরিচালনা করে ভুয়া ডাক্তার হিসেবে আব্দুর রউফকে অর্থদণ্ড প্রদান করে এবং রোগী দেখার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এরপর আব্দুর রউফ মেহেরপুরে চলে আসেন এবং শহরের পুরাতন বাসস্ট‍্যান্ড এলাকায় একটি ফার্মেসিতে আবার চেম্বার খুলে বসেন। অতঃপর মেহেরপুরের এক নারীকে বিয়ে করে মেহেরপুরের স্থানীয় হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন।  অভিযুক্ত অপর সাংবাদিক মো. মহাসিন আলী বেশ কয়েক বছর আগে মেহেরপুর শহরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ডের একটি ফাঁকা জায়গায় চায়ের দোকান পরিচালনা করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। তার চায়ের দোকানে জেলার বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত সংবাদকর্মীরা চা খেতে যেতেন। সেই সুবাদে প্রথমে তিনি পত্রিকার হকারি ব্যবসা শুরু করেন। পরে মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়ার বিভিন্ন স্থানীয় পত্রিকাতে ছড়া-টিপ্পনী লিখতেন। বর্তমানে মেহেরপুরের গাংনী থেকে প্রকাশিত ডিএফপি বহির্ভূত পত্রিকা আমাদের সূর্যোদয়ের সাংবাদিক হিসেবে পরিচিত।  মেহেরপুর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. অলক কুমার দাস কালবেলাকে বলেন, মাত্র কিছুদিন পূর্বে নিয়মবহির্ভূতভাবে চিকিৎসা সেবা দেওয়ার অপরাধে আমরা আব্দুর রউফকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছি। চিকিৎসা সেবা সম্পর্কিত তার প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নাই। বাংলাদেশের চিকিৎসা করার জন্য বিএমডিসির ছাড়পত্র বা অনুমোদন তার নাই। কিন্তু সে নিজের নামের পূর্বে ডাক্তার লিখে পরিচয় দিয়ে বেড়ায়। হঠাৎ করে দুই তিন দিন যাবৎ শুনছি আব্দুর রউফ একজন সাংবাদিক। হয়তো নিজের অপকর্ম ধামাচাপা দিতেই এখন এই রূপ ধারণ করেছে। অভিযুক্ত সাংবাদিক মো. মহাসিন আলীকে ব্ল্যাকমেইল ও চাঁদাবাজির অভিযোগ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, ওবায়দুল্লাহ একজন সুদ ব্যবসায়ী। আমার কাছে সব রেকর্ড আছে। নিউজ তৈরি হচ্ছে। সিসিটিভি ফুটেজে টাকা নেওয়ার বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি এড়িয়ে যান। আবারো বলেন, আমার কাছে সব রেকর্ড আছে আমি নিউজ লিখছি। ডিএফপির স্বীকৃতির অপেক্ষায় থাকা স্থানীয় দৈনিক আমাদের সূর্যোদয়ের প্রকাশক ও সম্পাদক আবুল কাশেম অনুরাগী কালবেলাকে বলেন, মাত্র একদিন আগে আব্দুর রউফকে আমি আমার প্রতিষ্ঠানের আইডি কার্ড দিয়েছি। তবে মহসিন আলী দীর্ঘদিন ধরে আমার পত্রিকায় কাজ করছে। কখনো তার বিরুদ্ধে আমি এ ধরনের অভিযোগ শুনিনি। আপনি যদি কোনো তথ্য প্রমাণ পান আমাকে জানাবেন। আমি নিজেই ব্যবস্থা গ্রহণ করব। কোনো ব্যক্তির অপকর্মের দ্বায় আমার প্রতিষ্ঠান ও আমি নেবো না। মেহেরপুর সদর থানার ওসি সেখ কনি মিয়া চাঁদাবাজির অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করে কালবেলাকে বলেন, অভিযোগের প্রেক্ষিতে অনুসন্ধান চলছে। পরবর্তীতে কি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, সেটা আমি জেনে আপনাকে নিশ্চিত করব।
২৯ এপ্রিল, ২০২৪

গাজীপুরে চেয়ারম্যান প্রার্থীকে জরিমানা সাংবাদিক লাঞ্ছিত
