আগুন নিভলেও দুদিন পর্যবেক্ষণে থাকবে সুন্দরবন
৪৩ ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে এসেছে সুন্দরবনে লাগা আগুন। গতকাল সোমবার সকাল ১০টা ৩৫ মিনিটে আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে দাবি করেছেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লে. কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী। তিনি বলেছেন, আগুন যাতে আর না লাগে বা ছড়িয়ে না পড়ে, এজন্য দুদিন পর্যবেক্ষণে রাখা হবে সুন্দরবন। এক ব্রিফিংয়ে তিনি দাবি করেন, শনিবার বিকেল সাড়ে ৩টায় লাগা আগুন গতকাল সকাল ১০টা ৩৫ মিনিটে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে। এজন্য ফায়ার সার্ভিস, নৌবাহিনী, বন বিভাগ, বিমানবাহিনী ও স্থানীয় শত শত স্বেচ্ছাসেবক অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। আগুন এখন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে জানিয়ে তিনি বলেন, কোথাও আগুনের ফুলকি বা ধোঁয়া নেই। তবে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আরও দুদিন কাজ করবেন কালো ছাই সাদা করার জন্য। এরপর তারা বন ত্যাগ করবেন। ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক আরও বলেন, ভবিষ্যতে বনের ওই এলাকায় আগুন লাগার আশঙ্কা রয়েছে। তাই এখনই আগামীর জন্য সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। ব্রিফিংয়ে নৌবাহিনীর কর্মকর্তা কমান্ডার মো. বাশারুল ইসলাম, চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) রানা দেব, মোরেলগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আশিকুর রহমান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম তারেক সুলতান, থানার ওসি মোহাম্মদ সামসুদ্দীন ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম হাওলাদার উপস্থিত ছিলেন। সহকারী বন সংরক্ষক রানা দেব জানান, আগামী দুদিন এ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রেখে পানি ছিটানো হবে। তবে আপাতত আর ভয়ের কারণ নেই। আগুন যাতে আবার জ্বলে উঠতে না পারে বা ছড়িয়ে পড়তে না পারে, সেজন্য রোববার ফায়ার লাইন কেটে সেখানে পানি দিয়ে রাখা হচ্ছে। এদিকে প্রধান বন সংরক্ষক আমির হোসেন চৌধুরী জানিয়েছেন, আগুনে ৫ একর বন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে আগুন যেন পুনরায় জ্বলে উঠতে না পারে, এজন্য আরও তিন দিন ওই এলাকা সতর্ক অবস্থায় থাকবে। আগুন লাগার ঘটনায় আজ মঙ্গলবার থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হবে। তিনি বলেন, আগুন লাগার ঘটনায় জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি নিরূপণ ও পরবর্তী সময়ে করণীয় নির্ধারণে সাত সদস্যের বিশেষজ্ঞ টিম গঠন করা হয়েছে। খুলনার বন সংরক্ষক মিহির কুমার দের নেতৃত্বে গঠিত টিম ১০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেবে। অপরিকল্পিত নদী খনন কাল হয়েছে: বন বিভাগ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, সুন্দরবনে গত দুই দশকে যেসব অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে, এর সবকটি ঘটেছে পূর্ব বন বিভাগে সুন্দরবনের ভোলা ও মরা ভোলা নদী সংলগ্ন এলাকায়। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরেস্ট্রি অ্যান্ড উড টেকনোলজি ডিসিপ্লিনের অধ্যাপক মো. ওয়াসিউল ইসলামের মতে, পূর্ব সুন্দরবনের এই নদী দুটি অপরিকল্পিতভাবে খনন করে মাটি তুলে এমনভাবে রাখা হয়েছে, যা বাঁধের মতো মনে হয়। ফলে জোয়ারভাটার পানি প্রবেশ না করায় সেখানকার ভূমি একবারে শুষ্ক থাকে। বর্ষা মৌসুমের আগে আগে এটা আরও শুষ্ক হয়ে যায়। সেজন্য এখানে আগুন সহজভাবে ধরতে পারে। তিনি বলেন, বনের মধ্যে পানির প্রবাহ না থাকা বড় একটা ইস্যু হয়ে গেছে। এজন্য বড় ধরনের একটা প্রকল্প দরকার। বাংলাদেশ বন বিভাগের সঙ্গে নৌপরিবহন অধিদপ্তরের বিভিন্ন শাখা, নদী শাসনের কাজ যারা করেন, তাদের সবার একটা সমন্বয় দরকার। একটা পরিকল্পিত পদ্ধতিতে প্রকল্পটা নেওয়া দরকার। কারণ, আগের মতো প্রকল্প নিয়ে মাটি বনের মধ্যে ফেলা হলে, কিংবা বন উঁচু করে দেওয়া হলে ম্যানগ্রোভের জন্য যে পরিবেশ লাগে, সেটা নষ্ট হবে। তখন নতুন প্রকল্পেও কোনো লাভ হবে না। জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি জানতে কমিটি সুন্দরবনের আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে এলেও এখনো ড্রোনের মাধ্যমে মনিটর করছে বন বিভাগ। বিভিন্ন গণমাধ্যমে বর্গকিলোমিটার এলাকার অগ্নিকাণ্ডের কথা বলা হলেও প্রকৃতপক্ষে অগ্নিকাণ্ডের ব্যাপ্তি ছিল ৭ দশমিক ৯ একর। যার মধ্যে ৫ একর এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। সুন্দরবনে অগ্নিকাণ্ডে জীববৈচিত্র্যের ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে কমিটি গঠন করেছে বন অধিদপ্তর। প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরীর স্বাক্ষরে খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো-কে সভাপতি এবং খুলনার ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তাকে সদস্য সচিব করে এ কমিটি গঠন করা হয়। অন্য সদস্যরা হলেন পরিবেশ অধিদপ্তরের প্রতিনিধি; সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগ, বাগেরহাটের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরেস্ট্রি অ্যান্ড উড টেকনোলজি ডিসিপ্লিনের অধ্যাপক ড. এসএম ফিরোজ, আরণ্যক ফাউন্ডেশনের ম্যানগ্রোভ ইকোলজিস্ট এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেটের প্রফেসর ড. স্বপন কুমার সরকার এবং ওয়াইল্ডলাইফ কনজারভেশন সোসাইটির প্রতিনিধি। কমিটিকে আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে আগুনে বনজ সম্পদ ও জীববৈচিত্র্যের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ চিহ্নিত করে করণীয় সম্পর্কে সুপারিশসহ প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। এদিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর কোস্টগার্ড, নৌ ও বিমানবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেছেন। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী, সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ এবং প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরী সুন্দরবনের আগুন নির্বাপণ কার্যক্রম সার্বক্ষণিকভাবে তদারকি ও সমন্বয় করছেন।
০৭ মে, ২০২৪

এখনো পুড়ছে সুন্দরবন : সর্বশেষ যা জানাল ফায়ার সার্ভিস 
হঠাৎ সুন্দরবনে লাগা আগুন এখনো নিয়ন্ত্রণ নেভাতে পারেনি ফায়ার সার্ভিসসহ ৫ বাহিনী। রোববার (৫ মে) সকাল ৯টা থেকে বনরক্ষী-ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি এ কাজে যোগ দিয়েছে নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড এবং বিমানবাহিনীর একটি হেলিকপ্টার। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা পাশের ভোলা নদী থেকে পানি ওঠানোর জন্য পাইপ সংযোগ দিলেও নদীতে জোয়ার না থাকায় চাহিদা অনুযায়ী পানি পাওয়া যাচ্ছে না।  রোববার (৫ মে) রাতে আগুনের সর্বশেষ পরিস্থিতি জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষ।  