হাতিয়া পৌঁছেছেন সুইডেনের রাজকন্যা ভিক্টোরিয়া
নোয়াখালীর বিচ্ছিন্ন দ্বীপ হাতিয়া পরিদর্শন করতে পৌঁছেছেন জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) শুভেচ্ছাদূত ও সুইডেনের প্রিন্সেস ক্রাউন ভিক্টোরিয়া। বুধবার (২০ মার্চ) সকাল সকাল ৮টায় তি‌নি বুড়িরচর ইউনিয়নের পশ্চিম বড়দেইল এলাকায় হেলিকপ্টার থেকে অবতরণ ক‌রেন। হেলিকপ্টার থেকে অবতরণের পর তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান নোয়াখালী-৬ (হাতিয়া) আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলী তার স্ত্রী ও সাবেক সংসদ সদস্য আয়েশা আলী। এ সময় হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুরাইয়া আক্তার লাকী, নোয়াখালীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মোহাম্মদ ইব্রাহীম ক্রাউন প্রিন্সেসকে স্বাগত জানান। নোয়াখালী জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ১৮ থেকে ২১ মার্চ জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) শুভেচ্ছাদূত হিসেবে বাংলাদেশ সফর করছেন সুইডিশ রাজকন্যা ভিক্টোরিয়া। তার এ সফরের অংশ হিসেবে আজ বুড়িরচর ইউনিয়নের পশ্চিম বড়দেইল এলাকার আসেন। এরপর তিনি বুড়িরচর ইউনিয়নের নতুন সুইচ বাজার পরিদর্শন করেন এবং গুচ্ছগ্রামের জেলে পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন। এ ছাড়া নলচিরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কাম সাইক্লোন সেন্টার পরিদর্শন করবেন তিনি। তারপর ভাসানচর যাবেন এবং ভাসানচর ক্যাম্পের রোহিঙ্গাদের সঙ্গে আলাপ করবেন। হাতিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মাহবুব মোর্শেদ লিটন বলেন, প্রিন্সেস ভিক্টোরিয়ার আগমনে আগামীর হাতিয়ার জন্য বিশাল ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছি। নোয়াখালীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মোহাম্মদ ইব্রাহীম বলেন, রাষ্ট্রীয় অতিথি হাতিয়ায় আগমন উপল‌ক্ষে বিভিন্ন স্থানে প্রায় ২০০ পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পাশাপাশি, র‍্যাব, বিজিবি, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমান বাহিনী, কোস্টগার্ডসহ নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। নোয়াখালী-৬ (হাতিয়া) আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলী বলেন, সুইডেনের প্রিন্সেস ক্রাউন ভিক্টোরিয়া সকাল ৮টায় হেলিকপ্টারে হাতিয়ার বুড়িরচর ইউনিয়নে নেমেছেন। আমরা তাকে স্বাগত জানিয়েছি। হাতিয়ায় কার্যক্রম শেষে ভাসানচরে যাবেন। সেখানে বিভিন্ন কার্যক্রম ঘুরে ঘুরে দেখবেন।
২০ মার্চ, ২০২৪

বসতঘরে আগুনে অঙ্গার ঘুমন্ত বৃদ্ধা
নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় বসতঘরে ঘুমন্ত এক নারী আগুনে পুড়ে মারা গেছেন। নিহত ললিতা বালা দাস (৮০) হাতিয়া পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কালীমন্দির এলাকার মৃত গোপাল দাসের স্ত্রী। শনিবার (৯ মার্চ) ভোর রাতের দিকে উপজেলার হাতিয়া পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কালীমন্দির এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নিহত ললিতা বালা দাস বসতঘরে একা থাকতেন। তার দুই ছেলে পরিবার নিয়ে ওমান থাকেন। ভোর রাতের দিকে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। এ সময় বসতঘরে ঘুমন্ত অবস্থায় তিনি পুড়ে অঙ্গার হয়ে যান। হাতিয়া ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ফায়ার