আচরণবিধি ভঙ্গ করে নির্বাচনী এলাকার বাইরে সভা করায় গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী জামিল হাসানের এক কর্মীকে ৪০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে তিন সাংবাদিককে লাঞ্ছিত করে তার সমর্থক নেতাকর্মীরা। গতকাল শনিবার বিকেলে গাজীপুর সদর উপজেলার বাঘের বাজার এলাকার সাবাহ্ গার্ডেনে এ ঘটনা ঘটে। জামিল হাসান প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী রুমানা আলীর বড় ভাই ও গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। গাজীপুরের সহকারী কমিশনার (নেজারত শাখা) ইশতিয়াক মজনুন ইফতি বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, শ্রীপুর ও গাজীপুর সদরে আগামী ৮ মে উপজেলা নির্বাচন। শনিবার বিকেলে খবর পাই, গাজীপুর সদর উপজেলার বাঘের বাজার এলাকায় সাবাহ্ গার্ডেনে আচরণবিধি ভেঙে সভা করছেন শ্রীপুর উপজেলার চেয়ারম্যান প্রার্থী জামিল হাসান দুর্জয়। ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই সভা বন্ধ করা হয়। এ সময় তার কর্মী আক্তারুজ্জামানকে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। তিনি বলেন, এ ধরনের কার্যক্রমে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ করবে। শ্রীপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. আ. জলিল অভিযোগ করে বলেন, ওই প্রার্থী নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করতে বিভিন্ন ধরনের কৌশল নিচ্ছেন। এই ধারাবাহিকতায় তিনি উপজেলা নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রিসাইডিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে পারেন, এমন প্রায় অর্ধশত প্রতিষ্ঠান প্রধান নিয়ে গোপন বৈঠকের আয়োজন করেছিলেন। এদিকে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে মাই টিভির গাজীপুর ও শ্রীপুর সদর প্রতিনিধি মাহবুবুল আলম, দৈনিক স্বাধীন বাংলা পত্রিকার প্রতিনিধি রুকনুজ্জামান ও দৈনিক তরুণ কণ্ঠ পত্রিকার প্রতিনিধি মো. নজরুল ইসলাম লাঞ্ছিত হন। মাহাবুবুল আলম অভিযোগ করে বলেন, তথ্য সংগ্রহ ও ভিডিও ধারণ করতে গেলে ওই প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা তাদের অবরুদ্ধ করে রাখে। মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। পরে পুলিশ তাদের উদ্ধার করে। েজয়দেবপুর থানার ওসি ইবরাহিম খলিল বলেন, সাংবাদিকদের সঙ্গে ওই প্রার্থীর নেতাকর্মীদের কিছুটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। রিটার্নিং অফিসার ও গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. মামুনুল করিম জানান, বিধি ভঙ্গ করে সভা করার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ম্যাজিস্ট্রেট পাঠিয়ে জরিমানা করা হয়েছে। ওই সভায় যেসব শিক্ষক অংশ নিয়েছেন, তাদের শনাক্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গাজীপুর জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এ এইচ এম কামরুল হাসান জানান, নির্বাচনী আচরণবিধি-৫-এর মোতাবেক প্রতীক বরাদ্দের পূর্বে বড় শোডাউন, মিটিং, মিছিল করতে পারবে না।
২৮ এপ্রিল, ২০২৪

‘১০০ সাংবাদিক হইয়া গেছে, নির্বাচনে আর সাংবাদিক লাগবে না’
বরগুনার আমতলী উপজেলার সদর ইউনিয়নের নির্বাচনে সাংবাদিকদের পর্যবেক্ষকের কার্ড না দিয়ে '১০০ সাংবাদিক হইয়া গেছে, নির্বাচনে আর সাংবাদিক লাগবে না' বলে মন্তব্য করেছেন আমতলী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটানিং কর্মকর্তা সেলিম রেজা। শনিবার (২৭ এপ্রিল) বিকালে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে জেলা ও উপজেলার সাংবাদিকরা পর্যবেক্ষকের কার্ডের আবেদন নিয়ে গেলে তিনি এ মন্তব্য করেন। তার বক্তব্যের এমন কোনো নিয়ম বা কারণ সম্পর্কে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে তিনি তাদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে বলেন, ‘এটাও কী আমি বলব, যার কাছে ইচ্ছা জিজ্ঞেস করেন।’ সাংবাদিক সোহাগ হাফিজ বলেন, ইউনিয়ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যে একটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। একজন চেয়ারম্যান প্রার্থী হত্যা মামলায় জেলেও আছেন। সহিংসতার শঙ্কা রয়েছে এখনো। আবার ঘুষ নিয়ে পোলিং ও প্রিসাইডিং অফিসার নিয়োগেরও অভিযোগ রয়েছে আমতলী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটানিং কর্মকর্তা সেলিম রেজার বিরুদ্ধে। হয়তো তাই মূলধারার গণমাধ্যমকর্মীদের পর্যবেক্ষকের কার্ড দিতে চাচ্ছেন না এ কর্মকর্তা। জানতে চাইলে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আব্দুল হাই আল হাদী বলেন, ১০০ সাংবাদিক কার্ড পেয়েছেন বলে অন্যরা পাবেন না এমন কোনো বিধান নেই। আমি খোঁজ নিয়ে বিষয়টি দেখছি। বরগুনার আমতলী উপজেলার সদর ইউনিয়ন পরিষদের ভোটগ্রহণ উপলক্ষে উপজেলা নির্বাচন কার্যালয় সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তপশিল অনুসারে রবিবার (২৮ এপ্রিল) সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ হবে। নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৯ জন প্রার্থী রয়েছেন। উপজেলা নির্বাচন অফিসারের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ৯টি ভোটকেন্দ্রে ২৩ হাজার ৩০০ ভোটা ভোট দিবেন। ভোটগ্রহণে সাত স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। তিন প্লাটুন বিজিবি, পুলিশ, আনসার, র‌্যাব, নির্বাচন কমিশনের পর্যবেক্ষণ টিম ও প্রত্যেক কেন্দ্রে একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন।
২৭ এপ্রিল, ২০২৪

নিভৃতে চলে গেল সাংবাদিক মাহফুজউল্লাহর মৃত্যু বার্ষিকী
নির্ভীক, সৎ ও সাহসী সাংবাদিক ছিলেন মাহফুজউল্লাহ। তার মতো সাংবাদিক আজ সমাজে বিরল হয়ে যাচ্ছে। মতবিরোধ ও মতপার্থক্য থাকলেও তিনি তা উপস্থাপন করতেন শালীন ভাষায়।  শনিবার (২৭ এপ্রিল) সাংবাদিক মাহফুজউল্লাহর ৫ম মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে মীরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তার কবর জিয়ারত ও ফাতেহা অনুষ্ঠানে উপস্থিত নেতারা এসব কথা বলেন।  বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির মহাসচিব এম গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেন, মাহফুজউল্লাহ সংগ্রাম করেছেন, যুদ্ধ করেছেন কিন্তু আত্মসমর্পণ করেনি। তিনি বলেন, মাহফুজউল্লাহর একটা গুণ ছিল মিলে-মিশে কাজ করার। আমি তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। মাহফুজউল্লাহর মতো উদার মনের মানুষ আজ সমাজে বিরল। তার মৃত্যুতে দলমত নির্বিশেষে সবাই শ্রদ্ধা জানাতে এসেছেন। তার কারণ একটাই এই সমাজ যেমন বিভক্ত, তেমন সাংবাদিকরাও বিভক্ত, এই বিভক্ত সমাজে মাহফুজউল্লাহ ছিলেন দিক-নির্দেশক। সে নির্ভীক, স্পষ্টবাদী, সৎ সাংবাদিক ছিলেন, তার তুলনা হয় না। তিনি বলেন, মাহফুজউল্লাহ আজীবন একটি গণতান্ত্রিক, দুর্নীতিমুক্ত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় আজীবন নিজের অবস্থানে থেকেই লড়াই করেছেন। তিনি আরও বলেন, বর্তমানে রাষ্ট্রে যখন রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ একে অপরকে ধ্বংস করতে ব্যস্ত সেই মুহূর্তে রাজনৈতিক শিষ্টারের অন্যতম দৃষ্টান্ত মাহফুজউল্লাহর ইন্তেকাল আমাদের সমাজের বড় ধরনের শূণ্যতা সৃষ্টি করল। এই শূণ্যতা পূরণ অনেক সময়ের প্রয়োজন হবে। বর্তমান দুঃসময়ে তার মতো একজন ঋজু ও দৃঢ়চেতা মানুষের বড়ই প্রয়োজন ছিল। মাহফুজ উল্লাহ স্মৃতি পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও বাংলাপোস্ট পত্রিকা ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মোহাম্মদ অলিদ বিন সিদ্দিক তালুকদার বলেন, মতপার্থক্য বা মতবিরোধ থাকলেও প্রতিপক্ষের সঙ্গে শিষ্টাচারের মধ্য থেকেই যে লড়াই করা যায় তারই উজ্জ্বলতম উদাহরণ হচ্ছেন মাহফুজউল্লাহ। রাজনৈতিক বিশ্বাসগতভাবে তার বিরোধী পক্ষও এ কথা স্বীকার করতে বাধ্য হবে। মতাপার্থক্য ও