এক বার্তায় ফায়ার সার্ভিস জানায়, রোববার (৫ মে) অগ্নি নির্বাপণে গৃহীত কার্যক্রম সকাল ৬ টা হতে ৬টি ফায়ার পাম্পের মাধ্যমে রিলে সিস্টেম বজায় রেখে সুন্দরবন সংলগ্ন খাল হতে পানি নিয়ে অগ্নিনির্বাপণ কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়। তবে পাম্প বসানোর মতো কোন জায়গা না থাকায় নৌকায় পাম্প বসিয়ে অগ্নিনির্বাপণ কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। চতুর্দিকে আগুন যেন ছড়িয়ে না যায় সেজন্য অগ্নিদুর্ঘটনা পানি দিয়ে সংকুচিত করা হয়েছে। ফায়ার সার্ভিস আরও জানায়, অগ্নিকাণ্ডে ফায়ার সার্ভিসের অফিসার ও কর্মচারীসহ মোট ৫৫ জন। ভলান্টিয়ার প্রায় ২৫০ জন। মোট ৩০৫ জন অগ্নিনির্বাপণ কার্যক্রমে নিয়োজিত ছিল। এছাড়াও জেলা প্রশাসন,  বন বিভাগ, বাংলাদেশ বিমান বাহিনী, নৌবাহিনী, জেলা পুলিশের সদস্যরা পুরো সময়ব্যাপী অগ্নিনির্বাপণে বিশেষভাবে নিয়োজিত ছিল। সর্বশেষ বার্তায় ফায়ার সার্ভিস জানায়, এটি একটি বুশ ফায়ার। বিভিন্ন অংশে বিচ্ছিন্নভাবে এখনো আগুন ছড়িয়ে আছে। অগ্নিকাণ্ডের ব্যাপ্তি প্রায় ২ বর্গ কিলোমিটার। এখনো ধোঁয়া বিদ্যমান আছে। জীবজন্তু এবং ঘন বনের জন্য শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করা যায় না। অগ্নি নির্বাপণের জন্য পর্যাপ্ত পানির ব্যবস্থাও নেই। এ ছাড়া ফায়ার সার্ভিসের সকল ইকুইপমেন্ট হ্যান্ড ক্যারি করে সুন্দরবন এলাকায় নেওয়ার পর নৌকায় স্থাপন করে অগ্নিকাণ্ড নির্বাপণ করা হচ্ছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে প্রতিবন্ধকতার বিষয়টি উল্লেখ করে ফায়ার সার্ভিস জানায়, পানির উৎস থেকে আগুনের দূরত্ব স্থানভেদে ২.৫ কিলোমিটার। চলাচলের রাস্তা দুর্গম। জেলা প্রশাসন নিরাপত্তাজনিত কারণে রাতে কার্যক্রম বন্ধ রেখেছেন। আগামীকাল ভোর ৫-৩০ ঘটিকায় পুনরায় অগ্নিনির্বাপণ কার্যক্রম শুরু করা হবে।
০৫ মে, ২০২৪

ইকো রিসোর্টের নামে সুন্দরবন ধ্বংসের পাঁয়তারা
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের অধীনে বন বিভাগের লাউডোব টহল ফাঁড়ির ঠিক অপর পাশেই বনলতা নামে রিসোর্ট তৈরি হয়েছে। নামে ইকো রিসোর্ট হলেও রুম প্যাসেস, খাবার স্থান ও ওয়াশ রুমের মেঝেতে কংক্রিটের টাইলস বসানো। সুন্দরবনের মাত্র ৫০ মিটারের মধ্যে রিসোর্টটিতে নিজস্ব ব্যবস্থায় দেওয়া সাউন্ড বক্সে বাজানো হচ্ছে ডিজে গান। এখানে ঢাকা থেকে ঘুরতে আসা একটি পরিবার জন্মদিন পালন করছিল। রিসোর্টের ভেতরে মাত্র তিনটি রুম এবং সুন্দরবনমুখী খোলা জায়গা। জনপ্রতি ২শ টাকা দিয়ে রিসোর্টের ব্যবস্থাপনায় নৌকায় করে সুন্দরবনের ভেতরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। রিসোর্টটির রুমের নিচে ব্যবহার্য চিপসের প্যাকেট, প্লাস্টিকের বোতল জোয়ারের পানিতে ভেসে যাচ্ছে বনের ভেতরে। মাত্র ১শ গজ দূরে থাকা বন বিভাগের টহল ফাঁড়ি এর কিছুই জানে না। শুধু বনলতা নয়, সম্প্রতি খুলনার দাকোপের কৈলাশগঞ্জ ও বানিয়াসান্তা ইউনিয়নে সুন্দরবনের একেবারে কোল ঘেঁষে গড়ে উঠেছে অন্তত ১২টি রিসোর্ট। সামাজিকমাধ্যমে নানা চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়ে রিসোর্টগুলো পর্যটক টানছে প্রতিনিয়ত। কোনো আইনের তোয়াক্কা না করে একে একে রিসোর্ট তৈরি করায় দৃশ্যমান যে চতুর্মুখী সংকট সৃষ্টি হয়েছে এখনই কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে এক দিকে বন ধ্বংস হবে অন্যদিকে বনে ঘুরতে আসা পর্যটকদেরও পড়তে হবে ঝুঁকিসহ নানা বিড়ম্বনায় বলে মনে করেন সুন্দরবন সংশ্লিষ্টরা। খুলনার দাকোপ উপজেলার কৈলাশগঞ্জ ও বানিয়াশান্তা ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায়, এখানে সুন্দরবনের কোল ঘেঁষে গড়ে উঠছে একাধিক রিসোর্ট। এর মধ্যে বনলতা ও ম্যানগ্রোভ হ্যাভেন দুটি রিসোর্ট কৈলাশগঞ্জে বাকি রিসোর্টগুলো বানিয়াসান্তায়। রিসোর্টগুলো হলো- বনবাস, ইরাবতি, মাটির ময়না, জঙ্গলবাড়ি, পিয়ালি, নির্বাসন, সুন্দরী, বনবিবি। এ ছাড়া কয়েকটি রিসোর্টেও নির্মাণ কাজ চললে এখনো নাম নির্ধারণ করা হয়নি। হুমকিতে সুন্দরবন ও জীববৈচিত্র্য একের পর এক রিসোর্ট নির্মাণ হওয়ায় হুমকিতে পড়তে যাচ্ছে সুন্দরবন ও জীববৈচিত্র্য। সুন্দরবনের লাউডোব টহল ফাঁড়িতে সিপিজি হিসাবে কর্মরত শর্মিলা জানান, বন এক জায়গাতে এর লোকালয় এক জায়গাতে সেখানেই বন রক্ষা করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। এখন একের পর এক রিসোর্ট তৈরি করে প্রচুর মানুষ প্রতিনিয়ত সুন্দরবনে কোনো অনুমতি ছাড়াই প্রবেশ করছে। তারা সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে। অনুমতি না নিয়ে বনের ভেতরে প্রবেশ করে ব্যবহার্য প্লাস্টিকের বর্জ্য ফেলছে, উচ্চস্বরে গান বাজাচ্ছে, বিভিন্নভাবে বনের ক্ষতি করছে। স্থানীয় প্রভাবশালী মহলের সঙ্গে যোগসাজশে তারা এসব করছে। বন বিভাগ বা কাউকে তারা তোয়াক্কা করে না।  খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এই মুহূর্তে বনলতা, বনবাস, ম্যানগ্রোভ হ্যাভেন, ইরাবতি, বন বিবিসহ বেশ কয়েকটি রিসোর্টে প্রতিদিনই দূর-দূরান্ত থেকে পর্যটক আসছে। তারা হরহামেশা বনের মধ্যে প্রবেশ করছে। এতে হুমকিতে পড়েছে সুন্দরবন। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরেস্ট্রি বিভাগের অধ্যাপক ড. ওয়াসিউল ইসলাম বলেন, সুন্দরবনের মধ্যে অবাধ বিচরণের বিষয়ে সুন্দরবন ভ্রমণ আইন-২০১৪ আছে যেটা অবশ্যই মানতে বাধ্য সকল ভ্রমণকারী। সরকারের এই মুহূর্তে একটি প্রজেক্ট চলছে যেটা সুরক্ষা প্রজেক্ট। এই প্রজেক্টের আওতায় ইকো-ট্যুরিজম একটা বিষয় আছে। কিন্তু একটি কটেজ করতে হলে অনেক বিষয় মানা উচিত, এটার একটা নীতিমালা থাকা উচিত। যেহেতু এখনো কোনো নীতিমালা তেমন নাই সুতরাং অচীরেই নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে। এ বিষয়ে আমার পরিবেশ অধিদপ্তরের সঙ্গে কথা হয়েছে একাধিকবার। তবে এই বিষয়টি নিয়ে বন বিভাগ ও উপজেলা প্রশাসনের দায় এড়ানো বা সমন্বয়হীনতার কোনো সুযোগ নাই। বন বিভাগ ও প্রশাসনের সমন্বয়হীনতা সুন্দরবনের কোল ঘেঁষে একের পর এক ইকো-রিসোর্টের নামে যে স্থাপনা তৈরি এবং অনুমতি না নিয়ে সুন্দরবনে অবাদ বিচরণে স্থানীয় প্রশাসন ও বন বিভাগ একে অপরের দিকে অভিযোগের আঙ্গুল তুলেছে। কৈলাশগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিহির রঞ্জন অধিকারী বলেন, আমার এলাকা এবং বানিয়াসান্তা এলাকায় মোট ৩৫টি রিসোর্ট হয়েছে। এর কয়েকটি আমার এলাকায় আমরা শুধু ট্রেড লাইসেন্স দিয়েছি। তবে ম্যানগ্রোভ হ্যাভেন নামে আমাদের একটি রিসোর্ট রয়েছে, যা ঢাকা থেকে আন্তর্জাতিক মানের হোটেল। ইকো ক্রিটিক্যাল এরিয়ার ভেতরে স্থাপনার অনুমতি দেওয়ার আগে সবকিছু বিবেচনায় নেওয়া হয়েছিল কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আসলে এই বিষয়ে আমার তেমন কোনো জ্ঞান নাই। খুলনা বিভাগীয় বন অফিসের সদর অঞ্চলের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. হাসান কালবেলাকে বলেন, বনে আমাদের একটা নির্দিষ্ট সীমানা আছে। এর এক ইঞ্চি দূরেও যে কেউ কোনো কিছু করলে এটার দেখার এখতিয়ার আমাদের না। বনের মধ্যে ঢুকে কেউ কিছু করলে আমাদের প্রমাণ দেন, আমরা ব্যবস্থা নেব। আমরা এসব বিষয় সমন্বয় মিটিংয়ে