ফাইটার মেহেদী হাসান ভুঁঞা বলেন, ভোর ৫টা ২৫ মিনিটের দিকে খবর পেয়ে একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে যায়। সেখানে এক ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। অভিযানে বসতঘর থেকে পুড়ে অঙ্গার হয়ে যাওয়া এক বৃদ্ধা নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে প্রাথমিক আগুন লাগার কোনো কারণ জানা যায়নি। হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিসান আহমেদ বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহত নারীর সুরতহাল রিপোর্ট করা হয়েছে। এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা নেওয়া হয়েছে।  নিহতের স্বজনদের আবেদনের প্রেক্ষিতে লাশময়না তদন্ত ছাড়া পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
১০ মার্চ, ২০২৪

কথায় কথায় হামলা-মামলা / এমপি পরিবারের কবজায় হাতিয়া
নোয়াখালী-৬ আসনের সংসদ সদস্য আয়েশা ফেরদাউস ও তার স্বামী সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলীর কাছে অসহায় হয়ে আছে দ্বীপ জনপদ হাতিয়ার মানুষ। খাসজমি দখল, কথায় কথায় প্রতিপক্ষের ওপর হামলা-মামলা, অবৈধভাবে হাট ও ঘাট দখল বাণিজ্যসহ সর্বত্রই একচ্ছত্র আধিপত্য করছে এ পরিবার। আর এসব ক্ষেত্রে নিজ দলের নেতাকর্মীরাই যেন তাদের মূল টার্গেট। নৌকা প্রতীকের সংসদ সদস্য ও তার অনুসারীদের হামলা-মামলার শিকার হয়ে দিন কাটছে আওয়ামী লীগের শত শত নেতাকর্মীর। স্থানীয়দের অভিযোগ, এমপি পরিবারের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে পুরো হাতিয়া। তাদের ভয়ে প্রকাশ্যে কেউ মুখ খোলেন না। হাতিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সদ্য সাবেক এক নেতা কালবেলাকে বলেন, ‘মোহাম্মদ আলীর কথার বাইরে গেলেই যে কাউকে মামলার আসামি করেন তিনি। হাতিয়ার ১১টি ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের কয়েকশ নেতাকর্মীর নামে মিথ্যা মামলা দিয়েছেন মোহাম্মদ আলীর অনুসারীরা। তার প্রত্যক্ষ মদদেই এসব মিথ্যা মামলা করা হয়েছে। হাতিয়ায় তিনি একনায়কতন্ত্র কায়েম করেছেন। ঘাটে ঘাটে চাঁদাবাজি, ভূমি দখল, হাটবাজারের অবৈধ ইজারা নেওয়া, সরকারি সব কাজের ঠিকাদারি ছেলে আশিকের প্রতিষ্ঠানকে দিতে বাধ্য করাসহ নানা অনিয়ম-দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত মোহাম্মদ আলী ও আয়েশা ফেরদাউস দম্পতি। সরকারি বরাদ্দ লুটপাট করে বিপুল সহায়-সম্পত্তির মালিক বনে গেছেন তারা। এ পরিবারের কবজা থেকে রক্ষা পেতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এবং জেলা আওয়ামী লীগের হস্তক্ষেপ চেয়েছি। তবুও সমস্যার সমাধান হয়নি।’ স্থানীয় এক গণমাধ্যমকর্মী জানান, ‘হাতিয়ায় মোহাম্মদ আলীর ইশারা ছাড়া কিছু চলে না। জলে-স্থলে সর্বত্র তার একক আধিপত্য চলছে। এখানে তার বিপক্ষে কথা বলার সাহস কারও নেই। হামলা-মামলা, খুন রাহাজানির নেপথ্যে তার ইন্ধন রয়েছে বলে মনে করে হাতিয়াবাসী। মানুষকে তিনি এক প্রকার জিম্মি করে রেখেছেন।’ এসব অভিযোগের বিষয়ে কথা বলার জন্য সংসদ সদস্য আয়েশা ফেরদাউসের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তার স্বামী সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলী কালবেলাকে বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচন সামনে এলে একটি পক্ষ আমাকে হেনস্তা করার উদ্দেশ্যে নানা অভিযোগ করে। তারা আমার পরিবারের নামে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) অভিযোগ দিয়েছে। দুদক দুই বছর ধরে তন্ন তন্ন করে তদন্ত করে কোনো অভিযোগের সত্যতা পায়নি।’ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের নামে হামলা-মামলা: জানা গেছে, নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য (মেম্বার) মোহাম্মদ মেরাজ উদ্দিনকে মামলা দিয়ে এলাকা ছাড়া করেছেন মোহাম্মদ আলী। তিনি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কৃষিবিষয়ক সম্পাদক। ২০২২ সালের ৪ সেপ্টেম্বর তিনি তার অসুস্থ মাকে দেখতে বাড়িতে গেলে তার ওপর হামলা হয়। হামলায় মেরাজ মেম্বারের ভাই ও ভাতিজা গুরুতর আহত হন। ঘটনার বিচার চেয়ে তিনি ফেসবুকে লাইভ করেন। পরে পুলিশি পাহারায় হাতিয়া থেকে নোয়াখালী জেলা সদরে চলে যান মেরাজ। মেরাজ উদ্দিন কালবেলাকে বলেন, ‘আমার নামে ছয়টি হত্যা মামলাসহ মোট ২২টি মামলা করা হয়েছে। মোহাম্মদ আলীর নির্দেশেই এসব মামলা হয়েছে। মামলার কারণে আমি এলাকায় যেতে পারছি না। গত বছরের সেপ্টেম্বরে অসুস্থ মাকে দেখতে বাড়ি গেলে এমপির লোকজন আমাদের ওপর হামলা করে। এতে আমার ভাই ও ভাতিজা গুরুতর আহত হন।’ কেন আপনাকে মামলার আসামি করা হয়েছে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘মোহাম্মদ আলী আমাকে গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে তার পছন্দের আনারস প্রতীকের প্রার্থীর পক্ষে ভোট করতে বলেছিলেন। কিন্তু আমি নৌকার পক্ষে কাজ করায় উনি আমার ওপর ক্ষুব্ধ।’ মেরাজ আরও অভিযোগ করে বলেন, ‘মোহাম্মদ আলী জাহাজমারা ইউনিয়নে ভূমিহীনদের নামে বন্দোবস্ত জমি জোরপূর্বক দখল করে ভোগ করছেন। তার বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতে পারে না।’ ভুক্তভোগীরা জানান, নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য মোহাম্মদ আকরাম উদ্দিনের নামে হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলা করেছেন মোহাম্মদ আলীর অনুসারীরা। জেলা আওয়ামী লীগের আরেক সাবেক সদস্য নুরুল ইসলামের নামে হত্যাসহ একাধিক মামলা করা হয়েছে। হত্যা মামলার আসামি করা হয়েছে হাতিয়া পৌরসভা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন আহমেদের আসামি। একাধিক মামলা মাথায় নিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন নিঝুমদ্বীপ আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান মেরাজ উদ্দিন। থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এ টি এম সিরাজুল ইসলামের নামে রয়েছে একাধিক মামলা। অভিযোগ রয়েছে, যারাই মোহাম্মদ আলী পরিবারের বলয়ের বাইরে রাজনীতি করছেন সবাইকে মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা দেওয়া হয়েছে। হাতিয়ার ১১টি ইউনিয়নের কয়েকশ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীর নামে মামলা দিয়েছেন মোহাম্মদ আলীর লোকজন। এসব মামলায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ইন্ধনদাতা সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলী। এসব বিষয়ে জানতে চাইলে মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘যাদের নামে মামলা হয়েছে তারা হত্যাসহ নানা অপরাধের সঙ্গে জড়িত। আমি কাউকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মামলা দেওয়ার নির্দেশ দেইনি। কিংবা আমার লোকজন কারও বিরুদ্ধে মামলা দিতে আমি বলিনি।’ সি-ট্রাক বন্ধ রেখে ট্রলার ও স্পিডবোট ব্যবসা: স্থানীয়রা জানান, হাতিয়ার চেয়ারম্যান ঘাট থেকে নলছিরা ঘাট পর্যন্ত বিআইডব্লিউটিসির ব্যবস্থাপনায় সি-ট্রাক চলাচল করত। সি-ট্রাকে জনপ্রতি ভাড়া মাত্র ৯০ টাকা। চলাচলও নিরাপদ। অভিযোগ আছে, মোহাম্মদ আলীর নির্দেশে সি-ট্রাক বন্ধ রেখে বিকল্প হিসেবে এ রুটে তিনটি ট্রলার চালানো হচ্ছে। ঈশিতা-১, ঈশিতা-২ এবং ঈশিতা-৩ নামে ট্রলারগুলোর মালিক এমপির পরিবার। এসব ট্রলারে জনপ্রতি ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা ভাড়া নেওয়া হয়। এ ছাড়া এমপি পরিবারের প্রায় ৩০টি স্পিডবোট রয়েছে। এগুলো জনপ্রতি ৫০০ টাকা করে ভাড়া নিচ্ছে। সি-ট্রাক বন্ধ করে দিয়ে নিজস্ব ট্রলার ও স্পিডবোট চালিয়ে বিপুল অঙ্কের টাকা আয় করছে এমপি-পরিবার। ট্রলার ও স্পিডবোটে একদিকে ভাড়া বেশি অন্যদিকে ঝুঁকিপূর্ণ। ফলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে উত্তাল সমুদ্র পার হতে হয় হাতিয়াবাসীকে। এ অভিযোগ অস্বীকার করে মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘সি-ট্রাক আমি বন্ধ করিনি। হাতিয়ায় সি-ট্রাক নেই। যেটি ছিল তার নিচে ফুটো হয়ে গেছে। এজন্য বন্ধ রাখা হয়েছে। আপনি ভালোভাবে খোঁজ নিলেই জানতে পারবেন।’ খাস জমি দখলে নিয়ে হোটেল ব্যবসা: এমপি আয়েশা ফেরদাউস ও তার স্বামী মোহাম্মদ আলী দলীয় প্রভাব খাটিয়ে তাদের নিজ নামের পাশাপাশি দুই ছেলে, কন্যা ও পুত্রবধূর নামে খাস জমি বন্দোবস্ত নিয়েছেন। ওই জমিতে তারা একটি চারতলা আবাসিক হোটেল গড়ে তুলেছেন। হাতিয়া বাজারের সেই ‘ঈশিতা আবাসিক হোটেল’ নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। ওই বন্দোবস্ত বাতিল করে প্রকৃত ভূমিহীনদের মধ্যে বন্দোবস্ত জমি দেওয়ার দাবি তাদের। জানা গেছে, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে প্রকৃত ভূমিহীনদের উচ্ছেদ করে জায়গাটি দখলে নেয় এমপি পরিবার। এরপর এক বছরের জন্য জমিটি লিজ নেন তারা। নথি পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, স্বামী, স্ত্রী, ছেলে, মেয়ে ও পুত্রবধূর নামে আধা ডেসিমেল করে ছয়টিসহ মোট ১০টি নথি অনুমোদন করিয়ে জমি বন্দোবস্ত নেয় এমপি পরিবার। উপজেলা পরিষদের রেজুলেশন নম্বর অনুযায়ী, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে আয়েশা ফেরদাউসের নামে বন্দোবস্ত দেওয়া নথি নম্বর ১৮৬। তার স্বামী সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলীর নথি নম্বর ১৯৩, ছোট ছেলে মাহতাব আলীর বন্দোবস্ত নথি নম্বর ১৮১, বড় ছেলে আশিক আলীর নথি নম্বর ১৮২, মেয়ে সুমাইয়া আলীর নামে বরাদ্দকৃত নথি নম্বর ১৮৩ এবং পুত্রবধূ নাঈমা সুলতানার নথি নম্বর ১৯৪। অভিযুক্ত সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলী কালবেলাকে বলেন, ‘খাস জমি আমার পরিবারের লোকজন বিধি মোতাবেকই নিয়েছে। খুব বেশি জমি আমরা নিইনি।’ এমপিপুত্রের কবজায় সব ঠিকাদারি: সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানায়, হাতিয়ার বড় বড় সরকারি কাজের ঠিকাদারি পায় এম আলী করপোরেশন। প্রতিষ্ঠানটি মোহাম্মদ আলীর ছেলে আশিক আলীর। হিল্টন রোড থেকে জাহাজ মারা জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার রাস্তার কাজ পেয়েছিল অন্য একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। তবে মোহাম্মদ আলীর লোকজন সেই কাজ করতে দিচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে। নলছিরা থেকে হিল্টন রোডের কাজ বাগিয়ে নিয়েছে এম আলী করপোরেশন। সাড়ে ১৪ কোটি টাকার এ রাস্তা পাকা করার কাজে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়রা এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে অভিযোগও দিয়েছেন। বয়ারচর বেড়িবাঁধ নির্মাণের কাজ পেয়েছিল আলম অ্যান্ড ব্রাদার্স। কিন্তু মোহাম্মদ আলী জোরপূর্বক ওই কাজটি তার ছেলের প্রতিষ্ঠান এম আলী করপোরেশনকে দিতে বাধ্য করেন। এভাবে সরকারি সব কাজই প্রভাব খাটিয়ে বাগিয়ে নেয় এমপিপুত্রের প্রতিষ্ঠান এম আলী করপোরেশন। অভিযোগ অস্বীকার করে মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘৫০ বছর ধরে এম আলী করপোরেশন সেরা করদাতা হিসেবে এনবিআর থেকে ক্রেস্ট পেয়েছে। ই-জিপিতে টেন্ডার হয়। এম আলী করপোরেশন তার যোগ্যতার ভিত্তিতেই কাজ পায়। এখানে আমাদের কোনো হাত নেই।’
০৫ অক্টোবর, ২০২৩

জেলেদের জীবনমান দেখতে হাতিয়া গেলেন জাতিসংঘের প্রতিনিধি দল
জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে জেলেদের জীবনমানে প্রভাব দেখতে নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় গেলেন জাতিসংঘের ৯ সদস্যের প্রতিনিধি দল। তারা সেখানে এক ঘণ্টা অবস্থান করে বেশকিছু জেলে পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন। রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) বেলা পৌনে ১১টার দিকে হেলিকপ্টারে করে জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব কান্নি উইগনারাজার নেতৃত্বে প্রতিনিধি দল বুড়িরচর ইউনিয়নের বিদ্যুৎ অফিস মাঠে পৌঁছান।  এ সময় হাতিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মাহবুব মোরশেদ লিটন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুরাইয়া আক্তার লাকিসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা ফুল দিয়ে প্রতিনিধি দলকে স্বাগত জানান। প্রতিনিধি দলটি হাতিয়া উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের সেলিম বাজার বেড়িবাঁধ এলাকায় বিভিন্ন জেলে পরিবারের সঙ্গে তাদের সুযোগ-সুবিধা নিয়ে কথা বলেন।  পরে স্থানীয় বিদ্যুৎ অফিসের সভাকক্ষে উপজেলার সরকারি-বেসরকারি চাকরিজীবী, কৃষক, শ্রমিক, জনপ্রতিনিধিসহ সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এ সময় হাতিয়ার মানুষের জীবনযাত্রার বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করা হয়। হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুরাইয়া আক্তার লাকি জাতিসংঘের প্রতিনিধি দলের সফরের বিষয়টি কালবেলাকে নিশ্চিত করেন।  এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘প্রতিনিধি দল মূলত জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে উপকূলের জেলেদের কী কী সমস্যা হচ্ছে, তা দেখতে এসেছেন। সফরকালে কর্মকর্তারা জেলেদের জীবনমানের উন্নয়ন, পর্যটন শিল্পের প্রসার, জেলে পরিবারের নারীদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির বিষয়টি গুরুত্বারোপ করেন।’ ইউএনও আরও বলেন, ‘সফরে প্রতিনিধি দলের কার্যক্রমে বোঝা যাচ্ছে, তারা ভবিষ্যতে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে জেলেদের জীবনমানের উন্নয়নে যেকোনো ধরনের প্রকল্প হাতে নিতে পারেন। দুপুর পৌনে ১২টার দিকে তারা ভাসানচরের উদ্দেশে হাতিয়া ত্যাগ করেন। বিকেলে তাদের সেন্টমার্টিন যাওয়ার কথা রয়েছে।’ নোয়াখালীর হাতিয়ায় প্রায় ৪০ হাজার জেলে পরিবার রয়েছে। যারা নদী-সাগরে মাছ শিকার করেই জীবিকা নির্বাহ করেন। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে মাছ আহরণ কমে যাওয়ায় অনেকে পূর্বপুরুষের এ পেশা বদলের চেষ্টা করছেন।
১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
X