মতবিরোধদের মধ্যেও একটি সমাজ ও রাষ্ট্রে সহঅবস্থান কতটা জরুরি তারই বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে সব সময় তার ব্যবহারে। তিনি বলেন, ’৬৯-এর গণঅভুত্থান, ’৭১এর মহান মুক্তিযুদ্ধসহ বাংলাদেশের সব অধিকার ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে মাহফুজউল্লাহ অবদান সমগ্র জাতি শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে। এ সময় বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির মহাসচিব এম গোলাম মোস্তফা ভুইয়া ও মাহফুজ উল্লাহ স্মৃতি পরিষদের সভাপতি বাংলাপোস্ট ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মোহাম্মদ অলিদ বিন সিদ্দিক তালুকদার ছাড়াও আরও উপস্থিত ছিলেন সাইদুল ইসলাম, ইকবাল হোসাইন, নুর আলম অনিক। মোনাজাত করেন মাওলানা ইব্রাহিম খলিল।   
২৭ এপ্রিল, ২০২৪

সাতক্ষীরায় ভুয়া সাংবাদিকদের তথ্য সংগ্রহের কার্ড দিলেন রিটার্নিং অফিসার
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার আলোচিত আলিপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন আগামীকাল (২৮ এপ্রিল) রোববার। অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এই একটি নির্বাচনে সাংবাদিকদের নির্বাচনের তথ্য সংগ্রহের কার্ড অন্তত ডজনখানেক নামসর্বস্ব বিভিন্ন ভুঁইফোড় পত্রিকার অসাংবাদিকদের হাতে দেখা যাচ্ছে।  গণহারে এভাবে কার্ড দেওয়ায় উপজেলা নির্বাচন অফিসার ও আলিপুর ইউপির রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যক্রমকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলেছে। তবে গুঞ্জন রয়েছে অনেকেই টাকার বিনিময়ে পেয়েছেন এই কার্ড। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আলিপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সাতক্ষীরা সদর উপজেলা নির্বাচন অফিসার মো. মেহেদী হাসান স্বাক্ষরিত নির্বাচন তথ্য সংগ্রহ কার্ড পেয়েছেন ৭১ বাংলা, প্রবাহ নিউজ টিভি, প্রেস বাংলা সময় (পিবিএস), আশোকসহ নামসর্বস্ব বিভিন্ন ভুঁইফোড় পত্রিকা। এ ছাড়াও নামে বেনামে উপজেলার নির্বাচন অফিস থেকে সাংবাদিকদের তথ্য সংগ্রহের কার্ড সংগ্রহ করতে দেখা গেছে। তবে কারা তথ্য সংগ্রহের কার্ড পেয়েছেন এ বিষয়ে তথ্য দিতে রাজি হননি রিটার্নিং কর্মকর্তা।    এদিকে, স্থানীয় সাংবাদিক ও সুশীল সমাজ সাংবাদিকদের নামে অপ-সাংবাদিকদের হাতে এসব কার্ড ছড়িয়ে পড়ায় সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ পরিস্থিতি বিঘ্নিত হওয়ার আশংকা করছেন। সাতক্ষীরা প্রেস ক্লাবের সাবেক ৭ বারের নির্বাচিত সভাপতি অধ্যক্ষ আবু আহমেদ বলেন, নামসর্বস্ব বিভিন্ন ভুঁইফোড় পত্রিকার অপ-সাংবাদিকদের হাতে এসব কার্ড তুলে দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ পরিস্থিতি বিঘ্নিত হওয়ার আশংকা তৈরি হয়েছে, তাদের নির্বাচন পর্যবেক্ষক কার্ড দেওয়া ঠিক হয়নি। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।  এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা সদর উপজেলা নির্বাচন অফিসার মো. মেহেদী হাসানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি সাংবাদিকদের পরিচয়পত্র দেখে তথ্য সংগ্রহের কার্ড দিচ্ছি, কোন পত্রিকা ভুয়া সেটা আমার দেখার বিষয় না।  কারা কার্ড পেয়েছেন তালিকা চাইলে তিনি বলেন, আমরা কাদের কার্ড দিয়েছি সেটা আপনাদের কেন বলতে হবে। আপনাদের যা ইচ্ছে লেখেন, যা ইচ্ছে করতে পারেন, তাতে আমার কিছু আসে যায় না। আমি এখন ব্যস্ত আছি। সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির বলেন, এ বিষয়টি আমার জানা নেই, মাত্র শুনলাম। বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেন তিনি।
২৭ এপ্রিল, ২০২৪
X