বিভিন্ন সময় কথা বলার চেষ্টা করলে স্থানীয় প্রশাসন আমাদের কথা শোনেন না। আমাদেরও পাত্তা দেন না। আমাদের এখানে কিছু করার নেই। দাকোপ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জয়দেব চক্রবর্তী কালবেলাকে বলেন, রিসোর্ট কয়েকটি হয়েছে আমি আসার আগেই। তবে কেউ কোনো দিন কোনো ধরনের অনুমতি নিতে আসেনি। এগুলো করতে কোনো অনুমতি আদৌ লাগে কি না বিষয়টি আমার জানা নেই। আপনি যেহেতু প্রথম ব্যক্তি এই বিষয় প্রশ্ন তুললেন, আমরা অবশ্যই খোঁজ নেব। তবে বন বিভাগের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযোগ রয়েছে। এসব বিষয়ে মিটিং আহ্বান করলে বন বিভাগ মিটিংয়ে আসে না। আমাদের কিছু জানায় না। আমরা তাদের পক্ষ থেকে কোনো সহযোগিতা পাই না। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুন্দরবন ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. আজহারুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, ইকো ট্যুরিজমের নামে যা হচ্ছে এর মূল্য একদিন দিতে হবে। এখনো চিন্তা করার সুযোগ আছে। ভারতে ইকো ট্যুরিজম করতে গিয়ে বনের ১২টা বেজে গেছে। আমার কাছে মনে হয় এই ইকো ট্যুরিজম ধনী মানুষের টাকা খরচ করার একটা জায়গা বানিয়েছে। এখানে স্থানীয় মানুষের সংশ্লিষ্টতা খুবই কম। তবে এখনই একটি নীতিমালা তৈরি করতে হবে। তা নাহলে ইকো ট্যুরিজম আমাদের আশীর্বাদের বদলে অভিশাপ হিসাবে দেখা দেবে শিগগিরই।
১৬ এপ্রিল, ২০২৪

সুন্দরবন কল্যাণ সমিতি ফ্রান্সের নতুন কমিটি
সুন্দরবন কল্যাণ সমিতি ফ্রান্সের ইফতার মাহফিল এবং ২০২৪-২০২৫ মেয়াদে নতুন কমিটি গঠিত হয়েছে। বুধবার (৩ এপ্রিল) রাজধানী প্যারিসের পার্শ্ববর্তী মেট্রো হোস-এর একটি বাংলাদেশি রেস্তোরাঁয় এ অনুষ্ঠান সংঘটিত হয়। এ সময় সংগঠনের বর্তমান সভাপতি জাহিদ হোসেন আকনের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মো. হেলাল উদ্দিন বেপারীর সঞ্চালনায় ইফতার পরবর্তী আলোচনাসভায় বক্তব্য রাখেন, সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এমদাদুল হক স্বপন, সাবেক সহসভাপতি এনামুল হক, আবু তাহের, জামাল শরীফ, মাসুদ হোসেন, আল আমিন, তারেক সিকদার, সাইফুল ইসলাম, তৌহিদুল ইসলাম, নিয়াজ মোর্শেদ পলাশ, আসলাম খানসহ আরও অনেকে। পরে উপস্থিত সকলের উপস্থিতিতে আগামী দুই বছরের জন্য শাহাদত হোসেন রনিকে সভাপতি, নজরুল ইসলামকে সাধারণ সম্পাদক, হেলাল উদ্দিনকে সিনিয়র সহসভাপতি এবং এমদাদুল হক স্বপনকে প্রধান উপদেষ্টা ঘোষণা করা হয়। পাশাপাশি আগামী এক মাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা এবং আগামী ৯ জুনের মধ্যে নতুন কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠান করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
০৫ এপ্রিল, ২০২৪

বিশ্ব বন দিবস / আজও গুরুত্বহীন এশিয়ার ফুসফুস খ্যাত সুন্দরবন
‘আমাদের নীতি-নির্ধারকদের কাছে আজও গুরুত্বহীন এশিয়ার ফুসফুস খ্যাত সুন্দরবন। স্থানীয় জলবায়ু নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে সুনিপুণ বুননে গড়ে ওঠা এ বন। আমরা এই বনের গর্বিত অভিভাবক হলেও অংশীদার পৃথিবীর সব মানুষ। বনবিনাশী কর্মকাণ্ডে সুন্দরবন আজ আর ভালো নেই।’ বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) সকালে বিশ্ব বন দিবস উপলক্ষে মোংলার বৈদ্যমারি সংলগ্ন সুন্দরবন এলাকায় বনবন্ধন কর্মসূচিতে বক্তারা এসব কথা বলেন।  সুন্দরবন রক্ষায় আমরা, ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা), ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ ও পশুর রিভার ওয়াটারকিপারের আয়োজনে বনের সঙ্গে সহাবস্থানের অংশ হিসেবে এ বনবন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন ‘সুন্দরবন রক্ষায় আমরা’র সমন্বয়কারী মো. নূর আলম শেখ। বক্তব্য রাখেন ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের সদস্য কমলা সরকার, হাছিব সরদার, ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা) সদস্য শেখ রাসেল, পরিবেশকর্মী মারুফ বাবু, ভিলেজ টাইগার রেসপন্স টিমের ফকরুল ফকির, শুকুর আলী শেখ, আসাদুল জমাদ্দার প্রমুখ।  বক্তারা বলেন, সুন্দরবন প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রতিরক্ষা দেয়াল হিসেবে কাজ করে। দুর্যোগের সময় এটি আমরা ভালোভাবে প্রত্যক্ষ করি। কিন্তু দুর্যোগ কেটে গেলে তা আমরা ভুলে যাই। সভাপতির বক্তব্যে মো. নূর আলম শেখ বলেন, দেশের মোট বনভূমির প্রায় ৩৮ শতাংশ সুন্দরবন। বনের অস্তিত্ব মানুষের অস্তিত্বের সঙ্গে জড়িত। সুন্দরবন এ অঞ্চলের মানুষের জন্য এক অসামান্য প্রাকৃতিক সুরক্ষা বর্ম। বন্যপ্রাণী হত্যা ও পাচাররোধ, সুন্দরবনের খালে বিষ প্রয়োগে মাছ ধরা বন্ধ এবং বনবিনাশী কর্মকাণ্ড রুখতে না পারলে সুন্দরবনের অস্তিত্ব থাকবে না।  কর্মসূচিতে নানা শ্রেণির শতাধিক মানুষ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন।
২১ মার্চ, ২০২৪

সুন্দরবন দিবস আজ
প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি সুন্দরবন এ দেশের দক্ষিণাঞ্চলকে মাতৃস্নেহে আগলে রেখেছে। জলবায়ু পরিবর্তনগত কারণে আঘাত হানা ঝড়-ঝঞ্ঝা, জলোচ্ছ্বাস, ভূমিক্ষয় রোধসহ সব প্রাকৃতিক দুর্যোগে সুন্দরবন আমাদের রক্ষা করে আসছে।  সুন্দরবন, প্রশস্ত বনভূমি যা বিশ্বের প্রাকৃতিক বিস্ময়াবলীর অন্যতম। সমুদ্র উপকূলবর্তী নোনা পরিবেশের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন হিসেবে সুন্দরবন বিশ্বের সর্ববৃহৎ অখণ্ড বনভূমি। আজ ১৪ ফেব্রুয়ারি সুন্দরবন দিবস, ভালোবাসা দিবসে ভালোবাসুন সুন্দরবনকে। সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে ১৪ ফেব্রুয়ারি সুন্দরবন দিবস পালিত হয়ে আসছে। ২০০১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের আওতায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন রূপান্তর ও পরশের উদ্যোগে এবং দেশের আরও ৭০টি পরিবেশবাদী সংগঠনের অংশগ্রহণে প্রথম জাতীয় সুন্দরবন সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেই সম্মেলনে ১৪ ফেব্রুয়ারিকে ‘সুন্দরবন দিবস’ ঘোষণা করা হয়। সে হিসেবে এবার পালিত হচ্ছে ১৮তম সুন্দরবন দিবস। বরাবরের মতো এবারেও সুন্দরবন দিবসের মূল অনুষ্ঠানটি হবে খুলনায়। দিবসটি উপলক্ষে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। সুন্দরবন রয়েছে ৫ হাজার প্রজাতির উদ্ভিদ, ১৯৮ প্রজাতির উভচর প্রাণী, ১২৪ প্রজাতির সরীসৃপ, ৫৭৯ প্রজাতির পাখি, ১২৫ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী ও ৩০ প্রজাতির চিংড়ি মাছ রয়েছে।
১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

সুন্দরবন সংলগ্ন লোকালয় থেকে গোখরা ও অজগর উদ্ধার
বাগেরহাটের শরণখোলায় পৃথক দুটি স্থান থেকে গোখরা ও অজগর সাপ উদ্ধার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) বিকেলে ও সন্ধ্য়ায় শরণখোলায় পৃথক দুটি স্থান থেকে পাঁচ ফুট লম্বা একটি বিষধর পদ্ম গোখরা ও সাত ফুট লম্বা অজগর সাপ উদ্ধার করা হয়েছে। শুক্রবার সকালে প্রাণী দুটিকে উদ্ধার করে সুন্দরবনে ছেড়ে দেওয়া হয়।  ওয়ার্ল্ড টিমের আলম হাওলাদারের নেতৃত্বে শরণখোলা সিপজি সদস্য ও বন্য প্রাণী সংরক্ষণ কমিটির সম্পাদক শামসু তালুকদার সাপ দুটিকে উদ্ধার করেন। পরে দুপুরের দিকে দুটি সাপ সুন্দরবনে অবমুক্ত করা হয়। সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের স্টেশন কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম বলেন, লোকালয় থেকে উদ্ধার করা গোখরা ও অজগর সাপটি আজ দুপুরে শরণখোলা রেঞ্জ অফিসসংলগ্ন বনে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
১৯ জানুয়ারি, ২০২৪

আলামত গোপনের অভিযোগে ইউপি চেয়ারম্যানসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা
খুন করে আলামত গোপনসহ অপরাধে সহায়তার অভিযোগে মিজানুর রহমান মিজান নামের এক ইউপি চেয়ারম্যান ও তার পরিষদের এক ইউপি সদস্যসহ মোট ৮ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) রাতে ছগীর হাওলাদার বাদী হয়ে বামনা থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় খুন করে আলামত গোপনসহ অপরাধে সহায়তার অভিযোগ আনা হয়। বামনা থানার ওসি তুষার কুমার মন্ডল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। মামলার আসামিরা হলেন- ডৌয়াতলা বাজারের দক্ষিণ পার্শ্বে নিবন্ধনহীন সুন্দরবন হসপিটাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের আবাসিক ডাক্তার সবুজ কুমার দাস, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ৪ নম্বর ডৌয়াতলা ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান ইউপি সদস্য রেজাউল ইসলাম, সুন্দরবন হসপিটাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের চেয়ারম্যান, বামনা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও  ৪ নম্বর ডৌয়াতলা ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজান, দক্ষিণ গুদিঘাটা গ্রামের মৃত খালেক হাওলাদারের ছেলে মনিরুল ইসলাম, দক্ষিণ কাকচিড়া গ্রামের আনসার আলী খানের ছেলে মাঈনুল ইসলাম, মোরেলগঞ্জ কলেজ মোড় এলাকার সামসুল আলমের ছেলে রফিকুল ইসলাম, সুন্দরবন হসপিটাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সেবিকা উর্মি ও মুন্নী। মামলায় ছগীর হাওলাদার উল্লেখ করেন, গত ১৫ জানুয়ারি বিকেল ৩টার দিকে ডৌয়াতলা বাজারের দক্ষিণ পার্শ্বে সুন্দরবন হসপিটাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার ক্লিনিকে বিশ হাজার টাকা চুক্তিতে ছগীর হোসেনের মেয়ে মেঘলার সিজারিয়ান অপারেশনের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে অভিজ্ঞ সার্জন দ্বারা অপারেশন করার আশ্বাস দেওয়া হয়। মেঘলার স্বামী তারেক ক্লিনিকের নিয়মানুযায়ী চুক্তির অর্ধেক দশ হাজার টাকা অগ্রিম জমা করে। পরে মামলায় উল্লেখিত ১নং আসামি ডাক্তার সবুজ কুমার দাস পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে কোনো অভিজ্ঞ সার্জন ছাড়াই কয়েকজন অদক্ষ সহকর্মীদের নিয়ে অপারেশন করে। দীর্ঘসময় পার হয়ে গেলে মামলার বাদীর সন্দেহের সৃষ্টি হলে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের কাছে রোগীর খবর জানতে চাইলে অপারেশনের কাজ চলছে বলে জানায় তারা। এক পর্যায়ে তিনি চিৎকার শুরু করলে ওইদিন রাত ১১টার দিকে রোগীর হার্টবিট বেরে যাওয়ার কথা বলে রোগীকে জরুরি বরিশালে নিয়ে যেত বলে। বরিশালে যাওয়ার পথে মেঘলার কোনো সাড়া শব্দ না পেয়ে সন্দেহের সৃষ্টি হলে পথিমধ্যে ভান্ডারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক দেড় থেকে দুই ঘণ্টা আগেই মেঘলা মারা গেছে বলে জানান। মামলা হওয়ার পর থেকেই আসামিরা আত্মগোপনে থাকায় কারও সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। বামনা থানার ওসি তুষার কুমার মন্ডল কালবেলাকে জানান, আমাদের সব আইনানুগ প্রক্রিয়া চলমান। লাশ ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে তবে এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।  উল্লেখ্য, গত ১৫ জানুয়ারি রাতে সুন্দরবন হসপিটাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে প্রসূতির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পরলে পরদিন ১৬ জানুয়ারি বরগুনা সিভিল সার্জন ডাক্তার মোহাম্মদ ফজলুল হকের নির্দেশে বামনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বামনা উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা নিবন্ধনহীন ওই ক্লিনিক সিলগালা করেন।
১৭ জানুয়ারি, ২০২৪

পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা গেল সুন্দরবন এক্সপ্রেস, উচ্ছ্বসিত যাত্রীরা
খুলনা থেকে প্রথমবারের মতো যাত্রী নিয়ে পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকায় গেল সুন্দরবন এক্সপ্রেস। বুধবার (১ নভেম্বর) রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে খুলনা রেলস্টেশনের এক নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে ট্রেনটি ছেড়ে যায়। ঢাকায় ট্রেনটি আনুমানিক পৌঁছবে ভোর ৫টা ১০ মিনিটে। নতুন এই রুটে ট্রেন চলাচলে যাত্রীদের অন্তত ২ ঘণ্টা সময় কমবে। খুলনা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে প্রথম যাত্রায় অংশ নিতে পেরে উচ্ছ্বসিত ট্রেনের যাত্রীরা। প্রথম ট্রেনটির যাত্রী কুয়েটের মেকানিক্যাল ডিপার্টমেন্টের সহকারী অধ্যাপক হারুন অর রশিদ বলেন, ‘সুন্দরবন ট্রেনে করে ঢাকায় অনেকবার গিয়েছি। আগে সময় অনেক বেশি লাগত। পদ্মা সেতু হওয়াতে ঢাকায় যেতে আমাদের কম সময় লাগবে। এখন ট্রেনযাত্রা আমাদের জন্য অনেক সহজ হয়ে গেছে। আজকে প্রথম যাত্রায় যাত্রী হতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত।’ আরেক যাত্রী খুলনা টিএন্ডটি জামে মসজিদের ইমাম হাফেজ মাওলানা দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘পদ্মা সেতু হয়ে ট্রেনে করে ঢাকায় যাব কখনো কল্পনাও করিনি। অনেক ভালো লাগছে। নিজের দেশের টাকা দিয়ে পদ্মা সেতু তৈরি করা হয়েছে। সেতুর ওপর দিয়ে পরিবহন এবং নিচ দিয়ে ট্রেন যাচ্ছে। আর এত সুন্দর কোচ কখনো দেখিনি। এ জন্য প্রধানমন্ত্রীকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।’ খুলনা রেলস্টেশনের স্টেশন মাস্টার মাসুদ রানা বলেন, খুলনা থেকে ঢাকাগামী আন্তঃনগর সুন্দরবন এক্সপ্রেসটি রুট পরিবর্তন করে পোড়াদাহ, রাজবাড়ী, ফরিদপুর, ভাঙা হয়ে পদ্মা সেতু দিয়ে ঢাকা যাচ্ছে। নতুন এই রুট পরিবর্তনের ফলে পূর্বের তুলনায় যাত্রী সংখ্যা বাড়বে। একইসঙ্গে সময় কমবে অন্তত ২ ঘণ্টা। আজ ২২৫ জন যাত্রী নিয়ে খুলনা ছেড়েছে ট্রেনটি। তিনি জানান, খুলনা থেকে রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে সুন্দরবন ট্রেনটি ছেড়ে যাবে। আর ঢাকায় পৌঁছাবে ভোর ৫টা ১০ মিনিটে। অপরদিকে ঢাকা থেকে সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে ছেড়ে ৩টা ৫০ মিনিটে খুলনায় এসে পৌঁছাবে। নতুন এই রুটে ট্রেন চলাচলের খবরে যাত্রীদের আগ্রহ বেড়েছে। এদিকে খুলনা থেকে ঢাকা পর্যন্ত সুন্দরবন আন্তঃনগর ট্রেনের ভাড়া (ভ্যাট ছাড়া) ধরা হয়েছে- শোভন চেয়ার শ্রেণির ভাড়া ৫০০ টাকা, প্রথম সিট শ্রেণির ভাড়া ৬৬৫ টাকা, প্রথম বার্থ শ্রেণির ভাড়া ৯৯৫ টাকা, স্নিগ্ধা শ্রেণির ৮৩০ টাকা, এসি সিট শ্রেণির ভাড়া ৯৯৫ টাকা ও এসি বার্থ শ্রেণির ভাড়া ১৪৯৫ টাকা।
০২ নভেম্বর, ২০২৩
X